গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। প্রস্তাব মেনে নেওয়ার বিষয়টি মিসর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রধান ইসমাইল হানিয়া। সোমবার হামাস গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কিছু প্রশ্ন রয়েই গেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত ইসরায়েলের কিছু দাবি পূরণ করেনি বলে দেশটি জানিয়েছে। এদিকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার মধ্যেই তারা রাফাহতে হামলা চালিয়েছে। সাত মাস পর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে অগ্রগতি ঘটলেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণ প্রান্তে রাফাহতে আকাশ ও স্থল থেকে আক্রমণ চালিয়েছে। এ ছাড়া শহরের বাসিন্দাদের কিছু এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
যেখানে দশ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে যুদ্ধবিরতিতে হামাসের রাজি হওয়ার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গাজার বাসিন্দারা। চুক্তিতে সম্মত হওয়ার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস।
এতে বলা হয়, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানিকে ফোন করে জানিয়েছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। মিসরের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী আব্বাস কামালকেও ফোনে একই কথা জানিয়েছেন ইসমাইল হানিয়া।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় পরে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের অনেক দাবি মানা হয়নি। চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করার জন্য আলোচকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য একটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হবে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের প্রতিনিধিদল ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা পুনরায় শুরু করবে।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় আরো বলেছে, তার যুদ্ধমন্ত্রিসভা রাফায় অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এক্স-এ বলেছেন, ‘নেতানিয়াহু রাফাহতে বোমা হামলা করে যুদ্ধবিরতিকে বিঘ্নিত করছেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস যে প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে তা মিসরীয় প্রস্তাবের সংস্করণ এবং এতে এমন কিছু রয়েছে, যা ইসরায়েল মানতে পারবে না। ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটা এক ধরনের চালাকি বলে মনে হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেখানো হবে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে নেয়নি।’
অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাসের বিবৃতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আপাতত মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। যদিও গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হওয়ায় হামাসকে স্বাগত জানিয়েছে ইরান। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৭৩৫ জনের প্রাণ গেছে। আর আহত হয়েছে অন্তত ৭৮ হাজার ১০৮ জন।
সূত্র : রয়টার্স
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন