করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশে মন্ত্রী-এমপিরা টিকা নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করেছে, এক্ষেত্রে আপনি টিকা নেবেন কবে? -এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জনগণ আমাকে নির্বাচিত করেছে। প্রথমে জনগণ পাবে, তারপর আমি নেব।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভারতের দেওয়া উপহারের টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমি টিকা না নেওয়ায় আমার টিকায় একটা লোক যদি বাঁচে, এটাই আমাদের এচিভমেন্ট (অর্জন)। সে জন্য ওরা (জনগণ) সবাইকে দেওয়ার পর আমি নেব।
এসময় জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, জো বাইডেন একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তার সঙ্গে আমাদের আগেও কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেই সূত্রে আমরা খুবই আনন্দিত। উনি কালকে দায়িত্ব নিয়েছেন, এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা খুবই ভাগ্যবান। ভারত আমাদের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। আমরা এটার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। ভারত আমাদের ৭১ সালে সহযোগিতা করেছে, এখন করোনা মহামারির সময়েও তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দুই দেশের যে শক্তিশালী সম্পর্ক এ সময়ে এটা তার প্রমাণ।
তিনি বলেন, এই ২০ লাখ টিকার বাইরে বেসরকারিভাবে ভারত থেকে ভ্যাকসিনের জন্য যে চুক্তি করা হয়েছে সেগুলোও ক্রমান্বয়ে আসতে থাকবে। আমরা খুব খুশি এ মাসে আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। তিন কোটির যে চুক্তি সেটাও আসবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, কোভিড এমনিতেই দূর হয়ে যাবে। আমাদের ভ্যাকসিন এসে গেছে। আমাদের সবার দায়িত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া। আমরা চাই আমাদের দেশে প্রত্যেক লোক কোভিডমুক্ত হবে।
এখনও বিশ্বের অনেক দেশ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করতে পারে নাই। আমরা আগেভাগে পেয়েছি, ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করে দেব। ভারতের সহযোগিতায় এটা সম্ভব হয়েছে -যোগ করেন মন্ত্রী।
মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা এখনও কোনো সময় দেইনি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে দিনক্ষণ ঠিক করা হবে।
অন্যকোনো ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি, চীনের সঙ্গেও যোগাযোগ আছে। যে ভ্যাকসিনগুলো আমরা আপাতত নিয়ে আসছি, এগুলো এখন দিতে থাকব, এরপর যদি অন্যান্য দেশের ভ্যাকসিন আনার প্রয়োজন হয়, তাহলে সে বিষয়েও আমরা পদক্ষেপ নেব।
জাহিদ মালেক বলেন, ভ্যাকসিন আনা হয়েছে, এর প্রয়োগ নিয়ে কমিটি করে দিয়েছি। এখন সেই কমিটি এ ভ্যাকসিনের স্টোরেজ ও কোথায় কোথায় দেওয়া হবে এবং দেওয়ার জন্য ৪২ হাজার কর্মী বাছাই ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ভারত মুক্তিযুদ্ধেও পাশে ছিল, কোভিডেও আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন বন্ধুরাষ্ট্র ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল, মহামারি করোনাভাইরাসের সময়ও এসে পাশে দাঁড়িয়েছে। এ বন্ধুত্ব ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশিদ আলম প্রমুখ।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন