বিভুরঞ্জন সরকার
ভয়াবহ মৃত্যু-আতঙ্কের মধ্য দিয়েই কেটে গেল ২০২০ সাল। কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস পৃথিবীর দেশে দেশে মানুষের জীবনে নানা ধরনের দুঃখ-কষ্টের কারণ হয়েছে। এমন মৃত্যুর মিছিল বিশ্ববাসী বহুদিন দেখেনি। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র- সবকিছুই করোনার আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে। কত নতুন শব্দের সঙ্গে মানুষের পরিচয় হয়েছে, বেঁচে থাকার আগ্রহ মানুষের জীবনধারায় এনেছে কত পরিবর্তন। মানুষের চলাচল ব্যাহত হয়েছে। অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে। মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অনেকের জীবিকারও পরিবর্তন হয়েছে। তেমনি কোনো কোনো দেশে রাজনীতিকেও ঘরবন্দি করেছে।
বাংলাদেশের মানুষের রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ প্রবল কিন্তু ২০২০ সালে রাজনীতিতে তেমন কোনো চাঞ্চল্য দেখা যায়নি সেভাবে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির স্থবিরতার কারণেই রাজনীতিতে উত্তাপ-উত্তেজনা কম ছড়িয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ অব্যাহতভাবেই চলছে।
বিএনপিদরদি বলে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অবশ্য বিএনপিকেও করোনা আক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছেন। বিএনপি দ্রুত সক্রিয় না হলে দলটির সামনে আরও বেশি দুর্দিন অপেক্ষা করছে বলেও তিনি মনে করেন। দলের নেতৃত্ব নিয়ে বিএনপি সংকটে আছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ, সরকারি অনুগ্রহে কারাগারের বাইরে এসেও রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছেন না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা অনিশ্চিত। তাকে নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্ন আছে, অস্বস্তি আছে। যারা দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারাও একমত হয়ে চলতে পারছেন না। রাজনৈতিক কর্মসূচি ও কৌশল নিয়ে মতভেদের কথাও এখন গোপন নেই। বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য অস্থিরতায় ভুগছেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, আন্দোলন করার অবস্থায় দল নেই। নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধ শক্তি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার কথা বলছেন কেউ কেউ।
তবে রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগ সরকার বা শেখ হাসিনার হাতছাড়া হওয়ার তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। টানা ক্ষমতায় থাকায় বিভিন্ন কারণে (ক্ষমতায় থাকলে ক্ষমতার অপব্যবহার কোন দেশে না হয়?) আওয়ামী লীগ নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছু অসন্তোষ তৈরি হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা ও সমর্থন অটুট আছে। অনেকে এটাও মনে করেন যে, আওয়ামী লীগের চেয়ে শেখ হাসিনা বেশি জনপ্রিয়। এটাও লক্ষণীয় যে, বিরোধী রাজনীতিকে অচল করতে সক্ষমতা দেখাতে পারলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার অসফল। উপযুক্ত কারণ ছাড়াই চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষের জীবন ধারণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আয় কমছে। ব্যয় বাড়ছে। হিসাব মেলাতে পারছে না বেশিরভাগ মানুষ। বাজার চলছে একশ্রেণির ব্যবসায়ীর মর্জিমাফিক। তারা তাদের লাভের লোভে পুড়িয়ে মারছে সাধারণ ক্রেতা-ভোক্তাদের। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হলো কয়েকগুণ। তার পর পেঁয়াজ এলেও দাম কমার নাম নেই। মানুষ পাইকার-মহাজন-মজুদদার-মুনাফাখোরদের কাছে অসহায়, জিম্মি।
রাজনীতির মূল নিয়ন্ত্রণ যেহেতু ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে, তাই সাধারণ মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত আলু মজুদ এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও আলু কারবারিরা দাম বাড়িয়ে মুনাফা লোটার পথ করেছেন। সরকার আলুর কেজিপ্রতি দাম ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও কে শোনে কার কথা! চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, সবজিসহ সবকিছুরই দাম চড়া। কম শুধু মানুষের আয়-রোজগার। করোনাকালেও কিছু মানুষ অসৎ উপায়ে ধনবান হচ্ছে আর বেশি মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। বৈষম্য বাড়ছে।
মানুষের অভাব-অভিযোগ নিয়ে রাজনীতিবিদদের মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। সাধারণ মানুষকে পাশে পাওয়া, তাদের দুর্দশা লাঘবের চেষ্টা নেই। রাজনীতি যতটুকু আছে সেটা পরস্পর দোষারোপের। এ ওকে দোষে, ও একে। এর থেকে পরিত্রাণের পথ বা উপায় আছে বলে মনে হয় না। আমরা রাজনৈতিকভাবে চরম বিভাজিত জাতি। এক অংশ মনে করেন, শেখ হাসিনার হাতেই দেশ নিরাপদ। তার কোনো উপযুক্ত বিকল্প দেশে নেই। আবার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে আর সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হবে না বলে মনে করার মতো মানুষও আছেন।
গত শতকের শেষ দশক থেকে মাঝে মাঝেই ‘বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি’র বিষয়টি সামনে আসে। কিছু তৎপরতাও লক্ষ করা যায়। কিন্তু রস জ্বাল দিয়ে গুড় বানানোর কাজটি আর হয় না। আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি- এই তিনটি বাংলাদেশে শাসক দল। অর্থাৎ এই তিন দল বিভিন্ন সময় ক্ষমতায় থেকেছে বা আছে। তবে বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি একই ধারার, একই রাজনৈতিক আদর্শ-বিশ্বাসের দল। আওয়ামী লীগ ভিন্নধারা এবং আদর্শ-বিশ্বাসের দল। আওয়ামী লীগের জন্ম এবং বিকাশ এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি সামরিক শাসকদের ঔরসজাত দল। তবে এর মধ্যে জাতীয় পার্টি এখন ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে টিকে আছে। দুই দলেরই পক্ষে-বিপক্ষে মানুষ আছে, সমর্থন ও বিরোধিতা আছে।
এই দুই দলের বাইরে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার তাগিদ আছে। বছরখানেক আগে ১২টি বামপন্থি দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে একটি বাম বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তার আর পর নেই। আহ্বানেই সব শেষ। অবশ্য বাম বিকল্পের কথাও নতুন নয়। বামশক্তি রাজনীতিতে প্রভাবকের ভূমিকায় যেতে পারবে বলে বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা দেশে খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও কেউ কেউ একটি বিকল্প রাজনৈতিক ধারা অথবা শক্তি গড়ে তোলার কথা বলছেন কয়েক বছর ধরেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ‘আপদ-বিপদ’ উল্লেখ করে এই দুই দলের হাতে বন্দি রাজনীতিকে মুক্ত করার কথা কেউ বললে সেটা শুনতে খারাপ লাগে না। কিন্তু মুসিবত হলো, মানুষ কম খারাপ থেকে বেশি খারাপ অথবা বেশি খারাপ থেকে কম খারাপের বৃত্তের বাইরে যেতে পারছে না। তাই বিকল্প নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ বা উৎসাহ কোনোটাই দেখা যায় না। সেজন্য নিন্দা-মন্দ যাই করা হোক না কেন, মানুষ আওয়ামী লীগ-বিএনপি ছাড়ছে না।
আজকাল কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ছিল গণতান্ত্রিক, উদার এবং প্রগতিমুখী। আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সব মিলিয়ে কিছুটা যেন পশ্চাৎগামী। বিশেষ করে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন পিছু হঠার নীতি নেওয়ায় অনেকেই উদ্বিগ্ন। প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ আর বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ এক থাকার বাস্তব পরিস্থিতি কি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিরাজ করছে? গত শতকের ষাটের দশকে যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রগতিশীলতার পক্ষে পরিবর্তন বা বিবর্তন ঘটছিল, এখনকার পরিস্থিতি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রতিক্রিয়া ও ধর্মান্ধতার পক্ষে বিশ্বব্যাপী যে উন্মাদনা কিংবা অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ তার থেকে চাইলেও বাইরে থাকতে পারবে না, পারছে না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ভয়াবহ বিপদ বাংলাদেশেও আছড়ে পড়ছে।
বিএনপির মতো চরম সুবিধাবাদী এবং হত্যা-সন্ত্রাসে বিশ্বাসী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগকে আপস-সমঝোতার পথে হাঁটতে হচ্ছে বলে দলের শুভার্থীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে সান্ত¡না এটাই যে, বিএনপি যদি আলকাতরা হয়, তা হলে আওয়ামী লীগ হলো পানি। আওয়ামী লীগের রঙ পরিবর্তন সম্ভব হলেও বিএনপি বদলাবে না। অনুকূল শক্তি সমাবেশ ঘটিয়ে আওয়ামী লীগকে বদলানো গেলেও বিএনপিকে বদলানো যাবে না।
১৫ এবং ২১ আগস্টের বর্বরতা কোনো গণতান্ত্রিক দল নিন্দা না করে পারে? কিন্তু আমাদের দেশে বিএনপি পারছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে শারীরিকভাবে নির্মূলের এই রাজনীতির প্রতি বিএনপির প্রকাশ্য সমর্থন, সহানুভূতি, পৃষ্ঠপোষকতা কোনো গোপন বিষয় নয়। অথচ এজন্য বিএনপির যে নিন্দা-সমালোচনা হওয়া উচিত, বাস্তবে তা নেই। দেশের বিভেদ ও সংঘাতের রাজনীতির জন্য আমরা অনেকেই এক বাক্যে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিকে সমানভাবে দায়ী করে থাকি। কিন্তু একবার ভেবে দেখি না, আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে যদি এমন ঘটনা ঘটত তা হলে আমরা কী করতাম? আমি জানি যে, একজন আমাকে হত্যার জন্য অস্ত্র তাক করে আছে, দু-একবার ব্যর্থ হামলাও চালিয়েছে- এসব জেনেও ওই সম্ভাব্য ঘাতক বা ঘাতকদের প্রতি কি আমি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে পারব? আওয়ামী লীগ সরকারে আছে, রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কেন বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসে না- এই প্রশ্ন আমাদের অনেকের মধ্যেই আছে। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগের, বিশেষ করে শেখ হাসিনার কষ্টের দিকটা সেভাবে বিবেচনা করি না।
আমাদের রাজনীতিতে যদি সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যরে পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হয় তা হলে প্রথম প্রয়োজন হবে আওয়ামী লীগের প্রতি বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। আওয়ামী লীগকে অস্ত্র দিয়ে প্রতিহত করার ধারণা গণতন্ত্রের সঙ্গে একেবারেই যায় না। বিএনপি যদি আস্তিনের নিচে অস্ত্র লুকিয়ে রেখে গণতন্ত্রের জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে তা হলে তাতে আওয়ামী লীগ ভুলবে কেন? দেশের মানুষকেও দলপ্রীতির ক্ষেত্রে বিচার-বিবেচনাবোধের পরিচয় দিতে হবে। অন্ধত্ব পরিহার করতে হবে। আওয়ামী লীগকে যদি সমর্থনযোগ্য মনে না হয়, তা হলে বিএনপি কোন বিবেচনায় সমর্থনের তালিকায় আসে?
রাজনীতি অবসর সময় কাটানো কিংবা বিনোদনের বিষয় নয়। দেশ ও দেশের ভাগ্য নিয়ে যেহেতু রাজনীতির কারবার, তাই সারাক্ষণ সময় দেওয়ার মতো আদর্শবাদী একদল মানুষ এক হয়ে না দাঁড়ালে আরামপ্রিয় ঝুঁকি নিতে অক্ষম পুরনো ফসিল নেতাদের দিয়ে বিকল্প রাজনীতির ধারণা শক্ত ভিত্তি পাবে না। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীতে অনেক কিছুই হয়তো আর আগের মতো থাকবে না। বিশ্বজুড়ে রাজনীতিতে পরিবর্তনের ঢেউ দেখা দিতে পারে। জনকল্যাণমুখী কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিও মানুষের সমর্থন বাড়তে পারে। করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতিও আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে আনতে পারে পরিবর্তন। কিন্তু নতুন কোনো বিশ্বপ্রবণতার অভিঘাতে আমাদের দেশের রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা, দেখার বিষয় সেটাই।
বিভুরঞ্জন সরকার : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
পাঠক মন্তব্য
I enjoy you because of each of your effort on this website. My aunt takes pleasure in participating in research and it is easy to see why. All of us notice all about the compelling means you produce reliable solutions via the web site and as well as encourage participation from some other people on the situation while our daughter is really being taught a lot. Have fun with the rest of the year. You're carrying out a splendid job.
Thanks so much for providing individuals with an extraordinarily memorable chance to read critical reviews from here. It is always very excellent plus jam-packed with a lot of fun for me and my office co-workers to visit the blog more than 3 times per week to read through the newest guides you will have. Of course, I'm actually pleased concerning the awesome strategies you give. Some 1 areas in this posting are in fact the most efficient I've had.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন