১২ মে, বুধবার। তৃতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ গাজায় বোমা বর্ষণ করছিল ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলো। তবে ব্যবসায়ী আহমদ মোস্তফা আল-জাইম দিনটি স্মরণ করছেন আলাদা তাৎপর্যে।
ওইদিন তার মালিকানাধীন 'আল-জাওহারা টাওয়ারে' হামলা চালায় ইসরাইলি বিমান। ইসরাইলি বিমানের বোমা বর্ষণে ধ্বংস হয়ে যায় গাজার অন্যতম সুউচ্চ এই ভবন।
কিন্তু তাতে ভেঙে পড়েননি আহমদ মোস্তফা আল-জাইম। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা এই ব্যবসায়ী ফিলিস্তিনি সংবাদপত্রে দেয়া সাক্ষাতকারে জানান, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার কাছে এই ভবনের কোনো মূল্য হতে পারে না।
বিধ্বস্ত ভবনের সামনে আল-জাইম পরিবার- ছবি : সংগৃহীত
তিনি বলেন, 'যে মূল্যই দিতে হোক না কেন, আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস আমরা করবো না।'
আহমদ বলেন, 'সারাজীবনে আমি যা উপার্জন করেছি, বিনিয়োগ করেছি এবং পরিশ্রম করেছি, তা এই ভবনের মধ্যেই ছিল। সাধারণের ব্যতিক্রম করে কোনো অজুহাত না দিয়েই কারণ ছাড়া এই ভবনে ইসরাইল বোমা হামলা করে।'
তিনি জানান, তার এই ভবনটি একটি আবাসিক স্থাপনা ছিল, যাতে একইসাথে আইনজীবীদের দফতর ও সংবাদমাধ্যমের অফিস ছিল। এছাড়া কিছু বিজ্ঞাপনী সংস্থা, ক্লিনিক এবং একটি হজ কোম্পানি ও একটি কাজি অফিস ছিল।
ভবনের ধ্বংসস্তুপ দেখছেন আহমদ মোস্তফা আল-জাইম- ছবি : সংগৃহীত
আহমদ বলেন, ইসরাইলি দৃষ্টিভঙ্গিতেও এই ভবন নিরাপত্তার জন্য কোনো হুমকির কারণ ছিল না।
গাজার এই সফল ব্যবসায়ী বলেন, 'জীবনের ভালো-মন্দ সবকিছুর জন্যই আল্লাহর শুকরিয়া। ইসরাইল সম্পূর্ণভাবে এটি ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু আমি গর্বের সাথেই এই কথা বলি। আমি আহমদ আল-জাইম, আমার জীবনে যা কিছুই অর্জন করেছি, এমনকি আমার পুরো পরিবারও জেরুসালেম, মসজিদুল আকসা, শেখ জাররাহে আমাদের জনগণ, হেবরন, জেনিন ও পুরো ফিলিস্তিনের মোকাবেলায় তুচ্ছ।'
বিধ্বস্ত ভবনের ভেতরে আল-জাইম পরিবার- ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোর প্রতি লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান আহমদ।
তিনি বলেন, 'স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোর প্রতি আমার আহ্বান, আমরা আমাদের অবস্থানে অটল থাকবো। আপনারা আমাদের নেতৃত্ব দিন এবং আমরা আপনাদের পেছনে সামনে এগিয়ে চলবো। ইসরাইল কখনোই আমাদের প্রতিজ্ঞাকে ভাঙতে পারবে না বা আমাদের অটল অবস্থানকে দুর্বল করতে পারবে না।'
বিধ্বস্ত বাড়ির বারান্দা থেকে সন্তানদের সাথে আহমদ আল-জাইম- ছবি : সংগৃহীত
তিনি আরো বলেন, 'আমরা জানি ইসরাইল এই ভবন ও অন্য ভবনগুলো ধ্বংস করেছে স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোকে চাপ দিয়ে তাদের প্রতিরোধের তীব্রতা কমিয়ে আনায় এবং কোনো অর্জন ছাড়াই যুদ্ধ শেষ করতে রাজি হওয়ায় বাধ্য করতে। তা কখনোই হতে পারে না। যে মূল্যই দিতে হোক না কেন, আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস আমরা করবো না।'
সূত্র : ফিলিস্তিনি নিউজ পোর্টাল
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন