“কার দালালি কে করে” লেখক----------------সঞ্জীব চৌধুরী

লিখেছেন লিখেছেন ইচ্ছে দেয়াল ০৫ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:০৪:১৬ সকাল

• বাংলাদেশের স্বনামধন্য হিন্দু সিনিয়র সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধুরী হিন্দুদের উপর হামলা প্রসঙ্গে সাহসের সাথে সত্যকে তুলে এনেছেন। সবাই পড়ুন।

“সরকারি প্রচারণায় এতদিন হিন্দুদের ওপর হামলার ব্যাপারে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বিএনপির নাম শোনা যাচ্ছিল; হঠাত্ বিএনপির নাম বাদ দিয়ে হেফাজতে ইসলামের নাম ঢোকানোর বুদ্ধি কারা তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে, আমি জানি না। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বিশিষ্ট হিন্দুদের শুধু করজোড়ে বলব, দোহাই লাগে, এভাবে তোতা পাখির মতো শেখানো বুলি আওড়ে আর হিন্দুদের সর্বনাশ করবেন না। আমিও একজন হিন্দু। কিছু খোঁজখবর আমিও রাখি। আমার খবর হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমাত্র জামায়াতে ইসলামী সংগঠিতভাবে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের সাহায্য-সহযোগিতা করে চলেছে। ব্যাপারটা আমাকে লজ্জায় ফেলেছে। আমি কোনোদিন জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দিইনি; কোনো হিন্দু দিয়েছে বলে মনে হয় না। তার পরও তারা যে এই দুর্দিনে দলগতভাবে হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এ সত্য তো অস্বীকার করতে পারি না। কে লজ্জা পেল, কে দুঃখিত হলো, তার দ্বারা ইতিহাসের গতি নিয়ন্ত্রিত হয় না।”

কার দালালি কে করে

সঞ্জীব চৌধুরী

আমার সাংবাদিকতা জীবন গত ফেব্রুয়ারিতে ৪৩ বছর পেরিয়ে ৪৪ বছরে পড়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে স্বনামে বহু লেখা লিখেছি। গত সপ্তাহে ‘কারা বেশি বিপন্ন’ শিরোনামে লেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে হাজারখানেক মানুষের যে আবেগাপ্লুত সাড়া পেয়েছি, তা আমার জন্য এক অচিন্তনীয় অভিজ্ঞতা। অনেকে আমার সঙ্গে ফোনে সরাসরি কথা বলেছেন। কথা বলতে গিয়ে কেউ কেউ আবেগে কেঁদে ফেলেছেন। এসব আলাপচারিতায় আমার মনে হয়েছে, দাড়ি-টুপিধারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নীরব কান্না যে এই ডামাডোলের মাঝেও একজন হিন্দুর চেখে ধরা পড়বে এবং তার কলম দিয়ে প্রকাশ পাবে, তা তারা কল্পনা করেননি।

মনে রাখতে হবে, আমি কিন্তু বলছি না যে এদেশে সংখ্যালঘুরা, বিশেষ করে হিন্দুরা বিপন্ন নয়। হিন্দুদের বাড়িঘরে, মন্দিরে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রাতের আঁধারে চোরাগোপ্তা হামলা এখনও চলছে। এসব হামলায় জড়িতদের নাকি শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ফলে সাজা ভোগ করা দূরে থাকুক, হামলাকারীরা ধরাও পড়ছে না। সাম্প্রতিক এসব হাঙ্গামা ছাড়াও হিন্দুদের মনে সঙ্গত কারণেই যে বেদনার পাহাড় জমে আছে, সে ব্যাপারে একজন হিন্দু হিসেবে আমি অবহিত। এ পটভূমিতে আমার বক্তব্য হচ্ছে—নিরীহ হিন্দুরা যেমন বিপন্ন, তেমনি নিরীহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও মোটেই ভালো নেই। দেশে সংখ্যালঘুদের এবং ধর্মপ্রাণ হওয়ার কারণে সংখ্যাগুরু শ্রেণীর একটা অংশের ভালো থাকতে না পারার কারণ হচ্ছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার চেতনার অনুপস্থিতি। সমাজে এগুলো ফিরিয়ে আনতে হলে হিন্দুর দুঃখে মুসলমানকে এবং মুসলমানের বেদনায় হিন্দুকে কাঁদতে শিখতে হবে; তবেই সহমর্মিতার বিকাশ ঘটবে এবং আঁধারে বিচরণকারী অপশক্তি পালানোর পথ খুঁজবে।

আমার আগের লেখাটির শেষাংশ নিয়ে বৌদ্ধধর্মীয় একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিক মৃদু আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত অমায়িক ভদ্র লোক। তার আপত্তির ধরনে সৌজন্যের কোনো ঘাটতি ছিল না। তিনি বললেন, আমি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিপন্নতার চিত্র তুলে ধরায় হিন্দুরা যে বিপন্ন, সে বিষয়টি গৌণ হয়ে গেছে। আমি তার সঙ্গে একমত হতে পারিনি। আপনার অবস্থা খারাপ দেখে আমি যদি বলি, ‘ভাইরে, আপনার দিনকাল তো দেখি মোটেই ভালো যাচ্ছে না’—তাতে আমি যে ভালো নেই, সে কথার গুরুত্ব কমে যাবে কেন! অনলাইনে যেসব পাঠক আমার লেখাটিতে সাড়া দিয়েছেন, তাদের মধ্যে শতাধিক জন মন্তব্য করেছেন সপ্রশংস সমর্থন জানিয়ে। মন্তব্যকারীদের মধ্যে মাত্র একজন হিন্দু বলেছেন ভিন্ন কথা। তার মন্তব্য : ‘সঞ্জীব চৌধুরী যতই দালালি করুন আপনি বাঁচবেন না, আমিও বাঁচব না।’ দাড়ি-টুপির কারণে এদেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যে পথেঘাটে বিপন্ন হচ্ছে, এ বাস্তবতা কয়েকটি ঘটনাসহ তুলে ধরলে সেটা যে মুসলনাদের দালালি করা হয়, তা আমার জানা ছিল না।

এ প্রসঙ্গে পুরনো দুটি ঘটনার উল্লেখ করতে চাই। আমি তখন দৈনিক যুগান্তরে সম্পাদকীয় বিভাগে কর্মরত। হাফেজ আহমদউল্লাহর তত্ত্বাবধানে প্রতি শুক্রবার প্রকাশিত পত্রিকাটির ধর্মপাতা বেশ জমে উঠেছে। প্রায় সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে আহমদউল্লাহর কাছে হুজুররা আসেন। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে সে পরিচয় ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়। তা দেখে সম্পাদকীয় বিভাগের আমার এক সহকর্মী (তিনি এখন অন্য পত্রিকায় কর্মরত) রসিকতা করে বলেছিলেন, খুব তো খাতির জমাচ্ছেন, পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিলে বুঝবেন মজা! তার ওই রসিকতার পর এক দশক পেরিয়ে গেছে। কোনো হুজুর আমার ভুঁড়ি ফাঁসিয়ে দেয়নি এবং আমি এখনও সাংবাদিকতা করে ডাল-ভাত খাচ্ছি।

দ্বিতীয় ঘটনা এর মাস তিনেক পরের। ঢাকার কামরাঙ্গীর চরে মুসলমানদের এক ধর্মীয় মাহফিল হবে। হাফেজ্জী হুজুরের সেজো ছেলে মরহুম হামিদুল্লাহ হুজুর ছিলেন আমার অভিন্নহৃদয় বন্ধু। তিনি আমাকে ওই মাহফিলে বক্তব্য রাখার জন্য নেমন্তন্ন করেন। আমি সেখানে যাব ঠিক করার পর আমার পরিবারে গভীর উত্কণ্ঠা দেখা দেয়। সে সময় কামরাঙ্গীর চরের ছিল ব্যাপক নেতিবাচক পরিচিতি। এ পরিচিতির একটা দিক ছিল—সেখানকার মুসলমানরা অত্যন্ত কট্টর। অন্য ধর্মের কাউকে সামনে পেলে তারা কী করে বসে, ঠিক নেই! এহেন কামরাঙ্গীর চরে ইসলামি মাহফিলে যোগ দিতে গিয়ে কী পরিণতি ঘটে, সে ব্যাপারে উদ্বেগাকুল পরিবার অনন্যোপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত আমার ছেলেকে সঙ্গে যেতে বাধ্য করেছিল—সম্ভবত দেহরক্ষী হিসেবে। অথচ ওই মাহফিলে আমি যে আন্তরিক অভ্যর্থনা ও সম্মান পেয়েছিলাম, তা এখনও আমার মনে সুখস্মৃতি হয়ে বিরাজ করছে। ফেরার পথে ছেলে আমাকে অবাক কণ্ঠে বলেছিল, বাবা, হুজুররা কেউ তো সাম্প্রদায়িক নয়!

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর মাদরাসা একটি রক্ষণশীল ইসলামধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র। ওই মাদরাসার লাগোয়া একটি বর্ধিষ্ণু বৌদ্ধপল্লী। সীমানা দেয়ালের একপাশে মাদরাসা, অন্যপাশে বৌদ্ধমন্দির। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে চলছে সম্প্রীতিময় সহাবস্থান। মাদরাসার মহাপরিচালক জমিরুদ্দীন হুজুর যখন মারা যান, তখন নানুপুরের এ বৌদ্ধপল্লীর ঘরে ঘরে কান্নার রোল উঠেছিল। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা এখন সম্ভবত দেশের বৃহত্তম ইসলামধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র। এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে হাটহাজারীতে হিন্দুদের জমি দখলের অপচেষ্টায় গুটিকয়েক দুর্বৃত্ত হিন্দুপল্লীতে ধ্বংসাত্মক হামলা চালায়। হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান ব্যক্তিত্ব আল্লামা শাহ আহমদ শফী সেদিন অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে দৃঢ়ভাবে রুখে না দাঁড়ালে সেখানে রক্তগঙ্গা বয়ে যেত। মরহুম মুফতি ফজলুল হক আমিনীর উগ্র ভাবমূর্তির কথা সবাই জানেন। কিন্তু ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা-অর্চনায় যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য যে তিনি সদাসতর্ক থাকতেন, এ ব্যাপারে লালবাগ মাদরাসার ছাত্রদের খেয়াল রাখার নির্দেশ দিতেন, সে খবর কেউ রাখে না; রাখলেও মুখ ফুটে বলে না।

অতএব, অনলাইন মন্তব্যে যে হিন্দু ভদ্রলোক বলেছেন, মুসলমানদের হাতে তিনিও মরবেন আমিও মরব—তার এ ধারণা ভিত্তিহীন। বরং এ ধরনের বিকৃত চিন্তা থেকে তিনি এবং তার মতো হিন্দুরা বেরিয়ে আসতে পারলে হিন্দুদেরই উপকার হবে।

অবশ্য এ ধরনের বিভ্রান্তিতে যে শুধু একশ্রেণীর হিন্দু ভুগছেন তা নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের চরমভাবে অপমান করে যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশের অসম্প্রদায়িক ভাবমূর্তির অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ যেভাবে চলছে, তাতে নাকি ২০ বছর পর এদেশে কোনো হিন্দুর অস্তিত্ব থাকবে না। তিনি আরও বলেছেন, হিন্দুদের মন্দির ও সম্পত্তির ওপর এখন যে চোরাগোপ্তা হামলা চলছে, সেগুলো নাকি অনুশীলনমাত্র। তার মতে, হিন্দুদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর হামলা সামনে আসছে। ড. মিজানের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে প্রথমে বলতে হয়, বাংলাদেশ সেভাবেই চলছে, যেভাবে আওয়ামী লীগ সরকার চালাচ্ছে। এ ভঙ্গিতে দেশ চললে ২০ বছরের মধ্যে হিন্দুরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে তিনি যে মন্তব্য করলেন, তার জন্য তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের দেশ পরিচালনার ত্রুটিকে দায়ী করছেন কি না, বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার। তার তত্ত্ব অনুযায়ী তিনটি পন্থায় হিন্দুরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে—প্রথমত হিন্দুদের সবাইকে মেরে ফেলা হবে; দ্বিতীয়ত হিন্দুরা সব ধর্মান্তরিত হয়ে যাবে; তৃতীয় হিন্দুরা সবাই দেশ ছেড়ে পালাবে। এছাড়া হিন্দুদের নিশ্চিহ্ন হওয়ার আর কোনো কারণ নেই। তিনি কি মনে করেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা হিন্দুদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠেছেন? তিনি যে মনে করছেন হিন্দুদের ওপর ভয়ঙ্কর হামলা আসন্ন, তার এই বিশ্বাসের ভিত্তি কী! তিনি যদি এমন কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পেয়ে থাকেন, তবে ওই সম্ভাব্য হামলা রোধে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তার ভূমিকা কী! আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এমন উদ্ভট এবং উসকানিমূলক কথা বলে তিনি দেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি এবং সে অনুযায়ী আচরণ করার জন্য ভিন্ন রাষ্ট্রের হাতে ধারালো অস্ত্র তুলে দিয়েছেন; সর্বোপরি দেশের সংখ্যাগুরু মুসলমান জনগোষ্ঠীকে চরমভাবে বেইজ্জত করেছেন। ১৯৫৫ সালে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের চিফ সেক্রেটারি পাঞ্জাবি আইসিএস অফিসার আজিজ আহমদ পাকিস্তান জাতীয় কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেত্রী মিসেস নেলী সেনগুপ্তাকে টেবিল চাপড়ে ধমক দিয়ে বলেছিলেন, আমি জানি পাকিস্তান থেকে হিন্দুদের কীভাবে নিশ্চিহ্ন করতে হয় (আই নো হাউ টু এলিমিনেট হিন্দুজ ফ্রম পাকিস্তান)। পাকিস্তান ভেঙেছে; বাংলাদেশ হয়েছে; আজিজ আহমেদ নেই; আমরা হিন্দুরা মুসলমানদের সঙ্গে নিয়ে সুখে-দুঃখে আছি—এটাই বাস্তবতা। আজ এত বছর পর ড. মিজান আজিজ আহমদের মতো হিন্দু বিতাড়নের সুড়সুড়ি অনুভব করছেন কি না, আমি জানি না। তবে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী মিজান সাহেবের পছন্দ হোক বা না হোক, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী সব বাংলাদেশীর অস্তিত্ব এ দেশে থাকবে।

এ লেখা যখন শেষ পর্যায়ে, তখন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত খবরের দিকে কান গেল। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মাজীনা রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গেছেন চলমান হামলার পটভূমিতে হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে। সেখানে তিনি শ্রুতিসুখকর কথাবার্তা বলেছেন। ওই টিভি চ্যানেলের খবর অনুযায়ী মন্দিরসংশ্লিষ্ট কয়েকজন হিন্দু নাকি মাজীনা সাহেবকে বলেছেন, জামায়াত-শিবির আর হেফাজতে ইসলাম হিন্দুদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আমার প্রথম কথা হলো, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের সান্ত্বনা জানাতে চান ভালো কথা; কিন্তু তার জন্য ঢাকেশ্বরী মন্দির কেন? এ মন্দিরটি অথবা রাজধানীর অন্য কোনো মন্দির কি আক্রান্ত হয়েছে? মাজীনা সাহেব, যেসব এলাকায় হামলা হয়েছে, একটু কষ্ট করে সেখানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের সঙ্গে সরাসরি কথা বললে কি ব্যাপারটা বেশি শোভন এবং বাস্তবসম্মত হতো না? জামায়াত-শিবির আর হেফাজতে ইসলাম মিলে যে হিন্দু পেটাচ্ছে, এ তথ্য ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরুত-ঠাকুররা কোথায় পেলেন? সরকারি প্রচারণায় এতদিন হিন্দুদের ওপর হামলার ব্যাপারে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বিএনপির নাম শোনা যাচ্ছিল; হঠাত্ বিএনপির নাম বাদ দিয়ে হেফাজতে ইসলামের নাম ঢোকানোর বুদ্ধি কারা তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে, আমি জানি না। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বিশিষ্ট হিন্দুদের শুধু করজোড়ে বলব, দোহাই লাগে, এভাবে তোতা পাখির মতো শেখানো বুলি আওড়ে আর হিন্দুদের সর্বনাশ করবেন না। আমিও একজন হিন্দু। কিছু খোঁজখবর আমিও রাখি। আমার খবর হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমাত্র জামায়াতে ইসলামী সংগঠিতভাবে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের সাহায্য-সহযোগিতা করে চলেছে। ব্যাপারটা আমাকে লজ্জায় ফেলেছে। আমি কোনোদিন জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দিইনি; কোনো হিন্দু দিয়েছে বলে মনে হয় না। তার পরও তারা যে এই দুর্দিনে দলগতভাবে হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এ সত্য তো অস্বীকার করতে পারি না। কে লজ্জা পেল, কে দুঃখিত হলো, তার দ্বারা ইতিহাসের গতি নিয়ন্ত্রিত হয় না

বিষয়: রাজনীতি

১৩০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File