পীর ধরার ১ নং দলীল (মগজ ধোলাই-১ম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ০৬ মার্চ, ২০১৭, ১০:১২:০৩ রাত

পীর ধরার ১ নং দলীল:



পীরপন্থীরা পীর ধরা ও পীরের হাতে বাইয়াতের জন্য কুরআন ও হাদীসের অপব্যখ্যা সহ অনেক দূর্বল ও জাল হাদীসের পাশপাশি উদ্ভট কিসসা কাহিনি বলে সাধারণ মানুষদের মগজ ধোলাই করছে। এখানে ধারাবাহিকভাবে সেইসব বিষয় আলোচনা করবো ও মগজ সংশোধনের চেষ্টা করবো।

পীর ধরার ১নং দলীল: আল্লাহ বলেন-

হে ঈমানদারগণ, তোমার আল্লাহকে ভয় কর, এবং আল্লাহ্‌ প্রাপ্তির পথে “উসিলা” তালাশ কর। (৫:৩৫)

পীরপন্থীরা বলে থাকেন-“কাউলুল জামির” কিতাবে ২৮ পৃষ্ঠা ও হযরত মোজাদ্দেক আল ফেসানী (রঃ) এর মকতুবাত শরীফের দ্বিতীয় খন্ডের, ১২৬ পৃষ্ঠায় এই উসিলা শব্দের অর্থ “পীর গ্রহণ করা, বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংশোধন: আসুন দেখি পুরো আয়াতের বাংলা অনুবাদ ও এর তাফসীর:

"হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর, তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় অম্বেষণ কর ও তাঁর পথে সংগ্রাম কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। (সূরা ৫ মায়িদা:৩৫) অনুবাদটি আহসানুল বায়ান, তাইসিরুল কুরআন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে নেয়া।

পূর্ববতী সকল বিদ্বানদের মতে "অসীলা" শব্দটির অর্থ নৈকট্য লাভের উপায়। (দ্রষ্টব্য: তাফসীরে কুরতবী, তাবারী, ইবনে কাসীর) এদের মধ্যে অন্যতম হলেন- মুজাহিদ, হাসান বসরী, আতা, সুদ্দী, আবু ওয়াইল, আব্দুল্লাহ ইবনে কাসীর (রহ.) প্রমুখ।



আলোচ্য আয়াতে এর মানে হচ্ছে, ঐ জিনিস যার মাধ্যমে আকাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভ করা যায় অথবা কোন বস্তুর নিকটবর্তী হওয়া যায়। ‘আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় অন্বেষণ করো’ এর ভাবার্থ হচ্ছে; এমন কর্ম সম্পাদন করা, যার দ্বারা তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য অর্জন করতে পার। নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা।

হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, জান্নাতের সুউচ্চ স্থানকেও ‘অসীলা’ বলা হয়; যা নবী (সাঃ)-কে প্রদান করা হবে । আর এই জন্যেই নবী (সাঃ) বলেছেন ; যে ব্যক্তি আযানের পর এই দু’আ পাঠ করবে, তার জন্য আমার সুপারিশ হালাল হয়ে যাবে। (বুখারীঃ আযান অধ্যায় ও মুসলিমঃ নামায অধ্যায়) অসীলার দু’আ যা আযানের পর পঠনীয়, তা হচ্ছে-

اللهم رب هذه الدعوة التامة ، والصلاة القائمة ، آت محمدا الوسيلة والفضيلة ، وابعثه مقاما محمودا الذي وعدته ، "

‘‘আল্লা-হুম্মা রাববা হা-যিহিদ দা’অতিত্ তা-ম্মাহ, অসস্বালা-তিল ক্বা-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল অসীলাতা অলফাযীলাহ, অবআসহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী অআত্তাহ।’’

আয়াতের পরের অংশে বলা হচ্ছে- আল্লাহর পথে জিহাদ/লড়াই করো যাতে তোমরা সফল হতে পারো। অর্থ্যাৎ জিহাদও অন্যতম নৈকট্যলাভের মাধ্যম।ইমাম তাবারী (রহ)বলেন-

"তার পথ মানে, দ্বীন ও শরীয়াত যা তার বান্দাহদের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।" ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা যাতে জান্নাতের অনন্ত জীবন লাভের মাধ্যমে সফলতা লাভ করতে পারবে।

এই আয়াতে কোথায় পীর বা ব্যক্তির কথা বর্ণিত আছে? বরং বলা হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ করার।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382142
০৭ মার্চ ২০১৭ সকাল ০৮:১৫
চেতনাবিলাস লিখেছেন : সত্যিকথা দলিল সহকারে লেখার জন্য ধন্যবাদ |
382152
০৭ মার্চ ২০১৭ রাত ১১:২৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো
382192
১২ মার্চ ২০১৭ বিকাল ০৪:২৬
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : পড়লাম, আপনার লেখাটা ঐসব লোকের মনে দাগ কাটুক, এই কামনা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File