এমন দরদি মা,হবে না কেউ আমার! মা,ও,মা

লিখেছেন লিখেছেন সানজিদ হোসেন ইরাজ ০৮ মে, ২০১৬, ০১:১৫:৩৪ দুপুর

পৌষ মাসের রাতে পাতলা পায়খানা করে পুরা বিছানাটি বাথরুমে পরিনত করছি,লেফ,কাথাঁ,কম্পল,সবগুলো প্রস্রাব, পায়খানায় ডুবিয়ে পেলেছি,খুব সকালে উঠে বরফের মত ঠান্ডা পানিতে নেমে ওইগুলো পরিষ্কার করছে আমার গর্ভধারিণী মা।

মা ভেবেছে এগুলো যদি পরিবার পরিজনরা দেখে,তখন বলবে তোমার ছেলে রোগী,,তখন আমার ছেলেকে কেউ কোলে ও নিবেনা। আদর,স্নেহ থেকে বঞ্চিত হবে।

হাত কেটেঁ পেলেছিলাম ছুরি নিয়ে মাস্টারি করার কারনে,হাত দিয়ে ভাত খেতে পারতেছিনা,অভাগা মা আমার নিজে না খেয়ে নিজের হাত দিয়ে ভাত খাওয়ায়ে দিছে,,,মা তোমার হাতের ভাতগুলো অন্যরকম স্বাদ,, পুইশাক দিয়ে খাচ্ছি,সেটা চিংড়ী মাছের মত স্বাদ হচ্ছে।

,

খুব সকালে প্রাইভেট যেতাম নামাজের পরপরই,, আমি চা খাইনা,সেটা আমার মা জানত,,খুব ভোরে তাহাজ্জুত নামাজ পড়তে যখন মা উঠত,তখন আমার জন্য নতুনভাবে রান্না করে খাওয়া দাওয়া রেডি করে পেলত।

,

স্কুল থেকে ফিরতাম আমি বিকেল ৫টায় তখন কি কারো ঘরে কি গরম ভাত পাওয়া যাবে,কিন্তু আমার ঘরেই পাওয়া যেত,ছোট্ট ডেকসি করে আমার জন্য সব খাবার রেডি করে রাখত।সেই আমার জন্মদাত্রী মা।

,

রাতে আমার খিদা লাগে,সেটা কেও না জানলেও মা জানত,তাই কিছু খাবার আমার জন্য ডেসিং টেবিলে রাখত,যাতে রাতে আমি উঠে খেতে পারি।

,

দূরে কোথাও যাচ্ছি গাড়িতে করে,অনেক মেয়েলি আছে তারা কোথাও যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠেনা,তারা গাড়িতে উঠে খাওয়ার জন্য,সারাপথ সাফ,সাফ,সাফ,করে সারাপথ গালে চাবাঁইতে থাকে। কিন্তু আমার খুব অসহ্য লাগে,

হঠ্যাৎ করে আম্মু ফোন দিল,কোথায় এখন তুই,গাড়িতে মা,,ব্যাগের উপরের পার্টটা খুল,ওইখানে কিছু ঝাল নুডুলস দেওয়া আছে,ওইটা খেয়ে নেয়। ওইটা কে বলত জান? আমার গর্ভধারিণী মা।

,

আম্মু বাহিরে গেলে,স্কুল থেকে আমি এসে পাগলামী করতাম,টাকার জন্য,, আম্মু কল করে বলত,,সু-কেচের পেপারের নিচেঁ ৫০ টা টাকা রাখছি আরাফাত তুর জন্য,ওইটা নিয়ে নেয়।

,

জর্জ সাহেবের আদালতে বসে আছি,জর্জ সাহেব বুঝতে না পারলেও আমার মা আমার ফোনের কন্ঠ শুনে বুঝে পেলবে,আমার ক্ষুধা লাগছে,এই তুর কাছে ত ভাংতি টাকা নেয়,, বাজার করার জন্য এক হাজারী একটা নোট দিছি যে,ওইটা ভাংগিয়ে আগে কোন হোটেলে গিয়ে পেট ভরে খেয়ে নে।

,

আজ সারাদিন লিখতে পারব কিন্তু কিবোর্ড থেকে উঠতে পারবনা।

,

হ্যাঁ,এই হল আমার মা,তাকে আমি কোন সজ্ঞায় পেলতে চাই না,কোন তরুনী হয়ত,আমার চোখের পানি মুছে দিবে,প্রয়োজনে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ ও বন্ধ করে দিবে কিছু সময়ের জন্য,কিন্তু আজীবন বিশুদ্ধ রক্ত গায়ে পরিবাহিত করার জন্য কাজ করবে আমার মা।

,

মাগো,আজ দেখে যাও তোমার আরাফাত একটা ডিম প্রাই করতে পারতনা,সেই এখন রান্নাবান্না করে খেতে পারে,মাগো দেখ যাও, কিভাবে কাপড় ধোয়ামোছা করতে পারি,কোনদিন নিজের একটা গেঞ্জি পরিষ্কার করিনি।সারাজীবন তোমাকে কলুর বলদের মত কাটিয়েছে। মাগো আজ অন্তর ছিড়ে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।মাগো কেন বা এত অবুঝ ছিলাম।

,

মাগো আজ ৫ টা দিন তুমি অনলাইনে আসোনি,প্রতিমূহুর্তে চোখ দিয়ে পানি ঝরতেছে,মাগো তোমার ভালোর জন্যই ত আমি সব মেনে নিয়েছি,আজ আমি শুধু দেশান্তরে তোমার জন্য।যা ইনকাম করতেছি সব তোমার জন্য।তাও কি তুমি খশী নয়।আচ্ছা,ঠিক আছে কল করলে আমি আর কান্না করবনা।

,

ফকির আলমগীর তাঁর গানে তাই যথার্থই বলেছেন-মায়ের একধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চামপাপোষ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না,এমন দরদী হবে কেউ হবে না আমার।

,

নজরুল বলেছেনঃহেরিলে মায়ের চোখ,দূরে যায় সব দুঃখ।

,

একটি হিন্দী গান মনে পড়ে গেল,,

তু কিতনি,আচ্ছি হে,তু কিতনি বুলি হে,পেয়ারে পেয়ারে হে,ও মা,ও মা। (https://youtu.be/aSa9qb_jXlg)

,

মা পরিশেষে আর কিবা বলব বিধাতার কাছেঃআমার গায়ের চামড়া দিয়ে জুতা সিলায় দিয়ে তোমার পরনে দিলেও ঋণ পরিশোধ হবেনা। হে মাবূদঃ

রাব্বীর হামহুমা কামা রাব্বায়ানির ছাগিরা।

,

আল্লাহ আমরা সবাই, সবার মাকে আমরা নিজের দেহের ছেয়েও যেন বেশী যত্ন করতে পারি সেই রকম মানসিকতা তৈরী করে দাও। আমিন

বিষয়: বিবিধ

১৯৩৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

368404
০৮ মে ২০১৬ বিকাল ০৫:০৪
আফরা লিখেছেন : মা তো মাই , মায়ের মত দরদী কেউ নাই ,কখনো হবে ও না কখনো ছিল ও না ।

ধন্যবাদ আপনাকে ।
০৮ মে ২০১৬ বিকাল ০৫:৫৮
305763
সানজিদ হোসেন ইরাজ লিখেছেন : অশেষ ধন্যবাদ আপু আপনাকে
368409
০৮ মে ২০১৬ বিকাল ০৫:৩৩
ধ্রুব নীল লিখেছেন : আমিন। আল্লাহ তায়ালা সকল মায়ের মুখে হাসি ফুটে রাখু্ক।
০৮ মে ২০১৬ বিকাল ০৫:৫৯
305764
সানজিদ হোসেন ইরাজ লিখেছেন : ছুম্মা আমিন,, দোয়া করবেন শ্রদ্ধেয় বড় ভাই।
368432
০৮ মে ২০১৬ রাত ০৮:১৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : মা, মাকে হারিয়েছি আজ এক বছর দুই মাস ১৯৯৬ মাকে কুয়েত নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু মাকে ৭মাসের বেশী রাখতে পারি নাই। এই কুয়েতে মার বয়েসের কেউ ছিলনা হয়তো এ জন্যই মা এখানে থাকতে চায়নি। মাকে দেখতে ৩/৪ মাস পরেই যেতে হয়েছে। মা না থাকার কষ্ঠ সব চেয়ে বড় কষ্ঠ। লেখাটি ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে
০৯ মে ২০১৬ রাত ১২:৫৬
305801
সানজিদ হোসেন ইরাজ লিখেছেন : ভাইয়া প্রতিমুহূর্তে মায়ের কথা ভেবে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।মার সাথে কলও করতে পারিনা,আম্মু ও কান্না করে দে,, এই জগতে যেই মায়ের কাছ থেকে দূরে আছে,সেই বুঝবে,মা কি জিনিস।

শুকরান ভাইয়া।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File