কারাগার থেকে কাদের মোল্লা : ‘শেষ ইচ্ছা’র কথা জানালেন জাতির কাছে।

লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১০:০৩:৩২ রাত



আমি কোন অপরাধ করিনি। মহান আল্লাহ গোপন, প্রকাশ্য সকল খবর রাখেন। কোন ব্যক্তিই আল্লাহর চোখে ফাঁকি দিতে পারবে না। যারা আমাকে মিথ্যা অভিযোগে হত্যা করতে চায়, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের ময়দানে তাদের বিচার করবেন। আমার জন্য আল্লাহর স্বাক্ষ্যই যথেষ্ঠ।’ কথাগুলো আক্ষেপ ও কষ্ট নিয়ে বলছিলেন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা।

গতকাল আবদুল কাদের মোল্লার জেষ্ঠ পুত্র হাসান জামিল, দুই কন্যা আমাতুল্লাহ পারভিন ও আমাতুল্লাহ লারজীন, শ্যালক- রাগিবুল আহ্সান ও চাচাতো ভাই- সামসুল ইসলাম কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষ্যাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর এক বিবৃতে কাদের মোল্লা বলেছেন, তিনি এখন ‘শহীদী’ মৃত্যু চান।

তিনি বলেছেন, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও এদেশের মানুষ একদিন মুক্তি পাবে। আমি ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য টার্গেটে পরিণত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে কোন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী প্রসিকিউশন হাজির করতে পারেনি। সম্পূর্ণ শুনা স্বাক্ষীর উপর ভিত্তি করে ট্রাইব্যুনাল আমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় ঘোষণার পর সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠে। তাদের দাবিতে ১৮ই ফেব্রুয়ারী আইন সংশোধন করে আমার শাস্তি বর্ধিত করার জন্য সরকার পক্ষ আপীল দায়ের করে। দুনিয়ার বিচার বিভাগের ইতিহাসে সম্পূর্ণ শুনা স্বাক্ষীর উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ দণ্ড প্রদান এক নজিরবিহীন ঘটনা। নিম্ন আদালত মিথ্যা মামলায় আমাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করলেও সুপ্রীম কোর্ট সে দন্ড বৃদ্ধি করে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই রায় বিস্ময়কর হলেও আমি এতে হতবাক হইনি। কারণ আমি ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের কারণেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। দুনিয়ায় যারা ইসলামী আন্দোলন করেছেন তাদের সবাইকে দুনিয়া থেকে উৎখাত করার নানামুখি ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এমনকি নবী-রাসূলদের উপরও চালানো হয়েছিল জুলুম এবং নির্যাতন। তাই ইসলামী আন্দোলনের পথ হচ্ছে রক্তপিচ্ছিল কন্টকাকীর্ণ।

আবদুল কাদের বলেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নবুওয়াতের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন কিন্তু শাহাদতের দরজা খোলা রেখেছেন। যতদিন ইসলামী আন্দোলনের পথে শাহাদতের ঘটনা ঘটবে ততদিন ইসলামী আন্দোলন বেগবান হবে। আল্লাহ যাদেরকে চান, তাদেরকেই শহীদ হিসেবে কবুল করেন। আমি যদি মহান আল্লাহর দরবারে শহীদ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হই, সেটাই আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ পাওনা। সুতরাং মৃত্যুদণ্ডের ভয়ে আমি ভীত নই। সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগে দুনিয়ার আদালত আমাকে শাস্তি প্রদান করে পরকালের আদালতে আমার ন্যয়বিচার প্রাপ্তির সার্টিফিকেট দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা সকল অন্যায় ও বিভ্রান্তিকর বিচার থেকে মুক্তি দিয়ে ন্যয়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ‘শেষ বিচারের দিনের’ কথা কোরআনে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং আসল ফায়সালা হবে আখেরাতের আদালতে। আজকের বিচার সেদিন আমার মুক্তির কারণ হবে। মহান আল্লাহর কাছে আমি অবশ্যই সেদিন ন্যায়বিচার পাবো।

তিনি বলেন, আমি দেশবাসীর নিকট আমার সালাম জানাচ্ছি ও তাদের নিকট দোয়া কামনা করছি। দেশ ও জাতির এই কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য্য, সহনশীলতা ও সংযত আচরণের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমি আমার প্রিয় দেশবাসীর নিকট আহ্বান জানাই। দুনিয়ায় না হলেও আখিরাতে আমার প্রিয় দেশবাসী, সহকর্মী ও আপনজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে।’

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৭৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File