প্রেম যেন এমনই হয়-২৭

লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৪৮:৪৫ রাত



রতনের বিপাক তাকে যে কত পাকে বাঁধে তা স্বয়ং বিধাতা ছাড়া বোধ হয় আর কেউ বলতে পারেনা। প্রেমের পরীক্ষায় পাস করে বিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে বেচারা এর উপর আবার বিয়ে পরীক্ষার ভাইভা। সে পরীক্ষা নিচ্ছেন রেণু আপু। সেই কানাডা প্রবাসী আপু এককালে ভাল শিক্ষক ছিলেন বটে !

সঞ্চিতা দেশে ফেরার কয়েকদিন হল। কিন্তু ফোনে আর স্কাইপিতে ছাড়া সামনা সামনি কথা হয়নি। পরশু তাদের বিয়ে। আজ সঞ্চিতাকে সাথে নিয়ে রেণু আপু বের হয়েছেন মার্কেটিং এ। তিনিই ডেকেছেন রতনকে। রতন সারাদিন তাদের দুজনের সাথে অসহায়ের মত ঘুরেছে। যখনই কোন পছন্দ অপছন্দের বিষয় এসেছে তখনই। জ্বি জ্বি ভাল ভাল এসব সম্মতিসূচক কথা বলেছে। সঞ্চিতা অবশ্য রতনের এ অবস্থা বেশ উপভোগ করছে। দুপুরের খাবারের সময় তারা সবাই বসেছিল একটি হোটেলে। রতন কিছুই বলছেনা খেতে যতটুকু শব্দ হয় সে শব্দটুকু করা থেকেও বিরত থাকার চেষ্টা করছে। বেচারার অসহায়ত্ব সঞ্চিতাকে বেশ তৃপ্তি দিচ্ছে।

আর রেণু আপু একটু একটু করে মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে রতনের দিকে আড়চোখে। খাওয়া এভাবেই শেষ হল। এবার উঠার সময় রতন উঠতে যাচ্ছিল। আপু তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল। আর একটু বস কথা আছে। রতন বসে পড়ল। আপুই বলল, ভাইয়া তোমাদের দুজনের মিলন আমাকে খুবই আনন্দ দিয়েছে। তবে তোমাকে একটা কথা বলি। যদিও অনেক ভেবেই বলছি কথাটা।

রতন এই প্রথম লাজুকতা ভেঙ্গে কথা বলল। সে বলল, আপু আমাদের দুজনের সুন্দর এটা মিলনের যে ব্যাবস্থা আপনি করেছেন। তা সত্যিই একজন আদর্শ অবিভাবকের কাজ। এটা আমাদের নিজেদের বিপর্যয়ও কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে আর আমাদের দুটি পরিবারকেও একটা সুন্দর অবস্থানে এনে দিয়েছে। কোন বিচ্ছেদ নেই, কেবল মিলন।

রেণু আপু বলল, এবার একটা বিচ্ছেদের কথাই বলব। সঞ্চিতা অনেকটা উদগ্রীব হয়েই বলল, কোন ধরনের বিচ্ছেদের কথা তুমি বলছ আপু ? রতনের দৃষ্টিতেও জিজ্ঞাসা !

আপুই বললেন, তোমাদের নিয়ে যেহেতু একটু ভেবেছি তাই আরও একটু ভেবে রেখেছি। তোমরা দুজনেই বিয়ের পর আমার সাথে কানাডা যাবে। সঞ্চিতা বলল, সে আবার কি এমন কথা হানিমুনটা না হয় ওখানেই গিয়ে করলাম। রেণু আপু হেসে বলল, নারে হানিমুনটা বোনাস। কিন্তু আমি চাই তোরা দুজনে গিয়ে নিজেদের পড়াশুনা ওখান থেকে শেষ করবি। শুধু তাই নয় উচ্চতর পরাশুনাও করবি।

রতন বলল, এতো অনেক সময়ের ব্যপার। আমাদের দুজনেরতো এতে অনেক সময় লাগবে। পরিবার থেকে একেবারে দীর্ঘ সময় বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে। এতে আমাদের থেকেও বাবা-মাদের বেশি কষ্ট হবে।

আপু বলল, সুন্দর একটা ভবিষ্যতের জন্যই পরিকল্পিত একটা বর্তমান দরকার। আর কষ্টকর একটা বর্তমান ছাড়া সুখময় একটা ভবিষ্যৎ নির্মাণ সম্ভব নয়। তাই দুজনের প্রতি আমার অনুরোধ আমার একথাটা তোমরা একটু রাখার চেষ্টা কোর। আর চল এখন উঠি অনেক কাজ আছে।

সবাই উঠল রতন আর সঞ্চিতা দুজনেরই মুখে চিন্তার রেখা ফুটে উঠল। যাহোক স্বাভাবিক ভাবেই তারা আবার কেনা কাটা শুরু করল।

চলবে ২ দিন অন্তর এক পর্ব

বিষয়: সাহিত্য

১৩৯৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299873
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:২৭
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালো লাগলো
১০ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:২৪
242872
প্রগতিশীল লিখেছেন : আমারো ভাল লাগলো...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File