মুসলিম বাঙ্গালী না ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালী এবং ১৯ তম প্রেসিডেন্ট বিদায়?

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৫ মার্চ, ২০১৩, ০৪:২৯:১৭ বিকাল

সাংবিধানিক বিচারে বাংলাদেশের ১৯ তম প্রেসিডেন্ট বিদায় নিলেন। বলা যায় তিনি রাজনীতিতে যেমন ভাগ্যবান ছিলেন, তেমন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ও যথেষ্ট ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল।

তিনি যে সম্মান পেয়েছেন তা আর কারো ভগ্যে জুটে নাই। ব্যতিক্রম ভাগ্যের মালিক ছিলেন জিল্লুর রহমান সাহেব।

তার চলে যাওয়াতে আওয়ামীলীগ পরিক্ষীত একজন নেতা হারালো। রাজনীতির অঙ্গনে বাকসংযত হওয়ার কারনে সকল মহলে প্রসংশিত ছিলেন। এমন কি জেল বন্ধি অধ্যাপক গোলাম আজমের ও ব্যক্তিগত বন্ধু ছিলেন।

তার ইন্তিকালের খবর পরিবেশনায় আমাদের মিডিয়া বেশ বৈচিত্র আচরণ করেছে। মাত্র দুটি মিডিয়া হাউস প্রেসিডেন্ট ইন্তিকাল করেছেন বলে খবর পরিবেশন করে।বাকিগুলো যেহেতু ধর্মনিরপেক্ষ তাই কেউ প্রয়াত,প্রয়াণ বলে খবর পরিবেশন করে।

আমি আশা করছিলাম আমাদের অসাম্প্রদায়ীক সুশীল মিডিয়া জানাযার বিকল্প কোন ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ আবিস্কার করবেন?

কপাল ভাল জিল্লূর রহমান সাহেবের, অতি উৎসাহী মিডিয়া জানাযাকে অন্তুষ্টিক্রিয়া,শেষ লিলা সম্পাদন,প্রয়ান ক্রিয়া,শেষকৃর্ত অনুষ্ঠান ইত্যাদি স্যেকুলার লেবেল পরিয়ে দেয় নাই।

আবার লাশ শহীদ মিনারে নেয়ার জন্য কেউ দাবী করেছিল কি না তা জানি না?


ইন্তিকাল,জানাযা,মরহুম ইত্যাদি শব্দে সাম্প্রদায়ীক গন্ধ পান যারা, তারা অবশ্য একটু হতাশ হয়েছেন। জাতীয় ঈদগাতে বৃহৎ জানাযা দেখে। আশা করি তাদের কিছুটা জ্ঞান হবে।যে দেশের অধিকাংশ মানুষ ই তাদের ভাষায় সাম্পদায়ীক এবং এখনো বামপন্থী তথা স্যেকুলার হয়ে উঠে নাই। আর যাই হউক তা কখনো যে সম্ভব নয় তা প্রমান হল।

কেননা মাত্র কয়েকদিন পূর্বে আমাদের বর্তমান স্বরবর্ণ ভাইস চ্যানসেলার আরেফিন সিদ্দিকী সাহেব এবং কিছু মুখচেনা সূশীল নাগরিক প্রতিবাদ করেছিলেন, জাতীয় ঈদগাহ, জাতীয় মসজিদ কিছু নামকরণ করা না কি? অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের জন্য বড়ই কলংকের এবং অপমানের।

আমি আমার এক লেখায় তখন বলেছিলাম জাতীয় ঈদগাহের নাম পরিবর্তন করার। নতুন নাম ও প্রস্তাব করেছিলাম যা অসাম্প্রদায়ীক।কিন্তু বিষয়টা হয়তো কেউ খেয়াল করেন নি।তাই বলছি -

এই সরকারের সময় তো মাত্র ৯ মাস আছে। এরই মধ্যে যদি দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধর্মনিরপেক্ষ না করা যায় তাহলে আগামী ৪২ বছর পর কি পারা যাবে?

এই বিষয়টা একটু ভাবতে বলবো, আমাদের সুশীল এবং নব্য নাগরিক সমাজকে। অধ্যাপক আনিছুজ্জামান,ম্যাডাম সুফিয়া চক্রবর্তী,স্বরবর্ণ আরেফিন সিদ্দিকী সহ সুশীল বান্ধব মিডিয়ার রাগব বোয়াল এবং রাতের শিদেল চুর বাকশালী টকারদেরকে।

কারন ২০০৮ সালের নির্বাচন পূর্বে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন সজিব হাসিনা জয় তা পালন করতে না পারলে আরো ৪২ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।

(প্রবন্ধ লিখেছিলেন যৌথভাবে বুশ ড্রকটিনের একজন সামরিক আমলা এবং জয় হাসিনা,বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল গুলো স্যেকুলার করতে হবে।আর এজন্য আওয়ামীলীগকে সাহায্য করা প্রয়োজন বিদেশী রাষ্ট্রের।তখন সেই দাবী অনুযায়ী ভারত বস্তা ভরা টাকা এবং গোয়েন্দা পাঠিয়েছিল।যা পরবর্তীতে বিদেশী পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।)

এজন্য বলছি, স্বাধীনতার চেতনার একমাত্র কন্ঠাক্টর আওয়ামীলীগের প্রেসিডেন্ট মারা গেলেন। কিন্তু তাকে জানাযা পড়ানো হল,কবর দেয়া হল, ফাতেহা পাঠ করা হল আবার ছেলে পাবন সাহেব দোয়া চাইলেন জনগণের কাছে। প্রত্যাশা করলেন আমাদের এই গুনী প্রেসিডেন্ট যেন জান্নাত বাসী হন।ব্যক্তিগত কামনা আমার ও তাই।

[b]কিন্তু প্রশ্ন হল, এগুলো তো সবই সাম্প্রদায়ীক কর্মকান্ড।


কি নিদারুন পরিহাস! রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা ইসলাম,মুসলমান,কুরআন,হাদীস,রসূল এবং ইসলামী সাংস্কৃতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অর্থে বিরামহীন প্রচারণা চালালেন এবং চালাচ্ছেন।সুযোগ পেলেই মওত,পরকাল,হাশর,নশর ইত্যাদি নিয়ে মশকরা করেন।আওয়ামীলীগ এবং বামপন্থী বুদ্ধিজীবিদের এই ছিল গত চার বছরের একমাত্র ধ্যাণ জ্ঞান।শাহবাগের যে নষ্ট ব্লগার আল্লাহ,রাসূল,কুরআন,ইসলামী ইবাদত নিয়ে অমার্জনীয় সব কুরুচিপূর্ণ লিখা লিখলো। তাকে জামাই আদর করা হল এবং প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশে।

৯০ ভাগ মানুষের মৌলিক বিশ্বাসের জবাই করা,নিষিদ্ধ করা,উৎখাত করা,নির্মূল করার কতই না লম্পজম্প করা হল। আমাদের প্রেসিডেন্ট নিশ্চুপ ছিলেন। সমর্থন দিলেন।তাদের পক্ষে সাফাই গাওয়া হল।নাস্তিক মুরতাদকে শহীদ বানানো হল।কিন্তু শেষ পরিণতি কি হল।

আমাদের বিশ্বাস আর আচার আচরণে কি প্রকাশ পেল। জাতীয় ঈদগাহতে প্রেসিডেন্টকে জাতি কি দিয়ে বিদায় জানালো? [/b]

তাহলে কি এখনো বামপন্থি আর রামপন্থিদের টেবলেট জনগণকে গিলানো সম্ভব হয় নাই।

তাহলে কি? আমরা এখনো ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালী হতে পারলাম না?

দেশ স্বাধীন হবার পর বাকশাল দিয়ে সে চেষ্টা করা হয়েছিল। আবার নতুন করে ডিজিটাল বাকশাল করে সেই পুরনো চেষ্টা করা হল।

আমাদের ১৯ তম প্রেসিডেন্ট মরে গিয়ে প্রমান করলেন তিনি মুসলিম বাঙ্গালী ছিলেন। তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালী ছিলেন না।কথিত ধর্মনিরপেক্ষ হলে তো তাকে শহীদ মিনারে নিয়ে লাশ রাখা হত।লাশ সামনে রেখে গান বাজনা করা হত। তার কিছুই করা হল না।

তা হলে প্রশ্ন, কবে এবং কিভাবে আমরা বাঙ্গালী হব বা ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালী হব? কিভাবে আমরা তথাকথিত স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করবো? সমাধানটা কি?

জাতিকে বিভক্ত করে ভারতের স্যটালাইট কান্ট্রি হয়ে থাকবো, না সত্যিকার স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে স্বাধীন সার্বভৌম থাকবো? হবো মুসলিম বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশী।না ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালী?আর কত কাল নিজেদের সাথে প্রতারণা করবো?

কি বলেন আপনারা।


বিষয়: রাজনীতি

১৪৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File