ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিস্থিতি দেখতে ও নিহতদের পরিবারের খোঁজখবর নিতে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেছেন, অন্যথায় হেফাজত ইসলাম সারাদেশে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
এ সময় তারা নিহতদের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে নিহত দুই ভাইয়ের কবর জিয়ারত করেন এবং তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে মধুখালীর নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট এলাকায় নিহতদের বাড়িতে যান তারা।
এ সময় হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব হযরত মাওলানা সাজেদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক, ঢাকা মহানগরের আমির হযরত মাওলানা কাফায়েত উল্লাহসহ দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিরাজ হোসেন ও মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ দেখে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এতটুকু বোঝা গেছে, এই ঘটনার সঙ্গে ডুবাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বার দুজন সরাসরি জড়িত। আমরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাবো বিষয়টি সুস্থ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত চেয়ারম্যান ও দুই মেম্বারসহ অন্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় হেফাজত ইসলাম সারাদেশে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের একটি কালী মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধরা পাশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থানরত নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়।
জনতার পিটুনিতে দুই শ্রমিকের প্রাণ যায়। তারা হলেন- উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপের ঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)। এ ঘটনায় আহত আরও পাঁচ শ্রমিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে নিহতদের বাবা শাজাহান খান বলেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই স্থানীয় কয়েকজন আমার ছেলেদের কাছে নির্মাণ কাজ থেকে রড চেয়েছিল। কিন্তু আমার ছেলেরা রড দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোরশেদ আলম সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলেন, পঞ্চপল্লীর ঘটনা নিয়ে তিনটি মামলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তারের তালিকায় ভিডিওতে দেখা দুই ব্যক্তিও আছেন। ভিডিওতে যাদের দেখা গেছে, তাদের সবার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ আসাদুজ্জামান ও ইউপি সদস্য অজিত কুমার বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের আইনের আওতায় আনতে পারবো।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন