ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা করা হচ্ছে। অথচ বিশ্ব তা দেখছে না। ‘অন্ধ’ বিশ্বের চোখের ভিতর আঙ্গুল দিয়ে এমন সমালোচনার তীর ছুড়েছেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য রাশিদা তৈয়ব। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করলেও, আজ যখন আল জালা ভবনে অবস্থিত আল জাজিরা, এপির অফিস এক নিমেষেই নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে ইসরাইল, তখন নিজেকে আর সংবরণ করতে পারেননি রাশিদা। তিনি টুইটে বলেছেন, ইসরাইল এখন মিডিয়া সোর্সগুলোকে টার্গেট করছে। যাতে বিশ্ববাসী ইসরাইলের বর্ণবাদী ইনচার্জ নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধ বিশ্ব দেখতে না পায়। এটা করা হয়েছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের যে গণহত্যা করা হচ্ছে তা বিশ্ববাসীর কাছ থেকে আড়াল করতে।
ভয়াবহ বোমা হামলার মুখে জীবনের অনুভূতি কি তা নিয়ে টুইট করেছিলেন গাজার বাসিন্দা ইমান বাশির। তার সেই টুইট বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে পড়ে শোনান রাশিদা।
টুইটে বাশির লিখেছেন, গাজার মানুষ প্রতিটি রাত কাটাচ্ছেন ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্যে। আপনি বেঁচে আছেন তো?- এমন ম্যাসেজের উত্তর দেয়ার জন্য আমরা জেগে যাই। আমরা আতঙ্কিত। প্রতিটি রাতেই মনে হতে থাকে এর পরের শিকার আমরা। যখন আমি এই টুইট করছি, লিখছি আর কাঁদছি। আমি বলতে চাই, গাজার মানুষের ভাগ্যে কি এই রকম ভয়াবহ রাত অপেক্ষা করছে। হয়তো তারা সবাই একটি রুমে সমবেত হয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এর উদ্দেশ্য দুটি। যদি সেখানেও বোমা হামলা চালানো হয়, ইসরাইলের যুদ্ধবিমান নিশানা করে, তাহলে সবাই একসঙ্গে মরবেন। অথবা এক একজন আলাদা আলাদা রুমে অবস্থান করেন। যাতে বোমা হামলা হলেও পরিবারের একজন না একজন যেন বেঁচে থাকেন। ফিলিস্তিনের গাজাবাসীর কাছে এখন এই দুটি সুযোগই অবশিষ্ট আছে। যেখানে তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেদের সুরক্ষিত করতে আশ্রয় খোঁজে না। এ ঘটনায় হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। ইমান বাশির আরো লিখেছেন, গত রাতটা ছিল কঠিন রাত। রাত ৪টায় ঘুমিয়েছি আমরা। বাচ্চাদের জাগিয়ে রেখেছিলাম। তাদেরকে শান্ত করতে আমি ও আমার স্বামীর বেশ সময় লেগেছে। এ এক ভয়াবহ অবস্থা। এটা মনের ভিতর ক্ষত সৃষ্টি করছে। এই অবস্থায় আমি চাই না আমার সন্তান বেঁচে থাক। আমি চাই আমার সন্তান বাঁচুক শান্তিতে। আমি চাই সারাবিশ্ব তাদের আর্তনাদ শুনতে পাক। এ জন্যই আমি এই টুইট করছি। এ জন্যই আমি লিখছি। আমি এসব শব্দের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমি চাই এর মধ্য থেকে আমার সন্তানরা বেঁচে থাক। তাদেরকে আমি বলতে চাই না যে, তোমাদেরকে স্বপ্নপূরণ ছাড়াই বড় হতে হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন