কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলোচিত-সমালোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ সংগঠনের কয়েকজন নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। মন্ত্রীর সঙ্গে তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। সবমিলিয়ে বাবুনগরীসহ হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন।
সোমবার রাত ৮টা ৩৭ মিনিটের দিকে বাবুনগরীর গাড়ি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় প্রবেশ করে। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে হেফাজত নেতাদের বহনকারী গাড়ি মন্ত্রীর বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত আমিরের সাক্ষাতের বিষয়টি ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত আমিরের বৈঠকের খবর পেয়ে সেখানে ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। বাবুনগরী বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রায় দুই মিনিট গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। তবে বাবুনগরী গাড়ির গ্লাস নামাননি। এছাড়া হেফাজতের অন্য নেতারাও গণমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেননি।
তবে হেফাজতে ইসলাম সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলের ধরপাকড়ে গ্রেপ্তার শতাধিক নেতাকর্মীর জামিন বিষয়ে হেফাজত আমির কথা বলেছেন। এছাড়া করোনার প্রকোপের কারণে বন্ধ থাকা কওমি মাদ্রাসা খোলার ব্যাপারেও তারা কথা বলেন। আগামী দিনে হেফাজতে ইসলাম হঠকারী কোনো কর্মসূচি দেবে না বলেও সরকারের প্রতিনিধি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন হেফাজত নেতারা।
বাবুনগরীর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, নায়েবে আমির আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জি, হেফাজতের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর একান্ত সহকারী শফিউল আলম ওরফে খাদেম শফী, হেফাজত মহাসচিবের ব্যক্তিগত সহকারী মোরশেদ বিন নূর প্রমুখ।
বারডেম হাসপাতালে নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করাতে বাবুনগরী সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন। তিনি হেফাজত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীর পরিচালিত খিলগাঁওয়ের মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় অবস্থান করছেন।
এর আগে গত ৪ মে হেফাজত মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্বে সংগঠনের নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তখনও তারা দেশজুড়ে গ্রেপ্তার হওয়া হেফাজত নেতাদের ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এর আগে ১৯ এপ্রিলও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজতের নেতারা।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতায় হেফাজতে ইসলাম গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস তাণ্ডব চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ হেফাজতের নেতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। আলোচিত সংগঠনটির অর্ধশতাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রচণ্ড চাপের মুখে থাকা হেফাজত আগের কমিটি ভেঙে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে। তবে আমির ও মহাসচিব পদে আগের দুজন বহাল থাকেন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন