।।সকল শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয়,রাজনৈতিক,নাগরিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে-জাতীয় সংলাপ আজ অপরিহার্য।।

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তমন ০৮ মার্চ, ২০১৩, ১১:৫৩:৩৯ সকাল

আজকে ৪২বছর পর যে বিভাজনের ঝগড়া ভাইয়ে ভাইয়ে সারাদেশে শুরু হয়েছে-এযাবৎ প্রায়১৪৭টি প্রাণ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে! নানান ইস্যূতে সারাদেশে গণহত্যার মত ঘটনা ঘটিয়ে নাগরিকদের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে?এরা কারা? দেশও জাতির দুশমন!?

কিন্তু দেশ ও জাতির দুশমন কে?বা কারা?

হীনস্বার্থে অন্ধ হয়ে আমরা আমাদের ঈমান,আমাদের ধর্ম,আমাদের দেশ ও জাতির এই আসল দুশমনদের চিনতেই পারছি না? বা চিনতে চাইছি না?

স্বাধীনতার পর যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত বাংলাদেশটাকে গড়ে তোলার যাত্রালগ্ন থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং লোমহর্ষক ভয়ংকরও বটে,যখনই দেশের কোন কান্ডারী হাল ধরে দেশটাকে সচল করতে যায় কিছুদুর যেতে না যেতেই নানান ইস্যূতে, নানান কর্মসূচীতে, নানান বাহানাকে পূজি করে এই দুশমন অনবরত দেশটাকে অস্থির করে গতিরোধ করে দাঁড়ায় আর দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যায় এবং আজ অবধি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েই যাচ্ছে!এভাবে আমরা হারিয়েছি এদেশের হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা,স্ব-পরিবারে হারিয়েছি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে,হারিয়েছি দেশের অহংকার চার নেতা,কর্ণেল তাহের সহ অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা-সিপাহী জনতাকে,হারিয়েছি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে,হারিয়েছি নূর হোসেন-জিহাদ-ডাঃমিলন সহ গণতন্ত্রকামী অসংখ্য বীর জনতাকে,হারালাম ৫৭জন বীরসেনাঅফিসার সহ বিডিআর জোয়ানদের আর এভাবে করে আজ হারালাম-প্রায় ১৪৭জন নারী-শিশু-তরুন-যুবা প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশের নিরীহ আমাদেরই সুপ্রিয় নাগরিকগদের !.কিন্তু...কেন?

বিষয়টি ঠান্ডা মাথায় সবাই চিন্তা করে দেখুন-

**আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে

*স্বাধীনভাবে,

*মিলেমিশে

*আমাদের নিজেদের মত করে

কেন আমরা গড়ে তোলবার কথা ভাবতেও পারছি না!

এখনতো ভিনদেশী কুখ্যাত জালিম পাক-হানাদার নেই!

তবে আমরাই আমাদেরকে নিঃশেষ করছি?

আজকে দেশ ও জাতির আসল দুশমন কে বা কারা?

১.আমাদেরই দেশের কতিপয় নাগরিক?

২.নাকি ভিনদেশী নাগরিক?

জ্বালাও পোড়াও করে,নির্মূল-খতম করে বা কিছুভিন্নমতের নাগরিককে ফাঁসি দিয়ে দিলেই কি এ প্রশ্নের জবাব মিলবে?এর কোন সমাধান আদৌ হবে না।আমরা আমাদেরই সম্পদ,আমাদেরই দেশনেতাদের,আমাদেরই স্বজন নাগরিকদের হারাতেই থাকবো! তাই সকলকেই সকল সংকীর্ণতা-দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল পার্থক্য ভুলে গিয়ে এককাতারে এসে দাঁড়াতে হবে। একটিমাত্র প্লাটফর্মে সমবেত হতেই হবে ।আর এ প্লাটফর্মটি হচ্ছেঃআমার-আপনার আমাদের সকলেরই প্রাণপ্রিয় মাটি-প্রাণপ্রিয় জন্মভূমি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ-আমাদের স্বাধীন পতাকা-আমাদের দেশের পবিত্র সংবিধান।

দেশের চলমান সংকট নিরসনে যেহেতু আমরা সরকারী ও বিরোধী জোট-মহাজোট এবং জামাত-শিবির সকলেই এদেশেরই নাগরিক।এদেশ,এমাটি,এপতাকা,এ সংবিধান,এজন্মভুমি আমাদের শুধুই আমাদের।তাইতো আমরা সকলেই এদেশের গর্বিত নাগরিক।

আর জামাত-শিবির নিয়ে যে সংকট সেটাও এদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সাংবিধানিক রীতিতে অবশ্যই সমাধানযোগ্য। যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশ হবার পর থেকে তারাও এদেশেরই নাগরিক।

মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা অপরাধ করেছিল !সাংবিধানিকভাবেই আজকে দেশের নাগরিক হিসেবে অবশ্যই তাদের সুষ্টভাবে বিচার করা যাবে।যেহেতু দেশের ষোলকোটি মানুষ সবাই আমরা এদেশের সংবিধান সিদ্ধ নাগরিক।তাই আমি আপনি বা যেকোন নাগরিক আগে বা পরে যে কোন অপরাধই করুক সংবিধান মোতাবেক তার বিচার স্বাভাবিকভাবে হতেই হবে।পক্ষ-বিপক্ষ,নানান এজেন্ডাতে বিবাদ করার কিছুই নেই।কেননা কোন নাগরিক আগে পক্ষে ছিল কিন্তু এখন যদি দেশ ও জনগনের বিপক্ষে কোন অপরাধ করে?অবশ্যই দেশের সংবিধান মোতাবেক তার বিচার হবে। কেউ বিপক্ষে ছিল এবং অপরাধ করেছিল অবশ্যই সংবিধান মোতাবেক তারও বিচার হবে।সহজভাবেই রাষ্ট্র নিয়মমোতাবেক তার কোন নাগরিকের অপরাধের বিচার চলমান প্রক্রিয়াতেই করবে।কারণ,সেতো ভিনদেশী নাগরিক নন,এদেশেরই নাগরিক।আমার আপনার মতো সেও নাগরিক সুবিধা মর্যাদা এবং নিরাপত্তা লাভের সমান অধিকারী।এটাকে এতো জটিল করার কিছুই ছিল না।আমাদের আসল দুশমনরা আমাদের আভ্যন্তরীন অতি সাধারণ বিষকেও উস্কে দিয়ে জটিলতার মধ্যে ফেলে আমাদের অস্থির করে রাখে।আর আমরা সব তালগোল পাকিয়ে দেশ ধ্বংসের আত্মঘাতি কর্মকান্ডে নিজের অজান্তেই অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে পড়ি।

অতএব আর কালবিলম্ব না করে

অতি জরুরীভাবেই দেশের মুরুব্বী-সুশীল সমাজ,ব্যবসায়ী-পেশাজীবি-আইনজীবী-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ সহ সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ-প্রাক্তন এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতিগণ,প্রাক্তন বিচারপতিগণ এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা-মাশায়েখগণ-অন্যান্য অমুসলিম ধর্মীয় শীর্ষনেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংকট নিরসন জাতীয় নাগরিক সুরক্ষা কমিটি করে-একটি জাতীয় নাগরিক সুরক্ষা প্লাটফর্ম করে

অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সবাই বসে অত্যন্ত খোলামনে-সৎভাবে-ন্যায়নিষ্টভাবে-

শুধুমাত্র এবং একমাত্র নাগরিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য বোধে উজ্জীবিত ও চেতনাদীপ্ত থেকে দেশ ও জনগনের বৃহত্তর ঐক্য এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আর একজন নাগরিকও যেন আহত বা লাশ না হয়,দেশের শান্তি-শৃংখলা-স্বস্থি যেন ফিরে আসে সে জন্যে অতিশীঘ্রই একটি জাতীয় গোলটেবিল বৈঠকে বসে জাতীয় সংলাপ শুরু করে দেয়া-আজ সময়ের দাবী বলেই বিজ্ঞজনরা মনে করেন এবং এরই মাধ্যমে দেশ ও জাতির চলমান সংকট নিরসন হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।

বিষয়: বিবিধ

১০২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File