মাত্র ১০ সেকেন্ডের বাতাসে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে লক্ষ্মীপুর সদরের পিয়ারাপুর গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ও উপড়ে পড়েছে শত শত গাছ। এ সময় গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে একটি গরু, আহত হয়েছে আরও দুটি।
গতকাল সোমবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে হঠাৎ ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের প্রবল বাতাসে এ ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই চারপাশ থেকে চিৎকার ও কান্না শব্দ ভেসে আসে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে শত শত গাছ উপড়ে পড়ে আছে। অনেকের ঘর লন্ডভন্ড হওয়াসহ অনেক ঘরের চাল উড়ে গেছে। এ ছাড়া গ্রামের লোকমান হোসেনের একটি গরু মারা গেছে এবং আহত হয়েছে আরও দুটি গরু।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের মো. মিজানুর রহমান নাছিরের বসতঘর, মাকছুদুর রহমানের বসতঘরের টিনের চাল বাতাসে উড়ে গেছে। পরে ঘরের চাল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তারা জানান, বাতাসে গ্রামের হোসেন, নরুল আমিন, বাবলু, রুবেল, মো. শাহজাহান ও আনসার উদ্দিনের বসতঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মো. লোকমান হোসেন বলেন, ‘এমন বাতাস এর আগে আর কখনও দেখিনি। মাত্র ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের বাতাসে আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। ৩টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, একটি গরু মারা গেছে ও দুইটি গরু আহত হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য গাছ ভেঙে ও উপড়ে গেছে।
পপি নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আশঙ্কা করেছিলাম ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে আমাদের ক্ষতি হবে কিন্তু আমাদের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। আর হঠাৎ বাতাসে আমাদের সবকিছু এলোমেলো করে দিল।’
বাবুল ও তার স্ত্রী রেখা বেগম জানান, দুঃখকষ্ট নিয়ে কোনরকম বেঁচে আছি সন্তানদের নিয়ে। যে ঘরটিতে বসবাস করতাম সে ঘরটিও রাতে ভেঙে গেছে। এখন কোথাও থাকার জায়গা নেই। আমরা খুব অসহায় মানুষ। টানাপোড়নের সংসার, একমুঠো খাবার জোগাতে অনেক কষ্ট করতে হয়। এরমধ্যে হঠাৎ বাতাসে আমাদের সবকিছু এলোমেলো করে দিয়ে গেল।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন জানান, তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে সৃষ্টিকর্তা আমাদের রক্ষা করেছেন। যখন শুনলাম পিয়ারাপুরে কয়েকটি পরিবার হঠাৎ প্রবল বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তখন অনেক খারাপ লেগেছে। আমরা ওইসব পরিবারকে আর্থিক সহয়তা করবো।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন