হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা প্রকাশ্যে জ্বালাও-পোড়াও-সহিংসতা-নাশকতার তাণ্ডবের সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অভিযোগে হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতার করা মানে আলেম-ওলেমা গ্রেফতার নয় বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বিএনপি, হেফাজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ‘সরকার গণহারে আলেম-ওলেমাদের গ্রেফতার করছে’ বক্তব্যের প্রতিবাদ করে জাসদ নেতারা বলেছেন, সহিংসতা-নাশকতা-জ্বালাও-পোড়াও-ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবের সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি অভিযোগে হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতার মানে গণহারে আলেম-ওলেমা গ্রেফতার নয়।
তারা বলেন, সমগ্র দেশবাসীর চোখের সামনে বায়তুল মোকাররম মসজিদ, হাটহাজারি মাদ্রাসাসহ কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে এবং ফেসবুকে লাইভ ও ইউটিউব ব্যবহার করে এই হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা প্রকাশ্যে জ্বালাও-পোড়াও-সহিংসতা-নাশকতার উস্কানি ও হুকুম দিয়েছে।
ব্রাক্ষণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে হেফাজতি মোল্লারা প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল, এসপির কার্যালয়, পুলিশের থানাসহ সরকারী অফিস-আদালত-স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, রেলস্টেশন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি, অ্যামব্যুলেন্সসহ সরকারি-বেসরকারি যানবাহনে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করেছে।
জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, আইন সবার জন্য সমান। সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার হাতে নাতে প্রমাণ থাকার পরও অপরাধীকে গ্রেফতার করা যাবে না কেন? কওমি মাদ্রাসার পরিচালক, প্রিন্সিপাল, শিক্ষক নামধারী হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা কি দেশের সংবিধান-আইন-আদালতের চেয়ে বড়? তারা বলেন, একজন কোরানে হাফেজ ফৌজদারি অপরাধ করলে কি তাকে গ্রেফতার করা যাবে না? তারা বলেন, হেফাজতি মোল্লারা রাজনৈতিক মোল্লা। এরা আলেম, ওলামা, ইসলামি চিন্তাবিদ, ইসলামি দার্শনিক, ইসলামি পণ্ডিত, ধর্মীয় নেতা না, এমনকি এরা ধর্মপ্রচারকও না। এরা রাজনীতি করে। এরা রাজনৈতিক মোল্লা।
নেতৃদ্বয় বলেন, হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতারের বিরোধীতা করে বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো বিএনপিই সংশোধন হয়নি, বদলায়নি। বিএনপি সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাত-আগুন সন্ত্রাসের রাজনৈতিক পথেই আছে এবং হেফাজত বিএনপির ভাড়াটে রাজনৈতিক খেলোয়াড়। বিএনপি ও হেফাজত আগুন সন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের মাধ্যমে অশান্তি-অস্থিতিশীলতা-অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি সরকার উৎখাতের দিবাস্বপ্ন দেখছে। তারা বলেন, হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে যতই নাকে খত দিক, দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাক না কেন এদের ছাড় দেয়া হবে সরকার ও দেশের জন্য আত্মঘাতি। কারণ রাজনৈতিক মোল্লারা রেজিস্টার্ড বেঈমান ও বিশ্বাসঘতক। এরা পাকিস্তানের দালালি আর বাংলাদেশের বিরোধীতার রাজনীতি কোনো দিনই ছাড়বে না। বার বার প্রমাণ হয়েছে এরা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র-সংবিধান-বঙ্গবন্ধু-জাতীয় পতাকা-জাতীয় সঙ্গীত-মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতার বিরোধীতা করবে ১৯৭১ সালের মতই।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, শুধু সরকার ও প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে না থেকে সকল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মানবতাবাদী রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক মোল্লা এবং এদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ও পার্টনারদের বিরুদ্ধে মাঠে রাজনৈতিক শক্তি সমাবেশ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন