হিজাবওয়ালীদের সমীপে আমার মিনতি।

লিখেছেন লিখেছেন নবাব চৌধুরী ৩১ জুলাই, ২০১৫, ০১:৪২:৪১ দুপুর

ধরি ক কে তার বাবা বললেন সন্ধ্যার পর যাতে সে নগরীতে বের হয়না কারন ঠিক এই সময়টাতে অনেক বড় ধরনের কিছু অপরাধ সংঘটিত হয়,ক তার বাবার আদেশ পালন করলো ঠিকই অর্থাৎ সন্ধ্যার পর সে নগরীতে বের হলোনা কিন্তু যে ধরনের অপরাধ নিয়ে তার বাবা সংকিত ছিলেন সেই অপরাধ গুলো সে বিকেল বেলায়ই সম্পন্ন করে সন্ধ্যার আগেই ঘরে ফিরে আসলো।আমার প্রশ্ন এখানে ক যে তার বাবার আদেশ পালন করলো তাতে কী কোনো লাভ হয়েছে?

যখন কোনো কতৃপক্ষ বা আদেশ কর্তা কোনো একটা আদেশ প্রদান করেন তখন সে আদেশের অভ্যন্তরে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য অবশ্যই জড়িত থাকে আপনি যদি আদেশটা পালন করেন ঠিকই কিন্তু উদ্দেশ্যটা হাসিল না করেন তাহলে ঐ আদেশ পালনের কোনও মানে নেই সেটা নিতান্তই অর্থহীন।

আমি কখনই যে একটা কাজ করিনি সেটা হলো নারীর বেশ-ভূষা নিয়ে আজাইরা সমালোচনায় মগ্ন হওয়া।বিগত কিছুদিনের ফেইসবুক নিঊজ ফিড এবং কতিপয় আবাল মার্কা পোলাপাইনের কান্ড দেখে অবশেষে বাধ্য হয়েই লিখতে বসেছি।

এখনকার সময় অনেক মেয়েকেই দেখা যায় হিজাব,বোরকা,ইত্যাদি পরিধান করে ঘর থেকে বাহির হতে উনাদের অনেকেই আবার গর্বের সাথেই নিজেকে হিজাবী বলে পরিচয় প্রদান করেন এসবে আসলে আমার কোনোও এ্যালার্জি নেই,হে হিজাব ওয়ালী আপনি হিজাব পড়ে বাইরে আসলেন অথচ ঘরে গিয়ে এমন এক সেলফী তুলে বয় ফ্রেন্ডকে পাঠালেন যেটাতে আপনার বগলের লোম স্পষ্ট দেখা যায়!আমার প্রশ্ন হলো এমন হিজাবী হওয়ার কী কোন অর্থ হয়?বিষয়টা আসলে ক এর গল্পের মতোই।নারীকে বলা হয়েছে পর্দানশীল হওয়ার জন্য হিজাব পরিধান পর্দানশীল হওয়ার একটা উপাধান সেই সাথে চাল-চলন কথা-বার্তা বলার ধরন,নামাজ-রোজা,মনের পর্দা সবকিছুই আল্লাহর আদেশের অন্তর্ভূক্ত।

মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন,যিনি আমাদের সৃষ্টি কর্তা তিনিই সর্বাপেক্ষা ভালো জানেন আমাদের কার চাল-চলন কীরুপ হওয়া উচিৎ তাই তিনি নারী এবং পুরুষের বেশ-ভূষা নিয়ে দিয়েছেন স্পষ্ট দিক নির্দেশনা সেই সাথে তিনি আমাদের দান করেছেন মেধা যাতে আমরা বোঝতে পারি উনার আদেশ গুলোর উদ্দেশ্য কী।একটা মেয়ে যদি বেপর্দা হয়ে চলাচল করে তাহলে ঐ সমাজের সার্বিক অবস্থা যে কী হতে পারে সেটা মহান আল্লাহ ভালো করেই জানেন আর জানেন বলেই নারীদের বলেছেন তোমরা অধিকতর পর্দাশীল হও আর পুরুষদেরও বলেছেন তোমরাও পর নারীদের প্রতি দৃষ্টি আরোপ করা থেকে বিরত থাকো।আপনারা যারা মুক্তমনা এবার আপনারা অবশ্যই বলিবেন ইউরোপ-আমেরিকায় তো নারী পুরুষেরা বেপর্দায়ই চলে ওদের সমাজতো আমাদের থেকে উন্নত অনেক তবে আপনাদের বলছি,ওরা অনেক উন্নত হয়েছে বেপর্দা হয়ে চলাচলের জন্য নয় বরং জ্ঞান চর্চার অনেক সুযোগ পাওয়ার জন্য।

বিষয়টা মোঠেও এমন নয় যে যদি ওরা পর্দানশীল হতো তাহলে অনুন্নত থাকতো,মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকান এরা আসলে অনেক সুখেই আছে কিন্তু এদের সমস্যা হচ্ছে এরা অলস,জ্ঞান চর্চা এদের ভালো লাগেনা।

হিজাবী মেয়েটা যদি হিজাব পড়েন শুধু মাত্র ফ্যাশনের জন্য হিজাবের সাথে জুতা ড্রেসের কালার মিলিয়ে মিলিয়ে তাহলে সেটা ভূল এবং অনুচিৎ ও বটে আপনি যদি হিজাব পরিধান করেনই তাহলে সেটা হতে হবে আল্লাহর আদেশ মানার জন্য তখন আপনি কালার মিলিয়েই পড়েন আর যেভাবেই পড়েন কোনোও আপত্তি নেই কিন্তু যখনই আপনি একজন মুসলমান হওয়ার পরেও শার্টের উপর হিজাব পড়ে নিচে পড়বেন থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট তখনই আপনি হয়ে যাবেন আমার সমালোচনার পাত্রি।

এ ধরনের হিজাব ওয়ালী গোঠা ইসলাম তথা গোঠা সমাজের জন্য কাল।

আমাদের সমাজে এখন এক ধরনের আবাল জাতীয় বুদ্ধিজিবী বের হয়েছে যারা বলে নারী তুমি ঘর থেকে বের হবে পর্দা রেখে না হলেতো যৌন হয়রানীর শিকার হবেই,অর্থাৎ এরা যৌন হয়রানীকে সমর্থন জানাচ্ছে।এরকম কথা বলাটা নিতান্তই অন্যায় কারন পর্দানশীল হওয়ার বিধান আল্লাহ প্রদত্ত কেউ যদি এর লংঘন করে তবে শাস্তিটাও আল্লাহই দেবেন আপনার আমার দেওয়ার অধিকার নেই যে সকল দেশে ইসলামী আইন আছে সে সকল দেশে হয়তো প্রতিকার মূলক বিধান আছে যা একটা নির্দিষ্ট কতৃপক্ষের জন্য কিন্তু সাধারনের জন্য নয়।আপনার উপর যেটা নির্দেশনা সেটা হলো আপনার বোনকে আপনি দেখে রাখেন যাতে করে সে বেপর্দা না হয়,আপনার ভাগনী ও আত্বিয়াদের আপনি দেখেন যাতে সে বেপর্দা না হয়,আপনি এই দায়িত্বটা পালন করেন যথাযথ ভাবে।

ইসলাম নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই বিধান করে দিয়েছে সুতরাং কোনো পুরুষও যখন নারী নিয়ে আজে বাজে মন্তব্য করবেন তিনিও অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হবেন সেই সাথে জবাবদিহীতাও করতে হবে যদি কখনও কোন মহিলা পর্দা না মেনে বাইরে আসে তখন তাকে জবাব দিতে হবে একটা সভ্য তরিকায় এটাই মুমিনদের পন্থা আজে-বাজে মন্তব্য বা যৌন হয়রানীর মাধ্যমে শিক্ষা দিতে গেলে সেটা হিতে বিপরীত।

পরিশেষে হিজাবীদের উদ্দেশ্যে এটাই বলবো হিজাব পরিধানের মূল যে উদ্দেশ্য সেটা থেকে কিছুতেই সরে আসবেননা।

বিষয়: বিবিধ

১০৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File