দেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে কর্মরত ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের কর্মস্থলে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উদ্যোগের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার এই চিঠি দেওয়া হয় বলে সূত্র জানায়। করোনা মহামারীর কারণে দেশে লকডাউন জারি ও বিভিন্ন কারণে ভারতে গিয়ে আটকে আছেন এসব বিশেষজ্ঞরা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতে আছড়ে পড়ার পর মধ্য এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
সূত্র জানায়, ভারতের বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি প্রকল্পের অগ্রগতিতে প্রভাব ফেলছে। এতে প্রকল্পগুলোর কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়া এবং বাজেট-বরাদ্দ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বিশেষজ্ঞদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভারত সরকারের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের ভেতর তাদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থাগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলা করে ভারতীয়দের ফেরানো যায় কি না? সেটাই ভাবছে সরকার। এর আগে সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত থেকে রাশিয়ানদের ফেরানো হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, স্পেশাল ফ্লাইটে ফেরানো হয়েছে তাদের। এয়ারপোর্ট থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের প্রকল্প এলাকায় নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প অফিসের তত্ত্বাবধানে অত্যন্ত সুচারুভাবে তাদের কোয়ারেন্টিন সম্পন্ন হয়েছে। ফেরত আসা রাশিয়ান কর্মীরা নিরাপত্তা সতর্কতার সব ক’টি ধাপ মেনে চলেছেন। ফলে ব্যক্তিগতভাবে তারা নিরাপদ থেকেছেন অন্যরাও নিরাপদ ছিলেন।
উল্লেখ্য, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে ভারতীয় কর্মীর পাশাপাশি অনেক বিশেষজ্ঞও কাজ করেন। করোনার প্রথম ঢেউ পরবর্তী উভয় দেশের করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলে অর্থাৎ নতুন বছরের শুরুতে পরিস্থিতি খানিক স্বাভাবিক হলে শত শত কর্মী বিভিন্ন প্রয়োজনে দেশে গেছেন। মার্চ-এপ্রিলে তাদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে মধ্য এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে বিশেষ বিমান পরিসেবা ‘এয়ার বাবল’সহ সব ধরনের ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি স্থগিত থাকা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় বিমান চলাচলও আগামী মাসে আবার শুরু করারও চিন্তা চলছে। গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে দুদেশের মধ্যে তিন মাসের জন্য ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির অধীনে এ বিমান চলাচল শুরু হয়েছিল। তবে ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমে আসায় প্রথম পর্যায়ে ঢাকা-দিল্লি এয়ার বাবল চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারতে যদি করোনা কমতে থাকে তা হলে সামনের মাস থেকে ঢাকা-দিল্লি এয়ার বাবল চালু হতে পারে। এ নিয়ে আমাদের একটি প্রস্তুতি থাকাও দরকার। এ নিয়ে সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে একটি বৈঠক হবে। সেখানে এটি নিয়ে আলোচনা হবে। এদিকে ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির সুবিধা নিয়ে পর্যটক ভিসা ছাড়া অন্য সব ক্যাটাগরির ভিসাধারীরা ভারতে যেতে পারছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন