প্রেম যেন এমনই হয়-২১

লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৪১:৩৯ রাত



স্কাইপিতে অনেক কথা হল রতন আর সঞ্চিতার। সময় এখন দুটি মানুষের মাঝে কোন দূরত্বই রাখে নি। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আজ আর কোন কিছুই দূরে নেই। সবই কাছাকাছি তার পরও ৩৬৫ দিনেরও বেশি সময়ের একটা বড় দূরত্ব তৈরী হয়েছে রতন আর সঞ্চিতার। এ দূরত্ব রতন আর সঞ্চিতাকে আরও কাছের মানুষ করেছে। দুজনেই বুঝতে পেরেছে দুজনকে। ক্ষণিকের আবেগের বীজ থেকে জন্ম নিয়েছে ভালবাসার এক বিশাল বৃক্ষ। যার শিকড়ও অনেক বিস্তৃত।

দুজন দুজনকে দেখল প্রাণভরে, কথাও বলল মন খুলে। গোটা পৃথিবীর কথা ভুলে গিয়েছিল তারা। রতন বুঝতেই পারে নি তার চারিদিকে কি ঘটেছে। সঞ্চিতার পুরো রুম ভর্তি তার পরিবারের সদস্যরা। রতনের আর বুঝতে বাকি থাকল না। তার চারদিকে দাড়িয়ে আছে সঞ্চিতার বাবা, মা, দাদী সবাই। দাদীই সবাইকে নিয়ে এসেছে। সঞ্চিতা তখনও লাইনেই ছিল। এসময় সামনে এলেন সঞ্চিতার বাবা জাফর চৌধুরী। তিনি রতনের কাঁধে হাত দিয়ে বলল, ‘মা সঞ্চিতা আর কাঁদবি না মা। এই ছেলেই আমার জামাই আর খুবই শীঘ্র তোদের বিয়ে।’

অন্যদিকে সঞ্চিতার মা সাদিয়া জাহান বলল, ‘মামণি তুই চলে আয় তুই এলেই তোর বিয়ে দিয়ে দিব। এত কষ্ট তোকে পেতে হবে না মা।’ রতন ও সঞ্চিতা দুজনেই অবাক হল হঠাৎ প্রাপ্তিতে। দুজনেই বাকরুদ্ধ। সঞ্চিতা সবার কাছ থেকে বিদায় চাইল। আসলে সে লজ্জা পেয়েছে। বিয়ে জিনিসটা অতি উৎসাহের। কিন্তু সে উৎসাহ সবসময় থাকে মনের গহীনে লুকিয়ে। সেটার প্রকাশ কেউ করতে চায় না। বিয়ের এ লাজুকতা ছেলে আর মেয়ে যারই হোক তা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাজুক ব্যপার।

জাফর চৌধুরী মেয়ের লাজুক অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে কেবল জিজ্ঞেস করল ‘রেণু বাসায় আছে ?’ ‘না বাসায় নেই। আপু বাচ্চাগুলোকে নিয়ে বাইরে গেছে। আর দুলাভাইও অফিসে।’ জবাব দিল সঞ্চিতা। জাফর সাহেব বললেন, ‘ও আসলে আমার সাথে একটু কথা বলতে বলিস।’ ঠিক আছে বলে অফ লাইনে চলে গেল সে।

রতন পড়েছে মহাবিপদে। দাদী তাকে এমনভাবে ধরে রেখেছে যেমনভাবে পুলিশ কোন অপরাধীকে ধরে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে রাখে। সবাই মৃদু হাসতে হাসতে দাদী আর রতনকে রুমে রেখে চলে গেল। যাওয়ার সময় কেবল সঞ্চিতার আম্মু রতনকে উদ্দেশ্য করে বলে গেল, ‘ আবশ্যই দুপুরে খেয়ে যাবে বাবা।’ রতন খুবই আস্তে বলল, ‘জ্বী।’

সবাই চলে গেলে দাদী রতনকে রিমান্ডে নিল। পুলিশি কায়দায় প্রশ্ন করল, ‘ এই তুই আমার নাতনীটাকে কি করেছিস বলত। উল্টোপাল্টা কিছু করিসনিতো।’ রতনও বুঝল দাদীর সাথে বন্ধুর মতই কথা বলা যাবে। সে বলল, ‘কই দাদী কিছুইতো করিনি। এই মাঝে মাঝে দু চারটে চুমু আর সুযোগ পেলে একটুখানি আদর। এই তো ! আরও একটু এগুনো যেত নিয়মিত এসব করা যেত। কিন্তু দূর্ভাগ্য আমার সে দেশের বাইরে চলে গেল।’

দাদী বলল, ‘আহারে আমার নাতনীর জন্য অনেক কষ্ট হচ্ছে তোর, তাইনা ? দাঁড়া এবার তোদের একেবার জোড়া লাগিয়ে দিব।’ রতন অসহায়ের মত হ্যা সূচক ভঙ্গিতে মাথা নাড়াল।

চলবে..........

বিষয়: সাহিত্য

১১০৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300464
১৭ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:৩৪
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : যাদের বিয়ে পর্যন্ত দাদা-দাদীরা বেঁচে থাকে তাদের সৌভাগ্যই বলতে হবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File