সারা পৃথিবীতে করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের জীবন ও জীবিকার মধ্যে বিরাট চাপ পড়ছে উল্লেখ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এড. আনিসুল হক বলেছেন, জনগণের সেবার জন্য, জনগণ যাতে ভালোভাবে থাকে সে জন্য জনগণকে সময়ে সময়ে ঘরে রাখতে হয়। আবার জনগণের জীবিকার জন্যও সরকারকে সচেষ্ট থাকতে হয়, সচেতন থাকতে হয়। জনগণের জীবন এবং জীবিকার মধ্যে সমতা (ব্যালেন্স) প্রতিষ্ঠা করার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তাই করছে।
‘লকডাউন শিথিল করে সরকার ঘরে ঘরে করোনা সংক্রমণ পৌঁছে দিচ্ছে’- বিএনপির এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভা করেন।
মন্ত্রী বলেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুইটি আনন্দের দিন। ঈদুল আজহার সময় মানুষ আল্লাহর নামে পশু কোরবানি দেয়। এটা সারা বিশ্বের মুসলমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই কোরবানির ঈদ পালন করার জন্য যদি বিধিনিষেধ একটু শিথিল করা হয়, তাহলে সেটা কি খুব অন্যায়?
তিনি বলেন, মানুষের জীবন এবং জীবিকার মধ্যে ব্যালেন্স আনাটা সরকারের কাজ। লকডাউন শিথিল করে করোনা সংক্রমণ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে যারা বলেন, তারা কতটা বিবেকবান তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ইমামদের সাথে মতবিনিময়কালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণে আমরা এখন পর্যন্ত বেশ শক্তভাবে টিকে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থায়নে আমাদের জন্য টিকা কিনেছিলেন। এখন পর্যন্ত টিকা দেওয়া চালু আছে।
করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করাটা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২৫ মার্চ করোনা ভাইরাসের কারণে সারা দেশে ছুটি ঘোষণা করেন। মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘব করার জন্য তিনি ১ লাখ ২৮ হাজার কোটির অধিক টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেন। তার এই সাহসিকতার কারণে আমরা করোনা ভাইরাসের আঘাত অনেকটাই বুঝতে পারিনি।
মন্ত্রী স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সাথে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ এবং কোরবানি উদ্যাপন করার জন্য ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান। আল্লাহ যেন করোনা মহামারি থেকে দ্রুত মুক্তি দেন এ জন্য তিনি ইমামদেরকে দোয়া করার জন্য অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে আড়াই শতাধিক ইমাম, মোয়াজ্জিন অংশ নেন। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার, পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, মুহিউসুন্নাহ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও. আসাদ আল হাবিব, উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাও. কাজী মাঈনুদ্দিন, খড়মপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. কাজী কেফায়েতুল্লাহ মাহমুদি প্রমুখ।
ইমামরা বক্তব্যে তাদেরকে বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য আইনমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানান। এছাড়া হেফাজতের সহিংস ঘটনায় আটক নিরপরাধ আলেম-ওলামাদের মুক্তির বিষয়ে আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূঁইয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মমিন বাবুল প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন