Tetul Hujur- Sour with Khaleda and Sweet with Hasina শিরোনামে আমার একটি লেখা South Asia Journal আরো কয়েকটি বিদেশী ওয়েব পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোর লিংকসহ আমার ফেসবুক পেজে ‘জাতির পুড়ছে ঘর, কেউ কেউ শুকিয়ে নিচ্ছে নিজেদের ভেজা কাপড়’ শিরোনাম দিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছি। আগ্রহী পাঠকদের জন্য লিংক দু’টি দেয়া হলো-
http://www.eurasiareview.com/21042017-tetul-hujur-now-sour-with-khaleda-sweet-with-hasina-oped/?
http://foreignpolicynews.org/2017/04/21/tetul-hujur-now-sour-khaleda-sweet-hasina/
পাঠকদের বেশির ভাগই এর প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ সমালোচনা করেও মন্তব্য করেছেন। আমি মনে করি, সচেতন পাঠকদের এ ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণ আমাদের একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। অনেকের লেখার জবাব দেয়া প্রয়োজন বলে অনুভব করি। ইচ্ছে থাকলেও সময়ের অভাবে সব পাঠকের মন্তব্যের জবাব দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। শত শত মন্তব্যের মধ্যে দু-একজনকে জবাব দিলে বাকি বন্ধুরা মন খারাপ করবেন বলে ইনডিভিজুয়ালি জবাব দেয়া থেকে বিরত থাকি। এর চেয়ে সবার মনের আকুতি, উচ্ছ্বাস আর জিজ্ঞাসা যা এই প্লাটফরমটিতে ফুটে ওঠে, তা নিয়ে পরে আরেকটা পোস্ট বা কলাম লিখে থাকি।
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের ডায়ালগ খুবই সহায়ক। শুধু লেখকদের লেখা থেকেই পাঠকেরা উপকৃত হন না, বরং পাঠকদের মন্তব্য থেকেও লেখকেরা উপকৃত হতে পারেন।
আমার লেখার যারা কট্টর সমালোচক, তাদের বেশির ভাগই গালিগালাজ ছাড়া সাধারণত তেমন কোনো অর্থবোধক মন্তব্য রাখেন না। কিন্তু এবার কয়েকজন সমালোচকের বক্তব্যের গভীরতা ও ভাষার সাবলীলতা আমাকে যারপরনাই মুগ্ধ করেছে। তাদের উত্থাপিত প্রশ্নের জবাব দিতে এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিতে বৃহত্তর পাঠক সমাজকে সম্পৃক্ত করতে নয়া দিগন্তে এ কলামটি লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি, এই লেখা আরো অনেককে এ বিষয়ে গবেষণা করতে উৎসাহ জোগাবে।
আগের একটি কলামে উল্লেখ করেছিলাম, ইংরেজি Civil Society শব্দ যুগলটির একটি অশুদ্ধ অনুবাদ আমাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘সুশীলসমাজ’ নামে প্রচার করে সিভিল সোসাইটি শব্দটিকে সঙ্কুচিত করে ফেলা হয়েছে। ফেইথ-বেজড সোসাইটি বা ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠনগুলোও সিভিল সোসাইটির অংশ। কিন্তু এ কথা শুনলে ব্রাহ্মণসমাজের আদলে সৃষ্ট আমাদের সুশীলসমাজের মাথার তালু গরম হতে পারে। আমার সমালোচক এই বন্ধুরা অতি সহজেই শক্তিশালী সিভিল সোসাইটি হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।
সমালোচক এই বন্ধুরা কওমি মাদরাসা থেকে পাস করেছেন বলেই অনুমিত। কওমি মাদরাসার ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেও তারা যা শিখেছেন তা আমাদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত কথিত সুশীলসমাজের অনেকের জন্য লজ্জার কারণ হতে পারে। জায়গার অভাবে তাদের লেখাটি এখানে তুলে ধরা সম্ভব হবে না। আজকের লেখায় তাদের প্রশ্নগুলোর জবাবসহ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা থাকবে।
মনে রাখা দরকার, সমালোচনা দুই ধরনের। এক ধরনের সমালোচনা করা হয় সংশোধনের নিমিত্তে। অন্যটি করা হয় কোনো কিছুকে ডিমোরালাইজ বা ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে। আশা করি, সমালোচক এই বন্ধুরা আমার লেখার মূল সুর ও উদ্দেশ্য ধরতে পারবেন।
একটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করি না। মাথার মগজ ও হৃদয়ের বোধটিকে যতটুকু সম্ভব মুক্ত রাখতে চেষ্টা করি। লেখা আমার পেশা নয়, নেশাও নয়। ভেতরের তাগিদ থেকেই লিখে থাকি। কারো কোনো ভুল হলে সেটাকে ভুলই বলতে চেষ্টা করি। সেই ভুলের আগে ‘মোবারক’ শব্দ লাগিয়ে চুমু দেই না বা তাকে নির্ভুল প্রমাণে নিজের শক্তি ক্ষয় করি না। ‘তৌহিদি জনতা’র আগে কেন ‘তথাকথিত তৌহিদি জনতা’ বলেছি তা নিয়েও কেউ কেউ আপত্তি করেছেন। ইসলামপন্থীদের একদল সরকারের বিষ বা পিটুনি খেয়ে বলবে, ১৬ কোটি তৌহিদি জনতা এবং অন্য দল সরকারের মিঠাই খেয়ে বলবে, ১৬ কোটি তৌহিদি জনতা। কাজেই ১৬+১৬=৩২ কোটি তৌহিদি জনতা দেখে মনের হতাশায় ‘তথাকথিত’ শব্দটি প্রয়োগ করেছি।
ব্রিটিশ সরকার যখন আলিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিল, তখন তাদের নিয়ত বা উদ্দেশ্যের প্রতি এ দেশের অনেক আলেম-ওলামার সহজাত সন্দেহ সৃষ্টি হয়। মুসলমানদের কাছ থেকে শাসন ক্ষমতা চলে যাওয়ার বেদনা যাদের তখন কাবু করেছিল, নিঃসন্দেহে সমাজের এই অংশটুকু রাজনৈতিকভাবে বেশি স্পর্শকাতর ও সচেতন ছিল বলে অনুমিত হয়। ব্রিটিশরা রাজ্য জয়ের সাথে বিভিন্ন কূটকৌশল প্রয়োগ করে ধর্মান্তরিতকরণের মিশনারি কাজও চালিয়ে গেছে। ফলে তখনকার প্রেক্ষাপটে অধিকতর সচেতন ও স্বাধীনচেতা অংশটিই কওমি ধারার সৃষ্টি করেছিল। ব্রিটিশ শাসকদের উদ্দেশ্যের ব্যাপারে সন্দেহ করা খুব একটা অমূলক ছিল না। কৌশলগত কারণে তাদের সেই সিদ্ধান্ত এখন ভুুুল বলে মনে হলেও রাজনৈতিক ও ডেমোগ্রাফিক দৃষ্টিতে তা সঠিক ছিল। এ ধরনের একটা সতর্কতামূলক অবস্থান নেয়ার কারণেই ব্রিটিশরাজ আলিয়া মাদরাসাকে নিয়ে তাদের পরিকল্পনার পুরোটা হয়তো বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
পরে এই পলিসি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য তেমন লাভজনক বলে গণ্য হয়নি। এর পরও ইসলামি শিক্ষাকে বৈরী সরকারের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার প্রচেষ্টা নগণ্য বলে গণ্য করা যাবে না। তবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা থেকে নিজেদের বিযুক্ত রাখার কারণেই একসময়কার রাজনৈতিকভাবে সচেতন অংশটিই রাজনৈতিকভাবে অসচেতন হয়ে পড়ে।
সমাজের কোনো একটি অংশকে অবহেলিত বা পিছিয়ে রাখলে সেই সমাজ কখনোই সামনে অগ্রসর হতে পারে না। যে সমাজে এই বোধ বা হুঁশ বেশি ফিরেছে- সেই সমাজ ও রাষ্ট্র বেশি এগিয়ে গেছে।
কোনো একটি দল বা গ্রুপকে সারা জীবনের জন্য দাবিয়ে রাখা শুধু অমানবিক নিষ্ঠুরতা নয়- পুরো মানবসভ্যতার জন্যও এটি অত্যন্ত কলঙ্কজনক। বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে পড়া কওমি মাদরাসা নিয়ে এক ধরনের অমানবিক খেলা সমাজের অগ্রসর অংশের মাঝে অনেক আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। এটাকে একটা ভোট ব্যাংক বা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যখন যে দলের ‘ইসলামী ঐক্যজোটের’ প্রয়োজন পড়েছে, তখনই এই কওমি মাদরাসাগুলো থেকে সেই চাহিদা পূরণ করা হয়েছে। বহুরূপী এরশাদসহ সেক্যুলার জোটে তো আছেনই- এমনকি ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিক গ্রুপগুলোর সাথেও ইসলামী ঐক্যজোট গেছে। কেউ কেউ ইস্তেখারা করে সোজা শাহবাগের মঞ্চে উপস্থিত হয়ে গেছেন। ইসলাম প্রতিষ্ঠা নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার জন্য তারা একেকজন চমৎকার কাঁটা হয়ে পড়েছেন। পুরো জনগোষ্ঠীর কোনো কল্যাণের চিন্তা না করে গুটিকয়েক নেতাকে সুযোগ-সুবিধা, পাম্প-পট্টি দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অভিলাষ হাসিলের নোংরা খেলা লক্ষ করা যাচ্ছে।
এ দেশের মানুষের টাকা ও সম্পদ যেভাবে লুটপাট হচ্ছে, তা দিয়ে এ রকম লাখ কোটি মানুষকে আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তাদের সমাজের করুণার পাত্র হয়ে থাকার দরকার নেই। সত্য কথাটি হলো- এ মানুষগুলোকে নিয়ে ভাবার কেউ নেই। এদের টেনে তোলার মতো কোনো শক্তি নেই। যার যখন যেভাবে দরকার, সেভাবেই তাদের ব্যবহার করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে।
এ অবস্থায় কওমি মাদরাসার সনদের সরকারি স্বীকৃতি অবশ্যই খুশির খবর। তাদের শিক্ষাকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে এটি একটি ধাপ হতে পারে। এটি তাদের ন্যায্য অধিকার; কারো করুণার দান নয়। এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার প্রাপ্য কৃতিত্বটুকু পেতেই পারে। তার পরও সরকারের নিয়ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ইন্না মাল আ’মালু বিন্নিয়াত। সব কিছু উদ্দেশ্য বা নিয়তের ওপর নির্ভর করে।
পুরো মাদরাসা শিক্ষাকে গলা টিপে মারার সব প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। সরকারের কর্তাব্যক্তিরা কওমি মাদরাসাকে ‘জঙ্গিবাদের সূতিকাগার’ বলে এযাবৎ প্রচার চালিয়েছেন এবং এখনো তা বন্ধ করেননি।
কওমি সনদের স্বীকৃতি চারদলীয় জোট সরকার একবার দিয়ে গেছে, কিন্তু জরুরি সরকার এবং তাদের পরে বর্তমান সরকার তা বাস্তবায়নের পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন হতে দেয়নি। ২০০৮ সালে Stemming the Rise of Islamic Terrorism in Bangladesh নামে যে আর্টিকেল প্রকাশ হয়েছিল, ওই আর্টিকেলে কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছিল। ওই আর্টিকেলের লেখকদের মতে, ২০০১ সালে যেখানে ৫ শতাংশ মাদরাসা থেকে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হয়েছিল, সেখানে ২০০৬ সালে এ সংখ্যা ৩০ শতাংশে পৌঁছে যায়। তবে সেনাবাহিনীতে মাদরাসা থেকে রিক্রুটের তথ্য ছিল সম্পূর্ণ অসত্য। আর্টিকেলটিতে আরো উল্লেখ ছিল, বোরখার সংখ্যা পাঁচ শ’ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে ব্যাংক, হাসপাতাল সব কিছুই মৌলবাদী হয়ে পড়েছে।
মূলত সেই আর্টিকেলটি ছিল বিশ্ববাসীর জন্য একটি মেসেজ- ‘ক্ষমতায় গিয়ে কিছু Stemming-এর কাজ করা হবে। তোমরা দয়া করে নীরব থাকবে। নিজেদের মুখ রক্ষার্থে লিপ সার্ভিস দিতে পারো, কিন্তু এর চেয়ে বেশি বাধা দিতে এসো না।’ গত ৯টি বছর সেই Stemming-এর কাজই করা হয়েছে।
সরকার এবং তাদের মুরব্বিরা আগের মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসেছেন, তা কোথাও চোখে পড়েনি। মাদরাসা শিক্ষা সম্পর্কে তাদের মনোভাব বদলে গেছে বলে কোথাও ধরা পড়েনি। শুধু কৌশল বদলেছে। Stemming-এর কাজটি বিষ খাইয়েও করা যায়। আবার মিঠাই খাইয়েও একই কাজ সম্পন্ন করা যায়। যে কাজে ঝুঁঁকি কম, তা করাই নিরাপদ। সরকার সেদিকেই এগোচ্ছে।
হেফাজতের সাথে সরকারের বর্তমান সখ্য দেখে নিচের গল্পটি মনে পড়ে যায়। এক লোক তার ভালো ছেলেকে দেখিয়ে তার কানা ছেলের জন্য বিয়ে ঠিক করেছিল। খুশিতে গদ গদ হয়ে বলতে থাকে, মজা মারল আমার কানা পুতে। এ কথা শুনে পাশ থেকে মেয়ের বাপ বলে, টের পাইব মশায় টাইনা নিতে। কারণ সেও তার ভালো মেয়েকে দেখিয়ে খোঁড়া মেয়েকে গছিয়ে দিয়েছে।
সরকারকে কাবু করে ফেলেছে বলে ইসলামপন্থীদের একটি অংশ হয়তো বা আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন যে, অনেক দাবি-দাওয়া আদায় করে ফেলেছেন। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা এই গল্পের মতোই হয়ে যেতে পারে।
কারণ মাদরাসা সনদের স্বীকৃতি মিলেছে বটে, তবে চাকরি দেয়ার বোর্ডগুলোতে যে শাহরিয়ার কবির আর জাফর ইকবালরা তাদের আসন পোক্ত করে চলছেন, তাতে এই সনদ কতটুকু কাজে লাগবে তা দেখার বিষয়।
কওমি সনদের স্বীকৃতি সমস্যা নয়, সমস্যা এই স্বীকৃতির পেছনে রাজনৈতিক কৌশল বা অভিলাষটুকু, যা অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে পড়েছে।
পুরো বিষয়টি বুঝতে হবে। হাইকোর্টের সামনে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন, পাঠ্যপুস্তককে বিজাতীয়করণ এবং ‘মঙ্গল’ শোভাযাত্রাকে সর্বজনীনকরণ সরকারের প্রায়োরিটি লিস্টের মধ্যে নেই। যাদের খুশি করার জন্য এগুলো করা হয়েছিল, তারা সরকারের প্রচেষ্টা দেখেই খুশি। অনেকটা পরীক্ষামূলকভাবে এগুলো ছাড়া হয়েছিল। যদি কোনোরূপ বাধার সম্মুখীন না হয়ে এগুলো বাস্তবায়ন হয়ে যেত, তবে সোনায় সোহাগা হতো। বাধা আসার কারণে তা থেকে সরে এসে মূল প্রায়োরিটির দিকে মনোযোগ ফোকাস করা হয়েছে। সেই প্রায়োরিটি হলো, বিশেষ দেশের অনুকূলে এ দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ফলে এক সময়ের বিরোধী শক্তি এখন সহায়ক শক্তি হয়ে পড়েছে। মূল টার্গেট বাস্তবায়ন হলে, সনদধারী অন্তত কিছু মৌলানা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে ‘মূর্তি’র সামনে দাঁড়িয়ে মুনাজাত পরিচালনা করতে দ্বিধা করবেন না।
হেফাজতের সাথে সরকারের এই সখ্যের ফল জাতি পেতে শুরু করেছে। নিহত স্কুলছাত্র ত্বকীর বাবা বিসমিল্লাহর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন বলে শামীম ওসমান তার এক বক্তৃতায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ত্বকীর বাবা রাফিউর রাব্বি বিসমিল্লাহ নিয়ে যা বলেছেন, তা সুস্পষ্ট সংবিধানবিরোধী বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
তিনি মঞ্চের হুজুরদের লক্ষ্য করে বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন। আদালত যে সময় দিয়েছেন তার মধ্যে যদি বিষয়টির সমাধান না হয়, এর মধ্যে যদি কোনো গাফিলতি হয়, তবে আপনারা পরে মাঠে নামবেন, আল্লাহকে খুশি করার জন্য আমি সবার আগে মাঠে নামব ইনশাআল্লাহ।
রাফিউর রাব্বির ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে শামীম ওসমানের এ ক্ষোভ উপলব্ধি করতে দেশবাসীর খুব একটা বেগ পেতে হচ্ছে না। রাজনৈতিকভাবে অসচেতন হলে ইসলামের হেফাজত করতে এসে ফ্যাসিস্ট সরকার বা জুলুমবাজদের হেফাজত হয়ে পড়ে। ধর্মের ধারক-বাহকেরা যখন জুলুমবাজদের সাথে নিয়ে ধর্মের হেফাজতে নেমে পড়ে তখন সহজেই অনেক ধর্মবিদ্বেষী ও নাস্তিক তৈরি হয়।
সার্বিক অসচেতনতা এবং লোভ, ক্রোধ, হিংসা গ্রাস করেছে পুরো জাতিকে। জাতির নিরাপদ আশ্রয়ের ঘর দাউ দাউ করে জ্বলছে। কালার ব্লাইন্ডের মতো কেউ কেউ সে আগুন দেখতে পাচ্ছে না। যারা সেটি দেখতে পাচ্ছে, তারাও সামনে এগোতে সাহস পাচ্ছে না, বরং কেউ কেউ সেই আগুনে নিজের ভেজা কাপড় শুকিয়ে নিচ্ছে; কেউ বা আলু পুড়িয়ে খাচ্ছে। সবাই মিলে সেই আগুন নেভানোর কোনো চিন্তা দেখা যাচ্ছে না। অথচ সেই আগুনে পুড়ে মরতে হবে সবাইকে।
[email protected]
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন