যেসব মহিলা কুরবানী করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করবে না এবং ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ঈদগাহ বা মসজিদে যাবে না তাদের কবীরা গুনাহ হবে

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৪ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:১০:৫৭ বিকাল







http://www.youtube.com/watch?v=DtwF_7ZmVH4

http://www.youtube.com/watch?v=J_F517btU0w

(এই দুই লিংক হতে গানটা শুনুন মনযোগ দিয়ে । এটাতে কুরবানির তাৎপর্য বলা হয়েছে ।)

সূচনা :

কুরবানী আল্লাহর একটি বিধান। কুরবানী শব্দের অর্থ উৎসর্গ ও নৈকট্য অর্জন। জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে নির্দিষ্ট নিয়মে নির্দিষ্ট জন্তুকে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জবেহ করে উৎসর্গ করার নাম কুরবানী। এটি ইসলাম ধর্মের অতি মূল্যবান ইবাদত।

রাসুল (সা.) বলেছেন : ” যে ব্যক্তি ( পুরুষ ও নারী ) কুরবানী আদায় করতে সক্ষম অথচ তা আদায় করে না, সে যেন আমার ঈদগাহের নিকটে না আসে “ । অথচ বাংলাদেশে অনেক মহিলা অনেক ধন সম্পত্তির মালিক বা অনেক স্বর্ণের গহনার মালিক । কিন্তু তারা কুরবানী দেন না । তারা ঈদের নামাজ পড়েন না । এর ফলে তাদের কবিরা গুনাহ হওয়ার পাশাপাশি তাদের স্বামী-বাবা-মা-ভাইদেরও গুনাহ হচ্ছে । কারণ তারা এসব বরকতময় ইবাদত করার ক্ষেত্রে বালেগা মেয়েদের সাহায্য করছেন না ।



যেসব যুক্তি উপস্হাপন করা হয় :


কুরবানী না দেওয়া ও ঈদের নামাজ না পড়ার ক্ষেত্রে তারা অনেক যুক্তি দেখান । যেমন :

১. বিবাহিত মহিলারা বলেন : “ আমার স্বামী কুরবানী দিচ্ছে । আমার না করলেও চলবে । আমি সেই সাত সকাল থেকে ঘর গোছাব , রান্না করব, মাংস আসলে সেটা প্রসেস করব, ফ্রিজে ঢোকাব, আবার রান্না করব, জাল দিব । এরপর স্বামী ও সন্তানদের কথা মতো - কাবাব বানাব, কোপ্তা বানাও, কিমা কর, রুটি বানাব... এইটা সেইট করবো । তারপর মেহমানদারী করব । এসব কাজ করলেই আমার সোয়াব হবে । আমার ঈদের নামাজ পড়া তো দুরে থাক নামাজ পড়ার প্রয়োজন নেই । আল্লাহ আমাকে এসব কাজ করার জন্য বানিয়েছেন ।

২.অবিবাহিত মেয়েরা বলেন : “ আমার বাবা আমাকে যত সম্পদই দান করুন না কেন, আদর করে যত সোনা আর হিরার গহণা কিনে দিক না কেন – তা যদি বিক্রি করে ১০ টা গরিব পরিবাররের আয় রোজগারের ব্যবস্হা করা হলেও আমার জন্য কুরবানী ফরজ না । কারণ কুরবানী একান্ত ছেলেদের বিষয় । আর ঈদের নামাজ পড়া হলো ছেলেদের কাজ । আমার নামাজ না পড়লেও চলবে । “



কুরবানী কাদের উপর ওয়াজিব ? :

বাড়ি, ভিটা, কর্জ, সদা-সর্বদা ব্যবহারের দরকারী পশু, কাপড় ও জিনিসপত্র এবং বাৎসরিক খোরাকী পরিমাণ জমি বা অন্য প্রকারের সম্পত্তি বাদ দিয়ে যার নিকট ৫২ তোলা রূপা বা ৭ তোলা স্বর্ণ অথবা ৫২ তোলা রূপার মূল্য পরিমাণ নগদ টাকা এবং অন্যান্য সম্পত্তি থাকবে শরীয়ত মতে সেই ধনী। এবং তার উপর কুরবানী ওয়াজিব ।

স্ত্রী ও বালেগ পুত্র, বালেগা কন্যা ধনী হলে তাদের কুরবানী ওয়াজিব। বাংলাদেশে মেয়েরা ১০ বছরেই যৌবনপ্রাপ্ত হয় বা বালেগা হয় । ইসলামী মতে, প্রতিটা বালেগা মেয়ের নামাজ – রোজা- হজ –যাকাত- জিহাদ ফরজ । যদি এসব ইবাদত না করা হয় তাহলে মেয়েদের গুনাহ হবে ।





https://www.facebook.com/WomenWillPrayInTheMosquesRegularly?ref=hl

কুরবানী ও জিলহজ্জ মাসের গুরুত্ব :

১০ই জিলহজ্ব তারিখে মুসলমান যত প্রকার নেক কাজ করে তন্মধ্যে আল্লাহ্র নিকট কুরবানী থেকে প্রিয় আর কোন ইবাদত নেই।

কুরবানীকৃত জন্তু কেয়ামতের দিন নিজের শিং, লোম ও খুরসহ ছহি সালামতে আল্লাহ্র দরবারে হাজির হবে এবং রক্তের ফোঁটা মাটিতে পড়ার পূর্বেই তা আল্লাহ্র দরবারে কবুল হয়ে যায়।

আল্লাহর ইবাদতের জন্য জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশদিনের চেয়ে তার নিকট প্রিয়তর দিন আর নেই। এই দশকের একদিনের রোজা এক বছরের রোজার এবং এক রাত্রির ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য।

সুতরাং বুঝা যায়, জিলহজ্বের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে একটি জন্তু জবেহ করে যে ছওয়াব পাওয়া যায় অন্য সময় পঞ্চাশটি জন্তু জবেহ করলেও সে রকম ছওয়াব পাওয়া যায় না। এ জন্য হযরত মুহাম্মদ (সা.) এক বছর একশত উট দ্বারা কুরবানী করেছিলেন।

অতএব, মুসলমানগণকে এরূপ নেক কাজে উৎসাহী হওয়া উচিত। তবে মনে রাখতে হবে নিয়ত ঠিক হওয়া চাই। সুনাম, রিয়া (লোক দেখানো) ও বদনামের ভয়ের জন্য কুরবানী দেয়া হলে ছওয়াবের পরিবর্তে গুনাহ হবে।



ঐতিহাসিক পটভূমি:


আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ) কে অনেক পরীক্ষা করেছেন। সকল পরীক্ষায় তিনি ধৈর্য্য ও সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন। একরাতে তিনি স্বপ্নে দেখলেন, আল্লাহপাক তাকে ইঙ্গিত করেছেন তার সবচাইতে প্রিয় জিনিসটিকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানী করতে। হযরত ইব্রাহীম (আ) অনেক ভেবেচিন্তে দেখলেন একমাত্র পুত্র ইসমাঈল (আ) এর চেয়ে তার কাছে প্রিয় আর কোনো কিছু নেই। এমনকি নিজের জীবনের চাইতেও সে পুত্র ইসমাঈল (আ) কে বেশি ভালোবাসতেন। তারপরও তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বৃদ্ধ বয়সের একমাত্র সন্তান হযরত ইসমাঈল (আ) কে কোরবানী করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

অত:পর পুত্র ইসমাঈল (আ) কে তিনি তার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে: “হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি জবাই করছি। এখন তোমার অভিমত কি?”

সে (হযরত ইসমাঈল (আ)) বলল, “হে পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ চাহেতো আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন” (সূরা সফফাত আয়াত-১০২)।

ছেলের সাহসিকতাপূর্ণ জবাব পেয়ে হযরত ইব্রাহীম (আ) অত্যন্ত খুশি হলেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ছেলের গলায় ছুরি চালালেন। তখন হযরত জিব্রাইল (আ) আল্লাহর নির্দেশে বেহেশত হতে একটা দুম্বা নিয়ে রওয়ানা হলেন। তার মনে সংশয় ছিল পৃথিবীতে পদার্পণের পূর্বেই হযরত ইব্রাহীম (আ) যবেহ কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলবেন। তাই জিবরাইল (আ) আকাশ হতে উচ্চৈস্বরে ধ্বনি দিতে থাকেন “আল্লাহু আকবার”।

আওয়াজ শুনে হযরত ইব্রাহীম (আ) স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলেন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার”। পিতার মুখে তাওহীদের বাণী শুনতে পেয়ে হযরত ইসমাঈল (আ) বলে উঠলেন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিলহামদ”।

আল্লাহর প্রিয় দুই নবী এবং হযরত জিবরাইল (আ)-এর কালামগুলো আল্লাহর দরবারে এতই পছন্দনীয় হলো যে, সেইদিন থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত এই কথাগুলো ৯ই জিলহজ্ব ফজর থেকে আসর পর্যন্ত বিশেষ করে ঈদুল আযহার দিনে বিশ্ব মুসলিমের কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকবে।

আল্লাহ তায়ালার অসীম কুদরতে হযরত ইসমাঈল (আ)-এর পরিবর্তে কোরবানী হয়ে গেল একটি বেহেস্তী দুম্বা। কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন হযরত ইব্রাহীম (আ)।

এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কালামে ঘোষণা করেনঃ “তখন আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয় এটা একটা সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার (ইসমাঈল (আ)-এর পরিবর্তে দিলাম জবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু।” (সূরা সাফফাত আয়াত-১০৪-১০৭)।

বর্ণিত আছে যে, হযরত ইব্রাহীম (আ) উপরোক্ত গায়েবী আওয়াজ শুনে হযরত জিবরাইল (আ) কে একটি বেহেস্তী দুম্বাসহ দেখতে পান। এ জান্নাতী দুম্বা হযরত ইব্রাহীম (আ) কে দেয়া হলে তিনি আল্লাহর নির্দেশে পুত্রের পরিবর্তে সেটি কোরবানী করলেন। আর তখন থেকেই শুরু হলো কোরবানীর মহান বিস্ময়কর ইতিহাস। যা অন্ততকাল ধরে সুন্নতে ইব্রাহীম হিসেবে বিশ্বের সকল মুসলমানের কাছে আজও স্মরণীয় হয়ে আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে।







https://www.facebook.com/WomenWillPrayInTheMosquesRegularly?ref=hl

কুরবানীর ফযীলত:

কুরবানীর পশুর শরীরে যত পশম থাকে, প্রত্যেকটা পশমের পরিবর্তে এক একটি নেকী পাওয়া যায়।

কুরবানীর দিনে কুরবানীই হলো সবচেয়ে বড় এবাদাত।

আয়শা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুরবানীর দিন রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে প্রিয় কোন আমল আল্লাহর কাছে নাই। ঐ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন জবেহকৃত পশুর লোম, শিং, ক্ষুর,পশম সমূহ ইত্যাদি নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। কুরবানীর রক্ত জমিনে পতিত হবার পুর্বেই তা আল্লাহর নিকট বিশেষ মর্যাদায় পৌছে যায়। অতএব, তোমরা কুরবানির দ্বারা নিজেদের নফস কে পবিত্র কর।



https://www.facebook.com/WomenWillPrayInTheMosquesRegularly?ref=hl

জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের বিশেষ ফযীলত:

জিলহজ্জ মাসের দশম তারিখে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে বিত্তবানেরা দরিদ্রদের পাশে এসে দাঁড়ায়, অসহায় দুস্থ লোকেরা এই দিনে বিত্তবানদের থেকে পায় বিশেষ সহনুভবতা, সব মিলে একে অপরের সুখ-দুখ, আনন্দ-ব্যদনা বুঝতে সক্ষম হয়, যার ফলে আল্লাহর কাছে এই মাসের ফজিলত অনেক বেশি। ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, রাসুল ইরশাদ করেছেন,

জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ দিনের নেক আমল অন্য যে কোন দিনের নেক আমলের চেয়ে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, জিহাদ ও নয় কি? বললেন জিহাদ ও নয়, তবে ঐ ব্যক্তি যে নিজের জান ও মাল নিয়ে রাসুলুল্লাহ (স) এর সাথে বের হয়েছে আর ফিরে আসে নি। অর্থাৎ শহিদ হয়ে গেছে।

বোখারী, ১/৩২৯, হাদিস ৯২৬। ফতহুল বারী লি ইবনে হাজার, ৩/৩৯০, হাদিস ৯১৬।

ঈদের নামাজ না পড়লে কুরবানী হবে না :

হাদিস ও ইসলামী আইনের বইগুলোতে বলা আছে আগে ঈদের নামাজ পড়তে হবে । তারপর করবানীর পশুকে যবাই করতে হবে । অন্যথায় ঈদের নামাজ না পড়ে কুরবানী দিলে কুরবানী হবে না । এজন্য যে সব মহিলা বা বালেগা মেয়ে কুরবানী দিবে তাকে বা তাদের অবশ্যই ঈদের নামাজ পড়তে হবে ।



https://www.facebook.com/WomenWillPrayInTheMosquesRegularly?ref=hl

মেয়েদের ঈদের নামাজ-সহ সব নামাজ মসজিদ ও ঈদগাহে পড়া সুন্নত এবং ঈদের নামাজ ঈদগাহে পড়া ওয়াজিব :

অনেক লোক মেয়েদের মসজিদে যেয়ে নামাজ পড়তে বাধা দেয় । মেয়েদের মসজিদ ও ঈদগাহে নামাজ পড়তে বাঁধা দেওয়া খারাপ কাজ । কারণ এক হাদিসে আছে :

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেছিলেন:

"আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি- তোমাদের স্ত্রীগণ যখন তোমাদের কাছে মসজিদে যাওয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে তখন তাদেরকে বাধা দিও না।" তার ছেলে বেলাল বললেন: আল্লাহর কসম! অবশ্যই বাধাঁ দেব। অতঃপর তিনি তার কাছে গিয়ে তাকে ভৎসনা করলেন; তাকে কটু কথা বললেন; যা তার কাছ থেকে আমি (বর্ণনাকারী; সালেম বিন আব্দুল্লাহ বিন উমার) কখনও শুনিনি। আর বললেন: আমি বলছি রাসুল (সাঃ) এর কথা আর তুমি বলছ অবশ্যই বাধা দেব ?! (মুসলিম শরীফ: হাদীস নং ৪৪২)

মুসনাদে আবি ইয়ালা হাদিসগ্রন্হে এসেছে, তখন তিনি ছেলেকে থাপ্পড় দিয়েছিলেন। (হাদীস নং ২০০৬)

কারণ রাসূল (সা.)- এর কথার উপর অন্য কারো কথা গুরুত্বপূর্ণ নয় । কারণ আল্লাহ বলেছেন :

يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا أَطيعُوا اللَّهَ وَرَسولَهُ وَلا تَوَلَّوا عَنهُ وَأَنتُم تَسمَعونَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না। ( সুরা আনফাল : ২০)

مَن يُطِعِ الرَّسولَ فَقَد أَطاعَ اللَّهَ

যে রাসুলের হুকুম মান্য করলো সে আল্লাহর হুকুম মান্য করলো । ( সুরা নিসা : ৮০ )

সুতরাং মেয়েরা ছেলেদের মতো মসজিদে যাবে, সেখানে নামাজ পড়বে এবং সব ইবাদত ও দুনিয়ার প্রয়োজনীয় কাজ সেখানে করবে ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মেয়েরা জুমার নামাজসহ বিভিন্ন নামাজ মসজিদে যেয়ে পড়ছে । বাংলাদেশে কিছু মসজিদে পড়ছেও । বাংলাদেশের সব মসজিদে জুমার নামাজ কেন সব নামাজ পড়ার জন্য মেয়েদের জন্য মসজিদে আলাদা অংশ বানানোর জন্য জনমত গঠণ করতে হবে ।


মহিলারা তাদের প্রয়োজনে ও ইসলামের প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে । ষাটের দশক হতে মহিলারা ঘরের বাহিরে কাজ করছে । প্রতি দিনই মহিলারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন । শুধুমাত্র কিছু পীরের সমর্থক ছাড়া বাংলাদেশের সব পরিবারের মেয়েরাই ঘরের বাহিরে যায় । তাছাড়া ক্ষুদ্র ঋণ ও অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি মহিলাকে ঘরের বাহিরে যেতে হয় । এমন কি তারা ধান গাছ লাগায় , পাট গাছ কাটে , ইট ভাঙ্গে, রাস্তা মেরামত করে ।

বাংলাদেশের মেয়েরা ধর্ম সম্পর্কে একে বারেই অজ্ঞ । তার উপর কিছু আজে বাজে ধর্মীয় বইয়ে বাজার সয়লাব । তা পড়ে মেয়েরা ইসলাম সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করে । মেয়েরা মসজিদমুখী হলে তারা অনেক বিষয় জানবে এবং সে সব বিষয় বাস্তব জীবনে অনুসরণ ও চর্চা করতে পারবে ।

এ যুগে মহিলারা অফিস করছেন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাচ্ছেন, স্বামীর সাথে বাজার করছেন। সালাতের সময় হলে তারা তা আদায় করবেন কোথায়। তাদের জন্য মসজিদে উপস্থিত হয়ে সালাত আদায় করলে অন্যায় হবে?



https://www.facebook.com/WomenWillPrayInTheMosquesRegularly?ref=hl

বয়স্ক মহিলারা মসজিদে উপস্থিত হয়ে ওয়াজ-নসিহত ও খুতবা শুনলে ভালো ছাড়া মন্দ কোথায়? মসজিদে মহিলাদের স্বতন্ত্র নামাজের স্থান থাকলে এবং পুরুষরা রাস্তায় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে জামাতে নামাজই তো উত্তম হয়।

শত শত এমনকি হাজার হাজার মহিলা মাদ্রাসা, কলেজ ও ভার্সিটির হলে বাস করছেন। তারা যদি নির্দিষ্ট সময়ে এক সাথে জামাতে নামাজ আদায় করেন তাহলে তাদের জীবনে নিয়মানুবর্তিতা অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে। অফিসের মহিলা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জামাতে নামাজের আওতায় আনা যায় তাহলে নামাজির সংখ্যা বাড়বে বৈ কমবে না। জামাতে নামাজ এমন একটি পন্থা যা মানুষের জীবনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।

কোনো কোনো কল-কারখানায় দেখা যায় পুরুষদের জন্য জামাতে নামাজের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু মহিলাদের একত্রিত করে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা নেই। এটি হওয়া উচিত নয়।

জাগতিক শিক্ষার এই চরম উৎকর্ষতার যুগে মহিলাদের ইসলামের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করা ইসলামি ধ্যান-ধারণার প্রতি উজ্জীবিত করা উলামায়ে কেরামের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। প্রত্যেক মসজিদ মহিলাদের জন্য আলাদা স্থান তৈরি করে তাদের নামাজে আনার ব্যবস্থা করা দরকার। তবেই, আমাদের মুসলিম নারীসমাজ কুরআনের জ্ঞানে সমৃদ্ধ ও বলীয়ান হয়ে উঠতে পারবে।

https://www.facebook.com/WomenWillPrayInTheMosquesRegularly?ref=hl



আল্লাহ তাআলা নারী-পুরুষ উভয়কে সৃষ্টি করেছেন। তিনি তাদের দুনিয়া ও আখেরাতের ইসলাম চায় নারী জাতি যাতে কোন কল্যাণ থেকে বঞ্চিত না হয়। তাই-তো মুসলমানদের উল্লেখযোগ্য ইবাদত আনন্দঘন পরিবেশ ও ইমামের দিক-নির্দেশনামূলক বক্তৃতা থেকে যাতে নারী-পুরুষ সমানভাবে উপকৃত হতে পারে সে মর্মে মানবতার মুক্তিদূত মহানবী রাসুল (সা. ) মহিলাদেরকেও আদেশ করেছেন ঈদগাহে উপস্থিত হতে।

উম্মে আতিয়্যা রা. বলেন :

عن أم عطية رضي الله عنها قالت : أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نخرجهن في الفطر والأضحى العواتق والحيّض وذوات الخدور . فأما الحيّض فيعتزلن الصلاة

وفي لفظ : المصلى . ويشهدن الخير ودعوة المسلمين] رواه الجماعة[

وفي بعض ألفاظه : فقالت إحداهن : يا رسول الله لا تجد إحدانا جلباباً تخرج فيه، فقال صلى الله عليه وسلم : لتلبسها أختها من جلبابها.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ঈদগাহে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বৃদ্ধা, ঋতুবতী ও পর্দানশীল সকলের জন্য আদেশটি বহাল ছিল। তবে ঋতুবতী নারী ঈদের নামাজ থেকে বিরত থাকবে এবং কল্যাণ (নসিহত শ্রবণ) ও মুসলমানদের সাথে দুআয় শামিল থাকবে। তিনি বললেন: হে আল্লাহর রাসূল; আমাদের মধ্যে কারো বড় ওড়না না থাকলে সে কী করবে? রাসূল (সা) বললেন : তার কোন বোন তাকে নিজের ওড়না পরিধান করতে দেবে। ( মুসলিম শরীফের হাদিস )



অত্র হাদীস থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়, নারীদেরকেও ঈদের নামাজে শামিল হওয়া প্রয়োজন। রাসূলের যুগে মহিলারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে জামাআতে অংশগ্রহণ করতেন। উম্মে আতিয়্যা রা. এর হাদীসে বুঝা যাচ্ছে আবাল, বৃদ্ধা, বণিতা সকলকেই নির্বিশেষে ঈদগাহে উপস্থিত হওয়ার আদেশ করা হয়েছিল। যেখানে ঋতুবতী নারীর উপর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দায়িত্ব রহিত করা হয়েছে, সেখানে তাকেও ঈদাগাহে উপস্থিত হয়ে মুসলমানদের কাতারে শামিল হওয়ার আদেশ করা হয়েছে। তাছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একাকীও আদায় ককরা সম্ভব। কিন্তু ঈদের নামাজ জামাআত ছাড়া আদায় করা সম্ভব না। সুতরাং নারীরা এত বড় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া কোন মতেই উচিৎ হবে না।

তবে শর্তসাপেক্ষ যেমন, পূর্ণ পর্দার সাথে ঘর থেকে বের হতে হবে। ঈদগাহে তাদের জন্য আলাদা নিরাপদ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এর জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। সৌদিআরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, বসনিয়া, আলবেনিয়া, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, ইরাক-সহ অনেক দেশের প্রায় সব মসজিদ ও ঈদগাহে মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে অজুখানা, টয়লেট ও নামাজের স্থানসহ সবকিছু, এমনকি প্রবেশ করারও পৃথক পৃথক দরজা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে সে রকম হাতে গোনা অল্প কয়েকটি মসজিদ ও ঈদগাহ ছাড়া আর কোথাও উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেই।

আর এ জন্য মহিলারা এসব কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। এ বিষয়ে আরো উদারতার পরিচয় দেয়ার জন্য এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুক।

মেয়েদের উচিত যেসব ঈদগাহ ও মসজিদে মেয়েদের ঈদের নামাজ পড়ার ব্যবস্হা আছে সেগুলোকে স্বামী-বাবা-ভাই-ছেলে-দের নিয়ে নামাজ পড়তে যাওয়া ।

ঈদের নামাজ মেয়েরা না পড়লে গুনাহ হবে । কারণ ঈদের নামাজ ওয়াজিব । ওয়াজিব কাজ বাদ দিলে কবিরা গুনাহ হয় ।

যে সব মেয়ে ঈদের নামাজ পড়তে যাবে তাদের ঈদের আনন্দ আরো বৃদ্ধি পাবে । কারণ এতে সে তার পুরুষ পরিবার পরিজনদের আরো কাছে আসার সুযোগ পাবে এবং তাদের ভালবাসা অর্জন করতে পারবে । উপরন্তু ঈদের নামাজের খুতবায় ইমাম সাহবে অনেক জ্ঞানগর্ভ কথা বলেন । এতে মেয়েদের ইসলামী জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে ।

হুজুর মনযোগ দিয়ে শুনুন :

মহিলারা অবশ্যই মসজিদে যেতে পারেন। তারা গুরুর হাটের রাখালনী পর্যন্ত হয়েছে তাদের জীবিকার প্রয়োজনে । মহিলাদের জন্য ঘর উপযুক্ত - এই কথা তাদের জীবিকার কারণে আর থাকছে না । তারা ঘর হতে বের হয়ে এসেছে । তারা ডাক্তার হচ্ছে । হুজুর আপনার স্ত্রীর সন্তান হলে ঘর হতে বাহির হওয়া বেগানা মেয়েরাই আপনার সন্তান খালাস করে । আর কিছু বল্লাম না । মেয়েদের উপভোগ করার জন্য কোন হুুজুর মেয়েদের মসজিদে আসতে বলে নাই ।

ওলাপুরি হুজুর । মনে রাখবেন , আপনি আল্লাহ দাস । তেমনি মেয়েরা আল্লাহর দাসি ।

কিন্তু কথা হচ্ছে গাওছিয়া, এলিফেন্ট রোড, মিরপুর বেনারসী পল্লীতে যে মহিলাদের ডেকে ডেকে আহবান করে ঘর থেকে বের করে আনছেন তাদের সালাত কি কাযা করা জরুরি নাকি আদায় করা জরুরি?

এ কেমন হুজুর গো আপনি?

হুজুর বলতেছেন মহিলারা মসজিদে আসবে না ঘরে নামাজ পড়বে কারণ মহিলারা মসজিদে গেলে নাকি ফিতনা সৃষ্টি হতে পারে!

আশ্চর্য !! এই হুজুরই আবার মাসআলা দিচ্ছেন মহিলারা কেনাকাটা করতে যেতে আপত্তি নাই যদি পর্দায় থাকে।

তাহলে হুজুরের কাছেই প্রশ্ন, এই যে দ্বীনদার মহিলারা পর্দা করেই শপিং এ যাচ্ছেন তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে তারা কি সালাত কাযা করবে মার্কেটে ?

আর না হুজুর কোনো দুআ শিখিয়ে দিবেন যে খুব অল্প সময়েই যানজট পেরিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরে প্রয়োজনীয় সামগ্রীটি কিনতে পারা যাবে!

নিউমার্কেট থেকে বেনারসী পল্লীতে যেতে, কেনা কাটা করতে এবং ফেরত আসতে প্রায় সারা দিনের ব্যাপার! তো সালাতের সময় হলে সেই মহিলা সালাত পড়বে কোথায়?

মতিঝিল থেকে এলিফ্যান্ট রোডে আসলে আর মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে গেলে নামাজি মহিলা কোথায় সালাত আদায় করবে?

গাঁওছিয়ায় বা পাশের মার্কেটে মহিলাদের সামগ্রীর যে বিশাল আয়োজন সেখানে মহিলারা আসবেনই। সেখানে পুরুষদের জন্য মসজিদ আছে কিন্তু মহিলারা? উনারা কি দোষ করলো?

তাহলে হয় মহিলা কখনো মার্কেটে আসতে পারবে না নতুবা সালাত খান কাযা করে দিতেই হবে। এখন কেউ কেউ ফতোয়া দিবে তাহলে মহিলারা মার্কেটেই আসতে পারবেনা। কিন্তু এটা তো তাদের প্রতি নিশ্চিত জুলুম করতেছেন আপনারা।

মসজিদের হে সম্মানিত হুজুর (ইমাম)! দয়া করে মহিলাদের জন্য সালাত আদায়ের জায়গার ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে করেন।

হে মার্কেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্মানিত স্যার! দয়া করে মহিলাদের সালাত আদায়ের জায়গার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম সহ অন্যান্য হাদীসগ্রন্থ গুলো থেকে স্পষ্টই জানা যায় যে মহিলারা মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করেছেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেছিলেন:

"আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি-

তোমাদের স্ত্রীগণ যখন তোমাদের কাছে মসজিদে যাওয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে তখন তাদেরকে বাধা দিও না।" তার ছেলে বেলাল বললেন: আল্লাহর কসম! অবশ্যই আমি তাদেরকে বাধাঁ দেব। তিনি তার কাছে গিয়ে তাকে ভৎসনা করলেন;তাকে কটু কথা বললেন;যা তার কাছ থেকে আমি (বর্ণনাকারী;সালেম বিন আব্দুল্লাহ বিন উমার) কখনও শুনিনি। আর বললেন: আমি বলছি রাসুল (সাঃ) এর কথা আর তুমি বলছ অবশ্যই বাধা দেব? (সহিহ মুসলিম)



বাংলাদেশের মুসলিম নারীদের জন্য মসজিদে আলাদা স্হানের ব্যবস্হা করতে হবে ।


বাংলাদেশের আলেমগন যখন মুসলিম নারীদের মসজিদে আলাদা স্হানের ব্যবস্হা করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিচ্ছেন না । এটা তাদের বড় ধরনের দায়িত্বে অবহেলা ও ব্যর্থতা । কারণ যখন অধিকাংশ মুসলিম নারী বাজারে ঘুরে বেড়ান, তখন তারা কি রকম পোশাক তারা পড়েন তার বর্ণনা দেয়ার অবকাশ নেই । যদি তাদের প্রশ্ন করা হয় এসব পোশাক কি ইসলাম সমর্থন করে ? তখন তারা এক শব্দে বলবেন , না ।

আমাদের প্রশ্ন : এসব মুসলিম নারীরা কেন জেনে শুনে ইসলামবিরোধী পোশাক নিজের জন্য বেঁচে নিলেন ?

অনুসন্ধান করলে এই প্রশ্নের যে উত্তর পাওয়া যায়, তা হলো –

“মানুষ অভ্যাসের দাস । অভ্যাস এমন জিনিস তা চর্চা করতে করতে সয়ে যায়।

যেই পুরুষ ছোটবেলা থেকে সেইভ করে সে হঠাৎ করে দাঁড়ি রাখতে পারে না।যদিও সে জানে দাঁড়ি রাখা সুন্নত । ইচ্ছা তার একদিন দাঁড়ি রাখবে, কিন্ত যখনই দাঁড়ি রাখতে যায় তখন লজ্জা বা এক ধরণের অস্থতি তার মধ্যে কাজ করে ।



যে মেয়ে শিশুকে ছোটবেলা থেকে তার পিতা মাতা যখন ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী পোশাক পড়ান, তখন সেই মেয়ে শিশু বড় হয়ে কখনো তার রুপ যৌবন প্রকাশ হয় এমন পোশাক পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে না । “

মসজিদ আল্লাহর ঘর।মুসজিদে নারীর জন্য পৃথক জায়গার ব্যবস্হা করে নারীদের জন্য নামাজ পড়ার সুযোগ দিলে নারীদের বর্তমান ইসলামবিরোধী পোষাক পড়ার প্রবনতা কমে যাবে । কারণ মসজিদে তো ইসলামবিরোধী পোষাক পড়ে যাতায়াতের সুযোগ নেই ।



কিন্তু সময়ের ব্যবধানে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে পূর্বের আলেমগন নারীদের মসজিদে আসতে বারণ করেছেন। এটা এমন ব্যাপার যে মাথা ব্যাথা হলে চিকিৎসা না করে মাথা কেটে ফেলার শামিল !! কিন্তু বর্তমান অবস্হার প্রেক্ষাপটে নারীদের জন্য আলাদা নামাজের স্হানের ব্যবস্হা করা সময়ের দাবি হয়ে দাড়িয়েছে ।

নারীদের মসজিদে জায়গা করে দিলে সমাজের অনেক পরিবর্তন এসে যাবে। নারী তার ইসলামী পোশাকের অভ্যাস রপ্ত করবে এবং সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করবে। সমাজের অর্ধেকর নারী। মুসলিম নারীদের যখন তাদের অধিকার দেয়া হবে না তখন শয়তানী দলের নারীরা নারী অধিকার আন্দোলনে তাদের শামিল করবে। এখন যা হচ্ছে তা দেখতে পাচ্ছেন।

তাই ইসলাম নারীকে যেই যেই অধিকার দিয়েছে সেই অধিকারের রাস্থা যদি আমরা খুলে না দেই তাহলে অবশ্যই আমরা অপরাধী হব। হাশরের ময়দানে যদি কোন নারী অভিযোগ দায়েক করে যে আমাদের আলেমরা মসজিদে যেতে দিতেন না, মসজিদে আমাদের কোন আলাদা জায়গা করে তারা দেননি, আবার বাজারে যখন আমরা ইসলামবিরোধী পোশাক পড়ে বের হতাম তখনও তারা আমাদের হেদায়েতের জন্য কোনও দাওয়াত দেননি তখন কি জবাব দিবেন ?



সমাজে বিয়ের আগেই একজন মুসলিম নারীকে ইসলামী শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তাদের পোশাক কেমন হবে তারা নিজেরাই নির্বাচন করতে পারবেন, জাহান্নাম থেকে বাঁচতে মহান আল্লাহ্ তায়ালার দেয়া সীমা মোতাবেক চলবেন।এই জন্য মুসলিম পুরুষদের কাজ হল মুসলিম নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং তাদের সব অধিকারের রাস্থা খুলে দেয়া তবেই সমাজে যত ফেতনা এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তা রোধ করা সম্ভব, ইনশাআল্লাহ।

[আলহামদুলিল্লাহ্, মসজিদুল হারাম এবং মসজিদুল নববী সহ আরবের প্রায় সব মসজিদে নারীদের আলাদা নামাজের স্হান আছে এবং তারা সেখানে জামায়াতে সালাত আদায় করছেন। সৌদি আরবসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে ( ব্যতিক্রম বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান-আফগানিস্তান ) নারীদের জন্য মসজিদে আলাদা নামাজের স্হান রয়েছে ।

বাড়ির পুরুষদের প্রত্যেকের মা বোনদের ইসলাম বিষয়ক বই পড়তে উৎসাহিত করা এবং প্রতি দিন কিছু সময় নিয়ে কুরআন - হাদিস পড়ে তাদের শুনান এবং শেখান উচিত । তাহলে নারীরা ইসলামী জ্ঞান লাভ করতে পারবেন, সচেতন হবেন এবং অন্য নারীদের সচেতন করবেন । ]



ঢাকা শহরের যে সকল স্থানে মেয়েদের নামায পড়ার ব্যবস্থা রয়েছেঃ

ঢাকা শহরের প্রায় ৩০০ মসজিদে মেয়েদের নামায পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে । যেমন :

১. ঢাকা নিউ মার্কেট মসজিদ

২. রাইফেলস স্কয়ার (জিগাতলা)

৩. ইস্টার্ন মল্লিকার ছাদে

৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ

৫. রাপা প্লাজার ৫ম তলায় জয়ীতার শো-রুম ও মার্কেটের ছাদ (ধানমন্ডি ২৭)

৬. সোবহানবাগ জামে মসজিদ (ধানমন্ডি ২৭)

৭. গাউছিয়া মার্কেটের নিচ তলায় (ধানমন্ডি হকারস এর উল্টোদিকে)

৮. চাঁদনি চকের ৩য় তলায় (নিউমার্কেটের উল্টোদিকে)

৯. তাকওয়া মসজিদ (ধানমন্ডি ১২/এ লেকের সাথে)

১০. বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, পান্থপথ (৪র্থ তলায়)

১১. বায়তুল মামুর মসজিদ, সায়েন্সল্যাব (২য় তলা)

১২. ফেরদৌসি মসজিদ, মিরপুর-১

১৩. মৌচাক মার্কেট (৪র্থ তলা)

১৪. জেনেটিক প্লাজা ১ম তলা (ধানমন্ডি ২৭)

১৫. বায়তুল আমান মসজিদ (ধানমন্ডি ৮)

১৬. উত্তরা ৪ নং, ৬ নং, ৭ নং সেক্টর মসজিদ

১৭. স্কয়ার হসপিটাল

১৮. ডিসিসি সুপার মার্কেট (গুলশান ১)

১৯. উত্তরা হাউস বিল্ডিং, নর্থ টাওয়ার (মার্কেট) ৯বম তলা

২০.রমনা থানা জামে মসজিদ

২১. ইউনাইটেড হসপিটাল (৩য় তলা)

২২. এপলো হসপিটাল (৫ম তলা)

২৩. পিঙ্ক সিটি (বেইজমেন্ট)

২৪. মোহাম্মদপুর এ স্যার সৈয়দ রোড এর আল আমিন মসজিদ

২৫. আযাদ মসজিদ (গুলশান ২)

২৬. নায়েম ভবন মসজিদ (ঢাকা কলেজের পেছনে)

২৭. ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক হসপিটাল (১.৫ তলা)

২৮. টুইন টাওয়ার শপিং সেন্টার (৪র্থ তলা)

২৯. ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ধানমণ্ডি (বেইজমেন্ট)

৩০) North Tower (Market) 8th floor, Uttara House Building

বোন ও খালাম্মাদের এসব মসজিদে নামাজ পড়ার আমন্ত্রন জানালো হলো ।

উপসংহার :

এই বরকতময় নিবন্ধ পড়ার পর সবার নৈতিক দায়িত্ব নিবন্ধটির বিষয়বস্তু সর্বত্র আলোচনা করা ।

যেসব বোন ও খালাম্মা এই নিবন্ধ পড়েছেন সেই অনুযায়ী বাস্তব জীবনে কাজ করুন । তাহলে আপনি দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যান লাভ করতে পারবেন ।

এই নিবন্ধের শিক্ষনীয় বিষয় হলো :

১. সামর্থ্যবান বোন ও খালাম্মাকে কুরবানী দিতে হবে ।

২. সব বোন ও খালাম্মাকে ঈদের নামাজ পড়তে হবে ।

৩. সব বোন ও খালাম্মাকে মসজিদ ও কর্মক্ষেত্রে নামাজ পড়তে হবে । কোন ক্রমেই নামাজ কাজা করা যাবে না ।

৪. সব বোন ও খালাম্মাকে অবশ্যই সব সময় ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়তে হবে ।

৫. জিলহজ মাস বরকতময় মাস । এই মাসে অনেক ইবাদত আছে । ঈদের আগের রাতে নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে যা চাইবেন আল্লাহ তা কবুল করবেন । জিলহজ মাসে প্রথম ৯ দিন নফল রোজা রাখলে অনেক সোয়াব হয় ।

৬. গোস্ত খাওয়ার নিয়ত করে কুরবানী দিলে বা নাম-যশ বৃদ্ধির জন্য বড় বড় পশু করবানী দিলে কুরবানী আল্লাহ গ্রহণ করবেন না ।

৭. কুরবানীর পশুর গোস্ত গরীব - দুখীকে বিলীয়ে দিতে হবে । পাড়া - প্রতিবেশী যারা করবানী দেননি তাদের বিতরন করতে হবে । এভাবে ইসলামী সংহতি জোড়দার হবে । আর আমরাও ইসলামী সমাজ কায়েম করতে পারবো ।

বিষয়: বিবিধ

৩২২৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

271422
০৪ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : Chalam. Very valuable discussion mashallah. Jajakallah.
০৪ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৬
215538
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : এটা আলোচনা বা discussion নয় । এটা আমাদের সমাজের বাস্তবতা ।

বাংলাদেশে কম করে হলেও ১ কোটি মহিলা আছে তাদের কুরবানী ওয়াজিব আর ঈদের নামাজ পড়া কম করে হলেও ৫ কোটি মহিলার ওয়াজিব ।

জেনে শুনে আমরা ফরজ ওয়াজিব আমল তরক করার ব্যাপারে চুপ করে থাকতে পারি না ।

আর বাংলাদেশের আলেম সমাজের বড় অংশ ইলম (ইসলামী জ্ঞান )গোপন করে যাচ্ছেন । তারাও আল্লাহর আজব ও গজবকে ভয় করছেন না । তাদের উচিত আমার এই নিবন্ধটা ভাল করে পড়া ।

আমি বাংলাদেশের আলেমদের এতটুকু বলবো । ইলম গোপন করবেন না । দয়া করে সত্যিকার ইসলামের মর্মবানী সমাজে প্রচার করুন ।

আল্লাহ ইলম(ইসলামী জ্ঞান ) গোপন করা সম্পর্কে বলেছেন :
এ সত্ত্বেও যারা আল্লাহর নাযিল করা তাঁর কিতাবের অংশবিশেষ গোপন করে রাখে এবং সামান্য বৈষয়িক মূল্যে তা বিক্রি করে দেয়, তারা এটা দিয়ে যা হাসিল করে এবং যা দিয়ে তারা নিজেদের পেট ভর্তি করে রাখে তা মূলত আগুন ছাড়া আর কিছুই নয়, শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ তাআলা তাদের সাথে কথা বলবেন না, তিনি তাদের পবিত্রও করবেন না, তাঁদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।"-সূরা আল বাকারাঃ ১৭৪

রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, "যার নিকট কোনো ইলমি বিষয় জিজ্ঞাসা করা হল আর সে তা জানা সত্তে ও বলে দিলোনা;বরং সে গোপন রাখলো,কেয়ামতের দিন তার মুখে আগুনের লাগাম পরানো হবে।"
(মেশকাত শরীফ)

আল্লাহ রাসুল(সাঃ) বলেছেন ,..... তারপর একদল আলেমদের জন্ম হবে যারা দ্বীনের ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করবে কিন্তু সে জ্ঞানকে দুনিয়াবানী স্বার্থে ব্যবহার করবে, জেনে শুনে ইলম গোপন করবে, জালেম-কুফফার শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলবেনা। তাই তিনি আমাদেরকে এইসব দুনিয়ালোভী আলেমদের ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন। রাসুল(সাঃ) বলেনঃ



“তিন শ্রেণীর মানুষকে সর্বপ্রথম জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এর মাঝে প্রথম শ্রেণীটা হচ্ছে-একদল জ্ঞাণী আলেম যারা দুনিয়াবী স্বার্থে ইলম গোপন করতো এবং জালেম শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলতো না।

( সংক্ষেপিত -জামে আত তিরমিজি ও ইবনে হিব্বান )

271491
০৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪৫
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ!
আলিম-ওলামাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে সমাজের বাকি অর্ধেক সক্ষম জনগোষ্ঠীকে কুরবানী দিতে অভ্যস্থ করাতে পারলে আর্থ-সামাজিক অনেক কল্যান হতো!
আর আখেরাতের ব্যাপারটা তো আছেই!

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
০৬ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৬
225347
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File