মা-বাবার প্রভাব..........

লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ০৮ মে, ২০১৪, ০৯:৪০:১৭ রাত



মা-বাবার সকল কাজের প্রভাব পড়ে

সন্তানের উপর। তাই ভালো-মন্দ কাজের আগে মা-বাবাকে ভাবতে হবে। নিজে ভালো-মন্দ যেমনই হই সন্তান যেন সৎ ও নিষ্ঠাবান হয় তা সকলেই চায়। কিন্তু চাইলেই তো হবে না, সেরূপে কাজও করতে হবে।

সন্তান যদি বাবাকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে আদায় করতে দেখে তাহলে সন্তানও মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে নামায আদায় করবে। জামাত ছুটলেও অন্তত পাঁচ ওয়াক্ত নামায ছুটবে না। কিন্তু বাবা যদি মাঝে মাঝে নামাযের জন্য মসজিদে যান তাহলে সন্তানের নিয়মিত মসজিদে যাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। কারণ নিয়মিত মসজিদে গিয়ে নামায পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সে নিজ থেকেই উপলব্ধি অর্জন করেনি। তেমনিভাবে সন্তান যদি মাকে জায়নামাযে দেখে, তাহলে অবুঝ বয়সেও সে মায়ের সাথে নামায পড়বে, সিজদা দিবে। মূলত সন্তান শিশুকাল থেকে মা-বাবাকে যেমন দেখবে নিজের জীবনকে তেমনই সাজাবে। সন্তানের স্বার্থে হলেও আমাকে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত জীবন কাটাতে হবে।

মা-বাবা ভাল-মন্দ বিবেচনা করেই কিছু একটা করলেন কিন্তু সন্তানের তো বিবেচনা শক্তি কম, ফলে প্রথম দেখায় তার কাছে যেমন মনে হবে সে তেমনভাবেই গ্রহণ করবে। বাছ-বিচার করার মেজাজ এখনও তার হয় নি। তাই সাবধান! অতি সাবধান!!

মা-বাবা ঘরে টিভি রেখেছেন দেশ বিদেশের খবরাখবর জানার জন্য। কিন্তু সন্তান মা-বাবাকে টিভির সামনে বসতে দেখে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বসবে, ভালো-মন্দ সবকিছু দেখবে। অতপর নষ্ট জীবনের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবে।

সন্তান যদি মা-বাবাকে কখনো টিভির সামনে না দেখে তাহলে সে কখনো হয়তো লুকিয়ে-ছাপিয়ে দেখবে, কিন্তু ‘অন্যায়’ জেনেই দেখবে।

এক সন্তান বাবার পকেট থেকে চুরি করে সিগারেট নিয়ে ধুমপান করত। একদিন বাবার কাছে ধরা পড়ে যথারীতি উত্তম-মাধ্যমের শিকার। কিন্তু উত্তম-মাধ্যম চলাকালীনই সন্তান বলে ফেলল, ‘তুমি সিগারেট খাও তাতে কোনো দোষ নেই, আমরা খেলেই দোষ।’ শিক্ষিত বাবার তৎক্ষণাৎ হুঁশ এসেছে। সেই থেকে ধুমপান ছেড়েছেন, আজও সে অধুমপায়ী।

‘মা’কে সন্তানের কল্যাণে আরো বেশি মনযোগী হতে হবে। গর্ভকালীন মায়ের সকল কর্মের প্রভাব পড়ে সন্তানের উপর। খাদ্যের দ্বারা গঠন হয় শরীর। মানসিক প্রস্ত্ততির দ্বারা হয় আত্মিক ভিত্তি। মা যদি সর্বদা ওযুর সাথে থাকেন সন্তানের কল্যাণের আশায়, সুযোগ পেলেই কুরআন তিলাওয়াত করেন, নামাযে দাঁড়িয়ে যান সন্তানের সুন্দর জীবনের কামনায়, তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাকে মাহরূম করবেন না। সন্তানের জীবনে হয়তো তার সে প্রত্যাশা সত্য হয়ে উঠবে।

শুরু থেকেই ভাবতে হবে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে। অনেকেই ভাবেন, বড় হলে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে দিয়ে দিব। একসময় ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু মনে রাখবেন, যত ভালো প্রতিষ্ঠানই হোক কিছু না কিছু অনাকাংখিত মানুষ সেখানেও থাকে। এরা প্রতিষ্ঠানের ফসল নয়; মা-বাবার ফসল।

অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, হাফেজা মায়ের সন্তান অতিমাত্রায় মেধাবী হয়। কারণ, সন্তান গর্ভে নিয়ে মা নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করেন। ফলে কুরআনের বরকতে সন্তানের মেধার উন্নতি ঘটে ও আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনায় কুরআনের ছাপ পরিলক্ষিত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে- ‘গর্ভকালীন বয়স ৪-৫ মাস হলেই মায়ের কার্যক্রম সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে’। তাই ডাক্তাররা বলেন, সন্তান গর্ভে নিয়ে কখনো দুশ্চিন্তা করবেন না, পারতপক্ষে ভয়ংকর পরিবেশের সম্মুখিন হবেন না, সব সময় খোশ মেজাজে থাকার চেষ্টা করবেন ইত্যাদি। একজন সৎ জীবন যাপনকারী মা’র দ্বারা একটি সৎ সন্তানই নয় একটি সৎ জাতিরও জন্ম হয়। তাই সকল ‘মা’দেরকে আরো বেশি সতর্ক ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এক মা’কে বলা হল, আপনার ছেলে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পালিয়ে আসছে। মা বললেন, অসম্ভব! আমার সন্তান যুদ্ধ থেকে পালাতে পারে না। হয় বিজয় লাভ করে গাজী হয়ে ফিরবে না হয় শহীদ হবে। সময় গড়ালে দেখা গেল গাজী হয়ে ফিরছে। মা’কে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার এ আত্মবিশ্বাসের উৎস কী? উত্তরে বললেন, আমি সন্তানকে যখনই দুধ পান করিয়েছি, প্রথমে ওযু করেছি, এরপর দুই রাকাত নামায পড়েছি এরপর দুধ দিয়েছি। অতএব আমার এই ওযু অবস্থায় নামাযের পর পান করানো দুধের সন্তান কখনো কাপুরুষ হতে পারে না।

সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বার্থে মা-বাবার সতর্ক, সৎ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনের গুরুত্ব অনেক।

বিষয়: Contest_father

১৩৩০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

219210
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:১৩
গেরিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:২৫
167012
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, আপনাকেও ধন্যবাদ Happy
219223
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:৩২
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : জীবনের চরম বাস্তব কথাগুলো লিখেছেন। এর চেয়ে মানবতার শিক্ষা আর কি হতে পারে যে নিজে শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়। অনেক অনেক ধন্যবাদ
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:৪৫
167021
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, আপনাকেও ধন্যবাদ Happy
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:৪৫
167022
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, আপনাকেও ধন্যবাদ
219226
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:৩৫
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : বাবা মা যেমন সন্তান ঠিক তেমনি হতে বাধ্য। তাই বাবাকে সবসময় সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। আপনার পোষ্টটি সেই পথের পাথেয় হয়ে থাকবে। ধন্যবাদ
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:৪৫
167023
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, আপনাকেও ধন্যবাদ
219241
০৮ মে ২০১৪ রাত ১১:৩০
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি পোষ্ট। লিখাটি ষ্টিকি করা হোক।
০৯ মে ২০১৪ সকাল ১০:২৬
167146
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, ধন্যবাদ
219278
০৯ মে ২০১৪ রাত ১২:২৭
আফরা লিখেছেন : মা-বাবার প্রভাব সন্তানদের উপর পড়বেই কাজেই কাজেই ভাল সন্তান চাইলে আগে মা বাবাকেই ভাল হতে হবে ।ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য ।
০৯ মে ২০১৪ সকাল ১০:২৬
167147
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, আপনাকেও ধন্যবাদ
221432
১৪ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৫
নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা লিখেছেন : বেশ শিক্ষনীয় একটি লিখা। অনেক ধন্যবাদ।
১৪ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
169009
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, আপনাকেও ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File