যেকোনও সরকারি চাকরি করতে হলে ছাত্রলীগ করতে হবে। অন্যথায় লিখিত বা মৌখিকে পাস করলেও কারও চাকরি হবে না। এনএসআই, ডিজিএফআই, এসবির লোকজন ছাত্রলীগ না করার কারণে পাস করলেও বাদ দিবে। শুধু নিজে ছাত্রলীগ নয়, নিজের বাবা-মাকেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে হবে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিও >>click here
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বাঁশখালীতে যেকোনও চাকরি জন্য স্থানীয় এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের রাজনীতি করতে হবে। তাহলেই সব কিছু করা যাবে অন্যথায় কোনও লাভ হবে না। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) উপজেলার পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজের পিএস পরিচয়দানকারী এই নেতা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এক পর্যায়ে বলতে শুনা যায়, ‘....আর একটি কথা বলতে চাই, তোমরা ছাত্রজীবন যখন শেষ করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ছাত্র না হলে সেই ছেলে বিসিএস ক্যাডার হবে না, সে চাকরি পাবে না। এখন বাংলাদেশে চাকরি করতে হলে তাকে অবশ্যই ছাত্রলীগ করতে হবে। তার মা-বাবাকে অবশ্যই আওয়ামী লীগ করতে হবে। তা না হলে এনএসআই, ডিজিএফআই, ডিএসবি এসব গোয়েন্দা শাখায় তোমার রেজাল্টে তুমি রিটেন ও মৌখিক পাস করলেও তোমার বাবা মা যদি আওয়ামী লীগ না হয়, তোমার পরিবার যদি আওয়ামী না হয়, তুমি যদি ছাত্রলীগ না হও তাহলে তোমাকে কোন অবস্থায় চাকরি দিবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাহলে চাকরির জন্য হলেও ছাত্রলীগ করতে হবে। ছাত্রলীগ কার পেছনে করতে হবে? যাকে শেখ হাসিনা বাঁশখালীর পতাকা দিয়েছেন। যিনি বাঁশখালী আওয়ামী লীগের সফল সভাপতি। তিনি আধুনিক বাঁশখালীর রূপকার। তাঁর পেছনে রাজনীতি করতে হবে। যদি চাকরির প্রয়োজন হয় তাহলে মাননীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার প্রয়োজন হবে। আর মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া কোন চাকরি পাওয়া যাবে না।’
ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল বলেন, ‘আর যে যে হাইব্রিড নেতা আছে, তাদের পেছনে রাজনীতি করা মানে নষ্ট হয়ে যাওয়া। সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস। আজকের আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান এক সময়ের বিধ্বস্ত বাঁশখালীকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে সোনার বাঁশখালী উন্নত ডিজিটাল বাঁশখালীতে রূপান্তর করছেন। তিনি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি বাঁশখালী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করেন। বাঁশখালীর উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করেন। পশ্চিম বাঁশখালী মানুষের জন্য বেড়িবাঁধের জন্য রাজনীতি করেন। যে বেড়িবাঁধ না হলে আজকে পশ্চিম বাঁশখালীর মানুষ সিগন্যাল দিলে পূর্বদিকে পালাতে হতো। আজকে ৩০০ কোটি টাকায় পশ্চিম বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার কারণে প্রিয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী পশ্চিম বাঁশখালী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। আজকে সবাই ফসল ফলাচ্ছেন। সিগন্যাল দিলে পূর্ব দিকে না গিয়ে নিজ জায়গায় অবস্থান নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যে ছাত্রলীগ তোমরা এখানে উপস্থিত আছো। তোমরা অত্যন্ত নগন্য ছাত্রলীগ উপস্থিত হয়েছো। পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২২ শত ছাত্র-ছাত্রী আছে। তোমরা এখনো ছাত্রলীগ কী জিনিস ছাত্রলীগ না করলে কী হবে ও করলে কী হবে এবং মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর পতাকার তলে আসলে কী হবে সেটা এখনো বুঝতে পারছো না। তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ তোমরা লিটন সাহেবের (আব্দুল্লাহ কবীর লিটন) রাজনীতি করবে না। সে বাঁশখালীর একজনকেও চাকরি দিতে পারবে না। সে বাঁশখালীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবে।’
যদিও চেয়ারম্যান তাজুলের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে এ বক্তব্য যে তাজুলের তার সত্যতাও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জিসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য আবু জাফার চৌধুরী, পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের আজীবন দাতা সদস্য মো. শহিদুল্লাহ, পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের শিক্ষানুরাগী সদস্য অ্যাডভোকেট বদুরুউদ্দিন চৌধুরী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মালেক সিকদার, আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন টিপু।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন