আজব গনতন্ত্র !

লিখেছেন লিখেছেন নাসিম হায়ডার ০৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫৬:১৪ সকাল

আব্রাহাম লিঙ্কন এর সেই বিখ্যাত উক্তি " ফর দি পিপল, বাই দি পিপল, অফ দি পিপল " বিশ্ব কে গণতন্ত্রের নতুন এক দিগন্তের দরজা খুলে দেয়। পৃথিবীর দেশে দেশে আজকে গণতন্ত্রের যে জয় জয়কার তার মূলে আছে এই উক্তি। ফরাসি বিপ্লব কিংবা আরব বসন্ত সবখানেই একটি আকাঙ্খা কাজ করেছে। এবং তা হচ্ছে জনগনের খমতায়ন, বৈষম্য হীন সমাজ আর অর্থ নইতিক সাম্য ও মুক্তি।

২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন আর শোষণ ভেঙ্গে ভারত বর্ষ স্বাধীন হয় , জন্ম নিল ২ টি রাষ্ট্র। ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্র হয় ভারত আর পাকিস্তান। যদিও এই বিভক্তি চান নি তৎকালীন অনেক শীর্ষ নেতৃত্ব।

জন্ম লগ্ন থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তান কে শোষণ আর দমন করতে থাকে। ফলশ্রুতি হচ্ছে জন্মের মাত্র ২৩ বছরের মাথায় রক্তক্ষয়ী এক স্বাধীনতা সংগ্রাম মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক নতুন একটি দেশের জন্ম হয়। যেই দেশের সৃষ্টি কালীন মুল চেতনা ছিল শোষণ মুক্ত একটি গণতান্ত্রিক সমাজ । যেখানে আমার বাক স্বাধীনতা থাকেবে, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করার অবারিত মুক্ত পরিবেশ থাকবে।

কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও আমরা খমতার লোভ কে জয় করতে পারলাম না। দুর্নীতি, লুটপাট আর বিরোধী মতকে দমন আমাদের দেশ টাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। ১৯৭২ সালের সংবিধান কে ১৯৭৫ সালে যে ভাবে পদদলিত করেছিলেন তৎকালীন সরকার সেখান থেকেই দেশের গতি প্রকৃতি পরিবর্তিত হতে থাকে। ১৯৭৩ সালে নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতি শাসন বেবস্থা পরিবর্তন, বাকশাল গঠন, সাধারণ মুক্তি যোদ্ধাদের বদলে রাজনৈতিক মুক্তি যোদ্ধা দের হাতে দেশের ক্ষমতা চলে যাওয়া, ভিন্ন মত দমনের নামে রক্ষী বাহিনীর নির্মম অত্যাচার দেশ কে আবারো পিছিয়ে দিতে থাকে গণতন্ত্রের পথ থেকে। মুক্তি যুদ্ধ ছিল জন যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে স্বাধীন হওয়া দেশ টাকে একদল রাজনীতি বিদ দলীয় করন করে মুক্তি যুদ্ধের চেতনা কে সর্বপ্রথম ধ্বংস করেন। অথচ তারাই আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা আমাদের বলেন যা তারা নিজেরাই একদিন ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।

২০১৪ সালের ৫ ই জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে টাকে নির্বাচন বলা যায় কি? তবু এক শ্রেণীর রাজনিতিবিদ আর বুদ্ধিজীবীরা গলা ফাটিয়ে গনতন্ত্র রক্ষা দিবস পালন করছেন। ৩ বারের সাবেক প্রধান মন্ত্রীকে একটি সর্ব বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান কে ইট বালু ভর্তি ট্রাক এনে গৃহ বন্দি করে কিভাবে গনতন্ত্র রক্ষা দিবস পালন করেন তারা! গণতন্ত্র তো আজ ঐ ইট বালু ভর্তি ট্রাকের পিছনে হারিয়ে গেছে।

আমাদের দেশে একশ্রেণীর সুবিধা ভোগী বুদ্ধিজীবী আছেন যারা নানান ধরণের উক্তি মতাদর্শের জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন যাতে দেশ ও জাতির কোন উপকার তো হচ্ছেই না উল্টো দেশ বিভাজিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের নামে , চেতনার নামে, পক্ষ বিপক্ষের নামে। এরা নিজেরা মুক্তি যুদ্ধে যায় নাই অস্র হাতে যুদ্ধ করে নাই (যদিয়ও তারা সবল শক্ত সমর্থ ছিল) কিন্তু আজ যুদ্ধের নামে বিভক্তি তৈরি করতে দিন রাত এক করে দিচ্ছেন। আমার মতে এদের বিচার করা উচিৎ সবার আগে।

গণতন্ত্রের মুখে তালা দিয়ে গুম খুন করে , হত্যা নির্যাতন আর মামলা বাজি করে আর যাই হোক গনতন্ত্র রক্ষা করা যাবে না। তাই সংশ্লিষ্ট দের যত দ্রুত শুভ বুদ্ধির উদয় হবে ততই দেশ ও জাতির মঙ্গল হবে।

বিষয়: রাজনীতি

৯৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File