একটা চার্চ বিল্ডিঙে আমার এবারের অন্যরকম ঈদের নামাজটা, ঈদের দিনটা

লিখেছেন লিখেছেন তবুওআশাবা্দী ০৮ জুলাই, ২০১৬, ০৬:০৩:০৩ সকাল

ঈদের আগের দিন আসরের নামাজে মসজিদ যাবো ঠিক তার আগেই মন খারাপ করা মদিনায় হামলার খবরটা শুনলাম | হামলাকারী মুসলিম এটা শুনে মনটা আরো খারাপ হলো | একজন মুসলিম কি ধরণের চিন্তা করলে মসজিদউননবীতে বোমা হামলার কথা ভাবতে পারে সেটা চিন্তা করেও কোনো কুল কিনারা পেলাম না | সেই মনখারাপ করা ভাবনাটা নিয়েই ঈদের দিনটা শুরু হলো | কিন্তু এবারের ঈদটা একটু অন্যরকম হলো | একটু না ভীষণই অন্যরকম বললেই মনে হয় বেশি যুৎসই হবে | মন খারাপটা বদলে গেলো ঈদের সকালে ঈদের জামাতে যেতেই | কি করলাম গতকাল ঈদের দিন ? অন্যরকম কিছু না | সবই রুটিন | তবুও এই ঈদটা ভীষণ অন্যরকম |

সাধারণত আমাদের ঈদের জামাতগুলো হয় মসজিদেই | মসজিদের লাগোয়া কোনো মাঠ নেই | তাই ঈদের জামাত যদিও মাঠেই হওয়া উচিত তবুও মসজিদেই হয় সাধারণত | আমাদের এখানে আর আমার ধারণা সারা আমেরিকার কোথায়ই ঈদের জামাত মাঠে হয়না | আমাদের এখানে গত দুই বছর মানুষ একটু বেশি হয়ে যাওয়ায় ঈদের জামাত হয়েছে কাউন্টি ফেয়ার গ্রাউন্ডে | এই গ্রাউন্ড বলতেও অবশ্য বোঝায় বিশাল বিল্ডিং| এটা আমাদের কাউন্টির মালিকানায় কাউন্টির বিভিন্ন প্রোডাক্ট প্রোমোশনের জন্য স্টেডিয়ামের মতো বড় বিল্ডিং| এয়ার পোর্টের প্লেন রাখার যে বিশাল হ্যাঙ্গার আছে সে'রকম | কাউন্টির নানা ধরণের এনুয়াল এক্সপোর্ট ফেয়ারগুলো, অন্যান্য প্রোগ্রামগুলো এখানেই হয় | সে সব প্রোগ্রামে সেই বিশাল চাঁদের নিচে বিভিন্ন ভেন্ডররা তাদের স্টল সাজিয়ে বসে | মসজিদে জায়গা একটু কম হয়ে যাওয়ায় এই কাউন্টি ফেয়ার গ্রাউন্ডের ছাদের নীচেই আমাদের গত দুই বছরের চারটি ঈদ জামাত হয়েছিল | এ'বছরের ঈদের জামাতও এখানেই হবার কথা ছিল বছরের শুরুতে | কিন্তু কিছু ঘটনায় সেই প্ল্যানটা বদলে গেলো এবার |

আমার আগের একটা লেখায় ("আমেরিকার শহরে আমাদের ইসলামিক স্কুল") বলেছিলাম যে আমাদের কমিউনিটি একটা চার্চ কিনেছিলো আমাদের ইসলামিক স্কুলের কাজের পরিধি আরেকটু বারবার জন্য | দশ একর জমির উপর এই চার্চটা আমাদের শহরের একটা বেশ এফ্লুয়েন্ট হোয়াইট নেইবারহুডে | প্রায় তিন মাস আগে চার্চটা কেনার পর পরই এটাকে ঠিকঠাক করার কাজ শুরু হয়েছিল|এমনিতে চার্চ বিল্ডিংটা পুরোপুরিই ইউজেবল | চার্চের মূল বিল্ডিংটাতে প্রায় আটত্রিশটা রুম আছে যেখানে আমাদের স্কুলের এডমিনিস্ট্রেটিভ আর ক্লাশগুলোর জন্য ইউজ করা হবে |এছাড়া এখানে বড় একটা একটা জিম আছে |যেখানে স্কুলের ছেলে মেয়েদের খেলার ব্যবস্থা থাকবে |আর আছে আলাদা একটা বড় হল এরিয়া | এখানেই চার্চের উইকলি সরমোনগুলো দেওয়া হতো | চার্চটা কেনার পরপরই সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে এবারের ঈদের জামাত হবে এই নতুন স্কুল বিল্ডিঙের হল রুমে|

এবারের ঈদটা উইক ডে তে হওয়ায় একটু সকাল সকাল জামাত হলো সকাল সাড়ে আটটায় (অনেক সময় নয়টাতেও জামাত হয়েছে আমাদের মসজিদে) | সকাল আটটার একটু পরে গাড়ি নিয়ে পৌছুলাম | রাস্তা থেকে স্কুল কম্পাউন্ডে ঢুকতেই চোখে পড়লো মূল বিল্ডিংয়ের দেওয়ালে বিশ/পঁচিশ ফুট লম্বা যে ক্রসটা লাগানো ছিল সেটা আর নেই | এমনকি আমার আই ফোনেও কিছু দিন আগে চার্চটা কেনার পর যে ফটোটা আমি তুলেছিলাম তার ফটোটা এখনো আছে সেই “ক্রস চিহ্নটা” সহ | কিছুদিন আগেও বিল্ডিঙের গায়ে লাগানো বিশাল ক্রস চিহ্নটা স্বাক্ষী হয়েছিল বিশ্বাসের বিপরীতে কিছু মানুষের পথ হারাবার | ক্রস শূন্য ভারী ঝক ঝকে সিলভার কালারের আংটাগুলো এখন দেওয়ালের গায়ে লেগে আছে সরব একটা পরিবর্তনের স্বাক্ষী হয়ে |

পার্কিঙে গাড়িটা রেখে ঈদ জামাতের জন্য নামলাম | সিমেন্টের বড় পার্কিংটা জুড়ে প্রায় তিনশো গাড়ির পার্কিঙের ব্যবস্থা | সকালের রোদেলা আভায় চারদিক উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তখন | মনে হলো একটা আধার ঢাকা সকালের শেষ হয়েছে নতুন সূর্যোদয়ে | আমেরিকার একটা চার্চের আঁধার তাড়িয়ে ইসলামের ঝলমলে আলো ঢুকে পড়েছে চার্চ বিল্ডিঙের ভেতর নতুন ইসলামিক স্কুলের মধ্যে দিয়ে | সেই আলোয় ভিজে আমিও ঢুকে পড়লাম ভেতরে ঈদ জামাতের জন্য |

মূল হল রুমটা যাতে চার্চের সরমন হতো সেখানেই আমাদের জামাতের আয়োজন করা হয়েছে | বেশ বড় হল রুম | অনায়াসেই পাঁচ ছয়শো মানুষের নামাজের জায়গা হবে | নীচের তলায় তিনটে বড় বড় রুমে মেয়েদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে | সেখানে প্রায় শ'দুয়েক মানুষ নামাজ পড়তে পারে | হল রুমে কিছুটা খ্রিস্টান চার্চের ভাব মনে হয় এখনো রয়ে গেছে | মূল হলরুমে দেওয়ালে বড় বড় দুটো লম্বাটে সাদা ক্যানভাস এখনো টানানো আছে | এর মধ্যে সব চার্চেই যা থাকে - ক্রশ বিদ্ধ জিসাসের কাঠের খোদাই করা মূর্তি আর ক্রশ| সেই মূর্তি আর ক্রশগুলি আর নেই | শূন্য ক্যানভাস দেওয়ালে ঝুলে কুরআনের আয়াতই মনে হয় স্বাক্ষী দিচ্ছে - "...কাত্যা বাইয়ানুর রুশদু মিনাল গাইয়ি..." অবশ্যই সত্য পথ ভ্রান্ত পথ হতে সুস্পষ্ট ভাবে পৃথক রয়েছে |ওয়ালে হ্যাংগিং শূন্য ক্যানভাসে আশাকরি তাড়াতাড়িই কুরআনের কোনো ভার্স বা কলেমা লিখে সেগুলো পোডিয়ামের পেছনেই আবার ঝোলানো হয়ে যাবে| হল রুমের মধ্যেই ছিল বেশ বড় একটা স্টেজ | এদের চার্চে ধর্ম চর্চার একটা অংশই হলো সরমনের সাথে গান | মিউজিক আর নাচের সাথে গানকেও এরা একটা ধর্মীয় বিষয়ে পরিণত করেছে | এ জন্য বেশিরভাগ চার্চেই বড় স্টেজ থাকে মিউজিক পারফর্মেন্সের জন্য | হলরুমের দক্ষিণ পূর্ব কোনে (এই দিকটাই আমাদের কিবলা ) মিম্বরটা বানানো হয়েছে | সেটা বানানো হয়েছে চার্চের পুরোনো সেই স্টেজটা কেটে সেটার কাঠগুলো ব্যবহার করেই |

হল রুমের কার্পেটটা এখনো বদলানো হয়নি (আসলে কার্পেটটা বেশ ভালো অবস্থায় আছে| তাছাড়া এটা বদলানোও আবার প্রায় দশ/বিশ হাজার ডলারের ধাক্কা |) পুরো হলরুমের কার্পেটের উপর দিয়ে তাই অফ হোয়াইট পুরু প্যাকিং পেপার টেপ দিয়ে আটকিয়ে (টেম্পোরারি ভাবে ) নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে | বছর পর বছর যে হলরুমে আহলে কিতাবের বদলে যাওয়া মূল বাণীর উপর ভিত্তি করে ধর্মীয় উপাসনালয়ে নাঁচ গানের যে ধর্ম বিরোধী রীতিনীতি চলে আসছিলো তার বুঝি বিদায় হলো আজকের উজ্জ্বল সকালে আমাদের প্রথম ঈদ জামাতের আর মুহু মুহু তাকবীরাতের মধ্যে দিয়ে | খুৎবায় ইমাম সাহেবও সেটা বললেন আজকে একটা তাৎপর্য পূর্ণ দিন আমাদের শহরের মুসলিম কমিউনিটির জন্য | কারণ যে জায়গায় কোনো দিন আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি সেখানে আজ আল্লাহর নাম নেয়া হচ্ছে | আমি আমেরিকার প্রথম যে শহরে এসেছিলাম সেই পিটসবার্গের মসজিদটাও ছিল একটা চার্চ কিনে করা | কিন্তু সেটা আমি ওখানে যাবার অনেক আগেই কেনা হয়েছিল | মসজিদের মূল দরজা,ইন্টিরিয়র ডেকোরেশনের তখন আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে | ইসলামিক আর্কিটেকরেচারে সাজানো ছিল মসজিদের ভেতরটা | চার্চের কোনো ভাব আর তাতে ছিল না | কিন্তু এই ইসলামিক স্কুলটা এতো নতুন যে চার্চের ভাবটা এখনো প্রকট |ইন্টিরিয়র ডেকোরেশনের কোনো কিছুই প্রায় এখনো করা হয়নি সময়ের অভাবে | শূন্য হলেও লম্বা আকৃতির ওয়াল ক্যানভাসগুলো এখনো মনে করায় সেখানে লাগানো ছিল কোনো মূর্তি বা “ক্রস চিহ্ন” | হলরুমের দেওয়ালের রং এখনো চেঞ্জ করা হয়নি, সেই পুরোনো ওয়াল কালারেও বুঝি চার্চের গন্ধ, পুরু প্যাকিং পেপারের টেপ গলিয়ে এখন সেখান দিয়ে অল্প স্বল্প বেড়িয়ে পড়া সবুজ কার্পেট, মূল বিল্ডিঙের গায়ে এখনো "ক্রস" আকারে লেগে থাকা বড় সিলভার কালারের আংটাগুলো এখনো মনে করিয়ে দিচ্ছিলো পুরোনো একটা চার্চের কথা |

যথা সময়ে নামাজ শেষ হলো | ঈদের খুৎবাতেও উঠে আসলো মদিনায় হামলার কথা| খুৎবা শেষে মসজিদেই স্ন্যাক সার্ভ করা হয়েছে অন্য সব বছরের মতোই | স্ন্যাক খেতে খেতে সবাই কথা বলছে নতুন ইসলামিক স্কুল বিল্ডিং নিয়ে |আমাদের মসজিদ কমিটির ফিনান্স সেক্রেটারি ডঃ রাজি আমাকে বললেন আমরা লাকি যে এই জায়গাটা কিনতে পেরেছি | কারণ আমাদের বিডের পর পরই নাকি কয়েকটা বিল্ডার এই প্রপার্টির প্রাইস এভালুয়েশন করেছে আরো বেশি দামে | এখানকার শিখ কমুনিটিও নাকি কিনতে চেয়েছিলো এই চার্চটা | কিন্তু ক্যাশ টাকাটা জোগাড় করতে পারেনি বলে তাদের বিড বাদ হয়ে গেছে | আমাদের মসজিদের আমির জাভেদ ওয়ার্সি বলছেন এটা দশ একর জায়গা | ফিউচারে আমরা আমাদের প্রয়োজন হলে নতুন বিল্ডিংও আমরা তৈরি করতে পারবো | সবার চিন্তাতেই শুধু স্কুলের বড় নতুন ফ্যাসিলিটির কথা | সব কথাই সত্যি আমি জানি | কিন্তু আমার মনে হলো অন্য আরো অনেক কথা |

গত একটা বছর কত ঘটনাবহুল কাটলো বিশ্বে, বিশেষ করে মুসলিমদের জন্য | প্যারিস আর বেলজিয়াম হামলা দিয়ে যার শুরু | তারপর আমেরিকান রাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থান, অরল্যান্ডো ম্যাসাকার | এই সব ঘটনায় সারা পৃথিবীতে বিশেষ করে আমেরিকায় মুসলিম বিরোধিতা যে কত চরম ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা বলার মতো নয় | এমনকি আমেরিকান ইলেকশন পলিটিক্সে যে মধ্য পন্থা ছাড়া জেতাটা অসম্ভব সেটা জেনেও ডোনাল্ড ট্রাম্প চরম মুসলিম বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন এবং আশ্চর্য ব্যাপারটা হলো তাতেও তার সমর্থন কমছে না | বেস ভোটারতো কমছেই না এমনকি মধ্যপন্থী রিপাবলিকান কংগ্রেসমেন, সিনেটররাও জোরালো ভাবে তার এই মুসলিম বিরোধিতার কথা এখন আর বলছেন না | এর মধ্যেই এই চার্চটা বদলে গেলো একটি ইসলামিক ইনস্টিটিউশনে | ইসলাম পূর্বে আর পশ্চিমে ছড়িয়ে যাবে এই কথা প্রায় পনেরশ বছর আগেই বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) | সেই কথাই বুঝি এই নতুন স্কুল বিল্ডিং কেনা আর এই পুরোনো চার্চ বিল্ডিঙে ঈদের জামাতে আর সেই সাথে আমাদের তাকবিরাতের মধ্যে দিয়ে আবার সত্যি প্রমাণিত হলো | হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের জানিয়েছেন শেষ সময়ে হজরত ঈসা (সাঃ) পৃথিবীতে এসে শিরকের একটা পন্থা হওয়ায় "ক্রস চিহ্ন" ভেঙে দেবেন | চার্চের "ক্রস চিহ্নগুলো" দেওয়াল থেকে বিদেয় করে দেবার মধ্যে দিয়ে আল্লাহ কি আজ সেই শিরকের চিহ্ন ধ্বংস করার যুদ্ধে আমার মতো নগন্য, গুনাহগার বান্দাকেও সামিল হবার তৌফিক দিলেন ! এটা দশ একর না এক একর সেটা একদমই প্রশ্ন নয় | এই অবিরাম ইসলাম বিরোধিতার মুখেও এফলুএন্ট হোয়াইট নেইবারহুডের একটা চার্চ ইসলামিক স্কুলে বদলে গেছে, সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় মনে হলো | যেই আমেরিকায় ইসলাম ঘৃণার একটা চোরা স্রোত বইছে সেখানেই চার্চ বদলে যাচ্ছে আল্লাহর দ্বীন প্রচারের প্রতিষ্ঠানে ! অনেক বছর যে চার্চের ভেতরে বা বাইরের আল্লাহর নাম নেওয়াও নিষিদ্ধ ছিল সেই চার্চের ভেতর প্রথম আজ নামাজ হচ্ছে, সেই চার্চের ভেতর আজ প্রথম আল্লাহর সজোর তাকবীরে প্রকম্পিত ! আজকের সেই প্রথম নামাজে, সেই প্রথম তাকবীরে অংশ গ্রহণের মধ্যে দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে ইসলাম প্রসারের প্রচেষ্টায় আল্লাহ আমার মতো নগন্য বান্দাকেও সামিল হবার সৌভাগ্য দিয়েছেন ভাবতেই কেমন যেন লাগছে ! আসলে খুব বেশি ভাবতেও পারছিনা |

সাড়ে এগারোটার দিকে বাসায় ফেরার জন্য নামাজের হল রুম থেকে কার পার্কিঙে বেরিয়ে এলাম | দুদিন ধরে পড়া গরম আর প্রচন্ড রোদ্রে ঝলসে যাবো তাই ভাবছি | বৃষ্টি নেই গত কয়েক দিন | বাতাস নেই | খুবই গরম গত কয়েকদিন ধরে | পার্কিঙে আসতেই দেখি সূর্য প্রায় মাথার উপরে | উজ্জ্বল আলোয় ধাঁধিয়ে যাচ্ছে চারদিক | কিন্তু কি আশ্চর্য !সূর্যের সেই উজ্জ্বল্য তাতে উত্তাপ ঢেলে দেয়নি এতো বেলাতেও ! | সামারের দিনেও চারদিকের পাইন গাছের ডাল পালা নুয়ে পড়ছে যেন অবিশ্রাম বসন্ত বাতাসে | পার্কিঙের একপাশে বাচ্চারা ইনফ্ল্যাটেবল বাউন্সি ক্যাসলে মনের সুখে খেলছে, ইনফ্ল্যাটেবল রক ক্লাইম্বিং ওয়ালে উঠতে যেয়ে উপর থেকে পিছলে পরেও খিল খিল করে মনের সুখে হাসছে ! (এগুলো বাচ্চাদের ফানের জন্য শুধু ঈদের দিনের জন্য আনা হয়েছে রেন্ট করে ), একটু বড় নানান বয়সের কিছু ছেলে বাস্কেটবল খেলছে পার্কিঙের আরেক কোনায় (জিম থেকে মনে হয় বাস্কেট বল হুপ এনে ওখানে রাখা হয়েছে) | চারদিকে খুবই খুশি খুশির ভাব | আল্লাহ মক্কা আর মদিনাকে রক্ষা করবেন বলে হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের জানিয়েছেন | তাই বুঝি মদিনা হামলার যে কষ্টটা নিয়ে এসেছিলাম নামাজে আমাদের ইসলামিক স্কুলের অন্যরকম ঈদ জামাতটা, বাচ্চাদের নতুন স্কুলে খেলাধুলা, হৈ হুল্লোড়ে তাদের সেই খুশির প্রকাশ আমার মন খারাপ করাটা কমিয়ে দিলো অনেক | স্কুলের অল্প দূরেই বড় একটা লেক | লেকের তীর ঘেঁষে গাড়ি চালিয়ে বাসায় ফিরছি | গত দুই দিনের গুমোট ভাবটা নেই | অবিশ্রাম বয়েযাওয়া বাতাসে লেকের বুক জুড়ে বয়ে যাচ্ছে ঢেউয়ের পর ঢেউ | পাইন বনে ডাল পাতার দোলায়, লেকের নীল পানির ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়েও বুঝি তাই খুশির উচ্ছাস আজকের এই অন্য রকম ঈদে আর চার্চ বিল্ডিঙের নতুন ইসলামিক স্কুলে আমাদের তাকবীর ধ্বনিতে |

একটা চার্চ বিল্ডিঙে অন্যরকম, ভীষণ অন্যরকম, একটা ভীষণ অন্যরকম ভালো লাগা নিয়ে এবারের ঈদের নামাজ, ঈদের সারা দিনটাই কাটলো আমার| পরিবারের সবার সাথে, অনেক বন্ধু বান্ধবের সাথে থেকে বাংলাদেশে কাটানো অনেক অনেক ঈদেও এই ভালো লাগাটা কখনো অনুভব করিনি | দেশ থেকে অনেক অনেক দূরে, ভাই বোন সবাইকে ছেড়ে কোনো ঈদে এমন ভালো লাগা জমা হয়ে থাকবে সেটাই কি কোনোদিন জানতাম না ভাবতে পেরেছিলাম !

বিষয়: বিবিধ

১৯৯৫ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

374187
০৮ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৭:৪১
শেখের পোলা লিখেছেন : আল্লাহ সবই করতে পারেন। আপনি আসলেই ভাগ্যবান। একটা শির্কের জায়গা যা এক দল পথভ্রান্ত মানুষ দীর্ঘদিন ধে ব্যবহার করে আসছিল, সেখানে আপনারা ইসলামের পতাকা প্রথম উড়াবার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। শুকরিয়া মহান আল্লাহর।
০৮ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৯:৫৮
310455
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : প্রিয় ব্লগার শেখের পোলা:যেই কথাটা বলবার জন্য এই লেখা সেই ব্যাপারটা আপনি ঠিক ধরেছেন|আসলেই খানিকটা ওভারহোয়েলম্ড আমি কালকে একটা পুরোনো চার্চে, যা আমরা সবাই মিলে কিনেছি ইসলামিক স্কুলের জন্য, তাতে ঈদের নামাজ পড়ে | অনেক ধন্যবাদ নিন |আশাকরি কানাডায় আপনাদের ঈদ খুশির সাথে করতে পেরেছেন ছেলে মেয়ে আর তাদের ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে |
374189
০৮ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৯:২৫
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ইসলাম পূর্বে আর পশ্চিমে ছড়িয়ে যাবে এই কথা প্রায় পনেরশ বছর আগেই বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) | সেই কথাই বুঝি এই নতুন স্কুল বিল্ডিং কেনা আর এই পুরোনো চার্চ বিল্ডিঙে ঈদের জামাতে আর সেই সাথে আমাদের তাকবিরাতের মধ্যে দিয়েই বুঝি আবার সত্যি প্রমাণিত হলো |


আপনার লেখায় জাদু থাকে,সত্যটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। দারুন ঈদ উজ্জাপন করলেন। তবে ওই গে'র আক্রমনের পর মুসলিম বিদ্বেষ বেড়েছে কিছুটা। যদিও ওরেগনে ভদ্রলোক বেশী। এখানে এটা হতে শুনিনি। কিন্তু একটা তথ্য কিন্তু ঠিক বলেননি।Happy .....আমেরিকার অনেক স্থানে ঈদ সালাত ময়দানে হয়। আমি এখানে ৩বার মাঠে নামাজ পড়েছি। এবার ফেয়ার গ্রাউন্ডে হয়েছে।

আপনার বর্ণনায় খাওয়ার প্রসঙ্গ আসেনি,এটি ছাড়া লেখাটা পরিপূর্ণ Happy
০৮ জুলাই ২০১৬ সকাল ১০:৩১
310456
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : প্রিয় ব্লগার দ্য স্লেভ: অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য| আমি কিন্তু বলেছি আমার ধারণা যে আমেরিকায় কোথাও মাঠে ঈদের নামাজ হয় না| এতো শীতের জায়গায় থাকি যে অক্টবর থেকে মার্চ এই ছয় মাস আর সেপ্টেম্বর আর এপ্রিল এই দুই মাস স্নো আর শীতের ঠান্ডা বাতাসের জন্য মাঠে নামাজ পড়া প্রায় অসম্ভব আমাদের এদিকে| তাছাড়া জুলাই, সেপ্টেম্বরের দিকে বৃষ্টিও একটা ফ্যাক্টর হয়ে যায় | এজন্য মনে হয়েছিল কোথাওই মনে হয় মাঠে জামাত পড়া সম্ভব হয়না | আমাদের এখানে ফেয়ার গ্রাউন্ড যেটাকে বলে সেটা কাউন্টির মালিকানাধীন প্লেনের হ্যাঙ্গারের মতো পুরোপুরি সিমেন্টের ফ্লোর করা ফুটবল স্টেডিয়ামের মতো বিশাল একটা কভার্ড জায়গা |যেখানে গত দুই বছর আমাদের ঈদের নামাজ হয়েছে | আমি শুনেছি কিছু কিছু জায়গায় ফেয়ার গ্রাউন্ডে নামাজ হয় | কিন্তু আমি ভেবেছি সেগুলো আমাদের এখানকার মতোই কোনো কভার্ড জায়গা |যাক ভুলটা ভেঙে দেবার জন্য ধন্যবাদ |আর জেনে খুবই ভালো লাগলো যে আপনি তিনবার এখানে মাঠে ঈদের নামাজ পড়েছেন|ঈদের নামাজতো আসলে মাঠেই হওয়া উচিত |বই দ্যা ওয়ে, মসজিদে আমি দেড় কাপ চা খেয়েছি | আমার ছেলে ঐ স্ন্যাকগুলো বেশি খেতে চায়না | সেটা কারণ হিসেবে দেখিয়ে চা ছাড়া আর কোনো স্ন্যাক আমিও কখনোই খাইনা ওখানে | আমি নামাজে যাবার আগে বাসায় বানানো থেকে মিষ্টি খেয়ে বেড়িয়ে ছিলাম অবশ্য|বাসায় এসে একবারে লাঞ্চ খেয়েছি|আবারো ধন্যবাদ নিন |
১০ জুলাই ২০১৬ সকাল ১০:৩৭
310526
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আমি সম্ভবত এখানে ৩টা ঈদে মসচিদ কমিটির খাবার খেয়েছি। ব্যপক মজা। কমিটি তো খাবার আনে,এছাড়া অনেকে নিজরো খাবার তৈরী করেও আনে। দুবার আমি রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওভাবে খেতেই মজা বেশী। তবে এবার দাওয়াত ছিলো তাই খাইনি।

যেসব স্থানে আবহাওয়া ভালো থাকে,সেসব স্থানের কোথাও কোথাও মাঠে নামাজ হয়। মাঠে হলেই মজা। Happy আপনার লেখাটা সুপার

আপনি বলেছিলেন ওটা আপনার অনুমান। আর আমার বলা উচিৎ ছিলো অনুমানটা সঠিক নয়। কিন্তু বলেছি তথ্যটি সঠিক নয়। এটা আমার ব্যকরনগত ভুল। Happy HappyHappy
374194
০৮ জুলাই ২০১৬ দুপুর ১২:৫৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অত্যন্ত চমৎকার পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এইবার এর ঈদ আমাদের দেশেও এসেছে রক্তাক্ত হয়ে। তবুও মানুষ তা উপভোগ করেছেই। পৃথিবির বর্তমান অবস্থায়ও ইসলাম তার অগ্রগতি বজায় রাখবেই। বাংলাদেশে ইসলাম যতটা না বিদেশি ও অমুসলিমদের হুমকির মুখে তার চেয়ে বেশি হুমকি নামধারি মুসলিম আর কায়েমি স্বার্থবাদিদের।
০৮ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৪৯
310460
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : প্রিয় ব্লগার রিদওয়ান কবির সবুজ:অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার আর মন্তব্যের জন্য|
374210
০৮ জুলাই ২০১৬ রাত ০৮:১৫
হতভাগা লিখেছেন : বারাক ওবামা মুসলমান হয়েও ইহুদী লবীর ভয়ে নিজেকে খৃষ্টান বলে দাবী করেন । আমেরিকার প্রেসিডেন্টও যাদের ভয়ে সিটিয়ে থাকেন সেখানে গুটি কয়েক মুসলমান কিই বা করতে পারবে ।

যদিও আপনারা মনে করছেন যে মুসলমান কমিউনিটি বেড়েই চলেছে আমেরিকাতে , গির্জা পরিনত হয়ে যাচ্ছে মাসজিদে - এটাও মনে রাখবেন যে কট্টর আমেরিকানরা আপনাদের সবসময়ই মনিটর করেন যাতে একটা নির্দিষ্ট সীমাতেই থাকেন আপনারা ।

আমেরিকাতে যারা প্রবাসী মুসলমান তারাও এই জিনিসটা ভালই ফিল করে , তাই মধ্যপ্রাচ্য তথা অন্যান্য দেশের মুসলমানদের উপর আমেরিকানদের অযাচিত যুদ্ধের কোন প্রতিবাদ আসে না এসব কমিউনিটি থেকে ।

আমেরিকা তাদের শান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে তাই তারাও কমিটেড এমন কোন কাজ করবে না যাতে আমেরিকা নাখোশ হয় । বাইরে যাই ঘটুক এসব নিয়ে এসব কমিউনিটি চুপচাপেই সীমাবদ্ধ থাকে ।
০৮ জুলাই ২০১৬ রাত ০৯:২৭
310463
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : দুটো কথা আপনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে :

প্রথম, বারাক ওবামা মুসলিম কি না আমি জানি না | কারণ খুব ছোট বেলায় তার বাবা মার বিচ্ছেদ হবার পর ওবামা তার খ্রিস্টান মায়ের পরিবারের কাছেই বড় হয়েছে | তাই তার মুসলিম ভাব ধারায় বড় না হয়ে উঠাটাই স্বাভাবিক | তাছাড়া, বারাক ওবামার ইসলাম পালন বা না পালনের সাথে আমাদের ইসলাম পালনের কোনো বিষয় নেই | বাংলাদেশেওতো কত মুসলিম নামধারী যাদের হয়তো বাবা মা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী ছেলে মেয়ে এখন নাস্তিক| ইসলামকে গালি গালাজ করে যাচ্ছে রাত দিন | তাতে কি তাদের বাবা মা-র কিছু হচ্ছে না ইসলামের কিছু হচ্ছে ?

দ্বিতীয় যেটা বলতে চাই তাহলো আমেরিকাতে কিন্তু আপনার ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে | ইসলাম পালনে কেউ আমাদের বাধা দিচ্ছে না | আমি মসজিদে খুবই নিয়মিত যায় ভোরে রাতে সবসময়ই | এতে কোনো সমস্যাতো হয় না | আর মুসলিমরা এখানে শতকরা হারে দুই ভাগেরও কম | বাইরে থেকে আপনি যায় মনে করেন না কেন এই দুই ভাগের কম জনসংখ্যা নিয়ে কোনো দাবি আদায় করা কঠিন | এখানে কোনো মুসলিম সিনেটর নেই, 463 জনের হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভ -এ মাত্র একজন মুসলিম কংগ্রেস সদস্য, কোনো স্টেটে মুসলিম গভর্ণর নেই | এমন অবস্থায় জেকো দাবি আদৌ করা বা তার জন্য জোরালো ভাবে জানানোটা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে যায় | একটা সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিম এখানে বড় হচ্ছে | এদের জন্ম আমেরিকায় | এদের ভাষাই এই তরুণ মুসলিম জেনারেশনের ভাষা | আমি আশাবাদী এরা যখন পুরোপুরি প্রফেশনাল লাইফে যাবে এদের দিয়েই ইসলাম দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে আমেরিকায় | শতকরা দুই ভাগ জনসংখ্যার পক্ষ্যে যতটুকু সম্ভন সেই দাবি ইসলামের জন্য এখনো খুবই জোরালো ভাষায়ই জানানো হয় | আইনের মধ্যে থেকে যেটুকু প্রতিবাদ করা যায় এখানে সেটার সবটুকুই করা হয় | 9/11-এর পর আমেরিকায় যে ইসলাম সম্পর্কে এতো জানার আগ্রহ হলো তা একানকার মুসলিমদের জন্যই | অটোবড়ো ঘটনার পরেও যে ইসলামের পক্ষ্যে এখনো আমেরিকানদের বিরাট একটা অংশের সাপোর্ট আছে সেটা আমেরিকান মুসলিমদের দেখেই এরা করে | একটু একটু করে হলেও ইসলাম এগিয়ে যাচ্ছে এখানে | অনেক ধন্যবাদ আপনাকে বড় একটা মন্তব্য করার জন্য আর কষ্ট করে যে লেখাটা পড়েছেন তার জন্য |
০৯ জুলাই ২০১৬ সকাল ১০:৩০
310472
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশী নাস্তিকগুলো শুধু বক বক করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না । এদের টার্গেট যেমন করে হোক একটা থ্রেট বাগিয়ে আমেরিকার এসাইলাম পাওয়া যেখানে বসে তারা নিশ্চিন্ত মনে তাদের ইসলামবিদ্বেষী লিখা চালিয়ে যেতে পারবে - এ স্বাধীনতা তারা এদেশে পাবে সেটা গ্যারান্টেড । তসলিমা ও আসিফ তাদের পথপর্দর্শক এক্ষেত্রে। তবে ভুলেও এদের ধর্মকে নিয়ে একটা টু শব্দও করবে না যেমনটা করে ইসলাম ধর্মকে নিয়ে ।

ওবামা ইরাক আফগানিস্তানে যুদ্ধ কমিয়ে আনবেন বললেও সিরিয়াতে যুদ্ধ এক্সটেন্ড করেছে - কাদের ভয়ে ? মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেবার পর সবাইও ওবামাকে নিয়ে আশাবাদী ছিল । তার পুর্বসূরী ক্লিন্টন ছিলেন যুদ্ধের ব্যাপারে কিছুটা কম আগ্রহী । এজন্যই তিনি সিমন প্যারেজ ও ইয়াসির আরাফাতকে বসাতে পেরেছিলেন ।ডেমোক্রেটরা মূলত এরকমই ছিল - তবে ওবামা রিপাবলিকান মনোভাব সম্পন্ন । সেটা তাকে হতে হয়েছে - কেন ?

একটা সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিম এখানে বড় হচ্ছে | এদের জন্ম আমেরিকায় | এদের ভাষাই এই তরুণ মুসলিম জেনারেশনের ভাষা | আমি আশাবাদী এরা যখন পুরোপুরি প্রফেশনাল লাইফে যাবে এদের দিয়েই ইসলাম দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে আমেরিকায় |


০ আমাদের এই ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসা উচিত । আমেরিকা , ইংল্যান্ড এ কোন মুসলমান নামধারী যদি মেয়র বা সিনেটে বসে তখন আমরা বগল দাবাই যে এরার উনি তার সংশ্লিষ্ট এলাকাকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসবেন ।

এরা পশ্চিমা পরিবেশে মানুষ হয়ে আগে থেকেই তো ইসলাম থেকে বহু দূরে সরে গিয়েছে । এরা যে ইসলাম কায়েম করবে তা ইহুদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মাসজিদে সীমাবব্ধ ইসলাম । এসব সেকেন্ড জেনারেশন পোলাপান কি একমুষ্টি দাড়ি রাখে বা মেয়েরা কি হিজাব + নিকাব পড়ে শিক্ষাঙ্গন বা কর্মক্ষেত্রে আসা যাওয়া করে ?

ইসলামকে একটা জীবন বিধান হিসেবে কি এসব সেকেন্ড জেনারেশনের পোলাপানরা কি চর্চা করে?

যারা পূর্বসূরীদের লুটপাট করে আনা সম্পদে জাকজমকে বেড়ে উঠেছে তারা ক্ষমতায় আসলে কি এসব কাজ বন্ধ হয়ে যায় এরকম কোন পদক্ষেপ নেবে ?

২% এ থেকে বাকী ৯৮% এর মত জুস খেয়ে যাবে , যদিও সেটা তাদেরই স্বধর্মীদের রক্ত থেকে তৈরি।
০৯ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
310495
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : হতভাগা:আমি আপনার আর্গুমেন্টে খানিকটা কনফিউজ্ড|দেখুন, ইসলামকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত রাখার দায়িত্বতো শুধু আমেরিকার মুসলিমদেরই না এটা সারা পৃথিবীর মুসলিমদেরই দায়িত্ব|এই দয়িত্বের মূল ভূমিকা পালন করতে হবে মুসলিম দেশগুলোকে| সারা পৃথিবীর এক বিলিয়ন (এক হাজার মিলিয়ন) মুসলিমের মধ্যে আমেরিকার মুসলিম সংখ্যা দুই মিলিয়নের মতো | আপনি যদি মনে করেন এই দুই মিলিয়ন মুসলিম সারা পৃথিবীর এক হাজার মিলিয়ন মুসলিমদের সব সমস্যা সমাধান করে ফেলবে এখনই তবেতো মুশকিল | আমেরিকান মুসলিমরা মুসলিম বিশ্বের দাবিগুলোকে সমর্থন করে তাকে আরো জোরালো করে তুলতে ভূমিকা রাখতে পারে | যেটা তারা এখনো করছে সামর্থ্য অনুযায়ী |আর আপনি কি জানেন ওবামা প্রশাসনের সময়ই আমেরিকা এই প্রথম ইসরাইলকে মধ্য প্রাচ্যে শান্তি চুক্তি ভঙ্গের জন্য অফিসিয়ালি একিউজ করেছে? এটা আর আগে কখনোই হয়নি | এগুলো আমেরিকান পলিটিক্সে মুসলিমদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার কারণেই হয়েছে বলে আমি মনে করি |
আর কোনো মেয়র,সিনেটর সংশ্লিষ্ট এলাকাকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসবেন সে কথাতো আমি বলিনি | সেটার দরকারও নেই |ইসলাম নিজের শক্তিতেই বেঁচে আছে হাজার বছর ধরে |ভবিষ্যতেও বাঁচবে|মেয়র,সিনেটরদের কথা উল্লেখ করে আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা হলো সব পলিসি ইম্প্লিমেন্টেশন প্রসেসের ক্ষেত্রেই একটা ক্যাটালাইটিক এজেন্টের দরকার হয়|যারা কোনো এজেন্ডাকে পার্লামেন্টে তুলবেন আর তা পলিসি হিসেবে পাশ করিয়ে আনবেন|আমেরিকায় যেমন হিস্পানিকদের অনেক কংগ্রেস সদস্য, মেয়র, স্টেট গভর্ণর|তাই সহজেই তাদের অনেক দাবিই সিনেট আর কংগ্রেসের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে| কারণ ক্যাটালাইটিক এজেন্টেরা কংগ্রেস এবং সিনেট পর্যন্ত এজেন্ডাগুলো পুশ করতে পারে |

আমি বলেছি যে এখানে একটা সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে উঠছে | আমার ধারণা এরা বুঝে শুনে ইসলামের ব্যাপারে আগ্রহী হচ্ছে | আমিতো আমার অনেক লেখাতেই বলেছি যে ইসলামকে বাংলাদেশে যেভাবে দেখতাম তার চেয়ে অনেক বেশি জেনে বুঝে পালন করতে পারছি এদেশে আসার পর থেকে | এই সেকেন্ড জেনারেশনের ব্যাপারেও আমি তাই বিশ্বাস করি আর সেজন্যই আমি আশাবাদী | সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে আপনার মন্তব্য শুনে তা আমার খুবই কঠিন আর খানিকটা অযৌক্তিকও মনে হলো |আমি খুবই আশাবাদী টাইপের মানুষ | তাই আপনার সাথে এব্যাপারে আমি একেবারেই একমত হতে পারলাম না এদের ব্যাপারে | আমি নিজে এরকম অনেক ছেলে মেয়েকে দেখি এখানে যারা খুবই ধর্মপরায়ণ | আমাদের ইউসুফ আলভীর কথা বলি | মেডিকেল পড়ার জন্য আন্ডার গ্রাজুয়েট পড়ছে | ছোট মুখটা ভর্তি দাড়ি | মসজিদে এসে নামাজ পড়ে | মসজিদে আজানও দেয় | এর বাবা কিন্তু কোনো গরিব মানুষ নয় | এর বাবা ডাক্তার-এখানকার নামকরা একজন সার্জন | কিন্তু ইসলাম প্র্যাক্টিসে আমাদের ইউসুফ কারো চেয়ে কম নয় | আর আমিতো বলিনি এদের সবাই পাক্কা মুসলিম হয়ে যাচ্ছে | বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশেই কি সেটা হচ্ছে ?
যে কথাটা আমি সব লেখাতেই বলতে চাচ্ছি সেটা হলো আমেরিকাতে ধীরে ধীরে মুসলিম সংখ্যা বাড়ছে, ইসলাম সম্প্রসারিত হচ্ছে | এটা শুরু হয়েছিল কনভার্টেড মুসলিমদের দিয়ে যাদের বেশির ভাগই ছিল আফ্রিকান আমেরিকান | কিন্তু পরে আরব আর অন্যান্য মুসলিম দেশের ইমিগ্রান্টরা সেই সম্প্রসারণে বড় একটা ভূমিকা রাখছে | এখন সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিমরাও বড় হয়ে উঠছে এখানে | এরা পড়াশোনা জানা একটা গ্রূপ | একটা খুব এজুকেটেড মুসলিম জনগোষ্ঠী আমেরিকাতে এখন আছে | অল্প হলেও এখনই এরা মুসলিম স্বার্থে নেগোশিয়েট করতে পারে | মুসলিম কমিউনিটি আরো বড় হলে এদের নেগোসিয়েশন ক্ষমতা আরো বাড়বে | আমি বিশ্বাস করি সেটা মুসলিম বিশ্বের জন্য ভালো বই খারাপ কিছু হবে না | এর বাইরে আমার কোনো বক্তব্য নেই |
০৯ জুলাই ২০১৬ রাত ০৮:৩২
310499
হতভাগা লিখেছেন :
আর আপনি কি জানেন ওবামা প্রশাসনের সময়ই আমেরিকা এই প্রথম ইসরাইলকে মধ্য প্রাচ্যে শান্তি চুক্তি ভঙ্গের জন্য অফিসিয়ালি একিউজ করেছে?[/q

০ আপনি কি এটা শুনেছেন যে - ওবামার প্রথম টেনিউরে কোন এক জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মাহমুদ আব্বাসকে ওবামা বলেছিলেন - আগামী বছর যখন আপনি স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবী নিয়ে আসবেন তখন আমেরিকাই আপনাদের সমর্থন করবে । এক বছর পর যখন মাহমুদ আব্বাস এলেন তখন ওবামা তাকে টুপি পড়িয়ে দিয়েছেন - কাদের ভয়ে ?

[q]আপনি যদি মনে করেন এই দুই মিলিয়ন মুসলিম সারা পৃথিবীর এক হাজার মিলিয়ন মুসলিমদের সব সমস্যা সমাধান করে ফেলবে এখনই তবেতো মুশকিল |


০ কেন পারবে না বা কেনই বা করে না ? স্বর্গের দেশ থেকে বের করে দেবে এই ভয়ে ? এত কষ্ট করে স্বর্গের নাগরিকত্ব পেয়েছে সেটা হারানোর ভয়ে ?

ধর্ম পালন করা সেই সেকেন্ড জেনারেশনরা কি ঘরের বাইরে ইসলামী শরিয়ার অনুসরণ করে চলে ? শুধু আলভী না , সব ছেলেরা কি সুন্নতী কায়দায় দাঁড়ি রাখে আর সব মেয়েরা কি হিজাব পালন করে (ছেলেদের চেয়ে মেয়েদেরটাই বেশী চোখে পড়ে অন্যধর্মের কাছে)? আবারও এই প্রশ্ন করলাম কারণ আপনিই বললেন যে দেশের চেয়ে এখানে ইসলামকে আরও ভালভাবে বুঝে পালন করে আসছেন ।


যে কথাটা আমি সব লেখাতেই বলতে চাচ্ছি সেটা হলো আমেরিকাতে ধীরে ধীরে মুসলিম সংখ্যা বাড়ছে, ইসলাম সম্প্রসারিত হচ্ছে |


০ সংখ্যা কোন ফ্যাক্টর না যদি না সেটা কাজে লাগে । মাত্র এক কোটি ইহুদী বাকী ৭০০ কোটির উপর রাজ করতেছে ।
০৯ জুলাই ২০১৬ রাত ১০:০৫
310501
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : হতভাগা:দেখুন,একটা ব্যাপার আপনি মিস করছেন|প্রায় বাহান্নটা মুসলিম কান্ট্রি পৃথিবীতে|এরা যদি একজোট না হতে পারে মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষায় তাহলে ওবামা বা আমেরিকাকে দোষ দিয়েতো কোনো লাভ নেই | মুসলিমদের দাবি মুসলিমদেরই আদায় করতে হবে|আমেরিকা আর অন্যান্য দেশগুলো শুধু সাপোর্ট করতে পারে | কিন্তু এ'ব্যাপারে মুসলিম দেশগুলোর অনৈক্যই প্রধান বাধা|ওবামা আর আমেরিকা না|আমেরিকার কিন্তু মুসলিম বিশ্বের সাথে বিজনেস করতে হয় | মুসলিম বিশ্ব নিজেদের সমস্যার কারণেই এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না,যেটা ইসরাইল একটি মাত্র দেশ হয়েও পারছে|

আর একটা কথা যে মুসলিমরা, বিশেষ করে সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিমরা, এরা আমেরিকান সিটিজেন -এদের জন্ম এখানে এরা এদের ভাষাতেই কথা বলে |এদের সিটিজেনশিপতো কেউ কোনো আইনেই বাতিল করতে পারবে না | অন্তত আমেরিকায় নয়|তাই আপনি যে লোভ লালসা,বা ভয় ভীতির কথা বলছেন সেটা একেবারেই প্রাসঙ্গিক নয় এদের প্রসঙ্গে|আমি আলভী নয় আমার নিজের দেখা আরো অনেকের কথাই এখানে বলতে পারতাম|আমাদের এই ছোট শহরেই এরকম ছেলে মেয়ে অনেক|শিকাগো,সিনসিনাটির (আমি নিজে থাকতাম তাই নিজেই দেখেছি) মতো বড় শহরেও এদের সংখ্যা অনেক এটা আমার নিজের চোখেই দেখা | আমি আবারো বলছি ভালো করে ইসলাম পালন করে না সে রকমও আছে|কিন্তু যেটা ইম্পরট্যান্ট সেটা হলো ধর্ম পালন করছে এমন তরুণ তরুণীর সংখ্যা বাড়ছে|কনভার্টেড মুসলিমের সংখ্যা বাড়ছে|হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এবারের আন্ডার গ্রাজুয়েট কমেন্সমেন্টে একটা মুসলিম মেয়ে ভ্যালিডিক্টরিয়ান হিসেবে মূল স্পিচটা দিয়েছে হিজাব পরেই|আমেরিকান সুইট হার্ট হবার জন্য তার হিজাব খুলতে হয় নি | এটা নিউ জেনারেশন মুসলিমদের একটা সিগনেচার চিহ্ন হয়ে থাকবে আমেরিকায় অনেক দিন |

আর একটা কথা আমেরিকাতো মুসলিম কান্ট্রি নয় | এখানে শরিয়া আইন মানার ব্যাপারতো নেই | কিন্তু আপনার প্রশ্ন যদি হয় এই সেকেন্ড জেনারেশন ইসলামী আইন কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কিনা তার উত্তর আমি বলবো হ্যা | আমি যা দেখি তার ভিত্তিতে বলছি | আমি এটাও বলেছি অবশ্যই সবাই না | বাংলাদেশের কথাই ভাবেন কতগুলো ইয়াং ছেলে মেয়ে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী জীবন চালাচ্ছে ? এখানে একটা প্রতিকূলতার মধ্যেও মুসলিমরা ইসলাম প্রাকটিস করছে | এটা অনেক কঠিন | আর দয়া করে এটাকে আন্ডারএস্টিমেট করবেন না | এই সেদিন হাফিংটন পোস্ট একটা আর্টিকল পাবলিস্ট করেছে যে নন মুসলিম কান্ট্রি আমেরিকায় ফাস্টিং (রোজা) করা অফিস গোইং মানুষের জন্য মাঝে মাঝেই বিব্রতকর হয়ে যায় (ওয়ার্কিং লাঞ্চের সাথে মিটিংগুলোতে আমারও এই প্রব্লেমটা ফেস করতে হত)তবুও মুসলিমরা ফাস্টিং করে যাচ্ছে|আর একটা হাইলাইটেড আর্টিকেল এসেছে একজন মুসলিম এথলিটের বিষয়ে যে পাঁচ কিলোমিটার দৌড়েছে রোজা রেখেই|

জুরা সারা পৃথিবীযে এতো ক্ষমতাশালী তার কারণ এরা সংখ্যায় কম হলেও টেকনোলজিতে অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে|এখন সারা পৃথিবীর অনেক বড় বড় আর লিডিং কোম্পানিই জেরুজালেম বেইসড, জু মালিকানাধীন |এই ধরণের সক্ষমতা কারো থাকলে তাদের জন্য যে কোনো পলিসি প্রভাবিত করা সহজ হয়ে পরে |মুসলিমরা এই এডভান্সমেন্ট লেভেলে যখন যাবে তখন তাদের নেগোসিয়েশন পাওয়ার আরো বাড়বে|এর বাইরে পলিসি প্রভাবিত করতে হলে একটা ডেমোক্ক্রেটিক সোসাইটিতে সংখ্যা গরিষ্ঠতা খুবই ইম্পরট্যান্ট ফ্যাক্টর|আমাদের শহরের দেড়শো মাইল দূরেই রয়েছে আমেরিকার সবচেয়ে বড় ইসলামিক জনবসতির শহর | যেখানে মুসলিমরাই সংখ্যা গরিষ্ঠ | সেই শহরে হালাল কেএফসি ফার্স্ট ফুড স্টোর আছে |পুরো আমেরিকাতেই মনে হয় কেএফসি -র এধরণের স্টোর আছে হাতে গোনা কয়েকটা মাত্র | এটা সংখ্যা গরিষ্ঠতার জন্যই হয়েছে | এই শহরের স্কুল ডিস্ট্রিক্টগুলোর সব স্কুল ঈদে বন্ধ থাকে | এটা সংখ্যা গরিষ্ঠতারই ফল |আমি সেটার কথাই বলতে চেয়েছি, নাথিং এলস|

ইসলাম প্রাকটিস করা এখানে এখনো বাংলাদেশের মতো সহজ নয় | কিন্তু তাই বলে মুসলিমরা ইসলাম পালন থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে না এখানে | আপনার ভিন্নমত থাকতেই পারে | দ্যাটস ফাইন | কিন্তু দয়া করে সেগুলোর সাথে সবকিছুকে জেনেরেলাইজড করে ফেলবেন না আশাকরি |সবশেষে আবারো বলছি,আমেরিকাতে ইসলাম সম্প্রসারিত হচ্ছে|এটা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য, ইসলামের জন্য পজিটিভ বলেই আমি মনে করি|এতে ইসলামের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না এব্যাপারে আমি শিওর|
১০ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৮:৫৮
310516
হতভাগা লিখেছেন : এক সপ্তাহও হয় নি পুলিশ কর্তৃক দুই কৃষ্ণাজ্ঙ মারার বিপরীতে ৫ জন পুলিশকে মারা হয়েছে ডালাসে ।

যাদের মধ্যে বর্ণবাদ এখনও টিকে আছে তারা তো ইসলাম ধর্ম পালনকারীকেও রাস্তাঘাটে গালাগাল করে এবং এদের নেতাও আজ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী । এর পরেও আশাবাদী কোন ভিত্তিতে ? নাকি যতটুকুতে শান্তিতে থাকা যায় ততটুকুই সই ?
১০ জুলাই ২০১৬ রাত ০৯:৩৫
310560
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : হতভাগা:আপনার কথাটা বুঝতে পারলাম না|"কিসের ভিত্তিতে আশাবাদী " এই প্রশ্নের সাথে"নাকি যতটুকুতে শান্তিতে থাকা যায় ততটুকুই সই ?" এই কথাটার সংযোগটা কোথায় ? বাংলাদেশেওতো গত আট বছর ইসলামকে কম হেনস্থা করা হলো না | দাড়ি টুপি দেখলেই , হিজাব পড়লেই হামলা আর মামলা | তাতে কি বাংলাদেশের মানুষ আশাবাদী না হয়ে নিরাশাবাদী হয়ে যাবে ? ভারতের কথাই ভাবুন | মুসলিমরাতো গত ষাট-সত্তর বছর ধরে মার খেতে খেতে আর অপমানিত হতে হতে শেষ হয়ে গেলো | তাতে কি ভারতের সব মুসলিম হতাশাবাদী হয়ে পাশের মুসলিম দেশ বাংলাদেশে চলে আসবে? কি বলেন আপনি ?
আর শান্তিতে থাকা বা থাকতে চাওয়া কি অন্যায় নাকি? এখানে একটা বিরাট মুসলিম অংশ আফ্রিকান আমেরিকান আর (non African American) সেকেন্ড জেনারেশন মুসলিম আমেরিকানদের জন্যতো আমেরিকাই তাদের দেশ | আরব বা অন্য দেশ নয় | এরা যাবে কোথায় ? আমেরিকাতে মুসলিমরা অন্য মুসলিম দেশের মতোই ইসলামিক অধিকারগুলো নিয়েই শান্তির সাথে থাকতে চায় | আর এজন্যইতো ছোট মসজিদ কেন্দ্রিক ইসলামিক স্কুলটাকে হাফ মিলিয়ন ডলারে নতুন চার্চ কিনে তা বড় করার চেষ্টা যা নিয়ে আমি দুটো লেখা লিখলাম | শুধু শান্তিতে থাকতে চাইলেতো ভালো চাকুরী করে আর চুপচাপ ঘরে বসে থাকলেই হতো| তাছাড়া ইসলামকে একটি নন মুসলিম দেশে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যদি কিছু সাময়িক ছাড় দিতে হয় আর সেটা যদি ইসলামর মূল নীতির বিরোধী না হয় সেটার মধ্যেতো আমি অন্যায় কিছু দেখিনা|বৃহত্তর স্বার্থে রাসূলুল্লাহতো (সাঃ) হুদাইবিয়ার চুক্তিতে নিজের হাতে উনি (সাঃ) আল্লাহর রাসূল এই কথাটি কেটে দিয়ে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ (সাঃ) এই নাম লিখতে বলেছিলেন| হজ্বের জন্য বের হয়েও হজ্জ্ব না করেই সেজন্য চুক্তি অনুযায়ী ফিরে এসেছিলেন| ইসলাম কিন্তু তাতে পরাজিত হয়নি বিজয়ীই হয়েছিল | এখানে বিষয়টা কেন সেভাবে দেখতে পারছেন না সেটা ভেবে আশ্চর্য হচ্ছি |
আর আমার আশাবাদী হওয়া ? সবকিছুর পরেও আমেরিকান সোসাইটি একটি ডেমোক্র্যাটিক সোসাইটি | এখানে যেমন ট্রাম্পের মতো মানুষ আছে, তেমন মাইকেল মুরের মতো যুক্তিমানা মানুষও আছে| যারা নিজেরা অন্য ধর্মের হয়েও মুসলিমদের যৌক্তিক দাবিগুলোকে সমর্থন করে যাচ্ছে দিনের পর দিন|তাই আমি আশাবাদী|
ইসলাম বিসর্জন দিয়ে সুখ কিনতে চাচ্ছে না এখানে বেশিরভাগ মুসলিমই | কিছু মানুষ তা চাইতেই পারে| তেমন মুসলিম আমেরিকাতেই শুধু নেই এদের সংখ্যা বাংলাদেশেও আজ অসংখ্য বলে আমার ধারণা |হয়তো আপনিও সেরকম অনেককেই দেশে চেনেন |
যাহোক এই মন্তব্য করেই আমার মন্তব্য-প্রতি মন্তব্যর পালা শেষ করলাম |আবারো বলি, আমেরিকাতে ইসলাম সম্প্রসারিত হচ্ছে আর এটা মুসলিম বিশ্বের জন্য ভালো বলেই আমি বিশ্বাস করি | আমি খুব কাছ থেকে আমেরিকার ইসলামকে দেখছি বলেই এটা বিশ্বাস করি কারো কথা শুনে বা
কোনো ধারণার ভিত্তিতে নয়|এর পরেও আপনার সাথে ভিন্ন মত থেকে যেতে পারে|সেটা হলে ভাববো আপনার সাথে আমার চিন্তার পার্থক্য সবসময় থেকেই যাবে, কখনোই কমবে না|ধন্যবাদ লেখা পড়া আর মন্তব্যের জন্য | ভালো থাকুন|
১০ জুলাই ২০১৬ রাত ১০:০৮
310561
হতভাগা লিখেছেন : যখন আমেরিকা বিনা কারণে মধ্যপ্রাচ্যে মুসলমানদের নিধন করতে যায় তখন আপনাদের মনে কি কোন রিয়েকশন হয় না ? ওরা যখন তেল লুটে আনে সেই তেলে কি আপনাদের গাড়ি চলে না ?
374217
০৯ জুলাই ২০১৬ রাত ০৩:৪৪
কুয়েত থেকে লিখেছেন : একজন মুসলিম কি ধরণের চিন্তা করলে মসজিদউননবীতে বোমা হামলার কথা ভাবতে পার.? ধন্যবাদ
০৯ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৫:২৫
310467
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : কুয়েত থেকে:অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার আর মন্তব্যের জন্য|
374273
১০ জুলাই ২০১৬ রাত ১২:৩৪
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় ভাইয়া।

চমৎকার উপস্থাপনায় শত তিমিরের মাঝে মনকে আলোকিত করা লিখাটি পড়ে আপনার মতই অনুভূতি হল যেন!

জাজাকাল্লাহু খাইর।
১০ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৯:২২
310517
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : সন্ধাতারা:একটা চার্চে প্রথম ঈদের জামাত হচ্ছে, তাকবীর ধ্বনি হচ্ছে আর তাতে আমিও আছি এই ভালোলাগা কেমন হবে এই ঈদের আগে সেটা আমার জানা ছিল না|সেই অনুভূতিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্যই আমার লেখা|সেই অনুভুতিটা আপনিও অনুভব করেছেন জেনে মনে হলো লেখাটা স্বার্থক হয়েছে|অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য|

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File