ইভানা লায়লা চৌধুরী। ঢাকার স্কলাসটিকা স্কুলের ইউনিভার্সিটি প্লেসমেন্ট সার্ভিসেসের উপ-ব্যবস্থাপক। এই মৃত্যুর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন ইভানার শিক্ষক এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আসিফ বিন আনোয়ার। এ বিষয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি লিখিত আবেদন করেছেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি এ আবেদন করেন। এতে আসিফ বিন আনোয়ার বলেছেন, ইভানা লায়লা চৌধুরী ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তার ছাত্রী ছিলেন। ২০১১ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দু’বার ইভানা তার পারিবারিক সমস্যার বিষয়ে কথা বলার জন্য তার কাছে সময় চান।
by TaboolaPromoted Links
You May Like
নতুন চমক, ডাইনোসর গেমে পরিবর্তন আনলো গুগল
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে সপ্তাহে দুদিন ক্লাস
De Prijzen Voor Deze Trapliften Kunnen U Verrassen
Traplift | Zoek Advertenties
Daklekkage repareren in 2021? De kosten kunnen u misschien verrassen
Daklekkage | Zoek Advertenties
বাধা থামাতে পারেনি হুয়াওয়েকে
কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়ে তার সঙ্গে ইভানার কোনো কথা হয়নি।
পরে ২০১৬ সালের ৩রা মে ইভানা তার পারিবারিক সমস্যার কথা জানিয়ে তাকে একটি বিস্তারিত ই-মেইল করেন। ই-মেইলে ইভানা জানান, তার বিয়ের শুরু থেকেই স্বামী ব্যারিস্টার রুম্মান তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। তার বড় ছেলে আরমান স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। এই কারণে ব্যারিস্টার রুম্মান ইভানাকে চাকরি ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছেন। চাকরি না ছাড়ায় তার স্বামী তাকে তালাক দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। শুরু থেকেই শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের শিকার হয়ে থাকলেও তখন তিনি কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। ইভানা ওই মেইলে জানান যে, তালাক হলে যদিও তার পারিবারিক সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। তারপরেও মানুষ হিসেবে তিনি এ অবস্থা আর সহ্য করতে পারছেন না।
ইভানার বেতন মাত্র ৩০ হাজার টাকা। এ অবস্থায় তালাক হলে দুই সন্তানের ভরণ-পোষণ করা একার পক্ষে সম্ভব হবে না। যেকোনো শনিবার ইভানা তার (আইনজীবীর) সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চান। এই আইনজীবী বলেন, আমি তাকে সাক্ষাতের সময় দিলেও তিনি পরে আর দেখা করতে আসেননি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ইভানার সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে দেখা হলে আগে সাক্ষাতের সময় নিয়েও না আসার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি তখন জানান, এবার তিনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কঠোর সংকল্পবদ্ধ এবং অচিরেই দেখা করে পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আবেদনে তিনি বলেন, মৃত্যুর তিনদিন আগে গত ১২ই সেপ্টেম্বর ইভানা আমাকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে মেসেজ করে আমার ই-মেইল আইডি চান। ই-মেইল আইডি পাঠানোর পরদিন ১৩ই সেপ্টেম্বর সকালে ফেসবুক মেসেঞ্জারে আমাদের কথোপকথন হয়। যেখানে ইভানা বলেছেন, স্বামী রুম্মান অপর একজন বিবাহিত নারী আইনজীবীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত। এছাড়া কিছুদিন ধরে রুম্মান তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আসছেন। প্রথমে এটা শরীরের জন্য উপকারী মনে হলেও পরে বুঝতে পারেন তাকে ঘুম পাড়িয়ে রুম্মান তার প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলেন। এ জন্যই তাকে ঘুমের ওষুধ সেবন করান। এছাড়াও ইভানা তার হাতের রগ কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু আত্মহত্যা এতো সহজ নয় বলে তিনি বুঝতে পারেন। এ সময় কব্জির একটি ছবিও পাঠান ইভানা।
ওই আইনজীবী তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন, তাকে এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করে অবিলম্বে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলি। এ সময় ইভানাকে বলি, স্বামী রুম্মানের অপর সম্পর্কের বিষয়ে তিনি ভুল বুঝেও থাকতে পারেন। উত্তরে ইভানা জানান, তিনি ভুল করেননি। প্রমাণস্বরূপ তার স্বামী ও পরকীয়া প্রেমিকার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কতগুলো স্ক্রিনশট পাঠান। যেখানে তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ কথোপকথন হয়েছিল বলে দেখা যায়। এছাড়া রুম্মান পরকীয়ার বিষয়ে তার বাবাকে জানিয়েছেন। তার বাবা অত্যন্ত শান্তভাবে বিষয়টি গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। যা করার তা তিক্ততা পরিহার করে করা উচিত বলে জানান।
ইভানাকে বারবার এই আইনজীবী তার সঙ্গে দেখা করার কথা বললেও ছেলের থেরাপি ক্লাস শেষে দেখা করার কথা বলেন। পরদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও ইভানা আর আসেননি। শেষ পর্যন্ত ১৫ই সেপ্টেম্বর বিকালে ইভানার মৃত্যুর খবর পান। তিনি আবেদনে আরও বলেন, এদিকে ইভানা সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে স্বামীর পরকীয়া, প্রতিবন্ধী ছোট ছেলের প্রতি তার অসংবেদনশীল আচরণ এবং তার আত্মহত্যার চেষ্টা ইত্যাদি বিষয়ে মন্তব্য করেন। এসব কারণ ছাড়াও ইভানার মৃত্যুর পর এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের নানা আচরণের কথা উঠে আসে। যা তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত এবং উদ্বুদ্ধ করে থাকতে পারে। এসব বিষয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনার অনুরোধ জানান এই আইনজীবী।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আসিফ বিন আনোয়ার মানবজমিনকে বলেন, ইভানা আমার শিক্ষার্থী ছিলেন। আমার কাছে যে প্রমাণাদি রয়েছে সেগুলো থেকে অনস্বীকার্যভাবে ধারণা করা সম্ভব প্ররোচনা করে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য এবং প্রমাণাদি সংশ্লিষ্ট থানা এবং গণমাধ্যমকে ইতিমধ্যে দেয়া হয়েছে। ইভানার বাবা আমানুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখন আমরা একজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যে দিয়ে আছি। এখনো মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, মৃত নারী ইভানার শিক্ষক এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আসিফ বিন আনোয়ার কিছু তথ্য আমাদের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন তদন্তের সহযোগিতার জন্য। যে বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি লিখেছেন সেগুলো আমরা তদন্ত করে দেখবো বলে জানান তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন