হত্যা মামলার সাক্ষীর ভুয়া মৃত সনদ দাখিলের ঘটনায় ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম আদালতে হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আর সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সনদের সাক্ষর তার নয় বলে জানিয়েছেন।
.
দুই পুলিশ কর্মকর্তা সোমবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সশরীরে হাজির হন এবং ওই বিষয়ে লিখিতভাবে কারণ দর্শান।
লিখিত কারণ দর্শানোপত্রে ওসি অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ ও লজ্জা প্রকাশ করেন। আর এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে দেয়া প্রতিবেদন দাখিল করেননি এবং স্বাক্ষর তার নয় দাবি করে ওই বিষয়ে তার কোনো দায়বদ্ধতা নেই মর্মে জানান।
বিচারক আবদুর রহমান সরদার ওই কারণ দর্শানোর প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষে ওসিকে সতর্ক করে বলেন, ‘ওই ঘটনার সঙ্গে একজন জড়িত আছে। ওই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করুন। অন্যথায় মামলার রায়ে এ ব্যাপারে অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দেবেন।’
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার সাত দিনের মধ্যে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি কামরুল ও এএসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে সশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালে নিহত হন জাতীয় অন্ধ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান। পরে এ ঘটনায় মিরপুর থানায় একটি মামলা হয়।
ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভ মারা গেছেন বলে আদালতে সনদ দাখিল করেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন। এমনকি ওই প্রতিবেদন অগ্রগামী করার জন্য স্বাক্ষর করেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
কিন্তু ২৯ নভেম্বর সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভ হঠাৎ আদালতে হাজির হয়ে ওই মামলায় সাক্ষ্য দেন। পরে বিষয়টি নজরে আনা হলে এএসআই মোয়াজ্জেম মৃত্যুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।
সাক্ষীর মৃত্যুর প্রতিবেদন ও জাল মৃত্যু সনদ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে একটি লিখিত দরখাস্ত দাখিল করা হয়। পরে বিচারক সাতদিনের মধ্যে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি কামরুল ও এএসআই মোয়াজ্জেমকে সশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন