দীর্ঘ ১৬ বছর পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। নেপালের বিপক্ষে আগে গোল করে সেই সম্ভাবনা জেগেও উঠেছিল। কিন্তু রেফারির বিতর্কিত পেনাল্টির সিদ্ধান্তে কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। ১-১ গোলের ড্রতে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে গেছে হিমালয়ের দেশটি। তবে যে পেনাল্টিতে কপাল পুড়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের, সেটির সিদ্ধান্ত যৌক্তিক ছিল কিনা, এ নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোর লাল কার্ডে এমনিতেই একজন কম নিয়ে খেলছিল বাংলাদেশ। তারপরও ১-০ গোলে এগিয়ে থাকায় ১০ জন নিয়েও বাকিটা সময় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার ছিল লাল-সবুজের দল। কিন্তু ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টির সিদ্ধান্তে মাথায় হাত! উজবেকিস্তানের রেফারি আক্সরোল রিসকুলায়েভের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা ধুয়ে দিচ্ছেন রীতিমতো।
৮৭ মিনিটে বক্সের ওপর ভেসে আসা বলে এক নেপালি ফরোয়ার্ডকে পুশ করেছিলেন সাদ উদ্দিন। কিন্তু সেটি ফাউল ছিল কিনা, সেটা নিয়েই যত আলোচনা-সমালোচনা। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা আপত্তি জানালেও উজবেক রেফারি নিজের সিদ্ধান্তে ছিলেন অটল। স্পট কিক থেকে অঞ্জন বিষ্টা লক্ষ্যভেদ করে বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙে নেপালকে নিয়ে যান ফাইনালে।
মালে জাতীয় স্টেডিয়ামে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেখে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে বাংলাদেশের দুই সাবেক ফিফা রেফারি নিজেদের মতামত দিয়েছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) হেড অব রেফারি আজাদ রহমার বলেছেন, “এখানে মনে হয়েছে সাদ উদ্দিনের হালকা পুশ ছিল। যা রেফারিংয়ের ভাষায় ‘অজনপ্রিয়’ সিদ্ধান্ত। আইন অনুযায়ী রেফারি সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। যদিও এমন ধরনের সিদ্ধান্ত সব মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।”
আরেক সাবেক সহকারী ফিফা রেফারি সুজিত ব্যানার্জির মত একটু ভিন্ন। তার কথায় রেফারি এমন সিদ্ধান্ত না দিলেও পারতেন। সুজিতের বক্তব্য, ‘রেফারিংয়ের ভাষায় আনপপুলার সিদ্ধান্ত। এটা ছিল ফাউল ও নো ফাউলের মাঝামাঝি একটা বিষয়। যেমন হলুদ ও লাল কার্ডের মাঝামাঝি একটা জায়গা আছে। তবে রেফারির পাওয়ার আছে দেওয়ার।’
এরপরই সাবেক এই রেফারি যোগ করেন, ‘তার (সাদ উদ্দিনের) হাত হালকা ছিল ঘাড়ে। পুশ হয়েছে। তবে রেফারি সবসময় এমন সিদ্ধান্ত দেয় না। আমরা অনেক সময় বলে থাকি- না দিলেও পারতো। নো ফাউল হিসেবে ট্রিট করলেও কিছু হতো না। কারণ বেশিরভাগ সময়ে সাধারণত এমন সিদ্ধান্ত দেয় না রেফারি। রেফারি আসলে পুশটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে।’
এখানে আরেকটা বিষয় লক্ষণীয়। রেফারি যখন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিলেন, তখন বাংলাদেশ দল ছিল ১০ জনের। একজন কম নিয়ে খেলা দলের পক্ষে বেশিরভাগ সময় রেফারির একটু বাড়তি ‘নজর’ থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। বরং ‘ফিফটি- ফিফটি’ সিদ্ধান্তও গেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বিশেষজ্ঞ দুই রেফরির কথায় সেই ইঙ্গিতই!
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন