পেয়ারা শুধু সুস্বাদু ফলই না....... আরো.....

লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ১৬ জুন, ২০১৩, ০৯:৪৬:৫৪ রাত

























পেয়ারার জোস যে কি মজা তা যারা পান করেছেন, তারাই জানেন।

দুধ দিয়ে পেয়ারার জোস পান করে দেখবেন, কেমন স্বাদ।

শুকনা পেয়ারা পাতা ভেজে তা পাউডার করে দাতে ব্যবহার করলে, দাতের যে উপকার পাওয়া যায়, তা কম-বেশী সবার জানা।

এটার গাছ, পাতা, উচ্চতা, ফল, প্রকার, সময়কাল, দাম, নাম, স্বাদ সম্পর্কে বলার অপেক্ষা রাখে না।

পেয়ারায় ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ কমলার চেয়ে বেশি। আর এতে পটাসিয়ামও আছে প্রচুর পরিমাণে, কলার চেয়েও বেশি।

এর আছে আরো অনেক গুণ। আমাদের দেশীয় এই ফলটি যে এতো গুণসম্পন্ন তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। শুধু শুধু ঘুরে ফিরি বিদেশী ফলের পেছনে। আসুন জেনে নেয়া যাক পেয়ারার এমন কিছু গুণ যা আগে আমরা অনেকেই জানি না।

আসুন, কিছুটা হলেও জেনে নেই:

=পেয়ারা আমাদের ত্বককে মসৃন এবং সুস্থ রাখে।

= কাঁচা পেয়ারা খুব ভালো অ্যাসট্রিনজেন্ট (দেহের টিস্যু ও রক্তনালিকা সঙ্কুচিত করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা) হিসেবে কাজ করে।

=পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন (এ) (বি) (সি) এবং পটাসিয়াম থাকার কারণে এটা আমাদের ত্বককে সজীব, উজ্জ্বল এবং বলিরেখা মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

=এটা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।

=যারা ওজন কমাতে চান তারা নির্দ্বিধায় পেয়ারা খেতে পারেন।

=সর্দি-কাশি প্রতিরোধে পেয়ারা খুব ভালো ভূমিকা পালন করে।

পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে দ্রবীভূত খাদ্য আঁশ আছে। সেই সঙ্গে আছে অত্যধিক পরিমাণ ভিটামিন সি। পেয়ারা থেকে কমলালেবুর তুলনায় চার-পাঁচ গুণ বেশি ভিটামিন সি পাওয়া যায়। একটি পেয়ারায় যে পরিমাণ ভিটামিন সি আছে, তা আমাদের এক দিনের চাহিদার তিন গুণ। ভিটামিন- (এ)র একটি ভালো উৎস। পেয়ারায় সমপরিমাণ কলার চেয়ে বেশি পটাসিয়াম আছে। এ ছাড়া আছে ভিটামিন বি, ভিটামিন ই ও ভিটামিন কে। খনিজ লবণের মধ্যে আছে ম্যাগনেসিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ।

অত্যধিক মাত্রায় দ্রবীভূত পেয়ারার খাদ্য আঁশ ল্যাক্সিটেভের মতো কাজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এই আঁশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় এবং বিষক্রিয়া থেকে কোলনের উপরিভাগকে রক্ষা করে কোলন ক্যান্সার থেকে মুক্ত রাখে। পেয়ারার অতিরিক্ত মাত্রার ভিটামিন সি এন্টিঅক্সেডিন্ট হিসেবে কাজ করে ফ্রি রেডিক্যালস নিষ্ক্রিয় করে দেয় এবং ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এটা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, হাড়, রক্ত নালি এবং ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। পেয়ারার ভিটামিন এ এবং ফ্লাভোনয়েড ত্বকের ক্যান্সার ও রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে। এর লাইকোপিন সানস্ক্রিনের মতো ইউভি রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচায় এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ করে।

পেয়ারার পটাসিয়াম হার্ট-রেটকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্লাডপ্রেশারকে স্বাভাবিক রাখে। এর কপার হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং থাইরয়েডের কার্যক্ষমতাকে ঠিক রাখে। পেয়ারা কোলেস্টেরল কমায়, স্কার্ভি প্রতিরোধ করে, অ্যাজমা এবং ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। এটা দাঁত ও মাড়ির ব্যথা কমায় এবং ঠাণ্ডা ও কফ নিয়ন্ত্রণ করে।

পেয়ারা বর্ষাকালীন ফল হলেও বর্তমানে বাজারে ও অলিগলিতে মেলে এই ফলের সন্ধান।

উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ ও ‘সি’ ত্বক, চুল ও চোখের পুষ্টি জোগায়, ঠান্ডাজনিত অসুখ দূর করে। ত্বকের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ময়েশ্চার জরুরি। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চার, যা তারুণ্য বজায় রাখে দীর্ঘদিন, ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর করে ও শীতে পা ফাটা রোধ করে। পেয়ারার ভিটামিন-এ ছোটদের রাতকানা রোগ ভালো করে। তবে বাচ্চারা পেয়ারার বীজ হজম করতে পারে না। তাই তাদের বীজ বাদ দিয়ে পেয়ারা খাওয়ানো উচিত। একটা পেয়ারায় রয়েছে চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টি। তাই সপ্তাহে অন্তত একটি হলেও পেয়ারা খাওয়া উচিত। পেয়ারার খোসায় রয়েছে আঁশজাতীয় উপাদান। পেয়ারার ভেতরেও রয়েছে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও পাকস্থলীর ক্যানসার দূরীকরণে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পেয়ারায় রয়েছে ক্যারটিনয়েড, পলিফেনল, লিউকোসায়ানিডিন ও অ্যামরিটোসাইড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ত্বককে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। পুষ্টির বিচারে পেয়ারা হোক সবার নিত্যসঙ্গী।

পেয়ারার পাতার গুণাগুন

* পেয়ারা পাতা ও অপরিপক্ব পেয়ারা কলেরা, আমাশয় নিরাময়ে ভালো কাজ করে।

* ত্বকের ক্ষত বা ঘায়ে পেয়ারা পাতা থেঁতো করে প্রলেপ দিলে উপকার পাবেন।

* কচি পেয়ারা পাতা চিবালে দাঁতের ব্যথা কমে।

* মাড়ি ফোলা বা দাঁতের ব্যথায় প্রতিদিন সকালে পেয়ারার ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে মাড়ি ফোলা কমবে, ব্যথাও থাকবে না।

আসুন, দেশীয় ফলের প্রতি আগ্রহী হই।

(বাড়ীর মুরগী ডালের মত) এ প্রবনতা থেকে দূরে থাকি।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সুস্থ্য রাখুন। আমীন

বিষয়: বিবিধ

২৩৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File