বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট আর টিকলো না। এক এক করে সঙ্গীরা বেরিয়ে যাওয়ায় অনেকটা একঘরে হয়ে গেলো দলটি। এদিকে, জোট ছাড়ার আগে থেকেই বিএনপির শরিক দলের নেতাসহ অনেকেই আওয়ামী লীগের নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে আসছিল বলে জানা গেছে।
বিএনপির জোট ভাঙার কারণও তুলে ধরেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ একাধিক নেতা। শনিবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে তারা বলেন, একটি রাজনৈতিক জোট গড়ে ওঠে আদর্শের ভিত্তিতে, জনগণের কল্যাণের কথা ভেবে। বিএনপির ভেতর দুটোই অনুপস্থিত। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে টাকা দিয়ে দল গড়েছেন। কিন্তু ভিত্তি না থাকায় হারিয়ে গেছে দলগুলো। এটা জনগণ যেমন বুঝেছে, বিএনপির শরিকরাও বুঝেছে।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের বড় দুর্বলতা জোট ভাঙা। এতে স্পষ্ট হয়েছে বিএনপি অন্তসারশূন্য। এটা কিছুটা দেরিতে হলেও এটা বুঝেছে শরিকরা। ২০ দলীয় জোট নেতারা বুঝতে পেরেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি গণমুখী ও উন্নয়নমুখী, বিএনপির রাজনীতি দুর্নীতিমুখী।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ভাঙার বড় কারণ জামাতের সঙ্গ তারা চায় না। দেশের মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পেরেছে বিএনপির জোট নেতারা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি জোটের অনেক নেতা আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শ ও উন্নয়নমুখী রাজনীতির প্রতি আস্থা রেখে নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে আসছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই নানা জন ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছে। ছোটখাট রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের অনেকেই কাছে আসতে চেয়েছেন। তবে আমাদের ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। এই জোটের পরিসর আর বাড়বে না। নতুন করে কারও জোটে ঢোকার সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য ফারুক খান বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের নেতারা ‘আমদানি’ করা রাজনীতি সঠিক নয় মনে করে জোট ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দুর্নীতির দায়ে বিদেশে পলাতক। তার সিদ্ধান্ত ও রাজনীতিতে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন শরিকরা।
ফারুক খান আরও বলেন, শরিকরা বুঝতে পেরেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতি গণমুখী। বিএনপির সঙ্গে থেকে তারা গণমুখী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। জনগণের কল্যাণে কাজও করতে পারছে না। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে জোট ছেড়ে যাচ্ছে তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, জোটের রাজনীতি যদি হয় শুধু ক্ষমতার, তখন জোট টিকতে পারে না। বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে তারা গ্যাপগুলো দেখেছেন। তাই তারা বেরিয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, আদর্শ মজবুত না হলে জোট-দল কিছুই টেকে না। আর জামাত তাদের ছাড়েনি অথবা তারা জামাত ছাড়েনি। দুই দলের আদর্শই এক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন