দেশে প্রতিবছর প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি হয়, যা মোট ওষুধ বিক্রির প্রায় ২০ শতাংশ। এসব ওষুধ জীবন বাঁচানোর পরিবর্তে রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। ক্যানসার, লিভার, হৃদরোগ, কিডনিসহ প্রায় সব রোগের নকল ওষুধ রয়েছে বাজার। নকলের বাইরে নয় আইসিইউ, সিসিইউতে থাকা মুমূর্ষু রোগীদের ওষুধ। নকল ওষুধ সেবনের ফলে রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে শরীরের নানা জটিলতায় ভুগতে পারেন। এমনকি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু বিদ্যমান আইনে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না নকল ওষুধ উৎপাদন, বিক্রি। নকল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারীরা দেশের অসংখ্য মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
এর আগে রিড ফার্মা নামে একটি কোম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উঠে আসে। পরে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। তবে সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তি হয়নি। দ্য ড্রাগ অ্যাক্ট-১৯৪০ অনুযায়ী বিদ্যমান আইনে নকল বা ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের শাস্তি হিসেবে আর্থিক জরিমানা ও স্বল্প মেয়াদে কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে সেখানে কঠোর শাস্তির কোনো বিধান নেই। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রতিবছর প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি হয়। মোট ওষুধ বিক্রির প্রায় ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশে বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ফার্মেসির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার হলেও পাড়ায়-মহল্লায়, নামে-বেনামে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে আরও অসংখ্য ফার্মেসি। এদের অনেকেই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, ঘুমের বড়ি, পেইন কিলার ও নিম্নমানের যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট বিক্রি করছে। অন্যদিকে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ভালোমানের ওষুধের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি কমিশন দেওয়া হয়। ফলে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রিতেই আগ্রহ বাড়ছে কিছু কিছু ওষুধ বিপণনকারীর।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছে, নকল মানহীন ওষুধ উৎপাদনের দায়ে এ পর্যন্ত ১৯টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। ৪৭টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। চলতি বছরে নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, বাজারজাত ও বিক্রির অপরাধে ঔষধ আদালতে ১৩টি মামলা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে ৯২টি, মোবাইলকোর্টে ১৭১৫টি। এর মধ্যে ৪৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ১০০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঔষধ আদালতে মামলা হয়েছিল ২টি, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪১টি এবং মোবাইলকোর্টে ১৯৬৮টি। ওই বছর ৪৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং জরিমানা করা হয় ১১ কোটি ৬৯ লাখ ১৮ হাজার ৭০৮ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. একে লৎফুল কবীর আমাদের সময়কে বলেন, নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ না হওয়ার প্রধান কারণ আইনি দুর্বলতা। মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার বা এক লাখ টাকা জরিমানা করে নকল ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না। নকল ও ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে অবশ্যই বিশেষ ক্ষমতা আইনের যে বিধান রয়েছে, তা প্রয়োগ করতে হবে। যেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
সরেজমিন মঙ্গলবার রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার সরদার মেডিসিন মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানের মধ্যেও নকল ওষুধ কেনাবেচা থেমে নেই। মার্কেটের কেয়ার ফার্মায় গিয়ে নামসর্বস্ব কোম্পানির সেকলোটিল-২০ ওষুধ চাইলে তারা প্রথম প্রতিবেদককে নানা প্রশ্ন করেন। তবে ডাক্তারের পরামর্শে কেরানীগঞ্জ থেকে এ ওষুধ কিনতে এসেছি বলার পর দোকানের ভেতর থেকে এক বক্স (১০০টি ক্যাপসুল) ওষুধ দিয়ে বলেন খুচরা বিক্রি হয় না; এক বক্স নিতে হবে। বক্সের গায়ে দাম ৪০০ টাকা লেখা থাকলেও তারা ১০০টি ক্যাপসুলের দাম নেন মাত্র ১৮০ টাকা। প্যাকেটের গায়ে কোম্পানির নাম লেখা প্রিস্টিন ফার্মাসিউটিক্যাল, ঠিকানা বিসিক শিল্পনগরী, মাঝগ্রাম পটুয়াখালী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ কোম্পানি সরকার অনুমোদিত হলেও এই ওষুধটির নকল পণ্য উৎপাদিত হয়। একই ব্যাচ নম্বরের উৎপাদিত এসব নকল ওষুধ মিটফোর্ডের মার্কেটগুলোয় দেদার বিক্রি হয়। তবে এসব নকল ওষুধ বিক্রি হয় মূলত রাজধানীর আশপাশের গ্রামে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, অকলো, সেকলোজিন, ইসমোজেল ইত্যাদি একই জাতীয় ওষুধ একই সময় বাজারজাত করা হয়। এসব নকল ওষুধ পরিবহনের ক্ষেত্রে মূলত নৌপথ ব্যবহার করা হয়। কারণ নৌপথে চেকিংয়ের ঝামেলা থাকে না। এ ছাড়া কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে ছোট-ছোট পার্সেল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বাবুবাজার সুরেশ্বরী মেডিসিন প্লাজার নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ল্ড ও অলোকনাথ ড্রাগ হাউস এবং পার্শ্ববর্তী হাজী রানী মেডিসিন মার্কেটের নিচতলায় রাফসান ফার্মেসি থেকে বিপুল পরিমাণ নকল আই-পিল, সুপার গোল্ড কস্তুরী, ন্যাপ্রোক্সিন প্লাস-৫০০+২০০ এমজি, বেটনোভেট-সি ২০ এমজি, প্রটোবিট-২০ এমজি, ইনো সানাগ্রা-১০০, পেরিয়েকটিন, মুভ, রিংগার্ড, হুইটফিল্ড, নিক্স রাবিং বাম, ভিক্স কোল্ড প্লাস, ভিকস ও গ্যাকোজিমা উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করে ফয়সাল আহমেদ, সুমনচন্দ্র মল্লিক ও মো. লিটন গাজী নামের তিনজনকে। এর আগে ১২ আগস্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কোতোয়ালি জোনাল টিম রাজধানী ঢাকা, সাভার ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ বিসিক শিল্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করে। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় আটজনকে, যারা রীতিমতো কারখানা বানিয়ে নামি-দামি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন নকল ওষুধ তৈরি করত। তাদের কারখানা থেকে নকল ওষুধ তৈরির ডায়াস ও মেশিন উদ্ধার করা হয়েছে। এর কিছুদিন আগে ডিবির গুলশান বিভাগ ২৯ জুন রাজধানীর হাতিরপুল, রামপুরা, মালিবাগ ও নারায়ণগঞ্জের জালকুঁড়িতে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। এরা ইচ্ছামতো জেনেরিক নাম/ট্রেড নামে ওষুধগুলো চালিয়ে দিচ্ছিল। একেক সময় তা হয়ে উঠছিল হার্টের ওষুধ, কখনোবা লিভারের, আবার কখনো হাড় খয়ের।
মিটফোর্ডে গড়ে ওঠা ওষুধের পাইকারি বাজার থেকেই মূলত সারা দেশে নকল ও ভেজাল ওষুধ ছড়িয়ে পড়ে। করোনা মহামারীতে বহুল ব্যবহৃত একমি ল্যাবরেটরিজের মোনাস-১০ এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের মনটেয়ার-১০ (জেনেরিক নাম মন্টিলুকাস্ট) নকল উৎপাদন ছাড়াও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সেফ-৩ (জেনেরিক নাম সেফিক্সিমম-২০০ মিলিগ্রাম), সেকলো-২০ (জেনেরিক নাম ওমিপ্রাজল বিপি ২০ মিলিগ্রাম), জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালসের ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৫০০ উৎপাদন করত। এর মধ্যে সেফ-৩-এর বাজারমূল্য প্রতি পিস ৩৫ টাকা ৫০ পয়সা। অথচ নকল সেফ-৩ বিক্রি করা হয় প্রতি পিস ৫ টাকা করে। একইভাবে ছয় টাকা মূল্যের সেকলো ১টা ৭৫ পয়সা, ১৬ টাকা মূল্যের মনটেয়ার ৩ টাকায়, ১১ টাকা মূল্যের ন্যাপ্রোক্সেন আড়াই টাকায় এবং ১৬ টাকা মূল্যের মোনাস ৩ টাকায় বিক্রি করা হতো। ফার্মেসি মালিকরা অধিক লাভের আসায় আসল ওষুধের নামে নকল ওষুধ বিক্রি করতেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে বিভিন্ন সময় পরিচালিত অভিযানে নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারীদের গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু তার পরও বন্ধ হচ্ছে না নকল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি। দুর্বল আইনের কারণে নকল ওষুধ তৈরিতে ভয় পায় না তারা। ড্রাগস আইনে নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান আছে ১০ বছর কারাদণ্ড। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে মামলা হওয়ার পর তদন্তকারী কর্মকর্তাদের প্রভাবিত এবং আর্থিক শক্তি ব্যবহার করে সবকিছু তাদের অনুকূলে নিয়ে যায়।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, আমরা নকল ও ভোজল ওষুধ উৎপাদনকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। এ ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা জনবল। এসব নিয়ন্ত্রণে উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা প্রয়োজন, যা প্রশাসনের নেই। তা ছাড়া দেশে নেতিবাচক মানসিকতার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি। এ বছর এ পর্যন্ত ৪৯ জনকে জেলে পাঠিয়েছি। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ২৪১টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০ হাজার ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করছে। যে কোনো ওষুধ বাজারজাতের আগে অধিদপ্তরের কাছে নমুনা সরবরাহের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে বাজারজাত করতে হয়। কিন্তু একবার বাজারজাতের পর সে ওষুধের গুণগত মান নিয়ে কোনো তদারক করা হয় না। এ সুযোগে অনেক নামসর্বস্ব ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এবং নামহীন অবৈধ কোম্পানি অধিক লাভের আশায় নকল ওষুধ উৎপাদন করে বাজারজাত করে থাকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ওষুধ যদি নকল হয় তা হলে যে রোগের জন্য সেটি খাওয়া হবে সে রোগ সারবে না। এতে রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। অন্যদিকে ভেজাল ওষুধের ক্ষেত্রে সেখানে যদি ক্ষতিকারক দ্রব্য থাকে তা হলে শরীরের ক্ষতি করবে। এমনকি ‘কিডনিতে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে কিডনি বিকল করে ফেলতে পারে, যা রোগীকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে।’
অভিযোগ রয়েছে, সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক ফার্মেসি মালিক কম টাকায় ওষুধ কিনতে মিটফোর্ডের পাইকারি ওষুধের বাজারে আসেন। সেখানে নকল ওষুধ উৎপাদনকারীরা তাদের কাছে গোপনে ওষুধ বিক্রির চুক্তি করেন। অধিক মুনাফার আশায় ফার্মেসি মালিক নকল ওষুধ বিক্রি করতে রাজি হলে নিজস্ব পরিবহন পদ্ধতিতে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া নকল ওষুধ উৎপাদনকারীদের অনেক প্রতিনিধি সারাদেশে ঘুরে ঘুরেও ফার্মেসি মালিকদের কাছে নকল ওষুধ বিক্রি করে থাকেন।
এ বিষয়ে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পরিচালক রনি আমাদের সময়কে বলেন, নকল ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে সমিতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু সমিতির বর্তমান সভাপতি ৩৪ বছর ধরে পদ আঁকড়ে থাকায় কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। যেসব কোম্পানির ওষুধ নকল হয় তারাও মামলা করছে না। এ ক্ষেত্রে ওষুধ শিল্প সমিতি, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি নিয়ে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন করা হলে সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। তা ছাড়া যারা নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি করে তাদের সর্বোচ্চ সাজা ‘মৃত্যুদণ্ড’ নিশ্চিত করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এ অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত, মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যাল, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যাল, ড্রাগল্যান্ড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ, জলপা ল্যাবরেটরিজ, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যাল, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যাল, ন্যাশনাল ড্রাগ, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যাল, রিমো কেমিক্যাল, রিদ ফার্মাসিউটিক্যাল, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যাল, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল, স্টার ফার্মাসিউটিক্যাল, সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যাল, টুডে ফার্মাসিউটিক্যাল, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড এ রকম ২০টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
এ ছাড়া মানসম্মমত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ উৎপাদনের ব্যর্থ আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যাল, আলকাদ ল্যাবরেটরিজ, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যাল, বেঙ্গল ড্রাগস, ব্রিস্টল ফার্মা, ক্রিস্ট্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যাল, এমএসটি ফার্মা, অরবিট ফার্মাসিউটিক্যাল, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ, পনিক্স কেমিক্যাল, রাসা ফার্মাসিউটিক্যাল এবং সেভ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড এ ১৪ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
২০১৬ সালের ৭ জুন ২০টি কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অপর ১৪টি প্রতিষ্ঠানের অ্যান্টিবায়েটিক (ননপেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন) ওষুধ উৎপাদনও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ২০১৬ সালের ৫ জুন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন