ইরানে চলমান বিক্ষোভে সমর্থন দেওয়ায় গ্রেপ্তার র্যাপারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তাঁর পরিবার। খবর এএফপির।
ইরানের এই র্যাপারের নাম তোমাজ সালেহি। দেশটিতে সুপরিচিত এই র্যাপার ইরান সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি দেশটিতে চলমান বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছিলেন। এর জেরে গত মাসের শেষের দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এই তথ্য জানায়।
সালেহির পরিবার বলছে, বিচারের জন্য গতকাল শনিবার তাঁকে রুদ্ধদ্বার আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁর জীবন এখন ঝুঁকিতে। কারণ, তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
কঠোর বিধি মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর কুর্দি তরুণী মাসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে তেহরানের নীতি পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নির্যাতনে মাসার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ রুখতে দমন-পীড়ন জোরদার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরান নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন টুইটারে বলেছে, ভিন্নমতাবলম্বী র্যাপার তোমাজ সালেহির ‘বিচারের’ প্রথম দিন ছিল গতকাল। এদিন তেহরানে অনুষ্ঠিত এই তথাকথিত বিচারে তাঁর পছন্দের কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
সালেহির পরিবার টুইট করে বলেছে, তাঁর জীবন এই মুহূর্তে গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ, তিনি ‘স্রষ্টার বিরুদ্ধে শত্রুতা’ ও পৃথিবীকে কলুষিত করাসহ শরিয়াহ্–সম্পর্কিত অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। আর ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে এগুলোকে সর্বোচ্চ অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
সালেহি গত মাসের শেষের দিকে ‘নিখোঁজ’ হন। ২ নভেম্বর ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তাঁর রেকর্ড করা একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তোমাজ সালেহি। আমি বলছি, আমি ভুল করেছি।’
অধিকারকর্মীরা এই রেকর্ড করা ভিডিওর নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা একে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন।
নারী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। একজন বিক্ষোভকারী পুলিশের বন্দুক নিয়ে টানাটানি করছেন। ইরানের গিলান প্রদেশের রাশত শহরের এই চিত্র গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে ছড়িয়ে পড়ে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কয়েক শ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন হাজারো মানুষ। এ ছাড়া বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন