হে আল্লাহ, আমাদেরকে একজন সালাহ্ ঊদ্দিন আইয়ূবী দাও!

লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০২ জানুয়ারি, ২০১৭, ০১:১২:১১ দুপুর

যৌন চাহিদা মানুষের প্রতি আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত। তাই যারা বিয়ে করতে পারেনি, তাদের জন্য ভিন্ন উপায়ে যৌন চাহিদা পুরন করাটা দোষের কিছু নয়। ইসলাম পরস্পরের প্রতি মহব্বত-ভালবাসা সৃষ্টির ধর্ম। তাই প্রেম-ভালবাসা বৈধ ও পুন্যর কাজ। তরবারি নয় ভালবাসার জোরে ইসলাম প্রতিষ্টিত হয়েছে। ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। তাই সামরিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করা মুসলমানদের জন্য হারাম। অতএব, মুসলমানরা কোন অবস্হাতেই জিহাদের নামে কোন ধরনের আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিতে পারেনা।

উপরোক্ত কথাগুলো কোন নাস্তিকে বলেনি, এমনকি কোন আনাড়ি মুসলমানও বলেনি। বরং কথাগুলো একজন জনপ্রিয় বিজ্ঞ ইমাম মসজিদের মিম্বরে দাড়িয়ে বলেছে। তবে এখন নয়, বহু আগে মিশরের কায়রো অবস্হিত একটি বিখ্যাত মসজিদে দাড়িয়ে বলেছিল। আসলে ঐ ইমাম মুসলমানই ছিলনা। সে ছিল শত্রু পক্ষের গুপ্তচর। তার আসল নাম ডিওক। ইসলাম সম্পর্কে তার গভীর পড়াশোনা ছিল। বেশ ধারন করেছিল আলেমের। অসম্ভব সুন্দর ছিল তার বচন ভঙ্গি। তাই সে তখন খুব সহজেই কায়রোর বিখ্যাত মসজিদে ইমামতির চাকরি ভাগিয়ে নিয়েছিল। অতঃপর সে কোরআন হাতে মসজিদের মিম্বরে দাড়িয়েই ইসলামে চরম ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছিল। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে মসজিদে বসেই সে সাধারন মুসলমানদের ইমান হরন করছিল। অত্যান্ত সুকৌশলে সে মুসলিম জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছিল। অপুর্ব বচন ভঙ্গির সুবাদে তার ভক্ত- মুরিদের সংখ্যা বাড়তে লাগল। দুর-দুরান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল তার খ্যাতি।

১১৭০ সাল, মিশরে তখন সুলতান সালাউদ্দীন আয়ূবীর রহ. শাসনকাল চলছিল। তিনি একের পর এক অঞ্চল বিজয় করে যাচ্ছিলেন। সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুরা কিছুতেই তার সাথে পেরে উটছিলনা। চোখের ঘুম হারাম হয়েগিয়েছিল শত্রুদের। তারা কিছুতেই সালাউদ্দীন আইয়ূবীর অগ্রযাত্রা রোধ করতে সক্ষম হচ্ছিলনা। অতপর শত্রুরা গোপন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলিমদের পরাজিত করার ছক কষল। তারা এ উদ্দেশ্য মুসলিম সাম্রাজ্যে দু দল উচ্চতর ট্রেনিং প্রাপ্ত গুপ্তচর পাঠালো। একদল নারী, অন্যদল পুরুষ। নারীদের অস্ত্র ছিল যৌবন। তাদের কাজ ছিল যৌবন দ্বারা মুসলিম তরুনদের নৈতিক অধপতনের দিকে ধাবিত করা, রাজ্যময় অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিয়ে মুসলিম জাতির চেতনা- ঐতিহ্য ধ্বংস করে দেয়া। অন্যদিকে পুরুষ গুপ্তচরদের কাজ ছিল- মুসলিমদের ছদ্মবেশ ধারন করে মুসলিম জাহানের মধ্য বিভক্তি ও বিশৃংখলা করা, ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে সাধারন মুসলমাদের ইমান- আমল হরন করা, মুসলিম জাতিকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে দিয়ে সংগ্রামী ও জাতীয় চেতনা ধ্বংস করে দেয়া। এই ছিল শত্রুদের বিনা যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার নীল নকশা!! বেশ জোরে- শোরে চলছিল গুপ্তচরদের কার্যক্রম। অশ্লিলতা আর নৈতিক অধপতনে ডুবে যাচ্ছিল মুসলিম সাম্রজ্য। বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়ছিল পুরো জাহানে। হুমকির মুখে ইসালামী শাসন। কিন্তু তখন শাসন ক্ষমতায় ছিলেন সুদক্ষ শাসক সুলতান সালাউদ্দীন আইয়ূবী রহ.। তার সঙ্গী ছিলেন চৌকস গোয়েন্দা প্রধান আলী বিন সুফিয়ান রহ.। তাদের চৌকস কর্মতৎপরতায় তখন ধরা পড়েছিল গুপ্তচররা। বন্দি করা হয়েছিল শত শত গুপ্তচরকে। এদেরই একজন ইমাম রুপী ডিওক। সেই ডিওক স্বীকার করেছিল, তারা মুসলিমদের মধ্যে এমন একদল মুনাফিক তৈরি করতে চায়, যারা কোরআন হাতে নিয়ে মসজিদের মিম্বরে বসেই ইসলামী চেতনা ধ্বংস করবে।

কিন্তু তখন সুলতান আইয়ূবী রহ. এমনি এক দক্ষ মুসলিম শাসক ছিলেন, যিনি গুপ্তচরদের সমস্ত ষড়যন্ত্রের জালকে ছিন্ন- ভিন্ন করে মুসলিমদের জাতীয় চেতনাবোধ জাগ্রত করেছিলেন, সমস্ত কুসংস্কারকে সমুলে উৎখাত করে ছিলেন। অতপর সমগ্র মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ব করে বিশ্বজয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্ত করেছিলেন অসহায় ফিলিস্তিনিদের। সেই যুগ অনেক আগে পেরিয়ে গেলেও বন্ধ হয়ে যায়নি সেই ষড়যন্ত্র। তাই আজ আমাদের মুসলিম সমাজ বিজাতীয় নোংরা সংস্কৃতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। আমাদের যুবকরা ডুবে যাচ্ছে অশ্লীলতায়। চেতনাহীন হয়ে পড়েছে তারা। হয়তো হাজার হাজার ডিওক নামক ফরিদুদ্দিন মাসুদী মিশে আছে আমাদের সমাজে। মিশে আছে নামধারী ভন্ড পীর-সূফীরা যারা নানাবিধ শিরক্ -বিদআত তথা কুসংস্কার চালু মুসলিম জাতিকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে দিচ্ছে, মুসলিম উম্মাহকে শত ভাগে খন্ড খন্ড করে দিচ্ছে, জিহাদের অপব্যখ্যা করে মুসলিম জাতিকে সংগ্রাম বিমুখ করে অলস জাতি বানিয়ে দিচ্ছে।

...আজ আমাদের একজন সালাউদ্দীন আইয়ূবী, তারেক বিন যিয়াদের প্রয়োজন, ভীষন প্রয়োজন। যিনি ডিওক নামের মাসুদী, জালালী, সুফিয়ানী,তাহেরীর সমস্ত ষড়যন্ত্রের জালকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিবে। সমুলে উৎখাত করবে সমস্ত বেহায়পনা আর কুসংস্কারকে। কুসংস্কার মুক্ত করে সমগ্র? জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবে। জুলুমের হাত থেকে মুক্তি পাবে বিশ্বের সকল মুসলমান।

অতপর বিশ্বের দরবারে আবারো আমরা মাথা উঁচু দাড়াবো।

হে আল্লাহ, আমাদের আরেকজন সালাউদ্দীন আইয়ূবী দাও। --

(কপিপেস্ট, ফেসবুক)

বিষয়: বিবিধ

১৩০৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381099
০২ জানুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এখন এই ফিতনা ছড়ান হচ্ছে মুসলিম নামধারি শাসকদের মাধ্যমে। যারা ডঃ জাকির নায়েক এর মত বক্তাদের নিষিদ্ধ করছে আর উন্মুক্ত করছে অশ্লিল মিডিয়া।
381100
০২ জানুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এখন এই ফিতনা ছড়ান হচ্ছে মুসলিম নামধারি শাসকদের মাধ্যমে। যারা ডঃ জাকির নায়েক এর মত বক্তাদের নিষিদ্ধ করছে আর উন্মুক্ত করছে অশ্লিল মিডিয়া।
381106
০২ জানুয়ারি ২০১৭ রাত ০৮:৩৪
কুয়েত থেকে লিখেছেন : হে আল্লাহ..! আমাদেরকে ঈমানের বলে বলিয়ান মর্দেমুমিন আরেকজন সালাউদ্দীন আইয়ূবীর মতো চৌকস শাসক দাও যিনি মুসলিম উম্মাহকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেন।লেখাটি অনেক ভালো লাগলো আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
381224
০৯ জানুয়ারি ২০১৭ রাত ০৮:৪৭
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : السلام عليكم ورحمة الله وبركاة

কুয়েত থেকে লিখেছেন : হে আল্লাহ..! আমাদেরকে ঈমানের বলে বলিয়ান মর্দেমুমিন আরেকজন সালাউদ্দীন আইয়ূবীর মতো চৌকস শাসক দাও যিনি মুসলিম উম্মাহকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেন। লেখাটি অনেক ভালো লাগলো আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সহমত

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File