আগে বিরোধীদলীয় সাংসদদের উদ্দেশে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, দেশ থেকে অর্থ পাচার হলে অর্থমন্ত্রীর ‘লাগে’। এবার একই কথা একটু ঘুরিয়ে সাংবাদিকদের বললেন, অর্থ পাচার হলে তাঁর কষ্ট হয়। তবে অর্থ পাচার যাতে ঠেকানো যায়, সে জন্য যথাযথ আইনকানুন করছেন তিনি।
আজ বুধবার ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকেরা অর্থমন্ত্রীর কাছে বাজেট, খেলাপি ঋণ, অর্থ পাচার, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার এসব বিষয়ে প্রশ্ন করেন।
৭ জুন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় সাংসদদের অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। বন্ধ হচ্ছেও। অনেকেই জেলে আছেন। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।’
অর্থমন্ত্রী সেদিন এ–ও বলেছিলেন, ‘কারা অর্থ পাচার করে, সেই তালিকা আমার কাছে নেই। নামগুলো যদি আপনারা জানেন যে এঁরা এঁরা অর্থ পাচার করেন, আমাদের দিন।’
অর্থমন্ত্রী আজ বলেছেন, ‘কিছু নতুন আইন হচ্ছে, কিছু হচ্ছে সংশোধনী। অর্থ পাচারে আপনাদের যেমন মনে কষ্ট, আমারও তেমন কষ্ট। এ জন্য প্রথমে পদ্ধতিটা হালনাগাদ করতে হবে। আমরা যদি তাদের চিহ্নিত করতে পারি, কী কী কারণে পাচার হয়, তাহলে পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে।’
বিশ্বজুড়ে কিছু মানুষ থাকে যারা অর্থ পাচারে জড়িত—এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি দেশে যদি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, মানুষ যদি মনে করেন যে এখানে বিনিয়োগ করলে লাভ হবে, তাহলে কেউ আর বিদেশে অর্থ নিয়ে যাবেন না।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের মাধ্যমে তিনি দেখেছেন দেশ থেকে কীভাবে অর্থ পাচার হয়। এ জন্য অনেকে জেলেও আছেন।
সরকারি দলের এক সাংসদ কয়েক দিন আগে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, হ্যাঁ বা না বলার জন্য তাঁর মতো সাংসদেরা সংসদে আছেন এবং দেশে কার্যকর বাজেট আলোচনা হয় না। এ বিষয়ে মনোভাব জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিলের ব্যাপারে হ্যাঁ বা না-ই বলতে হয়। তবে বাজেট আলোচনার সুযোগ থাকে। এ বিষয়ে ওই সাংসদের আপত্তিটি কোথায়, তা অর্থমন্ত্রীর জানা নেই বলে উল্লেখ করেন।
২০১৯-২০ অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধির চূড়ান্ত হিসাব এখনো প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংস্থাটির মান কি নিম্নমুখী হয়ে যাচ্ছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন তো স্বাভাবিক সময় না। সব কাজই দেরি হচ্ছে। তাই সময় একটু বেশি লাগছে। সংগত কারণেই এটা মেনে নিতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান যথাসময়ে এই তথ্য তুলে ধরবেন বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন