রকিব কমিশনের রেকর্ড ভাংগার মতো কুলাংগার দুনিয়াতে আর আসবে না এবং পুর্বে কেউ আসেনি এবং আরো কিছু কথা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি ০১ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৭:০০:০৮ সন্ধ্যা



কলঙ্কিত নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্য নতুন কিছু নয়। তাদের মেরুদণ্ড নেই সে সমালোচনাও হয়েছে বারবার। এক নির্বাচন কমিশনার দাঁড়িয়ে থেকে একবার দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন তার মেরুদণ্ড রয়েছে। কিন্তু কমিশনের মেরুদণ্ড কি অবস্থায় রয়েছে তা আরও একবার দেখা গেলো গতকাল।

২৩৪টি পৌরসভার এ নির্বাচনের আগের রাতেও যথারীতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্বাচন হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। ভোটারদের ভোটদানের জন্যও আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এরআগে মোবাইল বার্তা দিয়ে জনগণকে নির্বাচন কমিশন মনে করিয়ে দিয়েছিল- ‘ভোট আপনার অধিকার’। সে নিয়ে অবশ্য অনেকের মনেই কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে হাস্য কৌতুক করে লিখেছিলেন- কি আশ্চর্য কথা। ভোট এ দেশে এখনও অধিকার। আর কাল নির্বাচনের আগে একজন একটি বিজ্ঞাপনের অনুকরণে লিখেন, ‘ভাতিজা, চাচাকে জিজ্ঞেস করে আমি যা দেখি তুমি কি তা দেখো। চাচা বলেন, তুমি কি দেখো? ভাতিজা বলেন, আমি দেখি একপক্ষ সমানে সিল মারছে, আরেক পক্ষ অভিযোগের পাহাড় গড়ছে। আচ্ছা আঙ্কেল তুমি কি দেখো? আমি তো দেখি অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট, সবাই আইন মেনে যতো খুশি ভোট দিচ্ছে।’ কৌতুক তো কৌতুকই। বাস্তবের অবস্থা কি? নিশ্চিতভাবেই নির্বাচন কমিশন গতকালের ভোটে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া তেমন কোন ত্রুটি পায়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মনের অবস্থা কি তা অবশ্য বলা দুরূহ। এদিন তিনি আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হননি।

অনেক পর্যবেক্ষক অবশ্য বলছেন, নির্বাচন কমিশন অসহায়। তাদের আসলে কিছু করারও ছিল না। একজন নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশও করেছিলেন। সে নিয়ে তার সমালোচনা হলেও তিনি আসলে হয়তো সত্য কথাই বলেছেন। পুরো পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে শোকজ করলেও সে শোকজে কোন কাজ হয়নি। পুরো নির্বাচনটিই একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই পরিচালনা করেছে। বিজিবি মোতায়েন করলেও পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হয়নি। এইসব বাহিনীর ওপর নির্বাচন কমিশনের আসলে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ ছিল সে প্রশ্ন রয়েই গেছে। ভোটের দিনে নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ত ভূমিকার দিকেই সমালোচকরা বেশি দৃষ্টিপাত করছেন। ভোটের আগেই ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্র দখল আর জাল ভোটের উৎসবের খবর মিডিয়ায় দিনভর প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকেও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে কমিশন ভোটের দিনে এসব ক্ষেত্রে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তারা হয়তো, বসে বসে এসব দৃশ্য দেখেছে।

স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বাংলাদেশে বহু আলোচনা হয়েছে। অনেক তাত্ত্বিকই বলে আসছিলেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করলেই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ছিল একতরফা। সে নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কিছু করারও প্রয়োজন ছিল না। যদিও ইতিহাসের দায়ভার এড়ানোর সুযোগ কমিশনের নেই। এরপর দীর্ঘ ছুটিতে গিয়েছিলেন কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ। সে সময় তার বিবেকতাড়িত হওয়ার নানা গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল। পরে অবশ্য জানা যায়, তা সত্য নয়। স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা কতদূর তা ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ই অনেকটা খোলাসা হয়ে গিয়েছিল। যতটুকু বুঝার বাকি ছিল তা গতকাল বুঝা হয়ে গেছে। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন এখনও দূর আকাশের তারা।

বিষয়: বিবিধ

১০০৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

355933
০১ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৪৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মানুষের লজ্জা থাকে। উনারা সেই পর্যায় অতিক্রম করে গিয়েছেন।
০১ জানুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৫৪
295581
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : লজ্জার ধাপ অতিক্রম করেছে তাই বলেছেন ভাই
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহহা
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
355940
০১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৫৬
শেখের পোলা লিখেছেন : স্বাধীন দেশে সকলেই স্বাধীন৷ তাথেকে আপনি কেন্দ্র দখলকারী জালভোটার এমনকি পুলিশ ভোটারকে বাদ দেবেন কেন? ওরাও যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে৷ আর নির্বাচন কমিশনতো ডবল স্বাধীন৷ জাতীয় স্বাধীন আবার সাংবিধানিক স্বাধীন৷ তাতে হস্তক্ষেপ না করাই ভাল৷ এর পর আর কাউকে লাগবেনা৷ওরা অফিসে বসেই সব করে দেবে৷জনগনের খরচ হয়রানি বন্ধ হবে৷ধন্যবাদ৷
০১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:০০
295582
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File