ডা. নিশম সরকার
এক করোনা মোকাবেলায় না হলেও, করোনাকালে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বে অনন্য। এমন অনেক কিছুই এ দেশে হয়েছে যা অন্য দেশ হয়তো ভাবতেও পারেনি। যেমন ধরুন, ডাক্তার পেটানো এই দেশে একটি কমন কালচার। বছরে দুই একবার পেটাতে পেটাতে মেরে ফেলার নজিরও খুব একটা অচেনা নয়। তবে, করোনাকালে পৃথিবীর অন্য কোন দেশে ডাক্তার পিটিয়ে মেরে ফেলেছে এমন কিছু আমাদের নজরে আসেনি। কিন্তু একটি ঘটনা বলতে পারি, এটি সমগ্র বিশ্বের জন্য তো নতুন, এমন কি বাংলাদেশের জন্যও নতুন একটি অভিজ্ঞতা। এটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের একটি সিনেমা হতে পারে। যে কোন থ্রিলার, হরর, পার্ভারশন যে কোন জনরার মুভিকে সেটি হারিয়ে দিবে এই নিশ্চয়তা আমার।
কালেক্ট করে সেগুলো ফেলে দিয়ে ইচ্ছে মতো রিপোর্ট করেছে। অর্থাৎ, হয়তো জনাব আজীজ সাহেব এর করোনা হয়নি, কিন্তু তার স্যাম্পল কালেক্ট করে সেটি যাওয়ার পথে কোন ডাস্টবিনে (আমি আশা করি স্যাম্পল গুলো অন্তত তারা খোলা রাস্তায় ফেলে আসে নি। অবশ্য তাদের দ্বারা সেটিও অসম্ভব না) ফেলে তাকে মোবাইলে রেজাল্ট পাঠানো হলো যে, জনাব আজীজ সাহেব করোনা পজেটিভ।
এতে তার পুরো পরিবার আতঙ্কিত হয়ে সেই মানুষগুলোকে আবার ডেকে বাড়ীর বাকি ৪জন স্যাম্পল দিলো, তাদেরও একইভাবে দৈব চয়নের ভিত্তিতে কাউকে পজেটিভ, কাউকে নেগেটিভ রিপোর্ট পাঠানো হলো। অথচ তারা কেউই হয়তো করোনা আক্রান্ত নয়। যেটি হতে পারে, সেই পরিবারটিকে সেই এলাকা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে কিংবা তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়েছে, বাড়ির ২-৩জন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কাজ রেখে বাড়িতে বসে রইলেন ২১দিন, এবং আবারও তারা সবাই মিলে ১৪দিন পর টেস্ট করানোর জন্য ঐ মানুষগুলোকেই ডেকে আনলেন আবারও পরীক্ষা করতে।
দুইবার টেস্ট করানোতে পরিবারটিকে গুনতে হলো কমপক্ষে ত্রিশটি হাজার টাকা। এই চরম দুর্দশার দিনে, ২১দিন কোন উপার্জন না করে, আইসোলেশনে থেকে ত্রিশটি হাজার টাকা তারা খরচ করে ফেললেন, সম্পুর্ন বিনা কারণে। এটি তো কিছুই নয়। ধরা যাক, জনাবা শামীমা হক আসলেও করোনা পজেটিভ, কিন্তু তার স্যাম্পলটি ছুড়ে ফেলে তাকে জানানো হলো তিনি করোনা নেগেটিভ। তিনি আল্লাহ পাকের দরবারে অশেষ শুকরিয়া জানিয়ে ঘরের সবাইকে ভালো মন্দ রান্না করে খাওয়ালেন। তার বড় মেয়ে স্বামী সন্তান সহ ফলমুল নিয়ে তাকে দেখতে আসলো। বিল্ডিং এর প্রতিবেশীরাও মাল্টা কমলা নিয়ে তাকে দেখতে আসলেন।
বলেন তো, এর কনসিকোয়েন্স কি? চিন্তা করা যাচ্ছে? জ্যামিতিক হারে বারুদের মতো তিনি করোনা ছড়িয়ে যাচ্ছেন, নিজের অজান্তেই। জনাবা শামীমা, তার প্রতিবেশী, সন্তানদের মধ্যে যে ৫-১০জনের শ্বাসকষ্ট হবে না, আইসিইউ লাগবে না, সে নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি না। ফলাফল, রাস্তায় রাস্তায় টাকা থাকলে টাকা নিয়ে ঘুরবে, টাকা না থাকলে শ্বাস টানতে না পেরে মরবে, আইসিইউ বেড এর জন্য। কেউ কেউ বুদ্ধি দিবে, ঘরে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে, সেই সিলিন্ডারও ৩গুনের বেশী দাম হাকিয়ে বসে আছে।
পৃথিবীর ইতিহাসে এর মতো জঘন্য পাপাচার আর দুইটি এই করোনাকালে আমরা শুনিনি। আমরা আশা করি, আর শুনতে পারবো না। কারণ করোনাকে কেন্দ্র করে এর থেকে ভয়ানক পাপাচার আর হতে পারে বলে আমার বিশ্বাস হয় না। এই কাজটি করেছে জেকেজি হেলথকেয়ার নামের একটি সংগঠন। এর পুরো নাম জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা।
নামের মধ্যে একটা সারল্য রয়েছে। জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা, নামের মধ্যে একজন বয়স্ক মা বা নানীর বয়েসী মাতৃস্থানীয় একটি ছায়া রয়েছে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে এদেরকে। মনে হয় যেনো এরা কোন ভুল করবে না। অথচ এই ভয়ংকর সন্ত্রাসী কান্ড ঘটিয়েছে এরা। এই চরম অর্থনৈতিক দুঃসময়ে এক একটি মানুষের কাছ থেকে ৫-৬হাজার করে টাকা নিয়ে, টেস্টটা পর্যন্ত না করবার মতো পৈশাচিক মানসিকতা এরা ধারণ করে। একটা মানুষকে পেটে ছোড়া মেরে হত্যা করা অতীব নৃশংসকর, আমি ভাবি, এরা যা করেছে অসংখ্য মানুষের সাথে, তাদের প্রত্যেকের পেটে ছোড়া মারবার থেকে কম দোষ করেছে এরা?
আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা এমডি আরিফুল চৌধুরী সহ আরও কয়েকজন হর্তাকর্তাকে গ্রেফতার করলেও, ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গিয়েছে এখনও এর চেয়ারম্যান বা সিইও পদে কাজ করা ডাঃ সাবরিনা আরিফ চৌধুরী।
দুই ডাঃ সাবরিনা আরিফ চৌধুরী একটি আলাদা প্যারাগ্রাফের দাবী রাখেন। অনলাইনে, মিডিয়ায় তুমুল জনপ্রিয় এই চিকিৎসক। তার পরিচয়, তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী কার্ডিয়াক সার্জন। প্রচুর উঠতি বয়েসী নব্য নারী চিকিৎসক ও মেডিকেল ছাত্রীদের আইডল তিনি। ইউটিউবে তিনি বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করেন নিজের। এছাড়াও সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন টিভি চ্যানেল কিংবা অনলাইনের ভুঁইফোড় চ্যানেল গুলোতে তিনি সাক্ষাৎকার দেন, সেগুলোও সার্কুলেশন তিনিই করেন। একটা মিথ্যাকে ঠিক কতোবার বললে সেটি সত্য বলে মনে হয়? কতো লক্ষ বার বললে সেটি সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হয়? সেটি ডাঃ সাবরিনা ভালো জানেন। আপনি যদি গুগল এ বাংলা কিংবা ইংরেজি যেই ভাষাতেই সার্চ করুন যে বাংলাদেশের প্রথম নারী কার্ডিয়াক সার্জন কে, উত্তর আসবে একটাই, ডাঃ সাবরিনা আরিফ চৌধুরী।
অথচ, এটি সম্পুর্ণ রুপে মিথ্যা। লক্ষ লক্ষবার এই মিথ্যাকে বলে বলে, লিখিয়ে লিখিয়ে তিনি এই গৌরব অর্জন করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম নারী কার্ডিয়াক সার্জন হলেন ডাঃ শিমু পাল। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ম-২৯ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। ১৯৯৯ সালে এমবিবিএস পাশ করেন তিনি, এরপর ২০০৩ সালে কার্ডিওথোরাসিক সার্জারিতে এমএস কোর্সে পড়বার সুযোগ পান। ২০০৯ সালে এমএস কোর্স শেষ করে বাংলাদেশের প্রথম নারী কার্ডিয়াক সার্জনে ভুষিত হন তিনি। অপরদিকে ডাঃ সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ২০১০ সালে এমএস কোর্সে প্রবেশ করেন এবং ২০১৫ সালে কোর্স শেষ করেন।
আমি কোন ভাবেই একটা জিনিস বুঝতে পারিনি, ডাঃ সাবরিনা’র এই এমএস সার্টিফিকেট তো মিথ্যা নয়, তবে কেনো এই মিথ্যার বেসাতি গড়ে তোলা? কেনো তাকে প্রথম নারী কার্ডিয়াক সার্জনের গৌরব চুরি করে হলেও অর্জন করতে হবে? ডাঃ শিমু পাল গ্ল্যামারাস গার্ল নন, তিনি মডেলিং, টিভি এংকরিং, মিডিয়াকে হাতে রাখা, ভুঁইফোড় অনলাইন মিডিয়াকে কিভাবে কুক্ষিগত করতে হয় জানতেন না, একজন শাদামাটা চিকিৎসক, তিনি শুধু কাজ করতে জানতেন। আর ওসব জানতেন না বলেই তিনি বিস্মৃত হয়েছেন। আর নিজেকে স্মৃত রাখবার সকল ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন ডাঃ সাবরিনা।
একজন চিকিৎসক এর কাছে হিপোক্রেটিক ওথ, প্রার্থনার মতো সুন্দর। এই শপথ এর জন্য গোলাম আজম এর মত রাজাকারদের মাস্টারমাইন্ডকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে কোন চিকিৎসক গলা টিপে মেরে ফেলতে পারেননি, তাকে আর দশটা রোগীর মতোই চিকিৎসা দিতে হয়েছে। সেই শপথকে ডাঃ সাবরিনা বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছেন নিঃশঙ্ক চিত্তে। চৌর্যবৃত্তিকে আকর্ষনীয় করে চিনির সিরায় ডুবিয়ে তিনি আকৃষ্ট করেছেন অজস্র কম বয়েসী নারী চিকিৎসক ও মেডিকেল ছাত্রীদেরকে।
এ তো গেলো তার পরিচয়ের চৌর্যবৃত্তি। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রেজিস্ট্রার চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থাতেই তিনি জেকেজি’র চেয়ারম্যান হিসেবে পদাভিষিক্ত ছিলেন। যদিও এখন জেকেজি’র দুর্নীতি ধরা পরবার পরে তিনি জানাচ্ছেন যে তিনি ১ মাস আগেই পদ ছেড়ে দিয়েছেন। আবার বলছেন যে তিনি কখনওই চেয়ারম্যান ছিলেন না, সবাই নাকি মুখে মুখে ডাকতো।
অথচ, তিতুমীর কলেজ, যেখানে তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে চিঠি প্রদান করিয়ে আস্তানা গেড়েছিলেন ট্রেনিং এর নামে, সেখানেই জেকেজি’র লোকজন কলেজের স্টাফদের সাথে মারামারি বাঁধালে সেখানে তিনি উপস্থিত হন ও নিজেকে জেকেজি’র চেয়ারম্যান বলে দাবী করেন। অনলাইনে বিশাল সেলিব্রিটি হবার কারণে, সকলেই দেখেছে বছরের পর বছর দেশ বিদেশে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আরিফুল চৌধুরী ও ডাঃ সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ঘুরে বেড়িয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাদের হৃদ্যতা অনেকের কাছেই আকাঙ্ক্ষিত ছিলো প্রচন্ড, কারণ এই বয়সেও তাদের অত্যন্ত রোমান্টিক চলাফেরা, ঘুরে বেড়ানো, অন্তরঙ্গ মধুমাখা ছবি রীতিমত ঈর্ষা জাগানিয়া ছিলো বটে। আজকে যখন তিনি ফেঁসে যাচ্ছেন, স্বামী ফেঁসে গিয়েছে ইতোমধ্যে, হাজতে আছেন, তখন তিনি জানাচ্ছেন যে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো না, তার স্বামী নাকি তাকে মারধোর করতো।
এই যে ভিক্টিম কার্ড খেলা, এই খেলাটাকে আমি অত্যন্ত ঘৃণা করি। সারা বছর নারীবাদ, ফিমেইল এমপাওয়ারমেন্ট, নারী শক্তির জাগরণ, আর দরকারের সময় অবলা নারী, স্বামীর হাতে মার খাওয়া নারী বনে যাওয়া, এর জন্যই এই দেশে সাধারণ জনগণের কাছে সত্যিকারের নারীবাদ পৌছায় না, এদের মতো ভন্ডদের কারণে। ইত্তেফাকের ‘কথায় কথায় নারী নির্যাতন মামলা’ শিরোনামে সাংবাদিক আবুল খায়ের এর লেখা ০৬ এপ্রিল, ২০১৮ ইং এর রিপোর্ট থেকে জানা যায়, মোট নারী নির্যাতন মামলার ৯০ শতাংশই ভুয়া। ২০০৯ সালে তত্কালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ এক বছরের নারী নির্যাতন আইনে করা মামলা নিয়ে তদন্ত করে দেখেছিলেন, ৯ হাজার মামলার মধ্যে ৭ হাজারই ভুয়া।
‘বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা কতটা হয়?’ শীর্ষক সাংবাদিক শাহনাজ পারভীন এর লেখা বিবিসি বাংলার ৩০ জুন ২০১৮, এর রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এসকল মামলার আশি শতাংশই ভুয়া। ত্রুটিপূর্ন এই আইনটি ব্যবহার করছে কারা? হয় সমাজের প্রিভিলেজড মহিলারা অথবা পুরুষরাই, জমি-জমা সংক্রান্ত অথবা পুর্ব শত্রুতা মেটাতে। আইনটি ত্রুটিপূর্ন এই অর্থে কারণ আইনজীবীদের বিশ্লেষন অনুযায়ী, ‘আইনের ১১ক ধারায় যৌতুকের জন্য শুধু মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান আছে। এর ফলে অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে সাজা দেওয়া যায় না, যা মানবাধিকার পরিপন্থী’। আবার, নারী নির্যাতন মামলায় আসামি তিন মাস আগে জামিন পান না। ফলশ্রুতিতে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এই আইনটি ফ্রাংকেন্সটাইনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু যে অত্যাচারিত শ্রেণির জন্য আইনটি তৈরী করা হয়েছিলো তারা এ আইনের সুবিধা থেকে বঞ্চিতই রয়ে গিয়েছে।
এতো কথা বলবার কারণ, এরপরেও কেউ যদি ডাঃ সাবরিনা আরিফ চৌধুরী’র ‘স্বামী পেটানো’ কাহিনী গ্রহন করে এবং তার পক্ষে কোন ‘এলিট নারীবাদী পক্ষ’ দাঁড়িয়ে যায়, যার অতীতে উদাহরণ আছে, তবে এর মতো দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। শুধু মনে রাখবেন, করোনার মতোন গুপ্তঘাতক নিয়ে এই নারী ও তার কথিত পেটানো স্বামী, যার সাথে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছে, রোমান্টিকতা জাহির করে বেড়িয়েছে, তারা ব্যবসা করেছে। আপনি, আমি, আমার বা আপনার পরিবার যে এদের কারণে আক্রান্ত হইনি বা হবো না, আপনি সেটা জানেন না, আমিও জানি না।
তিন জেকেজি হেলথকেয়ারের এমডি আরিফুল চৌধুরী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার ভয় দেখিয়ে হুমকি দেওয়া সহ দুর্ব্যবহার করতেন। আমি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নামক দলটির একজন নিবেদিতপ্রাণ সমর্থক হিসেবে, এই ভয়ানক পাপাচারে লিপ্ত মানুষগুলোর পেছনে কে বা কারা শক্তিদাতা হিসেবে শক্তি যুগিয়েছে, যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের রেফারেন্স দিয়ে এরা শত কোটি টাকা আয় করা সহ যাচ্ছে তাই দুর্নীতি করে বেড়িয়েছে, সেই মানুষগুলো কারা, আমি তা জানতে চাই এবং তাদের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
আমি বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসীন দল, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সমর্থক হবার একটি প্রধান কারণ, এই দলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগঠন, এই দলটি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে অতীতে। ৭ই মার্চের ভাষণের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর যে ভাষণ আমাকে প্রতিদিন, প্রতিমুহুর্তে একজন শুদ্ধ মানুষ হবার, একজন সৎ, নির্ভিক মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবার ও ধরে রাখতে প্রভাবিত করে, সে ভাষনটির মুখ্য অংশটুকু এর আগেও অনেকবার আমি উল্লেখ করেছি, ভবিষ্যতেও করবো, আজ আবারও করছি –
‘আত্মসমালোচনা না করলে আত্মশুদ্ধি করা যায় না। আমি ভুল নিশ্চয়ই করব, আমি ফেরেশতা নই, শয়তানও নই, আমি মানুষ, আমি ভুল করবই। আমি ভুল করলে আমার মনে থাকতে হবে, আই ক্যান রেকটিফাই মাইসেলফ। আমি যদি রেকটিফাই করতে পারি, সেখানেই আমার বাহাদুরি। আর যদি গোঁ ধরে বসে থাকি যে, না আমি যেটা করেছি, সেটাই ভালো। দ্যাট ক্যান নট বি হিউম্যান বিইং’। - ১৯ জুন ১৯৭৫, বাকশাল কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দেওয়া ভাষণ
আর তাই, আমি আমার সমর্থিত দলটিকে প্রতিনিয়ত আঘাত করি, এর মরিচা দূর করতে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের তাই কঠোর সমালোচনা করি, তাঁকে ভালোবাসি বলেই। তিনি আমাদের কাছে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আমানত, তাঁকে সুরক্ষিত রাখতে যা যা করা দরকার আমরা করবো। জেকেজি হেলথকেয়ার এবং এর পেছনে মদদদাতা প্রতিটি শক্তি, তারা যেই হোক না কেনো, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী রেখে গেলাম, বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে।
লেখক: - ডা. নিশম সরকার, এমবিবিএস (ঢাকা মেডিকেল কলেজ)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন