ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের কারণে রাজনৈতিক বিভক্তি পরিবারেও ছড়িয়ে পড়েছে মন্তব্য করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশটাকে তো আগুন জ্বালিয়ে দিলেন! এমপি ইলেকশন হোক দলীয় প্রতীক দিয়ে, উপজেলাতে হোক মার্কা দিয়ে। তার নিচে কেন যাবেন!’
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হতেয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় পানিতে ডুবে নিহত শিশু মীম আক্তার (৯) ও ঝুমার আক্তারের (৯) বাড়িতে সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি এসব বলেন। শনিবার বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ওই দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার হয়।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক (মার্কা) পছন্দ করি না। আমি প্রধানমন্ত্রীকেও এ কথা বলেছি। এতে চাচার সঙ্গে ভাতিজার, ভাতিজার সঙ্গে ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা লেগে যায়; মনোমালিন্য হয়। কেন এটা করতে গেলেন? উনি (প্রধানমন্ত্রী) এটা স্বীকারও করেছেন-এটা ঠিক হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষের মধ্যে সম্মানবোধ ছিল। কিন্তু এখন আর সেটি পাওয়া যায় না। এখন বাবাকেই ছেলে সম্মান করে না। অনেক ছেলে বিয়ে করার পর বউকে নিয়ে খায়, অথচ মা-বাবা কী খেল তার খোঁজও রাখে না। এটা এখন সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যাধি। একটি আইন হচ্ছে, বাবা-মাকে দেখাশোনা না করলে জেল-জরিমানা হবে। মা-বাবা তো রাস্তার ফেল না জিনিস নয়!’
তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতিকে মূল্য দিই অনেক, কিন্তু তার চাইতেও বেশি মূল্য দিই মানুষকে। রাজনৈতিক উত্থান-পতন রয়েছে। তবে এ অঞ্চলের মানুষ আমার কাছে এক এবং অভিন্ন। তাদের নিয়ে আমার কোনো দলাদলি নেই। নির্বাচন হলো একটি খেলার মতো, যতক্ষণ খেলা হয়, দুই দলে বিভক্ত হয়ে খেলতে হয়। খেলা শেষ হলেই পুনরায় একত্রে চলতে হয়।’
সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীবের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন হতেয়া-রাজাবাড়ী ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নয়ন উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন খান, মীমের বাবা কামরুল হাসান, ঝুমার বাবা বাবুল মিয়া প্রমুখ।
শনিবার দুপুরের পর উপজেলার হতেয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার কামরুল হাসানের মেয়ে মীম ও বাবুল মিয়ার মেয়ে ঝুমা নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ৮ ঘণ্টা পরে রাত ১০টায় বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে ওই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন