প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম এখন কারাগারে। ১৭ মে স্বাস্থ্য সেবা সচিবের অফিস কক্ষে তাকে লাঞ্চিত করা হয়। এই ঘটনা ন্যাক্কারজনক নজীরবিহীন। সারাদেশ এবং গণমাধ্যম এই জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখনও এই ঘটনার পক্ষে সাফাই দিয়ে যাচ্ছে। গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্যাতনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও আজ এই ঘটনার পক্ষে সাফাই গেয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞাপন দিয়েছে।
‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের অনভিপ্রেত আচরণ ও তৎপরবর্ত্তী ঘটনা সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখা’ শিরোনামে ঐ বিজ্ঞাপনটি আপত্তিকর।
এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোজিনাকে আরেক দফা নির্যাতন করলো। মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ ঐ বিজ্ঞাপনে দুর্বৃত্ত নির্যাতনকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আর এই নোংরা, কুৎসিত এবং আপত্তিকর বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করে ডেইলী স্টার প্রকারান্তে রোজিনার নিপীড়নকারীতে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার একই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। মাহফুজ আনাম কিছুদিন আগেও প্রথম আলোর প্রকাশক ছিলেন। ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম আজ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে কমেন্টি লিখেছেন। অথচ তার পত্রিকায় এই অসত্য বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হয়েছে। এটি অর্থ লোভ এবং নীতি ভ্রষ্ট সাংবাদিকতার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সাংবাদিকতার স্বাভাবিক নীতি হলো সম্পাদকীয় নীতির পরিপন্থী কোন বিজ্ঞাপন প্রকাশ না করা। বিজ্ঞাপন যদি পত্রিকার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় তাহলে তা প্রচার না করাই হলো সৎ সাংবাদিকতার বৈশিষ্ট্য। কিন্তু ডেইলি স্টার মাত্র কিছু টাকার লোভে এই বিজ্ঞাপনের লালসা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেনি।
রোজিনা যখন জেলে তখন ডেইলি স্টারের এই বিজ্ঞাপন লালসা, প্রমাণ করলো, বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার করুন হাল। এই মাহফুজ আনামই গতকাল সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি হিসেবে রোজিনার ঘটনার উপর এক বিবৃতি দিয়েছেন। কি অদ্ভুত না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞাপনের নামে ঘুষও নেবেন আবার সাংবাদিকতার আদর্শও কপচাবেন।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন