ঋণের নামে শুধু ব্যাংক লুট নয়, অভিনব উপায়ে মূল্যবান সরকারি সম্পত্তিও হাতিয়ে নিয়েছেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পিকে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার)। পিপলস লিজিংসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করে দেশান্তরী হয়েছেন তিনি।
অর্জিত অবৈধ সম্পদ পাচার ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পি কে হালদারকে সহায়তা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর। এমন তথ্য উচ্চ আদালতকে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং নিয়ে আপিল শুনানি চলাকালে এ তথ্য জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। এ সময় আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলেন, চোখ বন্ধ করে তারা বসে থাকতে পারেন না। প্রধান বিচারপতি মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ মন্তব্য করেছেন।
শুনানি শেষে গণমাধ্যমকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় সাধারণভাবে যে বিনিয়োগকারীরা টাকা-পয়সা রাখেন, তাদের স্বার্থ দেখা একান্ত দরকার। আমার প্রশ্ন, তারা কেন পিকে হালদারকে টাকা ধার দিয়েছিল।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের মতো একজন কর্মকর্তা পিকে হালদারকে সহযোগিতা করেছেন। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছেন।
এদিকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড সম্পর্কে জানাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের নিচে নয়, এমন একজন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে ডেকেছেন আপিল বিভাগ। ২৫ ফেব্রুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হয়ে কোম্পানিটির বর্তমান অবস্থা, অবসায়ন ইত্যাদি সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে হঠাৎ করেই চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) মালিকানায় পরিবর্তন আসে। প্রথমে আড়ালে থাকলেও পরে পিকে হালদার ও তার নামসর্বস্ব কয়েকটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় যুক্ত হয়। এর কয়েক বছরের মধ্যে ঋণের নামে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেই হাজার কোটি টাকা বের করে নেয়া হয়। এ চারটি প্রতিষ্ঠানই এখন ধুঁকছে। ইতিমধ্যে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে পিপলস লিজিংকে। বাকি তিনটিও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন