২৮ শে ফেব্রুয়ারি ইতিহাসের পাতায় গণহত্যা দিবিস হিসেবে লেখা থাকবে

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ আরিফুর রহমান তুহিন ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:৪৯:৫৪ রাত

আজ ২৮ শে ফেব্রুয়ারি

বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেকটি কালো দিন

একটি রক্তাক্ত দিন

একজন মজলুম জননেতা, ইসলামের সেবক, মুফাসসিরে কুরআনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল আপমর জনতা

বৃদ্ধ থেকে কিশোর সবাই নেমে এসেছিল রাস্তায়

দাবি একটাই তাঁদের আত্মার আত্মীয়, পথের দিশারী, নয়নের মনি আল্লামা সাইদীকে তাঁদের মাঝে ফিড়িয়ে দিতে হবে

হয়তো তাঁদের দাবি ছিল আইনের বিরুদ্ধে হয়তো তাদের অপরাধ ছিল রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল কিন্তু তাঁরা আমার দেশের সাধারন নাগরিক ছিল

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল

স্কাইপি কেলেঙ্কারি, বিদেশী আইনজীবী নিয়োগে বাধা, সাক্ষী শুখারঞ্জন বালিকে গুম করা এবং পরে তাকে ভারতীয় কারাগারে বন্ধি অবস্থায় পাওয়া, সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ফেরত আনার কোন ব্যাবস্থা না নেয়া এবং সরকারের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের বেফাঁস মন্তব্যের কারণে এই আদালতের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে জাতি দ্বিধা বিভক্ত ছিল শুরু থেকেই

শুধু আমাদের দেশের জনগন না আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এক্যমত হতে পারেন নাই

এছাড়া আল্লামা সাইদী জনগনের কাছে ছিলেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়

বঙ্গবন্ধুর পরে এই দেশে যদি কেউ জনপ্রিয় থেকে থাকেন তিনি হলেন আল্লামা সাইদী

মানুষ তাকে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনেন না তাকে চিনেন একজন আলেম হিসেবে

২০১৩ সালের ২৮ তারিখ রায় ঘোষণার আগে থেকেই সাড়া দেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে, সারা দেশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়

জামায়াতের ডাকা হরতালে দেশ আরো অস্বাভাবিক হয়ে পরে

দুপুর দেড়টার নাগাদ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাইদী হুজুরকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়

মিডিয়ার বদৌলতে সারা দেশে ছড়িয়ে পরে সংবাদ

ফুঁসে উঠে আপমর জনতা, তাঁরা নেমে পরে রাজপথে, তাঁদের এক দাবি সাইদী হুযুরের মুক্তি

রাজপথ যখন গনই আন্দলনে মুখরিত, জনতা যখন তাঁদের নেতার মুক্তির দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দলন করছে ঠিক তখনই পূলিশ-বিডিয়ার যৌথ উদ্যোগে নিরীহ, শান্তিপ্রিয় জনগনের উপর গুলি চালায়

তারা গু লিচালায় এ দেশের ইসলামি মূল্যবোধের উপর, সারা দেশে চলে পুলিশের নির্বিচারে গুলি।

একদিনেই নিহত হয় শতাধিক মজলুম জনতা, কারো ছেলে হারায়, কারো স্বামী আবার কারো বাবা কারো ভাই

ওদের গুলি থেকে রেহাই পায়নি ছট্ট শিশু ও দুর্বল নারী

হাজার হাজার মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়

গল্পে উপন্যাসে পড়েছিলাম পাকিস্তানিদের গণহত্যার কথা আর তা বাস্তবে দেখেছি ২০১৩ সালে

টানা উনিশ দিন ধরে চলা এই গনহত্যায় প্রায় দুই শতাধিক নিরীহ মানুষ মারা যায়।

৩ হাজারের বেশী গুলিবিদ্ধ হয়, প্রায় ২০ হাজার গ্রেফতার হয়

সারা দেশে নেমে আসে শোকের মাতন

যাঁদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদেরকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি করে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়া হয় যা হার মানায় জার্মানির নাৎসি বাহিনীকেও

স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে বা পরে এমন গণহত্যা এই জাতি আর দেখেছে কিনা আমার জানা নাই, তবে আমার বাবা মায়ের কাছে শুনেছি যে ওই সময়ের গণহত্যা নাকি ৭১ কেও হার মানায়।

ধরে নেই তাঁরা সবাই অন্যায় করেছে, তাঁরা রাষ্টের আইন অমান্য করে বিদ্রোহ করেছে কিন্ত তার বিচারের জন্য দেশে আইন ছিল, প্রত্যেক নাগরিকেরই আইনি লড়াইয়ের সুযোগ পাওয়া তার মৌলিক অধিকার। ব্যাক্তি যতই বড় অপরাধ করুক না কেন সে আইনি সহায়তা পাবে

তাহলে কিশের ক্ষমতাবলে এই নিরীহ মানুষদের পাখির মত হত্যা করা হয়েছে

ধরে নেই তাঁদের বিদ্রোহ খুব চরম আকার ধারন করেছিল কিন্তু আমরা মিডিয়ায় দেখলাম পূলিশ গ্রেফতার করে বন্দুক ঠেকিয়ে তারপর হত্যা করেছে।

এটা কি মানবধীকার লঙ্গন নয়? যেই মানবধীকার লইঙ্গনের বিচার রক্ষার জন্য এই আন্দোলন দমন করা হয়েছে সেখানেই যদি মানইবধীকার লঙ্গন করা করা হয় তবে জাতির জন্য তা লজ্জাকর

রক্ষকই যখন ভক্ষক হয় তখন জাতি কার কাছে বিচার চাবে

আমাদের দেশের হলুদ মিডিয়া এই গণহত্যাকে সম্পূর্ণভাবে উল্টো জনগনের দিকে চাপিয়ে দিয়েছে

তারা আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরে সরকারকে দায়মুক্তি দিয়েছেন

আমিও মেনে নিলাম তাঁরা সন্ত্রাসী, রাস্ট্রদ্রহী কিন্তু তাই বলে তাঁরা বিচার পাবেনা, তাঁদেরকে পাখির মত খাচায় বন্দি করে গুলি করে মারা হবে, এটা কোন আইনে পরে

জনতা আজো ভুলেনি সেই গণহত্যা, আজো ভুলেনি সেই দিনগুলি, তাঁরা আজো ভুলেনি সাইদী হুজুরকে

সাইদী হুজুরকে আবারো ফাসী দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে

সরকার যদি এই রকমের কোন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তবে তা হবে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মত

বাংলার জনতা সব সময় তার জীবন দিয়ে হলেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে প্রস্তুত

বিষয়: বিবিধ

১০৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File