গল্প ------ লেইজার পিরিয়ডে দেখা সেই পরী

লিখেছেন লিখেছেন কাজী লোকমান হোসেন ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:১৩:৪৩ বিকাল

লেইজার পিরিয়ডে যখন সবাই মাঠে খেলা নিয়ে ব্যাস্ত ঠিক তখনই রুপম বসে বসে সিউর সাকসেস পড়তেছে , রুপম এস এস সি ক্যান্ডিডেট , তাই আলাদা পড়ার চাপ , হঠাৎ দরজায় নক ! ভাইয়া আসতে পারি ? হুম আসো , ভাইয়া পানি আছে ? হুম ওখানে আছে খেয়ে নাও , রুপমের বইয়ের দিকে মনোযোগ , হঠাৎ চোখ পড়লো পরীর দিকে , তাকাতেই হৃদয়ের স্পন্দন বেড়ে গেলো রুপমের , এই রকম রূপবতী মেয়ে তাদের স্কুলে অথচ সে জানেনা , ব্যাস মুহূর্তে প্রেমে পড়া , পরী চলে গেলো এদিকে রুপম খাঁচায় বন্ধি পাখির ন্যায় চটপট করতে লাগলো , বই রেখে বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা , সবাই লাঞ্চ করার জন্য বাড়িতে গেছে , তখন রুপমের জন্য এক মিনিট এক ঘণ্টার মত মনে হল , হঠাৎ অভি এসে হাজীর , অভিকে বলবে কিনা রুপম বুজতে পারছেনা , এই সালা চিট করতে পারে তাই , কিন্তু তার যে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে , দোস্ত ঐ মেয়েটাকে ছিনস ? কোন মেয়েটা ? অভির প্রশ্ন , আরে একটু আগে যে পানি খেয়ে গেলো , আরে সালা মাত্র আসলাম লাঞ্চ করে ক্লান্ত গ্যাং গ্যাং করিস না বিশ্রাম নিতে দে , হিসাব বিজ্ঞানের অংকটা বাকী আজকে কপালে শনি আছে সেই চিন্তায় মাথা হ্যাং তুই আসস মেয়ে নিয়ে , যতসব ফাজলামো দোস্ত দোস্ত হেল্প করস না , প্রথম প্রেমে পড়লাম , কি ! তুই প্রেমে পড়ছত ! হে হে হে তো শুনি কে সেই ভাগ্যবতী বালিকা ? আরে সালা নাম জানলে তোরে এত প্রশ্ন করতাম ? হে হে সাহেব প্রেমে পড়েছেন কিন্তু তেনার নাম জানেন না অভি হুমড়ি খেয়ে হেসে উঠলো , ওহ দোস্ত মনে পড়েছে , একদিন আমরা বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাব রুমে বসে আছি এই মেয়েটা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল , পরে রাফির কাছ থেকে জানতে পাড়লাম তার নাম পরি , রুপমের কথা শুনে অভি এক মুহূর্তে বুজে গেল কে সেই পরী , তার চাচাতো বোন কমার্সে পড়ে , আর প্রাইভেট পড়ে অভির সাথে , অভি রুপমকে বলে দোস্ত চিন্তার কোন কারন নেই হয়ে গেছে , যাই হোক সবাই একে একে রুমে আসলো , অভি আর রুপমের ঘেঁষাঘেঁষি দেখে সবাই অবাক , এইতো দুইদিন আগে এই দুইজন মারামারি করছে এখন দেখি সেইরাম পীরিত ব্যাপার কি সবার একই প্রশ্ন , লেইজার পিরিয়ড শেষে সবাই ক্লাসে গেলেও রুপম আর অভি অনুপস্থিত , স্যার এসে তাদের কথা জিজ্ঞেস করলে কেউ দেখেনি বলে দেয় , অভি আর রুপম ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পরীদের বাড়ির দিকে যাওয়া পুলের উপর বসে অপেক্ষা করতে লাগলো , যাই হোক সেদিন দেখা করতে পারেনি কারন একই রাস্তায় তাদের দুই শিক্ষকের বাড়ি স্কুল ছুটি হওয়ার পর পরীরা স্যারের সামনে দিয়ে হাঁটতেছে তাই , স্কুল ফাঁকি দিয়েছে এখন স্যার দেখলে অবস্থা খারাপ তাই তারা পালিয়ে গেলো , সন্ধ্যায় সবাই রুমে বসে বসে পড়ছে আর রুপম তার পপি গাইডের পাতায় পাতায় পরীর নাম লিখে যাচ্ছে , পিছন থেকে স্যার এসে , কিরে আজকে ক্লাস ফাঁকি দিলি ক্যান আর বইতে এইরকম পরী লিখস ক্যান , তোরে পরী ধরছে নাকি ? স্যার পেট ব্যাথা করতেছিল তাই বাড়িতে গিয়েছিলাম , কিরে অভি তোরও কি পেট ব্যাথা ছিল ? জী স্যার , অভির কথা শুনে স্যারের সন্দেহ লাগলো , তাই ফোনটা হাতে নিয়ে দুই জনের বাড়িতে ফোন করে কনফ্রাম হলেন তেনারা কেউই বাড়ি যান নি , হাতের কাছে থাকা বেত দিয়ে শুরু করে দিলেন টর্চার , স্যারের টর্চারে বিন্দুমাত্র যেন ব্যাথা নেই রুপমের তার মনে শুধু পরী আর পরী , এই দিকে অভির অবস্থা খারাপ , সালার বন্ধুর জন্য আজকে এত মার খাচ্ছি মনে মনে রুপম কে অভিশাপ দিলো অভি ,

তারপর রুপম অভির সাথে মিশতে থাকে , পরের দিন সকালে অভি প্রাইভেট পড়ার সময় পরীর চাচাতো বোন রিয়ার কাছ থেকে একান্তে কিছু কথা বলার জন্য অনুমতি চায় , রিয়া বলে কোথায় আসতে হবে তখন অভি রুপমকে কোন জায়গায় কথা বলবে জিজ্ঞেস করলে রুপম বলে দেবী ঘরের পাশে আয় , সেখানে গিয়ে অভি যখন রিয়াকে পুরো বিষয় গুলো বলে তখন রিয়া কিঞ্চিৎ বিভ্রত বোধ করে , কারন যে রুপমকে সে চিনে , এই টাইপের ছেলে রুপম না বিশ্বাস করতে পারেনি , পরে অভি রুপমকে নিজ মুখে বলার অনুরোধ করলে রুপক লাজুক কণ্ঠে অভির সাথে সম্মতি জানায় , রিয়া বলল আসলে পরী রাজী হবে কিনা আমি জানিনা তবে শুনেছি তার কোথাও বিয়ে ঠিক করা আছে , আমি চেষ্টা করবো , পরে যেই যার কাজে চলে গেলো , রুপম দেবী ঘরের কোনায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে পরীকে দেখার জন্য , ক্লাস শুরু হওয়ার আধাঘণ্টা আগে পরী আসতেছে দেখে রুপম লাজুক চেহারায় কিছু একটা বলতে গিয়ে না বলে ক্লাসে চলে গেলো , ঐ দিনও সে রুমে বসে বসে সিউর সাকসেস পড়তেছে আর সেই আগের কণ্ঠ ভাইয়া আসতে পারি ? হুম আসো , ভাইয়া পানি খাবো , ওখানে আছে খেয়ে নাও , রুপমের মনে প্রশ্ন জাগল রিয়া বলে দেয় নি তো ? আজকে পরীকে অন্যরকম সুন্দর দেখাচ্ছে সাদা থ্রি পিচ ব্লু কালারের ওড়না জড়িয়ে আছে , মনে হয় এক বাস্তব পরী , যাই হোক রুপমের ভাবনা শেষে কিছু একটা বলতে যাবে বলে সামনে তাকিয়ে দেখে পরী নেই , ওহ সিট বলে বইটা রেখে নিজেকে অভিশাপ দিতে লাগলো , পরে অভি আসলো , দোস্ত আজকেও একই ঘটনা সেই পানি খাওয়া , সালা আমরা থাকতে দেখি কেউ ভুলেও আসেনা আর তুই একা থাকলে তোর পরী এসে হাজীর হয় বলে হেসে দিলো অভি , দোস্ত দেখ আমি কিন্তু সিরিয়াস এই মেয়ের একশো জায়গায় বিয়ে ঠিক হলেও এর সাথে প্রেম করবো , তুই তাদের ঘরের নাম্বারের ব্যাবস্থা কর বলেই রুপম গান গাইতে শুরু করলো , কত যে কথা মনেরই কোনে হয়নি তোমাকে আজো শুনানো , গেয়ে যারে আমারই গান .................................।।অভিও সূর ধরল , অভিও প্রেম করে অনেক দূরে একটি মেয়ের সাথে নাম প্রমি , তাদের আত্মীয় , কিন্তু অভি হিন্দু বলে তাদের প্রেম বেশী দূর যাবেনা সেটা অভি ভালো করে যানে , কারন হিন্দুদের আত্মীয়ের মাঝে আত্মীয় করা ধর্মীয় ভাবে নিষেধ , মাঝে টেলিফোনে গান শুনায় প্রমিকে ,ছেলেটা ভালো গায়ক বটে , এইতো রাতে ফোন দিলে প্রমি গান শুনার ভায়না ধরে , তখন অভি গাইতে শুরু করলো , পৃথিবীর যত সুখ যত ভালোবাসা, সবই যে তোমায় দেবো একটাই আশা , তুমি ভুলে যেওনা আমাকে , আমি ভালোবাসি ভালোবাসি প্রমিকে .........।। ব্যাস প্রমিও শান্তি , যাই হোক অভি আর রুপমের এমন মিলামেশা আর পুশুর পুশুর আলাপ স্যার সন্দেহের চোখে দেখলেন , তাই রুহান কে জিজ্ঞেস করেন ব্যাপার কি , আজকাল দেখি তেনারা অনেক বন্ধুময় ? রুহান বলে স্যার আমি জানিনা , স্যার ও কিন্তু কম সেয়ানা না রাতে যখন সবাই শয়তানী করে তখন পানি মারতে থাকে , ঐ কোন রকম উস্কানি ছাড়াই পানি মেরে সবার ঘুম হারাম করে দিলেন , এদিকে রুপম পরীদের নাম্বারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠলো , হঠাৎ মাহাবুব ভাই তাদের রুমে প্রবেশ করলেন , মাহাবুব ভাই রুপমদের চেয়ে সিনিয়র কিন্তু ভাগ্যের কাছে পরাজিত হয়ে ৩ বার টেস্ট পরিক্ষায় ফেল করে রুপমদের সাথে ক্যান্ডিডেট , মাহাবুব ভাই একটু বন্ধুপ্রিয় তাই রুপমের সাথে তার সম্পর্ক আগে থেকে , রুপম মাহাবুব ভাইকে পুরো বিষয় বলার পর , মাহাবুব ভাই পরী তার দূর সম্পর্কের খালাতো বোন বলে রুপম কে নাম্বার দেওয়ার কথা বলেন , কিন্তু শর্ত মোতাবেক , শর্ত হচ্ছে মাহাবুব ভাই পছন্দ করেন তৃনাকে , তৃনার সাথে রুপমের কথা হয় সেটা মাহাবুব ভাই দেখেছেন , তাই তিনি এসেছেন তৃনার বাসার নাম্বারের জন্য , তখন রুপম চেষ্টা করে দেখবে বলে মাহাবুব ভাইকে আশ্বাস দেন .

পরের দিন মাহবুব ভাই আসলেন নাম্বার নিয়ে , নাম্বার দেওয়ার আগে তার পাওয়ানা টা তৃনার নাম্বার চেয়ে বসে , কিন্তু তৃণাদের মোবাইল ছিলোনা , এই কথা শুনার পরও তিনি রুপম কে নাম্বার দেন, কারন মাহবুব ভাই রুপম কে ছোট ভাইয়ের মত জানতেন , তাই নিজ স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নাম্বার দিয়ে দিলেন , ঐ দিন রিয়াও বলে দিলো পরীকে , পরী রুপমের কথা শুনে কিঞ্চিৎ বিভ্রত , কারন সেটা কল্পনাতীত , যাই হোক পরী বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করে রুপমের সাথে একান্তে কিছু কথা বলার জন্য রিয়াকে বলে , রিয়া এসে বিষয়টা অভি কে বলে , অভি রুপমকে দেখা করার কথা বললে রুপম লাজুক কণ্ঠে বলে কোথায় দেখা করতে হবে , অভি বলল পুলের কাছে , সেই দিন লেইজার পিরিয়ডের পর রুপম যখন স্কুলের গেট অতিক্রম করবে এমন সময় স্কুলের দোতলা থেকে পরীর বান্ধুবিরা রুপম কে উদ্দেশ্য করে পরী পরী বলতে লাগলো , রুপম উপরে নজর দেওয়ার আগেই ভোঁ দোড় দিয়ে চলে গেলো , লজ্জা পেয়েছে তাই ,

সেই দিন আর দেখা হয়নাই , রাতে রুপম পরীদের নাম্বারে ফোন দিয়ে রুপম কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু পরীর মা জানে তার মেয়ে রূপবতী তাই কনট্রোলে রাখার নায় মোবাইল নিজের কাছেই রাখেন , ঐ দিন রুপমের বার বার ফোন পেয়ে পরীর মা ক্ষেপে গেলেন এই ভাবে , ঐ বেটা কে তুই বার বার ফোন করতাচিস , তোর বাড়ি কই । রুপম বলে বাড়ি কিনবেন নাকি ? না বাড়ি গিয়ে তোর আম্মুকে জিজ্ঞেস করবো মেয়েদের ফোন দেওয়ার জন্য কি তোকে ফোন কিনে দিছে , মোবাইলে ব্যার্থ হয়ে রুপম পরের দিন স্কুলের সামনে থাকা পুকুরে গোসল করতেছে , ক্লাস শুরু হয়ার কয়েক মিনিট আগে পরীরা এসে হাজীর , পরীদের দেখে রুপম একটু ভাব নিয়ে দিলো পুকুরে জাম্প , পরী একটু হেসে স্কুলের ভীতর চলে গেল , অবশেষে সেই বিকেলে স্কুল ছুটি হওয়ার পর আসলো সেই শ্বাসরুদ্ধ কর সময় , দেবী ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে রুপম ও তার সহপাঠী মহল অপেক্ষা করতেছিল , পরী এসে একান্তে ডাক দেয় রুপম কে , তারপর, ভাইয়া প্লীজ আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে , ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করবেন , ভাইয়া আমি আপনাকে সব সময় সম্মানের চোখে দেখেছি , ভাইয়া বয়সের বিবেচনা করে হলেও আমাকে ভুলে যান , রুপম কোন কথা না বলে প্রস্থান করলো , তার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো , কে যেন কলিজায় ধারালো চাকু দিয়ে আগাত করে যাচ্ছে , অভি সান্তনা দিয়েও ব্যার্থ , যাই হোক দুই দিন প্রায় বাকরুদ্ধ হয়েই ছিল রুপম , কতটা ভালবাসলে একটা ছেলে এতোটা কষ্ট পায় , সেটা রুপম কে দেখলেই বুজা যায় , পরে অনেক দিন পর পরীদের মোবাইলে ফোন করে কথা বলতে গিয়েও ব্যার্থ হয়ে নিজেকে কনট্রোল করে রুপম , পরে একদিন এলাকার চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলো রুপম , রাস্তায় চোখ রাখতেই পরীকে দেখে চোখ মুখ ঝাপসা হয়ে গেল , দোকান থেকে বেরিয়ে রুপম রাস্তায় যাওয়ার পর সেই একই কণ্ঠে ভাইয়া ভালো আছেন ? হুম ভালো , তুমি কেমন আছো ? ভালো , শেষ বাক্য বলেই পরী আগে বাড়ল , তারপর একদিন রুপম বাজারে দাঁড়িয়ে আছে পরিচিত এক ভিডিও রেকর্ডার তাকে পরীদের বাড়ির নাম বলে কোন দিকে জিজ্ঞেস করলে রুপম একজন রিকশাওয়ালাকে তাদের বাড়ির নাম বলে তাকে পোঁছে দিতে বলে , কিন্তু রুপম জানেনা ঐ ভিডিও রেকর্ড যে তার আবেগময় ভালোবাসার বিয়ের ছিল , তারপর রুপম যখন শুনলো ঐ দিন পরীর বিয়ে তখন নিচ্চুপ বাড়ির পথে পা বাড়ালেন , তারপর ৬ বছর কেটে গেলো , কিন্তু এখনো রুপমের চোখে সেই লেইজার পিরিয়ডে দেখা মেয়েটি পরী হয়েই ভাসে, এখনো সৃতি গুলো রুপমের মনে কিঞ্চিৎ আবেগের সঞ্চার হয় ,

--------------------------------সমাপ্ত -----------------------------------

বিষয়: সাহিত্য

১১৮১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

266504
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৪২
লোকমান লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫১
210233
কাজী লোকমান হোসেন লিখেছেন : মিতা আপনাকেও ধন্যবাদ [removed]void(0);
266578
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:২৭
মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন : ভালো লাগলো, তবে এই রকম ভালোবাসায় জুতা মারি।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:২২
210334
কাজী লোকমান হোসেন লিখেছেন : ধন্যবাদ .।.।.।.।.।.।.।.।।
তবে এই রকম ভালোবাসায় জুতা মারি।Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File