পরাশক্তির পথে বাংলাদেশ part:2 (আবারও কহিতেছি ইহা কোন ফান পুষ্ট নহে)

লিখেছেন লিখেছেন মহাজাগতিক শয়তান ১৫ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:০৮:৪৮ রাত





অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিঃ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসিবার পরবর্তি পদক্ষেপই হইলো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। ইহার জন্যই আমরা অপেক্ষা করিতেছিলাম সেই ব্রিটিশ শাসনের পর হইতে। আশা করা যাইতে পারে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পরেই ইহা অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু তাহার জন্য আমাদের কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ লওয়া হইতে হইবে। স্বরণ রাখিতে হইবে, ইহাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই কোন ভূল পদক্ষেপ অদুর ভবিষ্যতে প্রজাপতির প্রভাব (বাটারফ্লাই এফেক্ট) বিস্তারলাভ করিতে পারে। প্রথমেই আমাদের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলির উন্নয়নের রূপরেখা পর্যালোচনা করিতে হইবে। বিশেষত জাপান-কোরিয়া মালয়শিয়ার মতন দেশগুলির। দেখিব তাহারাদের উন্নয়নের প্রধান ধাপছিলো কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়। আমাদের কঠোর পরিশ্রম করিবার লক্ষ্যে আগাইয়া যাইতে হইবে। তরুণ-তরুণীগণকে নির্বিশেষে দেশ ও জাতির কল্যানে একাত্ম হইতে হইবে।

প্রথমত আমাদের সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নত করিতে হইবে। ইহার জন্য প্রতিটা বিভাগীয় শহরের সহিত হাইওয়ে দ্বারা সংযুক্ত করা আবশ্যক। দেশে সর্বনিম্ন দুইটি গভীর সমুদ্র বন্দর চালু করিতে হইবে। পণ্য বোঝাই ও রপ্তানীর সময়জট বা টাইমল্যাগ হ্রাস করিতে হইবে। প্রতিটা জেলায় জেলায় পোষাক শিল্প কারখানা স্থাপন করা হইবে ও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হইবে। বলা বাহুল্য, দেশীয় বিনিয়োগকারীগণ বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাইবেন। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাহাদের কর মওকুফ করিয়া দেয়া হইবে। যুক্তরাষ্ট্রের সহিত সুসম্পর্কের কারনে তাহাদের সহযোগীতায় পারমানবিক চুল্লি বসানো হইবে ও দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা হ্রাস করা হইবে। প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে সম্পদ বিনষ্ট না করিয়া তাহা সংশ্লেষণ করিয়া সার সহ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য উৎপন্ন করা হইবে। এইক্ষেত্রে দেশের প্রকৌশলবিদ্যায় পঠিত ছাত্রদের একাগ্রতা আবশ্যক। দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থার আমুল পরিবর্তন করা হইবে। প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর জোর দেয়া হইবে। বানিজ্য ও কলা বিভাগের শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করা হইবেনা কিন্তু তদুপরি প্রযুক্তিগত শিক্ষায় ডিপ্লোমাকে উৎসাহিত করা হইবে।দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র স্থাপণ করা হইবে। এবং শুধু তাই নহে, সেই গবেষণা যেন দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সামাঞ্জস্যাপূর্ণ ও দেশের সমৃদ্ধির কাজে লাগে তাহার নিশ্চয়তা প্রদান করিতে হইবে। ইতিহাসের ছাত্র-শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়া হইবে দেশের প্রাচীন ইতিহাস লইয়া আরও বিস্তারিত গবেষণার জন্য। বাংলাদেশী মিশ্র রক্তের গড়িমা প্রকাশের জন্যও তাহাদের নির্দেশ দেয়া হইবে। বাংলা ভাষা কেন বৈজ্ঞানিকভাবে সবথেকে সমৃদ্ধ ভাষা তাহা লইয়া বিশদ গবেষণার লাগিয়া ভাষাবিদদের উৎসাহিত করা হইবে।দেশে চায়নার মতন একসন্তান নীতি গ্রহণ করা হইবে। মেধাপাচার পরিহার করিবার লক্ষ্যে চাকুরী হইতে সমস্ত কোটা উঠাইয়া লওয়া হইবে, কিন্তু যাহারা বিদেশ হইতে উচ্চ শিক্ষা সমাপ্ত করিয়াছে তাহাদের বিশেষ সুবিধা প্রদানের অঙ্গিকারাবদ্ধ হইয়া সরকারী চাকুরীতে নিয়োগদেয়া হইবে। দেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের উচ্চ ফলনশীল ধান আবিস্কারের লক্ষ্যে তহবিল প্রদান করা হইবে। গণিতজ্ঞদের অপ্টিমাইজেশন তত্ত্ব এপ্ল্যাই কোথায় কোথায় করা যায় তাহা সনাক্ত করিবার লক্ষ্য প্রদান করা হইবে। সুদখোর ইউনুসের তত্ত্ব সরকার গ্রহণ করিবে কিন্তু অতিস্বল্প মাত্রায় সুদ লওয়া হইবে। খাদ্যে সয়ংসম্পুর্ণতার ওপর জোর দেয়া হইবে, তদুপরি খাদ্যাভাস পরিবর্তন করিতে হইবে, আর ইহার জন্য প্রচারণা চালাইতে হইবে। আমাদের সমুদ্র হইলো অসীম খাদ্যভান্ডার। তাই সীফুডের ওপর নজর দিতে হইবে আর পুষ্টি বিজ্ঞানীদের ইহা লইয়া কাজ করিবার নিমিত্তে গবেষণা চালাইয়া যাইবার আওবাহান জানানো হইবে। অধ্যাপক সিদ্দিকা-কবির সহ শ্রেষ্ঠ রাঁধুনি সকলে সীফুডের ওপর সুস্বাদু রেসিপি বানাইবার নির্দেশ দেয়া হইবে।

দেশের অর্থনীতির অন্যতম খাত হইলো প্রবাসী শ্রমিক ভাইদের দ্বারা। তাহাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষনের বিদ্যালয় জেলায় জেলায় স্থাপন করিতে হইবে। বিদেশী ভাষা রপ্ত করিবার কৌশল তাহাদের শিখাইতে হইবে। পররাষ্ট্রনীতি শক্তিশালী হওয়া দরুন মধ্য-প্রাচ্য সহ যে কোন দেশে শ্রমিকভাইদের কোন রকম অভিযোগ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হইবে ও দরকার হইলে সেই বৈদেশিক রাষ্ট্রের কূটনীতিককে ডাকিয়া মৃদু ভর্ৎসনা করা হইবে। টেক্সটাইল সহ মাঝারী শিল্পখাত হইতে রপ্তানীর অর্থ বিনিয়োগকারীদের ভারী শিল্পে পুণঃবিনিয়োগের জন্য উৎসাহ করা হইবে। এইদিকে সমগ্র বিশ্বে লেবার-কস্ট বাড়িয়া যাইবার কারনে এই সুযোগ আমাদের গ্রহণ করিতে হইবে। আমরা চায়নার থেকেও কম মুল্যে খেলনা হইতে শুরু করিয়া মাইক্রোচিপ, গাড়ী ও ক্রমান্বয়ে বিমান তৈরীর শিল্পকারখানা গড়িয়া তুলিব। আমেরিকা ও ইইউ এর সহিত সুসম্পর্কের কারনে আমাদের প্রধান রপ্তানীর অংশীদার হইবে তাহারাই। এমনদিন আসিবে, মঙ্গলে আমেরিকা মানুষ পাঠাইয়া উহাতে মার্কিন পতাকা স্থাপন করিলে সেই মার্কিন পতাকাটাও যেন আমাদের নির্মিত হয়। আমরা এইভাবে পাশ্চাত্য বিশ্বকে নিজেদের হাতের মুঠোয় লইয়া আসিব যা এখন চায়না করিতেছে। বলা বাহুল্য মার্কিন নৌঘাটির জন্য চায়না আমাদের প্রতি নাখোশ হইতে পারে। তাহা প্রশমনের লক্ষ্যে চায়না বাংলা ভাই-ভাই নামক প্রচারণা শিবির গঠন করিতে হইবে,দেশে মাও থট সেন্টার স্থাপন করা হইবে,আর দেশের বিড়ালগুলি ম্যাও ডাকের বদলে মাও যেন কোনভাবেই ডাকিয়া তাহার সন্মান বিনষ্ট না করে তাহার ওপর জোর দেয়া হইবে। চীনকে আস্বস্ত করা হইবে যে আমরা তাহাদিগের সুপ্রাচীন বন্ধু ও আমাদের দ্বারা তাহাদের কোন প্রকার ক্ষতি হইবেনা।

প্রসঙ্গত আমাদের এহেন উন্নতি দেখিয়া প্রতিবেশী দেশগুলির চোক্ষু টাটাইবে। কিন্তু তদুপরি আমরা তাহাদের সহিত ভাই-ভাই আমা-সহিত তোমার বিরোধ নাই আচরণ করিয়া যাইবো। তাহারা গোপনে কোন মতলব আটিলে তাহা ধুলিস্যাৎ করিয়া দেওয়ার লক্ষ্যে দেশে ডিজিএফআই ও এনএসআই হইতে চৌকস এজেন্ট বাছাই করিয়া কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স গঠন করা হইবে ও তাহারা সিআই এ হইতে উচ্চ প্রশিক্ষণ লাভ করিবে। আশা করা যাইতেছে আগামী বিশ বৎসর যদি আমাদের যুবক-যুবতীরা দেশের উন্নতির জন্য আপ্রান চেষ্টা করে তাহা হইলেই আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসিতে বাধ্য। এর পরের ইতিহার হইবে আমাদের আগ্রাসী সামরিক নীতির ইতিহাস। আমরা হইয়া উঠিব এক অটুট অর্থনৈতিক পরাশক্তি হইতে রাজ্যবিস্তারের পরাশক্তি।অর্থনৈতিক মুক্তির প্রধান কারন হইল, “আমরা পাকিস্তানী বা উত্তর কোরিয়ানদের মতন ছাগু বা বলদ সম্প্রদায়ভূক্ত নই যে ঘোষণা দিবঃ দরকার হইলে ঘাস খাইয়া বাচিয়া থাকিলেও পারমানবিক শক্তি অধিকারী হইতে হইবে!” এজন্যই আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের পর আগ্রাসী সামরিক নীতি গ্রহন করিব, আর তাহা পরের পর্বে আলোচনা করা হইবে।

next part:"পরাশক্তির পথে বাংলাদেশ - ৩ (সামরিক শক্তি)"

বিষয়: বিবিধ

১৬৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File