আসন্ন জাতীয় বাজেটে পোলট্রিশিল্পের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলেন, এটা না করলে ডিম ও মুরগির দাম বাড়বে এবং বাজারে অস্থিরতা তৈরি হবে। তাই পোলট্রিশিল্পের ওপর আরোপিত কর ২০৩০ সাল পর্যন্ত অব্যাহতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পোলট্রি নেতারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর প্যারাগন হাউসে ‘বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) আয়োজিত দেশের জাতীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তাঁরা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বিপিআইসিসি সভাপতি মসিউর রহমান, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আহসানুজ্জামান, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) সভাপতি কাজী জাহিন হাসান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তাঁরা বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারে পোলট্রি, মৎস্য ও গবাদি পশুর খাদ্য তৈরিতে ব্যবহূত কাঁচামালের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত দুই বছরে সয়াবিন মিলের দাম ৮৮ শতাংশ বেড়েছে।
এ ছাড়া অন্য কাঁচামালের দর বেড়েছে ১২৩ শতাংশ পর্যন্ত। কাঁচামালের দর সমন্বয় করা না গেলে দেশের ফিড মিল যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এর ফলে ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেবে। ফলে হুমকির মুখে পড়বে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা।
এই প্রসঙ্গে বিপিআইসিসি সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, দেশের পোলট্রি খাত সংকটকাল পার করছে। এ জন্য দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করাসহ পুষ্টিকর খাদ্য ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের উৎপাদন সচল রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধার দাবি করেছেন তিনি।
একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় বাজেটে পোলট্রি, মৎস্য ও পশুখাদ্য তৈরিতে ব্যবহূত সব ধরনের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে সর্বপ্রকার আগাম কর (এটি), অগ্রিম আয়কর (এআইটি), উৎস কর (সোর্স ট্যাক্স), মূসক ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করেছেন।
ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, দুই বছর ধরে দেশের ফিডশিল্প খাতে সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ এ খাতের ৮০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানিনির্ভর। প্রধান কাঁচামাল সয়াবিন মিল ও ভুট্টার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। ডলারের দাম বাড়ায় পশুখাদ্যের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক বছর আগেও যেখানে প্রতি কেজি সয়াবিন মিল পাওয়া যেত ২০-২২ টাকায়, তা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হয়েছে। বিশ্ববাজারে ভুট্টার দাম ৪০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১২০ ডলার।
উদ্যোক্তারা আরো বলেন, এসব কারণ বিবেচনায় নিয়ে এই খাতে কর সহায়তা না পেলে সামনে বিশ্বমন্দা মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে দেশে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিতে কিছু ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক কারসাজি করছেন উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধির অজুহাতে দেশীয় বাজারে অযৌক্তিকভাবে কাঁচামালের দর বৃদ্ধি গ্রহণযোগ্য নয়।
তাঁরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সাল নাগাদ প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘের এসডিজি অর্জন করতে হলে সবার জন্য সাশ্রয়ী দামে খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতেই হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন