শামিমের পাশে হাসিনাঃ কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একি দৃষ্টান্ত !

লিখেছেন লিখেছেন হাসনাতের ব্লগ ০৫ জুন, ২০১৪, ১১:০০:০২ রাত

।। ব্যারিস্টার হাসনাত তালুকদার।।

নারায়নগঞ্জের ত্রাস শামিম উসমানের কান্নাজরিত কন্ঠে, আবেগ আপ্লুত বক্তৃতা শুনলাম। তারা গত তিন পুরুষ ধরে কিভাবে আওয়ামিলীগ তথা শেখ মুজিবকে বুকে আলগে রেখেছে সেটা জানতে পারলাম। জানলাম উসমান সাহেবরা মায়ের গলার গহনা, স্ত্রীর গহনা বিক্রয় করে আওয়ামিলীগ চালিয়েছে। আবার এটাও জানাগেল দেশের অন্যতম ধনী ব্যাক্তি খান সাহেবের নাতি এক সময় অর্থ কষ্টে মাত্র ৮০০ টাকার অভাবে পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করতে পারেন নাই। মানুষ যেখানে একযুগ পুরাতন বউয়ের মহব্ব্ত ছাড়তে পারেনা সেখানে খান সাহেবর বড় নাতি নূতন বউয়ের মায়া ছেড়ে ভারত নির্বাসনে গেলেন তাদের রাজনৈতিক পিতা হত্যার বদলা নিতে। জানাগেল, শামিম যখন বোমা হামলায় আহত, রক্তস্নাত, তখনও সে নিজের জীবনের কথা না ভেবে, শঙ্কিত হয়েছে আপা হাসিনার জীবন নাসের সম্ভাবনায়।

প্রতি উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার অন্তরের অন্তস্থল থেকে উসমান ভাইদের কৃত কর্মের কথা শ্রদ্বা ভরে স্মরন করেছেন। প্রয়োজনে উসমানদের পেছনে দাড়াবার কঠিন প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছেন। শামিম উসমান এবং শেখ হাসিনার সংসদে প্রদত্ব ভাষনে দেশের আপামর জনসাধারন বুঝতে পেরেছে উসমান পরিবার আর শেখ পরিবারের সম্পর্ক রাজনীতির গন্ডি পেরিয়ে পারিবারিক পর্যায়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এহেন সম্পর্কের খাতিরে শেখ হাসিনা উসমান সাহেবের আপা হিসাবে বিপদে তার পাশে দাড়াবেন এটাতো স্বাভাবিক। তিনি চাইলে উসমান সাহেবকে ভোটার বিহীন সংসদ কতৃক গঠিত মন্ত্রী পরিষদে ঠাই দিতে পারেন, দলের কোন বড় পোষ্টে বসিয়ে দিতে পারেন, কিংবা ব্যাবসা-ঠিকাদারি সব কিছু দিয়ে হলেও উসমান সাহেবদের অর্থ কষ্ট দূর করতে পারেন। কিন্তু বৈধ হোক আর অবৈধই হোক শেখ হাসিনা ভুলে যেতে পারেননা, তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তার যেমন ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে, ঠিক তেমনি কিছু সীমাবদ্ধতা ও রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুঝতে হবে শামিম উসমান তার অতি আদরের ছোট ভাইটি হলেও দেশ বাসীর চোখে সে একজন গডফাদার। এই শামিম উসমান হচ্ছে সেই শামিম উসমান যার ইমেজ নারায়নগঞ্জ বাসীর কাছে এক মূর্তিমান আতঙ্ক, যাকে সবাই জানে একজন ম্যাসলম্যান হিসাবে। নারায়নগঞ্জের সকল বৈধ-অবৈধ ব্যাবসায় উসমানদের নামে চাদাঁবাজী হয়, মিডিয়াতে তিনি যে ভাষায় কথা বলেন, যে কোন মানুষ বুঝতে পারে গনতন্ত্র বা আইনের শাসনে তার নূন্যতম শ্রদ্ধাবোধ নেই। গত বিশ বৎসরে নারায়নগঞ্জে যতগুলো হত্যাকান্ড ঘটেছে, সরাসরি বা ঘুড়েফিরে তার প্রতিটির পেছনেই কোন না কোন ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই আদরের ভাইটির নাম চলে এসেছে। হালের তপ্ত ইস্যু নজরুল হত্যাকান্ডের পেছনেও মানুষের সন্দেহের তীর তারই দিকে। সেই সন্দেহ আরো ঘনিভূত হয়েছে নূর হোসেনের সাথে তার গোপন কথোপকথন প্রকাশ হবার পর। নূর হোসেনের অবৈধ সম্রাজ্য যে তারই প্রচ্ছন্ন মদদে পরিচালিত হয়ে আসছিল, এটি এখন খুবই পরিষ্কার। শামিম উসমান বলতেই এমন একটি কদাকার মুখ জনতার মানষ পটে ভেসে উঠে যে কিনা একজন হিংস্র গডফাদার, যার হাতে লেগে রয়েছে অসংখ্য নিরীহ মানুষের রক্ত, যার আয়েশি জীবনের ব্যায়ভারে অংশ রয়েছে অসংখ্য সাধারন মানুষ সম্পদ। আপা হিসাবে যতই ভালবাসেন সমস্যা নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এমন একজন গডফাদারের পেছনে দাড়াবার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন,তখন বিচারের শেষ আশ্রয় স্থল হারানো দেশবাসীর নির্বাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুঝোন আর নাই বুঝোন তার এমন সিদ্ধান্তে উসমানরা নিঃসন্দেহে আরো হিংস্র হয়ে উঠবেন, তকী-নজরুল-সরকারদের আত্মা কেয়ামত পর্যন্ত বিচারের আর্তনাদ করবে, তাদের নিকট আত্মীয়রা যতদিন বেচে থাকবেন দায়ী ব্যাক্তিদের অভিশাপ দিতে থাকবেন,উসমানরা অবৈধ ব্যাবসায় আরো প্রসার লাভ করবে,উসমানদের নামে যে চাদাঁবাজী হয়, সেটা স্থায়ী রুপ লাভ করবে। নারায়নগঞ্জের অর্ধ কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ট হবে এবং তারা কোন প্রকার বিচারের আশা না করে জালিমের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে নালিশ দিতে থাকবে। ভাইয়ের অভিসপ্ত কর্মের দায় কিন্তু আপাকেও ছুয়ে যাবে।

বিষয়: রাজনীতি

১৮৩০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

231268
০৬ জুন ২০১৪ সকাল ০৭:৫৭
হতভাগা লিখেছেন : হাসিনা যাকে ভ্যারিফাই করে অথেনটিকেট দিয়েছেন তার ব্যাপারে আর কারও কিছু বলা উচিত নয় । যেমন বলা উচিত নয় সায়মার শশুড়ের ব্যাপারেও ।
231336
০৬ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
নানা ভাই লিখেছেন : সে নিজে হইলো "গড মাদার"।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File