আদর্শ স্ত্রী মুসলিম সমাজের অন্যতম উপহার।

লিখেছেন লিখেছেন জীবরাইলের ডানা ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০২:৫২:০২ রাত



স্ত্রী ও পুরুষ মেলে একটি পরিবার।

একটি আদর্শ পরিবার একটি আদর্শ সমাজের একক।

আর একটি আদর্শ দ্বীনদার স্ত্রী হচ্ছে আদর্শ

মুসলিম পরিবারের একক।

সুতরাং আদর্শ নারী আদর্শ মুসলিম সমাজের অন্যতম

উপহার।

সমাজ সভ্যতার মূল ভিক্তি হচ্ছে পারিবারিক ব্যবস্থা।

পরিবার থেকে মানুষ শিশু বয়সে যা শেখে, যে

ধরনের শিক্ষা লাভ করে আমৃত্যু

মানুষের জিবনে তা বাস্তবায়িত হতে থাকে।

আর শিশু প্রথম শিক্ষা গ্রহন মায়ের কাছ থেকে।

এ কারনে নেপোলিয়ান বোনাপোর্ট

বলেছেন, আমাকে একটি ভাল মা দাও

আমি তোমাদের কে একটি ভাল জাতি উপহার দিবো।

মায়ের স্বভাব চরিত্র যদি উত্তম হয় , মা যদি ধার্মিক হয়

হয় তা হলে তার কোলে

যে সন্তান লালিত হবে , সে সন্তান কিছু টা হলেও

মায়ের গুণের অংশদার হবে।

সুতরাং বিয়ের সময় পাত্রীর যে সমস্ত গুনাবলি দেখা

জরুরী , তার মধ্যে পাত্রী

ধার্মিক কি না সেটা দেখাই জরুরী ।

পাত্রীর মধ্যে অন্যান্য গুনাবলী অল্প মাত্রায় যদি

থাকে আর সে পাত্রী যদি

আল্লাহ্ ভিরু হয় টা হলে তাকেই বিয়ে করতে হবে।

বিশ্ব নবী (সাঃ) বলেছেন, চারটি গুণের কারনে

একটি মেয়েকে বিয়ে করার কথা

বিবেচনা করা হয়।

তার ধন-মাল, তার বংশ গৌরব, সামাজিক মান মর্যাদা, তার রূপ

সৌন্দর্য এবং

তার দ্বীনদারী । কিন্তু তোমরা দ্বীনদার

মেয়েকেই গ্রহন কর।

নবী করিম (সাঃ) এর আলোচ্য নির্দেশের সার কথা

হলঃ দ্বীনদার গুণ সম্পন্ন কনে পাওয়া গেলে

তাকেই যেন স্ত্রী রূপে বরণ করা হয়।

তাকে বাদ দিয়ে অপর কোনো গুণ সম্পন্ন

মহিলাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া

উচিৎ নয়।

দ্বীনদার ও ধার্মিক কনেকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহন

করা উচিৎ ।

অন্য কথায় বিয়ের জন্য চেষ্টা চালান পর্যায়ে

কনের খোঁজ খবর লওয়ার সময় রাসূল

(সাঃ) এর নির্দেশ হল,কেবল দ্বীনদার কনেই তালাশ

করবে।

বিয়ের প্রস্তাব উণ্থাপিত হলে কনে সম্পর্কে

প্রথম জানার বিষয় হল কনের দ্বীনদারীর

ব্যাপার। অন্যান্য গুণ কি আছে তার খোঁজ

পরে নিলেও চলবে।

অর্থাৎ কনের সব চেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ হচ্ছে তার

দ্বীনদারী হওয়া।

ধনী, সদ্বংশজাত ও সুন্দরী রূপসী হওয়া ও কনের

বিশেষ গুণ ও বটে, এবং এর যে কোনো একটি

গুণ থাকলেই একজন মেয়েকে স্ত্রী রূপে

বরণ করে নেওয়া যেতে পারে।

কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এসব গুণ মুখ্য ও প্রধান্য

নয়-গৌ্ন।

রাসূল (সাঃ) এর নির্দেশ অনুযায়ী কেবল ধন সম্পতি

,বংশ – মর্যাদা ও রূপ সৌন্দর্যের

কারনেই একটি মেয়েকে বিয়ে করা উচিৎ নয়। সব

চাইতে বেশী মূল্যবান ও

অগ্রাধিকার লাভের যোগ্য গুণ হচ্ছে কনের

দ্বীনদারী।

চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি কেবল

যে সর্বাধিক গুরুত্ব পূর্ণ তা-ই নয়,

এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য যতই থাক না

কেন,ইসলামের দৃষ্টিতে সে

অগ্রধিকার লাভের যোগ্য কনে নয়।

রাসূল (সাঃ) এর হাদিস অনুযায়ী তো দ্বীনদারী গুণ –

বঞ্চিতা নারীকে বিয়ে করা

উচিৎ নয়।

তিনি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন -তোমরা

নারীকে কেবল বাহ্যিক রূপ সৌন্দর্য্য

দেখেই বিয়ে করোনা।

কেনোনা তাদের রূপ সৌন্দর্য্য তাদের নষ্ট ও

বিপথ গামী করে দিতে পারে।

তাদের ধন সম্পদের প্রাচুর্য দেখে বিয়ে

করোনা।

কেননা ধন সম্পদ তাদের বিদ্রোহী ও দূর্বিনীত

বানিয়ে দিতে পারে।

বরং বিয়ে করো নারীর দ্বীনদারীর গুণ

দেখে।

মনে রাখবে কৃষ্ণ কায়া দাসীও যদি দ্বীনদার হয়

তবু সে অন্যদের তুলনা উত্তম।

রাসূল করীম (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ,

বিয়ের করার জন্য কোন ধরনের

মেয়ে উত্তম?

জবাবে তিনি বলেছিলেন, মেয়ে লোক কে

দেখলে তার প্রতি তাকালে স্বামীর মনে

আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়,তাকে যে কাজের

আদেশ করা হবে তা সে যথাযথ পালন

করবে এবং তার নিজের ও স্বামীর ধন সম্পদের

ব্যাপারে স্বামীর মত ও পছন্দ –

অপছন্দের বিপরিত কোনো কাজই করবে না।

অপর এক হাদিসে উদ্বৃত হয়েছে- সাহাবায়ে কেরাম

একদিন বললেনঃ সর্বোত্তম

মাল সম্পদ কি, তা যদি আমরা জানতে পারতাম, তা হলে তা

আমরা অবশ্যয়

অর্জন করতে চেষ্টা করতাম।

একথা শুনে নবী করীম (সাঃ) বললেন;

সর্বোত্তম মাল সম্পদ হচ্ছে আল্লাহর

যিকির – এ মশগুল মুখ্ব জিহ্বা, আল্লাহর শোকর আদায়

কারী দিল এবং সেই মুমিন

স্ত্রী ও সর্বোত্তম সম্পদ, যে স্বামীর

দ্বীন ও ঈমানের পক্ষে সাহায্য কারী হবে।

কুরআন মজীদের নিন্মোক্ত আয়াত ও হাদীসের

ঘোষিত নীতিরই সমর্থক।

সূরা আন নূর -এ বলা হয়েছে– এবং বিয়ে দাও

তোমাদের জুরীহীন ছেলে মেয়েকে ,

আর তোমাদের দাস দাসীদের মধ্যে যারা

নেককার যোগ্য, তাদের।

অন্যত্র বলা হয়েছেঃ তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক

আল্লাহ ভীরু ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট

অধিক সন্মানার্হ।

ইরশাদ হয়েছেঃ তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং

যাদের ইলম দান করা হয়েছে ,

আল্লাহ তাদের সন্মান ও মর্যাদা অধিক উচ্চ ও উন্নত

করে দেবেন।

এজন্য নবী করীম (সাঃ) বলেছেনঃ দুনিয়ার সব

জিনিসই ভোগ ও ব্যাবহারের সামগ্রী।

আর সব চেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট সামগ্রী হচ্ছে

নেক চরিত্রের স্ত্রী।

কেননা নেক চরিত্রের স্ত্রী স্বামী কে সব

পাপের কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে এবং দুনিয়ার ও

দ্বীনের কাজে তাকে পূর্ণ সাহায্য ও তার সাথে

আন্তরিক সহযোগিতা করে

থাকে।

এই হাদিসের অর্থ হচ্ছেঃ স্ত্রী যদি নেক

চরিত্রের না হয় , তা হলে সে হবে সবচেয়ে

নিকৃষ্ট ও বেশী খারাপ সামগ্রী।

আর নেক চরিত্রের স্ত্রী বলতে বোঝায়-

নেক কার পরহেযগার, আল্লাহ ভীরু ও পবিত্র

চরিত্রের স্ত্রী , যে তার স্বামীর জন্য

সর্ববস্থায় কল্যাণ কামী । তার ঘরে রানী এবং তার

আদেশানুগামী, তাকেই নেক চরিত্রের স্ত্রী বা

নেক স্ত্রী মনে করতে হবে।

বিবাহে ইচ্চুক পুরুষ গণই শুধু মাত্র আল্লাহ ভীরু

পাত্রীকে বিয়ে করবে আর পাত্রী

যে কোনো চরিত্রের পাত্রের সাথে বিবাহ

বন্ধনে আবদ্ধ হবে, ইসলামের নির্দেশ তা নয়।

বরং পাত্রী ও অনুসন্ধান করবে দ্বীনদার পাত্রের।

নারী যখন একজন পুরুষের সাথে দাম্পত্য

জীবনে আবদ্ধ হবে, তখন সে অবশ্যয়

এমন ব্যক্তিকে স্বামী হিসাবে বরন করবে না, যে

ব্যক্তি আল্লাহ কে ভয় করে না।

কোরআন ও হাদিসের অনুসরন করেনা,হালাল

হারামের পরোয়া করেনা, যার

চরিত্র বলতে বলতে কিছুই নেই, যার চিন্তা চেতনা

ইসলামী আদর্শের বিপরীত

এমন পুরুষের সাথে কোনো মুসলিম নারীর

কিছুতেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেনা।

পাত্রে পক্ষের যেমন পাত্রী পক্ষের নানান

ধরনের সৎ গুণাবলী চাইবে,অনুরূপ

পাত্রী পক্ষ পাত্রের ঐ ধরনের গুনাবলীই

চাইবে যে ধরনের গুনাবলী তারা পাত্রীর মধ্যে

চায়। বিয়ে তথা দাম্পত্য জীবন গ্রহণের

ক্ষেত্রে পাত্র – পাত্রীর প্রতি ইসলামের এটাই

নির্দেশ।

আদর্শ নারী ও স্বামীর খেদমত বই থেকে

নেওয়া।

বিষয়: বিবিধ

২১৪১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

359297
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:০৩
অবাক মুসাফীর লিখেছেন : ভাইয়া, আপনি জানেন না এমন কোনো বিষয় কি পৃথিবীতে নাই??
359308
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৪:২৭
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ
359326
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৩৭
হতভাগা লিখেছেন : আধুনিক বলুন কিংবা দ্বীনদার - সব নারই বিয়ের পর খুল্লাম খুল্লা হয়ে যায় ।

নবী ও রাসূলরা আল্লাহর প্রিয় পাত্রদের মধ্যে সেরা ছিলেন বিধায় আল্লাহ তায়ালা উনাদেরকেই এরকম সঙ্গী দিয়েছিলেন ।

বাস্তবে দ্বীনদার পাত্রীর যে বর্ণনা দিলেন সেটা নবী রাসূলরা বাদে আর কারও পাবার সৌভাগ্য হয়েছে কি না সন্দেহ আছে ।

তার ধন-মাল, তার বংশ গৌরব, সামাজিক মান মর্যাদা, তার রূপ সৌন্দর্য এবং তার দ্বীনদারী ।


০ সব ক্যাটাগরীর কাছ থেকেই অশান্তি আসে - এটা অবশ্যম্ভাবী । তবে দ্বীনদার পাত্রীর কাছ থেকে আসলে সেটাতে বেশী কষ্ট লাগে । কারণ ধর্মকে মুখোশ হিসেবে ব্যবহার করে তারা প্রতারণা করে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File