জামিন সহজ করুন, ত্বরান্বিত করুন বিচার
26 November 2016, Saturday
আইন বা পুলিশের শক্তির আলোকে সুবিচার প্রদানের ব্যাপারটির সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা মিলবে না। দু’জন বিখ্যাত ব্রিটিশ আইন বিশারদ বিচারক ডিপলক এবং লর্ড ডেননিং মনে করেন, বিচারিক কাজে আইনের প্রয়োগ করার সময় বিদ্যমান সার্বিক পরিস্থিতিকে বিচেনায় নিতে হবে। আমাদের সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ এই দু’জনের মতামতের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে। ব্যক্তির মৌলিক অধিকার রক্ষা করেই আইনের শাসনের মহত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকার তখন সীমা লংঘন করতে পারে না।
সর্বাপেক্ষা কম অভিজ্ঞ, মেজাজে এবং মূল্যবোধে যার সঙ্গে আমেরিকানদের চিন্তা-ভাবনা ও মূল্যবোধের কোনো মিল নেই, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় কেবল তার দেশের ভেতরই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়নি, দেশের বাইরেও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকান নয়, সে আমাদের প্রেসিডেন্ট নয়, এসব কথা বলে কিছু রাজ্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
তবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পথ চলতে গিয়ে তাকে পদে পদে শাসনতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে এবং প্রেসিডেন্ট পদে সাফল্য অর্জন করতে হলে তাকে বদলাতে হবে। কারণ আমেরিকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সরকারি কর্মচারীদের রয়েছে দেশপ্রেম, তাই সেখানে আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে খেয়াল-খুশিমতো কিছু করা যাবে না। উপেক্ষা করা যাবে না জনমত। প্রেসিডেন্ট সবাইকে অধীনস্থ হিসেবে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে আমাদের কপাল মন্দ, সরকার পরিচালনার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেউ শক্তিশালী করতে ইচ্ছুক ছিলেন না। তাই জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের নাগরিক দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে ভালো শাসন, ন্যায়ের শাসন মিলবে না, ব্যক্তিগত অধিকারগুলোও গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। দেশটি পুলিশি রাষ্ট্রের চরিত্র লাভ করবে। হিংসা এবং অনৈক্য আমাদের ব্যক্তি জীবনের সুখ ও নিরাপত্তার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এর ভেতরেও যেটুকু আশার জায়গা এখনও দেখছি সেটি হল বিচার বিভাগ। এই বিভাগ নিজেদের স্বাধীন সত্তা রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিচার বিভাগ সাহস দেখালে জাতিও সাহস পাবে। বিচার বিভাগের নিজস্ব শক্তি আন্তর্জাতিক।
নিরপেক্ষ বিচারের প্রয়োজনে পুলিশকে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে রাখার সুযোগ নেই। পুলিশের বিচারসংক্রান্ত জবাবদিহিতা অবশ্য বিচার বিভাগের কাছে। পরিস্থিতি যতই প্রতিকূল হোক না কেন, পুলিশের কাছে বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা থাকতে পারে না।
পুলিশকে আইন অমান্যের সাহস জোগালে পুলিশেরই ক্ষতি হবে বেশি। পুলিশ আর সুশৃংখল পুলিশ থাকবে না। জনজীবনে নিরাপত্তার জন্য তারাই হবে চরম বিপদের কারণ। দেখা যাবে তারা নিজেরাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু আমাদের পুলিশকে পুলিশের মর্যাদা নিয়ে জনগণের বন্ধু হিসেবেই রক্ষা করতে হবে।
হাইকোর্ট ডিভিশনে শুনানির অপেক্ষায় আছে এমন একটি মামলায় বলা হয়েছে, পুলিশ অন্যায়ভাবে লোকজনকে থানায় ডেকে নিয়ে হয়রানি করছে। এমনও রিপোর্ট পত্রপত্রিকায় ছাপা হচ্ছে, পুলিশ থানায় বসে বিচার করছে। ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। পুলিশ নিয়ে আমরা চিন্তিত এ কারণে যে, পুলিশের ন্যায়ভিত্তিক ভূমিকা দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশ আইন প্রয়োগকারী বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী পুলিশকে দেশের শান্তি, শৃংখলা ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অর্থাৎ এটা স্বীকৃত, আইনের সঠিক প্রয়োগ করে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পুলিশকে স্বেচ্ছাচারী হলে চলবে না। আইন প্রয়োগকারী শক্তি হিসেবে পুলিশের নিজস্ব ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের দায়িত্ব সর্বাধিক। পুলিশ আইন প্রয়োগকারী শক্তি না হলে বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা ব্যতিরেকে শুধু পুলিশ দিয়ে সামাজিক শৃংখলা রক্ষা করা যাবে না। সভ্য সমাজ সুবিচার ভিন্ন সম্ভব নয়। ব্যক্তির অধিকার রক্ষার সমাজই সভ্য সমাজ। গোলামের সমাজ কোনো সভ্য সমাজ নয়।
আইনশৃংখলা পরিস্থিতি কীভাবে ভেঙে পড়ছে তার উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আমাদের দেশে সন্ত্রাসবাদ ছিল না বললেই চলে; কিন্তু এখন সরকার সর্বত্র সন্ত্রাসবাদের সন্ধান পাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে সত্য হচ্ছে পুলিশ সর্বক্ষণ সন্ত্রাসীদের খুঁজে বেড়াচ্ছে আর সন্ত্রাসবাদের ভীতি বেড়ে চলেছে। সর্বত্র অস্ত্রধারী পুলিশের অবস্থান। সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত শত শত মামলা বিচরাধীন রয়েছে। বস্তুত, সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িয়ে মামলা দেয়া পুলিশের জন্য অনেক সহজ হয়েছে। এ রকম হাজার হাজার মামলায় হাজার হাজার আসামি বিনা বিচারে জেল খাটছে।
সুবিচারের অর্থ যে নির্দোষ লোকদের রক্ষা করার দায়িত্ব ও সে ধরনের চিন্তা-ভাবনা খুব কমই দেখা যায়। নির্দোষ লোকরা রক্ষা পাচ্ছে না বলে প্রকৃত দোষীদেরও বিচার হচ্ছে না।
সম্প্রতি খুনের মামলায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তি ১৭ বছর বিনা বিচারে জেল খেটেছে, যাকে হাইকোর্ট ডিভিশন মুক্ত করে দিয়েছেন। যদিও সে জানে না মুক্তিলাভের পর সে কোথায় যাবে এবং কী করবে। সে জানে না তার পরিবার-পরিজন কোথায়। জানা গেছে এ রকম আরও দুটো মামলার হদিস পাওয়া গেছে। এ ব্যর্থতা মূলত সরকারের। সরকারকে এ অন্যায়ের অংশীদার হতে হবে; কিন্তু সরকার বিষয়টি তদন্ত করেও দেখবে না।
সমস্যা কীভাবে বেড়ে চলেছে তাই বলছি। এটাও তো অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতা ছিল না, কিন্তু এখন সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির ব্যাপারে একটি লবি অতি উৎসাহ দেখাচ্ছে বলে সাম্প্রদায়িকতা কুৎসিত ও প্রবল মূর্তি নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত লাভের জন্য ক্ষমতাসীনরাই উসকানি দিয়ে সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটিয়েছে। সাঁওতালদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা আমাদের হতবাক করেছে। তাদের জীবনহানি হয়েছে, সম্পদ জবরদখল করা হয়েছে, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; কিন্তু সরকারের নিজেদের লোকরা সম্পৃক্ত থাকায় সরকারকে অসহায় ও নির্বিকার থাকতে দেখা গেছে। এ জঘন্য অপরাধের সঙ্গে সরকারি লোকরা জড়িত থাকার কারণে পুলিশও কোনো ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়নি।
সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় কোনো কর্তৃপক্ষের বলিষ্ঠ ভূমিকা না থাকায় সুপ্রিমকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে এ ধরনের অনেক ঘটনায়। মনে হচ্ছে, আমাদের বিবেক মরে যাচ্ছে। স্বাধীনতার চেতনাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জনজীবনে দুর্নীতির দৌরাত্ম্য যখন চরমে তখন শুনতে হচ্ছে, বড় মাছ ধরার ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন কঠোর ভূমিকা রাখবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো একটি বড় মাছের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করতে দেখা যায়নি। অন্যান্য দেশে অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা শুরু করে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টকে দিয়ে। আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে না। বড় বড় ফিশের দুর্নীতি দমনে ভূমিকা রাখতে না পারলে দুর্নীতি দমন কমিশনের টিকে থাকার কোনো সার্থকতা থাকে না। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে সাহসী হতে বলছি না। আমাদের আবেদন দুর্বল লোকদের প্রতি ক্ষমতা দেখাবেন না। চাকরিতে থাকুন।
এখন দুর্নীতি দমন অফিসারদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর কাউকে গ্রেফতার করলে তাকে বিচার ছাড়াই জেল খাটতে হবে। তার পক্ষে জামিন চাওয়াটা যেন দুর্নীতি দমনের পথে বাধা সৃষ্টি করা। দুর্নীতির মামলা দিয়ে জানা যাবে না কে দুর্নীতিপরায়ণ আর কে দুর্নীতির শিকার। এভাবে যে কাউকে জেলে রাখার সুযোগ আছে বলেই দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। সমগ্র জাতিই আজ দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের কাছে জিম্মি।
বিচারে দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত একজন ব্যক্তিকে নির্দোষ বিবেচনা করতে হবে এবং এটাই সুবিচারের নীতি। এটাই আইনের শাসন। ব্যক্তির নির্দোষতাকে নীতির চেয়েও বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় একে ব্যক্তির আইনি অধিকার হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। যত বড় অভিযোগই আনা হোক না কেন, বিচারপ্রার্থীর মৌলিক অধিকারগুলো ক্ষুণœ করে তাকে দোষী বিবেচনা করা যাবে না। নির্দোষ ব্যক্তিকে বিচারে আটক রাখা সহজ হলে আসল অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যায়। আমাদের দেশে তাই ঘটছে। বড় বড় অপরাধী নিরাপদে ঘোরাফেরা করছে।
কারও পক্ষে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হচ্ছে না, পুলিশ কখন রাজনীতির শক্তি প্রয়োগ করছে আর কখন আইন প্রয়োগ করছে। দোষ পুলিশের নয়, দোষ আইনের শাসনের পরিপন্থী ব্যবস্থার।
আমাদের বিচারিক সংস্কৃতিতেও সমস্যা রয়েছে। গুরুতর অপরাধের অভিযোগে যদি কাউকে গ্রেফতার করা হয়, তাকে অপরাধী হিসেবেই ধরে নেয়া হয়। তাই একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি হঠাৎ করে তার ব্যক্তিসত্তা, মান-মর্যাদা সবকিছু হারিয়ে ফেলে। যদিও ব্যক্তির মর্যাদা হেয় না করার শাসনতান্ত্রিক নির্দেশ রয়েছে। শাসনতন্ত্রের মাধ্যমে প্রদত্ত কোনো মৌলিক অধিকার আর তার কোনো সাহায্যে আসে না। বিনা বিচারে জেল খাটা আর বিনা জামিনে জেল খাটার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। উভয় ক্ষেত্রেই তাকে বন্দি জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তার যা ক্ষতি হওয়ার তা হচ্ছে।
আমাদের ব্যবস্থায় কীভাবে নিরপরাধদের রক্ষা করা যায় সেটাই হবে সুবিচারের জন্য বড় দায়িত্ব। একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিন পাওয়া শুধু তার ব্যক্তিগত দাবির বিষয় নয়। বিচারের স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার জন্যও তা একান্ত প্রয়োজন।
শাসনতন্ত্রের ৩১নং অনুচ্ছেদে ব্যক্তিকে আইনের যে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে তা যদি পুলিশি হয়রানি থেকে ব্যক্তিকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে তার কোনো সার্থকতা থাকে না। কোর্টে হাজির হতে যাওয়ার পথে সে গুম হয়ে যাবে কিনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে? মামলার ভয়ের চেয়ে অনেক বেশি আতংকে থাকতে হয় রিমান্ডে নিয়ে কী ধরনের নির্যাতন করা হবে তা নিয়ে।
পুলিশ রিমান্ডের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের সতর্কতা অবলম্বনের অনেক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রায়ই পুলিশকে রিমান্ড মঞ্জুর করা হচ্ছে। পুলিশ রিমান্ডে নেয়া যেন বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে গেছে। আমরা নীতি-মূল্যবোধের প্রশ্নগুলোকে গুরুত্ব দিতে ভুলে যাচ্ছি। ভাবি বিপদ সব সময় অন্যদের ওপর আসবে, আমাদের ওপর নয়। জামিন ও পুলিশ রিমান্ড এখন বিচারব্যবস্থার সততা রক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনে আছে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হলে তাকে জামিন দিতে হবে। এ আইনের প্রয়োগ এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ভারতে সন্ত্রাসবাদের সংকট আমাদের থেকে বহুগুণ বেশি। তারপরও ভারতে আগাম জামিন অথবা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপস্থিত হওয়ার শর্তে আসামিকে মুক্তি দেয়ার আদালতের ক্ষমতা কোনোভাবেই সংকুচিত করা হয়নি। আমাদের সুপ্রিমকোর্টের দুটি রায় নিয়ে অগ্রিম জামিন বা নিয়মিত জামিনে মুক্তি দেয়ার আদালতের ক্ষমতা সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি বিচারব্যবস্থার কাছে অসহায় থাকবে না। এটাই তো সুবিচার। এরূপ বিচারব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে হবে। একজন ব্যক্তির নির্দোষতাকে তার আইনি অধিকার হিসেবে দেখতে হবে। আমাদের দেশের পরিস্থিতিতে নির্দোষ ব্যক্তির রক্ষা পাওয়ার জায়গা একমাত্র বিচারব্যবস্থা। আসল দোষী ব্যক্তিদের রক্ষার জন্য লোকের অভাব নেই। পুলিশি দুর্বলতা ছাড়াও তাদের আছে রাজনৈতিক শক্তি।
মিথ্যা মামলার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পাওয়া সহজ করুন। কত নির্দোষ-নিরপরাধ লোক কীভাবে বছরের পর বছর জেলে অসহায় জীবনযাপন করছে এবং তাদের অনুপস্থিতিতে কত লোকের সংসার ভেঙে যাচ্ছে তার হিসাব তো কেউ রাখছে না। এমনও দৃষ্টান্ত আছে, ৯ মাসের সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি মুক্তি পাচ্ছে ১৮ বছর পর। আমরা বিচারব্যবস্থাকে অমানবিক হতে দিতে পারি না।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন : আইনবিদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ
উৎসঃ যুগান্তর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন