প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘বিজয়’ দাবি করেছিল ভারত। আর তার দুই মাসের মধ্যেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটি। গতকাল পঞ্চম দিনের মতো দৈনিক সংক্রমণ দুই লাখের বেশি হয়েছে। এখন সেটি তিন লাখের দিকে ছুটছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে ‘দম্ভ’ প্রকাশ ও নীতিনির্ধারকদের ‘অবাস্তব’ সিদ্ধান্তই এমন পরিণতি ডেকে এনেছে বলে গতকাল বিবিসির বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১০ হাজারের ঘরে আর এপ্রিলে সেটি লাফ দিয়ে বেড়ে দুই লাখের ঘরে গেল। একই সঙ্গে মৃত্যুর সূচকও ঊর্ধ্বমুখী। প্রায় প্রতিদিনই দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এক মহারাষ্ট্রেই প্রতি তিন মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে।
মার্চের শুরুতেই ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন কোভিড-১৯ মহামারী বিরুদ্ধে ‘শেষ খেলা’ চলছে বলে ঘোষণা করেন। তার এমন আশাবাদ খতিয়ে দেখা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি দৈনিক আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার। পরের মাসগুলোয় তা কমে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হয় দিনে ১১ হাজার। তখন সপ্তাহে গড় মৃত্যু ছিল একশরও নিচে। গত বছরের শেষ দিকে দেশটির রাজনৈতিক নেতা, নীতিনির্ধারক এবং গণমাধ্যমের একটি অংশ ধরেই নিয়েছিল করোনা ভাইরাস মহামারী থেকে বেরিয়ে এসেছে ভারত।
এমনই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারির শেষে ভারতের নির্বাচন কমিশন পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা করে। এ নির্বাচনে ৮২৪টি আসনে ভোটার সংখ্যা ১৮ কোটি ৬০ লাখ। ২৭ মার্চ শুরু হয়ে এক মাসের এ নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ভোট নেওয়া হয় আট দফায়। কোনো ধরনের সতর্কতা ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে এ সময় পূর্ণ মাত্রায় নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়। এদিকে সংক্রমণ বেড়ে চললেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভায় কোনো কাটছাঁট করা হচ্ছে না। এর মধ্যে হয়ে গেছে লাখো মানুষের কুম্ভমেলাও।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন