খাদ্য সংকটের কারণে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে শ্রীলঙ্কা। কারণ বেসরকারি ব্যাংকগুলি বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে অর্থ সংকটে ভুগছে। কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেছেন যে তিনি চিনি, চাল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাবারের মজুদ মোকাবেলায় জরুরি বিধি আরোপ করছেন। রাজাপাকসে একজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাকে অপরিহার্য পরিষেবার কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করেছেন, তার কাজ হবে ধান, চাল, চিনি এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের সরবরাহের সমন্বয় সাধন করা। দেশে চিনি, চাল, পেঁয়াজ এবং আলুর দাম বাড়ার পরে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। গুঁড়ো দুধ, কেরোসিন তেল এবং রান্নার গ্যাসের ঘাটতির কারণে দোকানের বাইরে লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে আমজনতার। এই দুঃসময়ে অযথা খাদ্য মজুদ করার জন্য জরিমানা বাড়িয়েছে সরকার। ২১ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশে করোনাভাইরাস থাবা বসানোর পর প্রায় প্রতিদিনই ২০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সেই থেকেই বাড়ছে সংকট।
মহামারীর কারণে ২০২০ সালে অর্থনীতির পতন হয়েছিল ৩.৬ শতাংশ। গত বছরের মার্চ মাসে সরকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য ভোজ্যতেল এবং হলুদ, স্থানীয় রান্নায় অপরিহার্য মশলা সহ যানবাহন এবং অন্যান্য জিনিস আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল। আমদানিকারকরা এখনও বলছেন যে, তারা যে খাবার এবং ওষুধ কেনার অনুমতি পেয়েছে তার জন্য তারা ডলার সংগ্রহ করতে অক্ষম। স্থানীয় মুদ্রার চাহিদা বাড়াতে দুই সপ্তাহ আগে, শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়েছিল। জুলাই মাসের শেষে শ্রীলঙ্কায় মজুত করা বৈদেশিক মুদ্রা ২.৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, ২০১৯-এর নভেম্বরে যা ছিল ৭.৫ বিলিয়ন ডলার। ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মার্কিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার মূল্য কমেছে ২০ শতাংশেরও বেশি। জ্বালানি মন্ত্রী উদয় গামনপিলা গাড়ি চালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জ্বালানি কম ব্যবহার করার জন্য যাতে দেশ তার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও টিকা কিনতে পারে। অবিলম্বে জ্বালানি খরচ না কমালে বছরের শেষ কড়া বিধিনিষেধ আনতে পারে সরকার, একথা জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন এক সরকারি আধিকারিক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন