এক পতিতার গল্প

লিখেছেন লিখেছেন সত্যকণ্ঠ ০৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৩৭:৩৮ দুপুর



পথে লোকজনের

ধাক্কা খেতে খেতে এগোচ্ছে লাজুক মেয়েটা।

সামনের লোকটা শক্ত করে তার

হাতটা ধরে রেখেছে।পশুর মত

টেনে নিয়ে চলছে অবিরত।এত জোরে টানার

ফলে হাতের কাঁচের চুঁড়ি পর্যন্ত ভেঙ্গে গেল।

মেয়েটার পরণে লাল শাড়ি।চুলে বড় বড় ফিতে।

পায়ে একটা নুপুর আছে।আছে আলতাও।

হাতে মেহেদীর রঙ শুকিয়ে যায় নি।নতুন

বিয়ে হয়েছে বলে মনে হয় ! কার সাথে ?

সামনের মানুষটা ?

এত তাড়া কিসের তার ?

মেয়েটার নাম অপলা।অপলাদের বাড়ি প্রত্যন্ত

গ্রামে।বিয়ে হওয়া মানুষটার নাম মানিক

মিয়া।যদিও মানিক মিয়া তার আসল নাম না।

তার বাপ শখ করে নাম রেখেছিলো রাজা।

কিন্তু ছেলেটিকে ফেরীঘাটের এপারের

টানবাজারে [পতিতালয়ে] সবাই

রাজা চোরা বলে ডাকে।

রাজা দেখতে শুনতে ভালো বলেই

হয়তো ফেরীঘাটের এই নোংরা পল্লীতে অনেক

মেয়ের যোগান দিয়েছে।গ্রাম

থেকে ভুলিয়ে ভালিয়ে যৌতুক

নিয়ে নামেমাত্র

বিয়ে করে এখানে বেঁচে দেয়।

ছুটে যায় নতুন শরীরে পশুর কামড় বসাতে।

অপলাকে একটা হোটেল রুমে নিয়ে যায়।

মেয়েটা বড় বড় চোখে তাকিয়ে লজ্জা পায়।

ম্যানেজার আর হোটেলের লোকজন আগ্রহ

নিয়ে তাকিয়ে থাকে।

একজন কটুক্তি করেই বলেঃ আজ

রাতে এটাকে নিয়ে বেশ জমবে ।

ছল্যাত্ করে ওঠে অপলার ভেতরটা।

মেয়েরা বিপদের আগমনে টের পায়।অপলাও

হয়তো পায়।অপলা দশম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছে।

বিয়ে দিতে পারছিলো না।

এলাকায় নতুন এসেছিলো মানিক মিয়া।

কিভাবে কিভাবে মাতব্বরকে দিয়ে তার

বাপকে পটিয়ে ফেলেছিলো অপলা জানে না।

মানিক মাতব্বরকে পাঁচশ টাকা ধরিয়ে দিয়েই

কাজ সেরেছে।অপলার বাবা শেষ সম্বল ভ্যান

বিক্রি করেছিলো পনেরশো টাকায়।কিন্তু

মাতব্বরের

বুদ্ধিতে ভিটেবাড়ি বিক্রি করে মোট

সাড়ে নয় হাজার টাকা দিয়েছিলো ঢাকার

অপিসের পিয়ন সেজে আসা মানিককে।ছলছল

নেত্রে অনেক

আশা দিয়ে অপলাকে নিয়ে গ্রাম

ছেড়েছিলো মানিক।

আর মাতব্বর ভালো ছেলে হাত

ছাড়া না করতে বলে বিশ হাজার টাকার

জমি অল্পদামে পেয়ে গেছে ।

একটি মেয়ের সম্ভ্রম ও দুটি পশুর

বানিজ্যে বোকা হয়েছিলো সহজসরল পিতা।

অপলা চোখে বড় করে কাজল

লাগিয়ে বসে আছে।মানিক মিয়া মদ

খেয়ে মাতাল হয়ে ঘরে ঢোকে।

বলে ওঠেঃ ঐ

মাগী এখনো শাড়ি পড়ে বসে আছিস ?

খুলে ফেল ।

দরজাটা খোলা ।

বাইরে দাঁড়িয়ে হাসছে লোকজন।মানিক

নামের আড়ালে রাজা নামের

পশুটি হেসে ওঠে।

জোর করে বুক থেকে কাপড় নামিয়ে দেয়।

অমনি বাইরে নিলামের মত ডাক পড়তে থাকে।

কয়েকজন দাম কষাকষি করতে থাকে।

রাজা চিত্কার করেঃ এই খাসা মাগী মাত্র

তেরশ ? তোরা কি নংপুশক ?

অপলা আঁচল টেনে দিতে গিয়েছিলো।কিন্তু

রাজা টান দিয়ে খুলে নেয়।

ছিঁড়ে যাবে বলে অপলা প্রতিবাদ করে না।

মায়ের দেয়া শেষ স্মৃতি হারানোর সাহস

করে না।

প্রথমে যে লোকটি ডোকে তাকে দেখেই

অপলা ভয় পেয়ে কাঁদতে থাকে।কিন্তু লোকটির

চিন্তা কিভাবে টাকা উসুল করবে !

অপলার মুখে গুঁজে দেয়া হয় কাপড়।

চলে নির্মম অত্যাচার।

একের পর এক পশুর অত্যাচার।

গোছল করিয়ে দেয় এক মহিলা।বলেঃ দেখ

যদি কাইস্টোমারগো খাতির করিছ কষ্ট কম

অইবো।

অপলা কেবল হাঁ করে শোনে।

প্রথম দুসপ্তাহ হোটেলেই রাখা হয় । অনেক

ভদ্রলোকের দেখা মেলে সেখানে।পকেটের

মানিব্যাগে স্ত্রী কন্যার ছবি থাকে।

তারপর ঠাঁই মেলে নিষিদ্ধপল্লীতে।নতুন

বলে অপলার দাম চড়া।খুপড়ির আশে পাশে অন্য

ঘরেও মেয়ে আছে।

ওরা জোরে জোরে হাসে।

সিগারেট ফুঁকে।

ছ মাসের মাথায় অপলার চাহিদা কমে যায়।

রাজা আরেকজনকে নিয়ে এসেছে।

তাকে নিয়ে চলে টানবাজারের

নোংরা খেলা।

গ্রামের কে যেন অপলার

বাবাকে বলেছিলো তার মেয়ে পতিতা।খোঁজ

নিয়েই মাতব্বরের কাছে গিয়েছিলো।

সে এড়িয়ে গিয়ে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিলো ।

বিচার দিতে গিয়েছিলো থানায়।কিন্তু

থানায় বিচার নেয় নি।বরং পাগল

বলে তাড়িয়েছে ।

বাপটা ঐ ফেরীঘাটে অপলার নাম ধরে গভীর

রাত্রে চিত্কার করে ডাকে।

আর অপলা ?

হয়তো টাকার বিনিময়ে মাছের মত অপলক

দৃষ্টিতে কারো কাছে মেলে ধরে নিজের

শরীর।

বুকে গালে হাজার পশুর কামড়ের দাগ।

তবু গভীর রাত্রে অপলা মায়ের

দেয়া শাড়িটি বের করে।কিন্তু ছুঁয়ে দেখার

সাহস করে না ।

সমাজের চোখে সে পতিতা।সে অপবিত্র।অথচ

হাজার পুরুষ অপবিত্র এই পতিতাকে স্পর্শ করে।

তারপর রাতে স্ত্রীর

বুকে মাথা গুঁজে বলেঃ তুমি প্রথম ,

তুমি ছাড়া জীবনে কেউ আসেনি ।

স্ত্রী নিজেকে ধন্য মনে করে পবিত্র মহাপুরুষ

স্বামী পেয়ে।

সমাজের চোখে সে সুপুরুষ ও আদর্শ।

[আজ বাসে ফেরার পথ এক পাগলের প্রলাপ

থেকে মেয়ের পতিতা হবার গল্প শুনেছিলাম।

হ্যাঁ লোকটিই অপলার বাবা]

[[ সচেতনতা বাড়াতে এটি লিখছি । অনেক

আধুনিক পরিবারেও আছে এমন পুরুষ । তাই

শেয়ার করুন পোস্টটি , যেন আপনার

আশেপাশের কেউ শিকার না হয় । ]

বিষয়: বিবিধ

২৩৭৩০ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

252293
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
সত্য কন্ঠ লিখেছেন : ভাইজান সত্য কন্ঠ নামে আমি একটি আইডি খুলে আজ ৫ মাস থেকে ব্লগিং করছি,বিধায় আপনার এই নামে আইডি খোলা কতটুকু সমিচিন হলো ভেবে দেখবেন।
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১৯
196418
সত্যকণ্ঠ লিখেছেন : ভাই ! আমি যখন এই নামে খুলি তখন সত্যকণ্ঠ নামে কাউকে পাই নি । sorry
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
196420
সত্য কন্ঠ লিখেছেন : কিন্তু আমার পাতায় ঢুকে দেখুন আমি কতদিন থেকে আছি।
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৮
196423
সত্যকণ্ঠ লিখেছেন : এখন আমি কি করতে পারি ?
০৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৬
196448
হতভাগা লিখেছেন : একজন সত্যকন্ঠ আরেকজন সত্য কন্ঠ ।

সমস্যা কি ? একজনের নামে কোন স্পেস নাই , আরেকজনের নামের মাঝে স্পেস আছে । ঠিকই তো আছে । দুইজনই ভিন্ন।
০৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৬
196474
সত্যকণ্ঠ লিখেছেন : ভাই ব্যাপার টা বুঝার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
252294
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:০৫
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৪
196424
সত্যকণ্ঠ লিখেছেন : phbbbbt
252305
০৮ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৮
ইমরান ভাই লিখেছেন : মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্শন করছি। এরখম নোংড়া ভাষার পোস্টকে সরিয়ে ফেলার জন্য।

অথবা ব্লগার আপনার লেখাটি সরিয়ে নিন। লেখার ভাষাগতদিক খুবই খারাপ।
০৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
196473
সত্যকণ্ঠ লিখেছেন : ভাই ভাষা কি খুব খারাপ হয়েছে ? আসলে আপনার কোন লেখাটা নোংরা মনে হয়েছে ? ঐ লেখার বদলে কি দেওয়া যেতে পারে । প্লিজ আমাকে ঐ ভাষা টা বলে বাধিত করবেন
252342
০৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৫
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা লিখেছেন : language is something dare, but the story or history is very essential.

we have to see at the case and view not to language and word.

thanxx
০৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৩
196469
সত্যকণ্ঠ লিখেছেন : আমার লেখাটা বুঝার জন্য ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File